গতকাল এমন একটা অভিজ্ঞতা হলো, না লিখে পারছি না। সকালে অফিসে এসে বসে কাজ করছিলাম। কয়েক ঘন্টা পর আমার এক কলিগ ফোন পেয়ে দৌড়ে বেরিয়ে গেলেন। তার বন্ধুর বাবা মতিঝিলে, বলাকা স্থাপত্যটির কাছেই বাসের চাপায় পিষ্ট হয়েছেন। হন্তদন্ত হয়ে তিনি ছুটে গেলেন তার বন্ধুর পাশে দাঁড়াতে, অবস্থা কী সেটা দেখতে।
বিস্তারিত জানতে অপেক্ষা করতে হলো। ভদ্রলোক ছিলেন ষাটোর্ধ একজন বৃদ্ধ, পেশায় ব্যবসায়ী। আদমজী কোর্ট এনেক্সের সামনে রাস্তা পার হবার সময় একটা বাস তাকে চাপা দিয়ে চলে যায়। পথের উপরে তার খুলি ভেঙ্গে মস্তিস্ক পড়ে ছিল বলে জানতে পারলাম। গতকাল রাতে কয়েকটা স্যাটেলাইট চ্যানেলেও এই খবর এসেছে শুনলাম। সেই বাসটা চালাচ্ছিলো এক হেলপার, সে পেশাগত ড্রাইভার না। বাঁক ঘোরার সময় আরেকটা গাড়িকে ধাক্কা দিয়ে সে সেই ভদ্রলোকের উপরে বাস তুলে দেয়। ক্ষুব্ধ জনগণ বাসে আগুণ ধরিয়ে দিয়েছিল।
বঙ্গভবন থেকে এগিয়ে আদমজী কোর্টের এই মোড়ে পাঁচটা রাস্তা বিভিন্ন কোণে মিলেছে। এই মোড়ের খুব কাছেই আমার অফিস। প্রতিদিন যতবারই রাস্তা পার হতে হয়, কখনো এই মাথা থেকে অন্য মাথায় যেতে হলে দুই রাস্তা পেরিয়ে যাই, ইচ্ছা করলে সেটা ক্রস করে যাওয়া যায়। কিন্তু এই রাস্তা পার হবার সময় আতঙ্কিত হতে হয় কারণ বঙ্গভবন পেরিয়ে আসা বাসগুলো ছুটে মতিঝিলের মেইন রাস্তায় যেতে চায় কোন সিগন্যাল এড়িয়ে। এখানে কোন স্পিড ব্রেকার নাই, জেব্রা ক্রসিং-এর কাছে প্রতি ২০ সেকেন্ডে ১০ জনের বেশি মানুষ জমে গেলেও সেখানে ট্র্যাফিক এসে সিগনাল দেন অনেকক্ষণ পর পর। বেশ ক’মিনিট। কিন্তু সাধারণ মানুষের অতক্ষণ থেমে থাকার ধৈর্য্য থাকে না। সবাই ইচ্ছামতন পার হতে থাকে। সত্যি কথা বলতে কী, ঢাকার এই জায়গাটাতে রাস্তা পার হতে আমি যতটা আতঙ্কবোধ করতাম, এখনো করি সেই — এতটা ভয় এর আগে কেবল মহাখালীর মোড় পার হতে গিয়ে লাগত আমার।
বিষয়টা নিয়ে লিখছি যখন, তখন একজন মানুষের মৃত্যুর কথা জানি — সদ্য মৃত। মানুষটা মতিঝিলে এসেছিলেন ব্যাংকে কাজ করতে, কাজ সেরে রাস্তা পার হচ্ছিলেন। হয়ত তার মাথায় কিছ ব্যবসায়ী পরিকল্পনা ছিলো। সন্তানদের জন্য, পরিবারের জন্য কিছু করার ভাবনা তার মাথায় ছিলো, স্বপ্ন ছিলো হয়ত দেশ নিয়ে, তার দায়িত্ব নিয়ে। তিনি স্বচ্ছল ব্যবসায়ী ছিলেন, তাকে বাসচাপায় বীভৎস একটা দেহ নিয়ে পৃথিবী ছেড়ে যেতে হলো একজন হতভাগা দায়িত্বজ্ঞানহীন মূর্খ বাস হেলপারের বাসচালনার কারণে। কাল আমি বিকেলে সেই স্পটটা দেখে এসেছিলাম। শুনলাম উনার আত্মীয়রা অনেকেই লাশ দেখতে যাবার সাহস করেননি।
মৃত্যু কতই না সহজ! আমাদের দেশটা এমন একটা অবস্থায় চলে এসেছে, যখন আসলে নাগরিক জীবনে একজন মানুষের কোনই মূল্য নাই। যেকোন সার্ভিস, হোক সেইটা টাকা দিয়ে পাওয়া — তারা যেন করুণা করে আমাদের। বাসের টিকিটের লাইন হোক, দোকানদার হোক, হোটেলের ওয়েইটারের সার্ভিস হোক, সরকারী প্রতিষ্ঠানের কোন একজন কর্মচারী বা পিয়নের সার্ভিস হোক না কেন — বেশিরভাগের মাঝে একজন মানুষকে মানুষ হিসেবে ‘ডিল’ করার লক্ষণ দেখা যায় না। এরকম একটা সময়ে এই মৃত্যু নিয়ে অফিসের অনেকেই বারবার হতাশা ব্যক্ত করছিলো।হতাশ হয়ে কি আমরা কোন সলিউশান টানতে পারবো? আমাদের কথা বাদ থাক, আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে কি আদৌ বাসযোগ্য একটা সমাজ বা শহর দিয়ে যেতে পারবো? এই ঘটনায় কাকে দায়ী করবেন? এটা দেশের সামগ্রিক ঘুণে ধরা নোংরা অবস্থার একটা প্রতিচ্ছবিমাত্র। হেলপার গাড়ি চালায়, জটিল রাস্তাতে প্রয়োজনীয় স্পিড ব্রেকার দেখি না, মৃত্য হলেও হন্তাকারীর আদৌ কোন শাস্তি হয়না — সব মিলিয়ে একটা প্রচন্ড মানসিক চাপ হয় চিন্তা করতে গেলে। তাই আশেপাশের সবাইকে দেখি চিন্তা করা ছেড়ে দিয়ে নিজ কাজে মন দিয়ে ভাবনাকে সামনে থেকে সরিয়ে রাখে।
আমি বুঝি অন্য কথা। দেশের কথা বাদ যাক, যাক সমাজের মানুষের ভালো থাকার কথা, কিন্তু আমার একটা অনুরোধঃ
নিজের ও নিজের পরিবারের ভালো চাইলেও আমাদের উচিত সাধ্যমতন সচেতনতা সৃষ্টি। আমাদের উচিত কখনই হাল না ছাড়া। মনে রাখবেন, আপনি যখন আরেকজন মানুষকে সচেতন করলেন, তাকে সুন্দর কিছু বুঝালেন, তাকে সুন্দর কাজ করতে উৎসাহিত করলেন — ঘুরে ফিরে হয়ত সেই মানুষটা আপনার পরিবারের একটা ক্ষতি কম করলো। অথবা বলা যায়, এই সমাজে, এই জনপথে হেঁটে চলা অন্য কিছু মানুষ ক্ষতি থেকে মুক্ত থাকলো।
এই কথাটা আমাদের যেন প্রতিদিন মাথায় থাকে। ক্লাসে যাবার পথে বাসের পাশে বসা মানুষ, লাইনে দাঁড়ালে সামনের-পেছনের মানূষ, ক্লাসে আমার বন্ধুটা, রাস্তার পাশের পিচ্চি ছেলেগুলো — সবার প্রতি আমাদের দায়িত্বগুলোই হয়ত আগামীকে কিছুটা সুন্দর করতে পারে। সবার সাথে আলাপ করে সবার সুন্দর চিন্তাগুলোকে শাণিত করার চেষ্টা করতে পারি। হয়ত প্রতি ১০ জনের একজন আপনার জন্য একটা ভালো কাজ করবেন। হয়ত তিনি ওইসময় একটা খারাপ কাজই করতেন — আপনার কথাগুলো, অনুপ্রেরণাগুলো কি তাহলে অনেক মূল্যবান নয়?
নইলে মানসচোখে ভবিষ্যতের দিকে তাকালে যেই অন্ধকার সামনে দেখা যায় — সেই অবধারিত বিপদ আমাদের গ্রাস করবেই। সে আমি নিশ্চিত। এই সচেতনতার তাগিদ আমাদের জীবন রক্ষার, পরিবার রক্ষার, সমাজ রক্ষার, জাতিটিকে বাঁচানোর।
উপসংহারে যে এরকম একটা কথা লিখবেন আগে বুঝতে পারি নি।
“ক্লাসে যাবার পথে বাসের পাশের মানুষ, লাইনে দাঁড়ালে পাশের *মানূষ*(টাইপো), ক্লাসে আমার বন্ধুটা, রাস্তার পাশের পিচ্চি ছেলেগুলো — সবার প্রতি আমাদের দায়িত্বগুলোই হয়ত আগামীকে কিছুটা সুন্দর করতে পারে।” – আসলেই তো! এত ভাল চিন্তাটা আমার মাথাতেই আসে না।
যেই মানুষটা মারা গেলেন, তার নাম প্রথমবার দেখে চমকে উঠেছিলাম খবরে। আমার পরিচিত দুজন মানুষের ফ্যামিলি নেইম ওটা, মনে হয়েছিল তাদের কাছের কেউ কিনা।
মানুষ বানান কি দীর্ঘ-ঊ কার নাকি? 😯
জ্বী না, আপনি ঊ-কার দিছেন!
ঠিক করে দিয়েছি!! 😀
পুরো লেখাটা পড়ে শেষটায় এসে আটকে গেলাম!
“মনে রাখবেন, আপনি যখন আরেকজন মানুষকে সচেতন করলেন, তাকে সুন্দর কিছু বুঝালেন, তাকে সুন্দর কাজ করতে উৎসাহিত করলেন — ঘুরে ফিরে হয়ত সেই মানূষটা আপনার পরিবারের একটা ক্ষতি কম করলো। অথবা বলা যায়, এই সমাজে, এই জনপথে হেঁটে চলা অন্য কিছু মানুষ ক্ষতি থেকে মুক্ত থাকলো।”>> :huzur:
খুব ভালো মেসেজ ভাইয়া।
লেখা পড়ে একটা-দুটো মানুষ পরিবর্তিত হলেও ভালো লাগত খুব।
পরিবর্তন আনয়ন বোধকরি মানুষের এখতিয়ারের বাইরে। তবে উদ্ধৃত কথাটুকু আমার জীবনের বোধ। আমি অনেকবার অনেক মানুষের কমিউনিটিতে বসে কথা শুনেছি, সবার হতাশার মাঝে একটাই বুঝতাম — মন খারাপ করে এই জিনিসের সমাধান হয়না। আমাদের দুর্নীতি এতটাই বেড়ে গেছে যে এখন থিওরিটিক্যাল কথা বলে, রাজনীতি থেকে প্রশাসন থেকে কোন পরিবর্তনের কথা চিন্তা করতে থাকলে আমাদের জীবদ্দশায় আদৌ কোন পরিবর্তন আনা সম্ভব কিনা — আমার ধারণার বাইরে।
এখন কথা না, কাজ করার সময়। সমাজে আমরা যতটুকু যা করতে পারবো, সেটাই বেনিফিট। আরেকটা প্রাণকে উদ্বোধিত করার চেষ্টাটাই মুখ্য। এর পাশাপাশি সামগ্রিক সচেতনতা কতটা সুন্দর উপায়ে করা যায় — সেই চিন্তা মাথায় রাখতে হবে।
কিন্তু কাজটা আজই শুরু করতে হবে, এক্ষুনি!!
“এই কথাটা সবাই যেন প্রতিদিন মাথায় রাখে। ক্লাসে যাবার পথে বাসের পাশে বসা মানুষ, লাইনে দাঁড়ালে সামনের-পেছনের মানূষ, ক্লাসে আমার বন্ধুটা, রাস্তার পাশের পিচ্চি ছেলেগুলো — সবার প্রতি আমাদের দায়িত্বগুলোই হয়ত আগামীকে কিছুটা সুন্দর করতে পারে।”
আসলেই মনে হচ্ছে ঐ বাস চালকদের ঠিক করে হবে না বরং পাশের কাছের মানুষদের দিয়েই শুরু করতে হবে। আর দুঃখজনক হলেও সত্য সড়ক দূর্ঘটনা যেন এখন গা-সওয়া হয়ে গেছে আমাদের কাছে। একজন মানুষ মরল, দু-চার-দশটা গাড়ি ভাঙ্গ, মিছিল মিটিং কর, সরকার উৎখাতের হুমকি দাও, ব্যাস। এরপর আবার আরেকটা মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত অপেক্ষা কর। এই ট্রেডিশন চেঞ্জ করা দরকার। রাস্তায় নিজ আপঞ্জন বা নিজেকে পড়ে থাকতে দেখতে চাই না।
আমি কথাটাতে যেটা বুঝাতে চেয়েছিলাম তার একটা ব্যাপার ছিলো, আমাদের পরিবর্তনের আনার জন্য অন্য কারো অপেক্ষা করে বসে থাকলে হবেনা — আমাদেরকেই নামতে হবে কাজে।
তাছাড়া, ড্রাইভার হেলপার রিকসাওয়ালাদেরকেও শেখাতে হবে — সেইসব বড় আকারে প্রশাসন অথবা সামাজিক সংগঠনদের social awareness এর কাজ। কিন্তু সেইসব তো আরেকটা পদ্ধতিগত ও সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। কিন্তু ক্ষতি কমাতে হলে প্রত্যেককেই কাজে নেমে পড়ে দায়িত্বপালন করা শুরু করে দেয়া উচিত।
ক্ষতি যার হয়, সে-ই বুঝে সে কী হারালো। স্বার্থের চিন্তায় দৌড়ে চলা অন্ধ স্বার্থবাজ ভোগবাজ মানুষগুলোর বিবেক নেই বলে তারা কোনদিনই টের পাবে না এই সময়ে তাদের অপরাধ কমিয়ে মানুষের জন্য কাজ করা কতটা প্রয়োজন।
এখানে দু’টা জিনিস বলবো:
১. গাড়ির ড্রাইভার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কি না, সেটা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। সেটা তারা এড়াতে পারে না।
২. রাস্তা পার হবার সময় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য দু’টা মিনিট বেশি খরচ করার দায়িত্ব আমাদের।
এই বিষয়টা নিয়ে সাবধান হওয়া খুব জরুরী। হঠাৎ করে প্রিয়জনকে হারিয়ে ফেলুক কেউ-এমন চাই না। একটুও না।
আপনার পয়েন্ট দু’টো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আসলে সরকারের বিষয়গুলো আলোচনা করে করে ক্লান্ত হয়ে যাওয়ার অবস্থা! তাই সচেতনতার ব্যাপারটা আমি উল্লেখ করেছিলাম। আমাদের দিক থেকে যথাসাধ্য ধৈর্য্য নিয়ে পথ পারাপারের প্রয়োজন।
আর লাইসেন্সবিহীন চালকদের ব্যাপারে কঠোর হওয়াও প্রয়োজন। একজনকে ধরে ৫০০ টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়ার ফলে তা হয়ত আরেকটা মানুষ হত্যাকে উৎসাহিত করা…
ভাল লিখেছেন! শেয়ার করে দিলাম!
ধন্যবাদ।
সচেতনতা দরকার আমাদের অনেক!!
আমাদের জীবন শুধু অদক্ষ হেল্পারের হাতেই নয়, শাক সব্জি বিক্রেতার হাতে যিনি ফরমালিন মেশাবেন, দুধ ওয়ালার হাতে যিনিও দুধে ফরমালিন মেশাবেন, খাবার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের মালিকের হাতে যিনি ভেজাল মেশাবেন, ঔষধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের হাতে যাহারাও মান সম্মত ঔষধ তৈরী করবেন না, ঐ সকল আমদানিকারকের হাতে যারা মেয়াদ উত্তীর্ন খাবার আমদানি করে সেটাতে নতুন করে মেয়াদ বসাবেন। খুব কান্না পায়, সন্তানদের কোথায় রেখে যাচ্ছি। কেন পারছি না সমাধান করতে? (নিজের কাছেই প্রশ্ন)
একমত। কিন্তু কাঁদলে চলবে না ভাইয়া।
আপনার মামুনিগুলোর মত আরও মানুষ তৈরি করতে পারতে হবে আমাদের।
🙂
সেটাতো ঠিক, তবে সরকার যদি, আমাদের মননিত নেতারা যদি চাইতো এগুলি সমাধান করা কোন বিষয়ই ছিলো না। কান্না পায় নানা কারণে। তবে ইন্শাআল্লাহ্ আমরাই পারবো এগুলি থেকে বের হয়ে আসতে।
শিবলী ভাইয়া, আমি অনেকদিন যাবত কেবল দেখেই গিয়েছি, নিজেও হতাশ হয়েছি, অন্যদের হতাশা দেখেছি অনেক গভীর করে। লাভ হয়না। পুরো সমাজটাই যখন ঘুণে ধরে গেছে তখন আসলে চুপ থেকে মন খারাপ করে লাভও হয়না।
তাই সামর্থ্য অনুযায়ী যতটা সম্ভব কাজ করে যেতে হবে, একটা সুস্থ প্রজন্ম যখন নেতৃত্বে আসবে ব্যবসায়, রাজনীতিতে, সাংবাদিকতায় এবং আরো অজস্র পেশায় — তখন বদলে যেতে শুরু করবে আমাদের এই সমাজ। সেদিনের প্রত্যাশায় কাজ করে যেতে হবে আমাদের…
ঠিক।
“মনে রাখবেন, আপনি যখন আরেকজন মানুষকে সচেতন করলেন, তাকে সুন্দর কিছু বুঝালেন, তাকে সুন্দর কাজ করতে উৎসাহিত করলেন — ঘুরে ফিরে হয়ত সেই মানূষটা আপনার পরিবারের একটা ক্ষতি কম করলো। অথবা বলা যায়, এই সমাজে, এই জনপথে হেঁটে চলা অন্য কিছু মানুষ ক্ষতি থেকে মুক্ত থাকলো।”
এতো সুন্দর মেসেজটার জন্য ধন্যবাদ, সাধ্যমত চেষ্টা করি এটা মেনে চলার।
তবে আমাদের সহজাত একটা বোধ তৈরি হয়ে গেছে, আমরা কিন্তু নিজে কোন একটা ঘটনার শিকার না হলে তার গুরুত্বটুকু বুঝি না। বলা উচিত না, কিন্তু যারা এইসব নিয়ম কানুনগুলো তৈরি করেন, তাদের আপন কেউ যদি কখনো এমন একটা দুর্ঘটনায় পড়তো, দেখতেন সবকিছু কি ভোজবাজির মতো পালটে যায়……
হতাশ হতে চাই না, একদমই চাই না, আমাদের পরের প্রজন্ম কিন্তু আমাদেরই দোষারোপ করবে, আমি সেটা তাদের করতে দিতে চাই না, এই দেশ, এই “ঘুণে” ধরা সমাজটা পাল্টানোর দাবি আমরা অস্বীকার করতে পারি না, একদমই না…
হতাশ হতে চাই না, একদমই চাই না, আমাদের পরের প্রজন্ম কিন্তু আমাদেরই দোষারোপ করবে, আমি সেটা তাদের করতে দিতে চাই না, এই দেশ, এই “ঘুণে” ধরা সমাজটা পাল্টানোর দাবি আমরা অস্বীকার করতে পারি না, একদমই না…
আমার হৃদয়ের ভেতরে ধ্বনিত হওয়া প্রত্যয়টাই যেন প্রতিধ্বনিত হলো এই কথাগুলোতে। ধন্যবাদ শৈশব
মৃত্যুর খবরটা দুঃখজনক।
এত ভাল লাগলো লেখার শেষটা পড়ে…
এই অসততা ব্যাপারটা আমাদের রক্তে ঢুকে গেছে। এইটা একটা চেইন, ভাঙতে হবে আমাদের ই।
আমাদের পারতেই হবে। পিছু হটার সময় নেই। একটা ভাল-সৎ মানুষও দুনিয়ার বুকে গড়ে দিয়ে গেলে এটাই আমার জীবনের সাফল্য।
চিন্তা করেন, আমরা দশজন দশটা মানুষ গড়ে দিয়ে গেলাম, আরও দশজন দশটা…এরকম করে হাজারে ছাড়িয়ে যাবে, হবে না সমাজের উন্নতি? … আমি আশাবাদী।
আপনার দৃপ্ত আশাবাদে আমিও আরো একধাপ বেশি আশাবাদী হয়ে গেলাম। সত্যি কথা বলতে কি, আশাবাদ জিনিসটাও সংক্রামক, আপনাকে দেখে আরেকজন হবে। এভাবে ছড়িয়ে যেতে থাকবে…
চিন্তা করেন, আমরা দশজন দশটা মানুষ গড়ে দিয়ে গেলাম, আরও দশজন দশটা…এরকম করে হাজারে ছাড়িয়ে যাবে, হবে না সমাজের উন্নতি? … আমি আশাবাদী।
লেখাটা পড়ে অনেক মন খারাপ হলো, এইছবি গুলো এতো বেশি, এতো বেশি পরিচিত হয়ে গেছে যে আমরা ভাবনা বাদ দিয়ে নিজের কাজে ডুবে থাকি……
কিন্তু ভালো লাগলো অনেক এই কারনে যে, উত্তরণের উপায়টা বলে দিয়েছো, সত্যি বলতে কি সচেতনতার কোন বিকল্প নেই……
এই কথা গুলো বাঁধাই করে রাখার মতো……”নিজের ও নিজের পরিবারের ভালো চাইলেও আমাদের উচিত সাধ্যমতন সচেতনতা সৃষ্টি। আমাদের উচিত কখনই হাল না ছাড়া। মনে রাখবেন, আপনি যখন আরেকজন মানুষকে সচেতন করলেন, তাকে সুন্দর কিছু বুঝালেন, তাকে সুন্দর কাজ করতে উৎসাহিত করলেন — ঘুরে ফিরে হয়ত সেই মানুষটা আপনার পরিবারের একটা ক্ষতি কম করলো। অথবা বলা যায়, এই সমাজে, এই জনপথে হেঁটে চলা অন্য কিছু মানুষ ক্ষতি থেকে মুক্ত থাকলো।”
অনেক ধন্যবাদ অনাবিল। মন্তব্যটা পড়ে ভালো লাগলো।
আসলে হতাশ হবার মতন অজস্র উপায় আছে এই নাগরিক জীবনে, এই সমাজে। কিন্তু কিছু না করলে আসলে এই অবস্থার উত্তরণ হবেনা। আর অপেক্ষা করলেও পরিবর্তন হবেন। আমাদের যার যা সাধ্য সেটা দিয়েই আমরা নিজ নিজ ক্ষেত্রগুলোতে কাউকে ভালোবাসা অন্তত দিতে পারবো, একবেলার জন্য হলেও শান্তি এনে দিতে চেষ্টা করতে পারবো।
এমন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভালোবাসায় জেগে উঠবে আমাদের স্বদেশ, ইনশাআল্লাহ।