‘আচ্ছা তোমার সমস্যা কী? তোমার সবগুলো লেখাই একই রকম কেন? কেউ না কেউ মারা যাবে আর একজন বসে বসে কষ্ট পাবে ! আচ্ছা তুমি কি এই টাইপ ছাড়া আর লেখা লিখতে পার না? আর যদি নাই পার তবে আর লেখার দরকার নাই, আমি বিরক্ত হচ্ছি তোমার লেখা পড়ে। মৃত্যু ছাড়া সে একটা ভালো জিনিস লিখতে পারে না !’,অদ্রির চোখে ওর ভেতরের রাগ পুরো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। অনিকের উপর সে মারাত্মক রকমের বিরক্ত। এই ছেলেটা এমন কেন? সমস্যা কী এর? অনিক চুপচাপ বসেই আছে, নির্বিকার।
অনিক আর অদ্রি অনেক না তবে ভাল বন্ধু। ওদের পরিচয়টা খুব একটু অদ্ভুতভাবেই হয়েছিল। অনিক আর অদ্রি একই ভার্সিটিতে আছে প্রায় দুই বছর কিন্তু একদিনের জন্যও একে-অপরের সাথে কথা পর্যন্ত বলে নাই ওরা। অদ্রির ধারণা ছিল অনিক ছেলেটা হয় মারাত্মক বাজে নয়ত পাগল ! ভার্সিটিতে ক্লাস শুরু হওয়ার প্রথম দিন সে একটা লম্বা পাঞ্জাবি (অদ্রির ভাষায় আলখেল্লা) পরে চলে এসেছিল। ঐদিন থেকেই এই খ্যাতটাকে আসলে অদ্রির ভালো না লাগা শুরু হয়। এভাবে প্রায় দুই বছর চল যায় যেখানে একই ক্লাসে থাকা সত্বেও দুই জনের মাঝে একটা কথা পর্যন্ত হয়নি। আরেকটা কারণ অবশ্য আছে। সেটা হচ্ছে অদ্রির মারাত্মক টাইপের ইগো ! ক্লাসের ফার্স্ট গার্ল হয়ে সে লাস্ট বয়ের সাথে নিশ্চয়ই কথা বলতে পারে না ! কিন্তু অবাক করা কান্ড ঘটল সেদিন।
অদ্রি খুব মন খারাপ করে ক্যাফেটেরিয়ার বারান্দায় বসে আছে এমন সময় হঠাত করেই অনিকের আগমন।
-‘অদ্রি’
-আমাকে বলছ?
-তুমি ছাড়া এখানে আর কারও নাম কি অদ্রি ?
এই ছেলে এইভাবে কথা কেন বলবে? মেজাজ খারাপ হয় অদ্রির কিন্তু সামলে নেয় ও।
-আচ্ছা বল কী বলবা?
-তোমার কাছে হাজার খানেক টাকা হবে?
-হাজার খানেক টাকা? মানে কী? আমি তোমাকে টাকা ধার দিব কেন?
-আমি আসলে ধার চাইছি না।
-তাহলে?
-তোমাকে টাকাটা একেবারেই আমাকে দিয়ে দিতে হবে, আমি আর ফেরত দিব না।
‘বলে কী এই ছেলে? একে তো ক্লাসের সবচেয়ে অপছন্দের ছেলে, তার উপর আজ ওর মন ভালো না। এমন সময় কি না এই ছেলে তার সাথে ফান করতেছে? কিন্তু এমন কেন করবে ? ধুর এত ভাবা যাবে না, না করে দেই।’, মনে মনে ভাবে অদ্রি। কিন্তু কেন জানি অদ্রি অনিককে মানা না করে ব্যাগ থেকে এক হাজার টাকার একটা নোট বের করে দিয়ে চলে গেল। একবার ফিরেও তাকালো না অনিক টাকা দিয়ে কী করে তা দেখার জন্য।
দুই দিন পরের কথা, সেদিন অন্যান্য দিনের মতই অদ্রি ক্লাসে তার বন্ধুদের সাথে বসে আছে এমন অময় অনিক ক্লাসে ঢুকল আর নিয়মমাফিক ক্লাসের বাম দিকের সবচেয়ে কোণার ব্যাঞ্চটায় গিয়ে বসে পড়ল। কিন্তু আজ অদ্রির কাছে অনিককে অন্যরকম লাগছে। কিন্তু কেন? এবার অদ্রি ভালো করে ছেলেটার দিকে তাকালো। হুম ছেলেটা খুব সুন্দর একটা নীল রঙের পাঞ্জাবী পরে আসছে, অন্যরকম সুন্দর দেখাচ্ছে ওকে আজ। হঠাত অদ্রির কেন জানি অনিকের সাথে খুব কথা বলতে ইচ্ছা করল। সে আস্তে করে তার ব্যাগ নিয়ে অনিকের পাশে গিয়ে বসে পড়ল।
-অনিক
-হুম
-কী কর?
– ঘুমাচ্ছি !
– কই তুমি তো দেখি বই পড়ছ !
– তা দেখতেই যখন পাচ্ছ আবার জিজ্ঞাস কর কেন?
‘আজব চিড়িয়া তো ! আমার কাছ থেকে সেদিন এক হাজার টাকা নিয়ে গেল কিন্তু কৃতজ্ঞতার লেশমাত্র নাই ! উলটা ঝাড়ি মারে? ধুর! কথাই বলব না !’,ভাবে অদ্রি। মেজাজটাই খারাপ হয়ে যায় ওর। অনিকের পাশ থেকে উঠতে যাবে এমন সময় স্যার এসে পড়েন, তাই বাধ্য হয়েই বসে পড়ে আবার সে ।
ক্লাস হচ্ছে। অদ্রি খুব মনোযোগ দিয়ে স্যারে নিউক্লিয়ার এনার্জি সম্পর্কে বলা শুনছে, এমন সময় অনিক অদ্রিকে বলে তোমার হাজার টাকা নিয়ে কী করলাম জানতে চাইলে না?
-না, দরকার নাই।
-ভালো। টাকা পয়সার ব্যাপার জানতে না চাওয়াই ভাল। অর্থ আসলে অর্থহীন জিনিস।
– আর তুমি টাকা দিয়ে আর করবাটাই কী? সিগারেট বা এই টাইপ ফালতু কিছু খেয়েছ নিশ্চয়ই ?
– হাহা। মজা পেলাম, যাই হোক আমি এইসব খাই না। তবে যেহেতু বললা একদিন খেয়ে দেখতে হবে।
-মানে কী ?
– কিছু না। বাইরে যাই চল,ক্লাসটা বোরিং।
-ক্লাসটা মোটেও বোরিং না, তবে তোমার সাথে বসে আমি এমনিতেও ক্লাস করতে পারছি না, চল বাইরে যাই।
সেই শুরু, এরপর অদ্রি অনিক সম্পর্কে অনেক জেনেছে। অনেক মেধাবী একটা ছেলে অনিক, ছোট বেলায় সে করেনি এমন কিছু বোধহয় ছিল না। ক্লাসের ফার্স্ট বয়, বিতর্কের সেরা বক্তা, অসাধারণ দাবাড়ু, আবার লিখতও মাঝে মাঝে। তবে মাঝের কিছু ঘটনা তার জীবনকে অনেকটাই পাল্টে দেয়। অনিক যদিও বলে ওগুলো কিছু না, তারপরও অদ্রির মনে হয় যেন নীরাকে হারিয়ে ফেলাটাই হচ্ছে অনিকের টার্নিং পয়েন্ট। এরপর আর কোনদিন আর আগের অনিককে দেখাও যায় নি।
ও আচ্ছা, নীরা হচ্ছে একটা মেয়ে যাকে অনিক অনেক ভালোবাসত।অনিকের ভাষ্যমতে অবশ্য, ‘বাসতাম না বাসি।’ এভাবে করে আস্তে আস্তে অনিক-অদ্রি দুজনেই খুব ভালো বন্ধু হয়ে গেছে। অনিক দুই দিন পর পর কিছু লিখে আনে আর অদ্রি বসে বসে তা গেলে। অদ্রির মুখে বলে এটা অখাদ্য কিন্তু অনিকের লেখা ওর আসলেই অনেক ভালো লাগে। কিন্তু অনিক ছেলেটার সমস্যা হল ও জীবনেও দুঃখ ছাড়া আনন্দের গল্প লিখতে পারে না। আর এইটা নিয়ে অদ্রির অভিযোগের শেষ নাই। একদিন বাধ্য হয়ে অনিক বলল,‘আচ্ছা যাও তোমার জন্য একদিন একটা আনন্দের গল্প লিখে ফেলব !’
কিন্তু আজও সে একটা মন খারাপ করা গল্প লিখে নিয়ে আসছে। অদ্রি পড়া শেষ করে বলল, ‘আচ্ছা তোমার সমস্যা কী? তোমার সবগুলো লেখাই একই রকম কেন? কেউ না কেউ মারা যাবে আর একজন বসে বসে কষ্ট পাবে ! আচ্ছা তুমি কি এই টাইপ ছাড়া আর লেখা লিখতে পার না? আর যদি নাই পার তবে আর লেখার দরকার নাই। আমি বিরক্ত হচ্ছি তোমার লেখা পড়ে। মৃত্যু ছাড়া সে একটা ভালো জিনিস লিখতে পারে না !’,অদ্রির চোখে ওর ভেতরের রাগ পুরো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। অনিকের উপর সে মারাত্মক রকমের বিরক্ত! এই ছেলেটা এমন কেন? সমস্যা কী এর? অনিক চুপচাপ বসেই আছে, নির্বিকার।
-আচ্ছা অদ্রি, ধর একদিন কেউ তোমাকে বলল সে তোমাকে খুব ভালোবাসে তুমি কী করবা ?
-আমাকে প্রোপোজাল দেওয়ার চেষ্টাও করিও না, খুন করে ফেলব !
– আরেহ ধুর ! তোমাকে কে প্রোপোজ করে ? আমি নীরার কথা ভাবছি, ও হয়ত এখন কারও প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে আর আমি ওর জন্য দেবদাস হয়ে ঘুরছি আর শরৎ বাবুর মত গল্প লিখে যাচ্ছি কিন্তু তিনি ঠিকই পারুর মত আরেকজনের হয়ে বসে আছেন ! হতে পারে না?
– হুম পারে। তার সাথে প্রোপোজালের সম্পর্ক কী?
– নাহ এমনেই চিন্তা করছিলাম যদি প্রোপোজ করি তাহলে কেমন হয় ?
-তুমি এখনও ওকে বলই নাই? আজব !
– ঠিক সেভাবে বলা হয় নাই, আসলে।
– রিড্ডিকুলাস !
– আমি ক্যালকুলাসই বুঝি না, রিড্ডিকুলাস জিনিসটা আবার কী?
দুজনেই হেসে দেয়। অদ্রি একটা জিনিস খেয়াল করেছ অনিক খুব বেশি হাসে না তবে হাসলে ওকে অনেক বেশি সুন্দর দেখায়।
অদ্রির জন্মদিন আজ। অদ্রির বাসায় লোকজনে ভরে গেছে। অনিককে আসতে বলেছে সে, কয়েক মিনিট আগেও ফোন দিয়ে জিজ্ঞাস করায় বলেছে আর নাকি পাঁচ মিনিটের মাঝে চলে আসবে সে। কিন্তু এখনও আসছে না। আবার ফোন করল সে কিন্তু এবার অনিক ফোনটাও ধরল না। আশ্চর্য তো ! অনিক কী তাহলে আসবেই না? নাকি মিথ্যা বলেছে ওকে, হয়ত আরও ঘন্টা খানেক পর চলে আসবে। নাকি একদম বাসার কাছে তাই ফোন ধরছে না। ভালো লাগছে না অদ্রির।
-কিরে অদ্রি মা, কেমন আছিস, মামার ডাক শুনে ফিরে তাকালো অদ্রি।
– মামা! তুমি এত দেরি করে আসলা কেন?
– আর বলিস না, রাস্তায় বিশাল জ্যাম। একটা জটলা দেখলাম কিন্তু বুঝলাম না, সবাই বলাবলি করছিল একটা ছেলে নাকি গাড়ি চাপা পড়েছে, তাই এই হট্টগোল ! আজকালকার ছেলে-মেয়েগুলা রাস্তাও ঠিক মত পার হতে পারে না।
অদ্রির ভীষণ খারাপ লাগে, কিছুদিন আগেই তাদের পাশের ডিপার্টমেন্টের এক বড় ভাই রোড অ্যাকসিডেন্টে মারা যায়।অনিক খুব কেঁদেছিল ঐদিন, অদ্রিও ছিল ওর পাশে। অনিক কাদতে পারে এটা অদ্রি কখনই বিশ্বাস করত না যদি না সেইদিন ও নিজ চোখে না দেখত। কারও মৃত্যু খবর শুনলে এমনিতেই ওর ভালো লাগে না তার উপর আজ তার জন্মদিন। আবার অনিকও আসছে না এখনও, একটা বিরক্তিকর ব্যাপার। এমন সময় অনিকের নাম্বার থেকে ফোন এল।
– আশ্চর্য অনিক ! তুমি কই বল তো?
-ম্যাডাম এই মোবাইলের মালিককে কি আপনি চেনেন?
অদ্রির বুক ধড়াস করে উঠল।
-হুম, অনিক। অনিকের ফোন আপনার কাছে কেন?
– আজকে শাহবাগে একটা রোড অ্যাকসিডেন্ট হয়েছে জানেন তো ! ওখানের স্পটে ফোনটা পড়ে ছিল, ডেডবডি পিজিতে আছে, আপনি কী আসবেন? হ্যালো ! শুনছেন ! শুনছেন !
অদ্রি কথা বলতে পারছে না, কী করবে বুঝতে পারছে না, ভেতরে একটা বিশাল হাহাকার লাগছে ওর কাছে। অনিক নেই? আজ অদ্রির জন্মদিনেই অনিক চলে গেল? ও কী করবে এখন? পিজিতে যাবে? যদি গিয়ে দেখে ওটা সত্যি অনিক, তাহলে? না, যাবে না সে। কিন্তু যাওয়া তো উচিৎ অদ্রির মনে হচ্ছে অনিক ওকে সারপ্রাইজ দিচ্ছে, হয়ত অন্য কাউকে ফোন করিয়ে শাহবাগ মোড়ে নিয়ে যাবে, তারপর টিএসসি চত্বরে নিয়ে বসিয়ে বলবে বল কী কী খাবা, আজ সব কিছু তোমার জন্য। অদ্রি তোর যাওয়া উচিৎ, বলে কাউকে না বলেই বাবার গাড়িটা নিয়ে বেড়িয়ে পড়ল সে।
সময়টা অনেক আস্তে যাচ্ছে, কতক্ষণ ধরে গাড়ি চালাছে সে কিন্তু পথ তো শেষ হয় না, অন্য সময় এই রাস্তাটুকু আসতে তার পাঁচ মিনিটও লাগে না কিন্তু আজ মনে হচ্ছে পাঁচ ঘন্টা ধরে বসে আছে সে।
অনিকের নিথর দেহটার পাশে দাঁড়িয়ে আছে সে, শাহবাগ মোড়ে অদ্রির জন্য ফুল কিনে রাস্তা পার হতে গিয়ে একটা প্রাইভেট কারের সাথে ধাক্কা খায় অনিক , ওটাতে কিছু হত না, কিন্তু পাশেই একটা সিটি বাস পেছন থেকে অপজিট ডিরেকশন থেকে ধাক্কা মারে ওকে। ডাক্তার বলেছে স্পট ডেথ হয়েছিল। অদ্রির পাশে ওদের ক্লাসের সবাই, এছাড়াও আরও কয়েকজন, অনিকের বাবা-মা ও আছেন বোঝা যাচ্ছে। আচ্ছা ঐ কোণায় দাঁড়ানো হাল্কা সাদা রঙের ড্রেস পড়া মেয়েটা কি নীরা? অদ্রির কেন জানি মনে হল ওটা নীরা। অনিক একদিন বলেছিল নীরাকে সাদা রঙের ড্রেসে অসাধারণ লাগে। কিন্তু নীরাকে খুব বেশি সুন্দর লাগছে না। আচ্ছা নীরা কি অনিককে দেখতে আসছে? কেন আসছে? ওর তো আসা উচিৎ না।
– তুমি নীরা?
– হুম , আপনি ?
– আমি অদ্রি, অনিকের ক্লাসমেট আমি।
– ও।
– অনিক তোমাকে খুব বেশি ভালোবাসত তাই না?
– আপনাকে কে বলেছে?
– আমি জানি।
– মনে হয়।
– তোমার ধারণা আসলে ভুল নীরা। অনিক তোমাকে ভালবাসে নাই কখনও। আসলে তোমাকে ভালবাসতে ও জানতই না, আমার যতদূর ধারণা তুমি ওর জন্য সব ছিলে, আজ অবশ্য এসব বলে লাভ নেই। আর সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে ও তোমাকে যত না মায়া করত, ভালবাসত তার চেয়ে সহস্রগুণ ভাল আমি ওকে বাসি। আর দেখ ওর পাশে যে ফুলগুলো পড়ে আছে ওটা ও আমার জন্য কিনে নিয়ে ফিরছিল। ওর শেষ মূহুর্তের ভালবাসাটাও আমিই পেলাম। যাই। ভালো থাক।
নীরা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে অদ্রির দিকে। অদ্রি জানে সে কতগুলা মিথ্যা উগড়ে দিয়ে এসেছে নীরার সামনে। অনিককে অদ্রি ভালবাসে ঠিকই কিন্তু অনিক নীরাকে তার চেয়েও বেশি ভালোবাসে। কিন্তু নীরাকে একটা কষ্ট দিতে ইচ্ছা করছিল অদ্রির। নীরার যাতে শেষ দিন পর্যন্ত মনে হয় অনিক নীরাকে না তাকে ভালবাসত, এভাবে করে অনিক আসলে নীরার মনে থেকেই যাবে। অনিকের ইচ্ছাটাও তো অনেকটা এমনই ছিল, নীরার সাথে থাকা। কিন্তু অদ্রি নিজে কী করবে ? অনিক যে এখন থেকে তার সাথেও থাকবে।
অবনীলা খুব বিরক্ত। মায়ের লেখা পড়ে আসলে খুবই মেজাজ খারাপ তার। ‘আম্মুটা কি ভালো কিছু লিখতে পারে না?’ কিন্তু সবাই দেখি আবার তার আম্মুর লেখা গপ গপ করে গেলে ! সে হলে জীবনেও টাকা দিয়ে তার আম্মুর বই কিনত না। খালি দুঃখ নিয়ে লিখে বেড়ায় সে।
রাগী রাগী একটা চেহারা নিয়ে মায়ের সামনে গিয়ে বসে পড়ে অবনীলা । ‘আচ্ছা তোমার সমস্যা কী? তোমার সবগুলো লেখাই একই রকম কেন? কেউ না কেউ মারা যাবে আর একজন বসে বসে কষ্ট পাবে ! আচ্ছা তুমি কি এই টাইপ ছাড়া আর লেখা লিখতে পার না? আর যদি নাই পার তবে আর লেখার দরকার নাই। আমি বিরক্ত হচ্ছি তোমার লেখা পড়ে। মৃত্যু ছাড়া সে একটা ভালো জিনিস লিখতে পারে না।’ অবনীলার মুখে বিরক্তি।
‘আচ্ছা মা, যা একদিন তোর জন্য খুব আনন্দের একটা গল্প লিখে দেব ,খুশি?’, অদ্রি নিজ মেয়ের দিকে খুব ভালো করে তাকায়। অবনীলার চোখ দুটো ওকে সবসময় অনিকের কথা মনে করিয়ে দেয়, সেই ২০ বছর আগের কথা। অনিকের জন্য লেখে অদ্রি, শুধুই অনিকের জন্য।
চালিয়ে যা, খারাপ লাগে নি 🙂
চালিয়ে গেলাম, একদিন ভালো লাগবে এই অপেক্ষায় :happy:
-প্রথম প্যারাটা কি ইচ্ছে করেই আবার ভেতরে লেখা হলো?
-শেষে অদ্রিকে লেখিকা করতেই কি অনিককে খুন করা হলো?
-কোন মোরাল টা ধরে লিখেছেন? রাস্তাঘাটের ছুটেচলা দানবগুলোর প্রতি মেধাবীদের মৃত্যুক্ষুধা, টিপিক্যাল ফার্স্টগার্ল-লাস্টবয়দের কালাত্তীর্ণ প্রেমকাহিনী, না কি, হাজার বছর ধরে একটি, কেবল একটা, খুশির উপন্যাস লেখার জন্য মানুষগুলোর অপেক্ষা?
উত্তর দিতে পারেন। নাও দিতে পারেন। লেখা তো ভাল করে ফেললেন। 😐
এবং মাঝ পথে লেখকের উপর “বিরক্তিকর” ট্র্যাজেডির জন্য রাগ ধরিয়েও দিলেন। ইনসেপশন নাকি হাজার বছর ধরে?
– হুম, প্রথম প্যারাটা ইচ্ছে করেই ভেতরে লেখা হয়েছে
– না , অদ্রিকে লেখিকা করার জন্য অনিক মারা যায় নাই, অনিক মারা গিয়েছিল অলেই অদ্রি লেখিকা হতে পেরেছে হয়ত। একটা কষ্ট থেকেই হয়ত ওরা দুজনেই (অনিক আর অদ্রি) লিখত। অনিকের শেষের দিকের লেখার প্রেরণা ছিল নীরা, আর অদ্রির অনিক, এই যা।
– গল্প লেখার আগে অনেক মোরালই থাকে কিন্তু শেষ পর্যন্ত একই থাকে না।
আর লেখা ভালো করে ফেলছি শুনে ভালো লাগল। ধন্যবাদ আপনাকে।
আর রাগ ধরাতে পেরেছি বলেও খুব খুশি। কয়জনই বা রাগ ধরাতে পারে ?
সরি টাইপো আছে দ্বিতীয় লাইনে ওটা ‘ওলেই’ না ‘বলেই’ হবে।
মাথার ভিতরে এখনও কেমন যেন ঝি ঝি করছে, ঘোরটা মনে হয় কাটেনি এত পরেও। তবে ঘোরটা কেন যেন অনেক আনন্দের অনুভূতি দিচ্ছে, তবে যুক্তির খাতিরে তা নিজের কাছেই কেমন অদ্ভুত লাগছে…
দারুন লিখেছিস।
:love:
খুশি।
হুমম, লেখাটা ভালো লেগেছে, তবে এট্টু এট্টু কিন্তু আছে! তার একটা হচ্ছে……
আমার এখন আপনার উপর রাগ হচ্ছে! শুধুই মেরে ফেলা ছাড়া গল্প হয় না!! 😛
:happy:
আচ্ছা আর মারব না !
অনেকটা এরকম গল্পই সেইদিন সরবে আরেকটা পড়লাম। কার যে লেখা ঠিক মনে পড়তেছে না, নূহা চৌধুরী হতে পারে।
ভাল লিখছো। যদিও দুর্ঘটনা ঘটার ব্যাপারটা আগে থেকে বুঝে ফেলছিলাম।
একই প্যারা যে তিনবার আসছে লেখায় – এই জিনিসটা দারুণ লাগছে। 😀
:clappinghands:
ধইন্যা।
:happy:
রাগী রাগী একটা চেহারা নিয়ে “ত্রিমাত্রিক ভালবাসা” গল্পে মন্তব্য করতে বসে পড়ে বৈরাগী।
কেউ না কেউ মারা যাবে আর একজন বসে বসে কষ্ট পাবে !…..
গল্পটার মাঝে এমন ভাবে ঢুকে গেসিলাম যে শেষ হবার পর মনে হলো গল্প শেষ করলাম না, পিজি থেকে ঘুরে আসলাম……
খুব ভালো লেগেছে :clappinghands:
আচ্ছা রাগী রাগী চেহারাটা কেমন হবে ?? একটা ইমোটিকন দেওয়া উচিৎ!
:happy:
নাহ রাগের ইমো নাই ভালোই হইসে। কারণ সরবের ইমো গুলো এতো কিউট , দেখা জাবে রাগের ইমো দেখে ফিক করে হেসে দিব।:happy:
কেমন ঘোরলাগা লেখা।
পুরোটা একবারে পড়লাম।
দারুণ লিখেছিস রে!
ধইন্যা :happy:
আমি গল্প লিখতে পারি না খুব একটা।
তাই তোদের দেখলে ভালো লাগে।
থেমে যাস না কখনো। :beshikhushi:
আচ্ছা অপরাজিতা, শুক্কুরদার বিয়ে খাওয়া তো আমার লেখা 😛
ফিনিক্স পাখি তুমি যা লেখ ঐটা অন্য গ্রহের, অন্য কিছু। তারপরও আমি খুশি ! লেখা ভালো লাগে শুনলে কে না খুশি হয় ? :happy:
ঐগুলা ভুল করে লিখে ফেলছিলাম মনে হয়! 😛
অনেক সুন্দর!!
ধন্যবাদ 🙂
লেখা ভালো লেগেছে বেশ! তবে কয়েকদিন পর থেকে তোকেও মানুষ বলবে, লেখায় এতো কষ্ট কেন আনতে হবে?
অলরেডি বলা শুরু হয়ে গেছে ! 🙁
ব্যপার না। আমার তো নিয়মিতই এটা শুনতে হয় 😛
দারুন গল্প, দারুন–
থ্যাঙ্কু একুয়াপ্পি :happy:
সুন্দর গল্প! দুঃখবোধটা বোধ হয় সংক্রামক হয়ে থাকে…দুঃখ আছে বলেই তো সুখের এত তৃষ্ণা… 🙂
দুঃখ আছে বলেই তো সুখের এত তৃষ্ণা..
আমার ভালো লেগেছে।
যদিও থিমটা কিছুটা কমন।
কিছু নতুনত্ব ছিল
🙂
চমৎকার লিখেছেন 🙂 গল্পনাভূতির স্থায়িত্বকাল ………………… :love: