বুদ্ধিমান কিংবা উদার হওয়ার গল্প – জেফ বেইজাস (অনুবাদ)

[দেশে আজকাল ইবুক রিডার কিনছেন অনেকেই, কম্পিউটারে বসে ইবুক পড়ার ঝামেলা এড়াতে। সবার প্রিয় কিন্ডল রিডারের প্রণেতা, বিশ্বের সবচেয়ে বড় অনলাইন শপ Amazon.comএর মালিক জেফ বেইজাস ((Jeff Bezos))। এই মেধাবী আমেরিকান  উদ্যোক্তা  প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রছাত্রীদের  সাথে জীবন নিয়ে তাঁর যে চমৎকার অন্তর্দৃষ্টি শেয়ার করেছেন, তার অনুবাদই পড়বেন এখন।]

ছোটবেলার গ্রীষ্মগুলোতে টেক্সাসে দাদু-দাদীর কাছে চলে যেতাম আমি; তাঁদের খামারে উইন্ডমিল ঠিক করে, গরুছাগলকে টীকা দিয়ে আর অন্য সব টুকিটাকি কাজ করে সময় কেটে যেত। নিয়ম করে বিকেলবেলা ধারাবাহিক নাটক দেখতেও বসতাম আমরা, ‘জীবনের দিনগুলি’ ((Days of our Lives)) নাটকটা বিশেষ করে। দাদু-দাদী যেই ক্যারাভ্যান ক্লাবের সদস্য ছিলেন, সেখানকার একদল এয়ারস্ট্রীম ট্রেইলার ((http://en.wikipedia.org/wiki/Travel_trailer)) মালিক দল বেঁধে ঘুরে বেড়াতো সে সময় কানাডা আর আমেরিকা জুড়ে; আর প্রায় গ্রীষ্মে আমরাও যোগ দিতাম তাদের সাথে। দাদুর গাড়ির সাথে ট্রেইলারটা জুড়ে দিয়ে, আরো গোটা ৩০০ অ্যাডভেঞ্চারারের সাথে রওনা দিতাম আমরাও। প্রিয় দাদু-দাদীর খুব ন্যাওটা ছিলাম আমি, তাদের সাথে বেড়াতে যাওয়ার এই সুযোগের জন্য তাই উন্মুখ হয়ে থাকতাম প্রতিবার। তো, আমার বয়স যখন ১০, তখনও এরকম এক অভিযানে যাচ্ছিলাম আমরা। গাড়ির পেছনের বড় বেঞ্চে আমি মনের সুখে গড়িয়ে নিচ্ছি, দাদু গাড়ি চালাচ্ছেন, আর যাত্রীর আসনে বসে সবসময়কার মতই একের পর এক সিগারেট ধরাচ্ছেন দাদী। এমন বিশ্রী লাগতো আমার ধোঁয়াটা! 

টেক্সাসে দাদুর সাথে ছোট্ট জেফ

ঐ বয়সে সুযোগ পেলেই হিসাব-নিকাশ আর অঙ্ক কষতে শুরু করতাম আমি। গাড়ির বাকি গ্যাসে আর কতক্ষণ চলবে, সদাই কিনতে কত খরচ হল – অনবরত গুনতেই থাকতাম, সেটা দরকারি হোক কি অদরকারি। সে সময় ধূমপান নিয়ে একটা সচেতনতামূলক বিজ্ঞাপন দেখাতো; পুরোটা মনে নেই, তবে মূলকথা ছিল এরকম – সিগারেটের প্রতিটা টান আপনার আয়ু দু’মিনিটের মত কমিয়ে দেয়। আমার খুব আগ্রহ হল দাদীর জন্য সময়টা কত সেটা হিসাব করবো। দিনে কতগুলো সিগারেট, একেক সিগারেটে কতগুলো টান – মনে মনে অঙ্ক কষতে লাগলাম। যখন মনে হল মোটামুটি একটা সংখ্যা দাঁড় করাতে পেরেছি, সামনের আসনের ফাঁকে মাথা গলিয়ে, দাদীর কাঁধে হাত রেখে গর্বিত গলায় বললাম, “সিগারেটের একেক টানে দু’মিনিট করে হলে, জীবন থেকে এর মধ্যেই ন’বছর হারিয়ে ফেলেছো তুমি!”

তারপরের ঘটনা স্পষ্ট মনে আছে আমার, তবে যা আশা করেছিলাম তার সাথে কোনই মিল ছিল না সেটার। ভেবেছিলাম, নিজের বুদ্ধি আর অঙ্ক কষার দক্ষতা নিয়ে বেশ কিছু প্রশংসার বুলি শুনবো – “ওহ্‌ জেফ, এত বুদ্ধিমান তুমি! অনেক গোনাগুনতি করতে হয়েছে নিশ্চয়ই তোমাকে, বছরে কত মিনিট থাকে বের করে সেটাকে আবার ভাগ-টাগ দিতে হয়েছে কিছু দিয়ে?” এসব কিছু তো হলই না, বরং দাদী হঠাৎ কেঁদে ফেললেন। পেছনের আসনে হতভম্ব হয়ে বসে রইলাম আমি, কী করতে হবে কিছুই বুঝতে না পেরে। আর এতক্ষণ নিঃশব্দে গাড়ি চালাচ্ছিলেন যে দাদু, তিনি আস্তে করে হাইওয়ের পাশের শোল্ডারে ((http://en.wikipedia.org/wiki/Shoulder_(road))) গাড়িটা থামিয়ে বের হয়ে এলেন। ঘুরে এসে আমার দিকের দরজাটা খুলে দাঁড়ালেন তিনি, আমার বের হওয়ার অপেক্ষায়। বিপদে পড়লাম কিনা ভাবছিলাম তখন আমি। এমনিতে দাদু খুবই বুদ্ধিমান আর শান্তশিষ্ট মানুষ ছিলেন, আমাকে কোনদিনও কোন কড়া কথা বলেন নি। “আজ কি বলবেন?” আমি ভাবলাম। নাকি বলবেন ফিরে গিয়ে দাদীর কাছে ক্ষমা চাইতে? দাদু-দাদীর সাথে এমন পরিস্থিতিতে আগে কখনো পড়ি নি তো, আর তাই কী হতে যাচ্ছে সেটাও বুঝতে পারছিলাম না। দুজনে ট্রেইলারের পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম, আর দাদু কিছুক্ষণ চুপচাপ আমার মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে, শান্ত নরম স্বরে বললেন, “জেফ, বুদ্ধিমান হওয়ার চাইতে উদার হওয়া যে কঠিন – সেটা তুমি একদিন না একদিন বুঝবে।”

এটা নিয়েই আজকে কথা বলতে চাই আমি তোমাদের সাথে – জন্মগত আর অর্জিত গুণের পার্থক্য। বুদ্ধি হচ্ছে জন্মসূত্রে পাওয়া, আর উদারতা অর্জিত গুণ। জন্মসূত্রে পাওয়া গুণগুলো ব্যবহার করা সহজ, কিন্তু গুণ অর্জন করাটা কঠিন। অসাবধানে তুমি প্রকৃতিদত্ত গুণগুলো নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লে অর্জিত গুণগুলোর ওপর তার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে বাধ্য।

এখানে তোমরা যারা আছো, তাদের প্রকৃতিদত্ত গুণ অনেক – যার মধ্যে নিশ্চিতভাবেই একটা হল বুদ্ধিদীপ্ত, সক্ষম একটা মস্তিষ্ক। কীভাবে এতটা নিশ্চিত হলাম জানতে চাইলে বলবো – কঠিন প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে যেখানে আসতে হয়, বুদ্ধির ছাপ দেখতে না পেলে সেখানে কখনো তোমাদেরকে ভর্তি করা হত না।

এই বুদ্ধি অবশ্যই কাজে লাগবে তোমাদের। কারণ এমন এক চমকপ্রদ পৃথিবীতে ঘুরে বেড়াবে তোমরা, যেখানে মানুষ নিজের আবিষ্কার দিয়ে প্রতিনিয়ত নিজেকেই চমকে দেয়। নবায়নযোগ্য শক্তি তৈরি করবো আমরা; অণু-পরমাণু জোড়া দিয়ে এমন সূক্ষ্ম সব যন্ত্র তৈরি করবো, যেগুলো কোষপ্রাচীর ভেদ করে ভেতরে গিয়ে সারিয়ে তুলবে অসুখ। আমাদের নতুন জীবন তৈরির ((http://www.guardian.co.uk/science/2010/may/20/craig-venter-synthetic-life-form)) সেই আশ্চর্য অথচ অনিবার্য খবরটাও তো এ মাসেই পাওয়া গেল; আর সামনের বছরগুলোতে দেখবে – কেবল তৈরিই না, এতে নতুনত্বও আনতে শিখবো আমরা ধীরে ধীরে। এমন কি আমার বিশ্বাস, মানুষের মস্তিষ্ক কীভাবে কাজ করে সেটাও বুঝতে শুরু করবে মানুষ। মার্ক টোয়েন, জুল ভার্ন, নিউটন আর গ্যালিলিওর মত সব যুগের, সব কালের যত সৃষ্টিশীল মানুষ, তারা এসব জানতে পারলে অবশ্যই এ যুগেই জন্মাতে চাইতেন সবচেয়ে বেশি। আমাদের এই সভ্যতার অর্জন হবে প্রচুর, যেমন প্রচুর তোমরা যারা এখানে বসে আছো তাদের যার যার একান্ত প্রকৃতিদত্ত গুণগুলো।

এসব গুণ নিয়ে কী করতে যাচ্ছো তোমরা? প্রকৃতিদত্ত গুণগুলো নিয়ে বেশি গর্ব হবে তোমাদের, নাকি নিজের অর্জিত গুণগুলো নিয়ে?

"পথ নেই যে পথ হারাবার"

১৬ বছর আগে যখন আমাজন ((http://www.amazon.com/)) শুরু করার কথা মাথায় এসেছিল আমার, ওয়েব ব্যবহার তখন হু হু করে বাড়ছে – বছরে ২৩০০%! কোন কিছু যে এত দ্রুত ছড়ানো সম্ভব, তা আমার ধারণাতেও ছিল না সে সময়। এই আশ্চর্য অনলাইন জগতে এমন একটা বইয়ের দোকান থাকবে যাতে থাকবে মিলিয়ন মিলিয়ন বই, ওয়েব ছাড়া যা কিনা একেবারেই অসম্ভব – এই ভাবনাটা মাথায় আসা মাত্রই অস্থির হয়ে পড়লাম আমি। তখন আমার বয়স ৩০, বছরখানেক হল বিয়ে করেছি। চাকরি ছেড়ে দিয়ে এই পাগলামি শুরু করতে চাই – কথাটা বললাম স্ত্রী ম্যাকেন্‌জিকে। বললাম, বেশিরভাগ নতুন উদ্যোক্তাদের মতই অবস্থা হতে পারে আমারও, কাজটা হয়তো এগোবে না আর তারপর যে কী হবে সেটাও ভাবতে পারছিলাম না। ম্যাকেন্‌জি আমাকে বললো কাজটা শুরু করতে (ও নিজেও প্রিন্সটনের গ্র্যাজুয়েট, এখানেই বসে আছে দ্বিতীয় সারিতে)। ছোটবেলা থেকেই আমি ছিলাম আবিষ্কারক গোছের। সিমেন্টভর্তি টায়ার থেকে স্বয়ংক্রিয় দরজা বন্ধ করার যন্ত্র, ছাতা আর টিনের ফয়েল থেকে সৌর চুল্লী (তেমন ভাল কাজ করে নি যদিও!) আর ভাইবোনদেরকে ফাঁদে ফেলার জন্য বানিয়েছিলাম বেকিং প্যানের তৈরি অ্যালার্ম। আমি সবসময়েই আবিষ্কারক হতে চেয়েছিলাম, আর ম্যাকেন্‌জিও চেয়েছে আমি যেন নিজের স্বপ্নগুলোর দেখানো পথেই হেঁটে যাই।

সে সময় নিউ ইয়র্ক সিটির এক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এক দঙ্গল চমৎকার চৌকস লোকের সাথে কাজ করতাম আমি, আর আমাদের বসও ছিলেন দারুণ একজন মানুষ। ইন্টারনেটে বই বিকিকিনির জন্য একটা কোম্পানি খুলতে চাই আমি – বসকে জানালাম। সেন্ট্রাল পার্কে হাঁটতে হাঁটতে, অনেক সময় নিয়ে, মনোযোগ দিয়ে আমার কথা শুনলেন তিনি; তারপর বললেন, “ভাবনাটা শুনে খুবই ভাল মনে হচ্ছে, তবে আরও ভাল হত যদি এমন কারও মুখ থেকে শুনতাম যে এর মধ্যেই ভাল কোন চাকরি করছে না।” তাঁর কথায় যুক্তি খুঁজে পেয়েছিলাম আমি, তবু তিনি বললেন শেষ কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আমি যেন ৪৮ ঘণ্টা সময় নিয়ে ভেবেচিন্তে দেখি। চাকরি ছেড়ে দিতে হবে – সেদিক থেকে ভাবলে সিদ্ধান্তটা নিঃসন্দেহে কঠিন ছিল, তবে শেষমেশ আমি এই কঠিন কাজটাই করলাম। চেষ্টা করার পর ব্যর্থ হলে যে খুব হতাশ হয়ে পড়বো – এমনটা মনে হয় নি আমার। তাছাড়া সন্দেহ হয়েছিল, একদমই যদি চেষ্টা না করি তাহলে এই ব্যাপারটা হয়তো সবসময় তাড়িয়ে বেড়াবে আমাকে। অনেক ভেবেচিন্তে অবশেষে নিজের স্বপ্নের দেখানো অপেক্ষাকৃত অনিরাপদ পথে হাঁটার সিদ্ধান্তই নিয়েছিলাম আমি সেদিন, আর এই সিদ্ধান্ত নিয়ে আমি গর্বিতও।

আগামীকাল থেকে সত্যিকার অর্থেই নতুন একটা জীবনে পা দিচ্ছো তোমরা, যে জীবনকে একেবারে শুরু থেকে গড়ে তোলার ভার তোমাদেরই ওপর।

নিজের গুণগুলোকে কীভাবে কাজে লাগাবে বলে ভেবেছো তুমি? কেমন সিদ্ধান্ত নেবে?

কোন একটা কাজে থিতু হওয়াই কি তোমার লক্ষ্য হবে, নাকি নিজের স্বপ্নের পেছনে ছুটবে?

প্রচলিত রীতিনীতির ফাঁদে ধরা দেবে, নাকি বাঁধনছেড়াদের খাতায় নাম লেখাবে?

সহজ জীবন বেছে নেবে, নাকি সেবা আর উত্তেজনায় ভরপুর জীবন?

অন্যের সমালোচনায় পিছিয়ে আসবে, নাকি নিজের বিবেকের কথামত চলবে?

ভুল করলে সেটা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করবে, নাকি তার জন্য ক্ষমা চাইবে?

প্রত্যাখ্যানের ভয়ে হৃদয়টাকে গুটিয়ে রাখবে, নাকি প্রেমে পড়লে সাহস করে এগিয়ে যাবে?

সাবধানী হবে তুমি, নাকি ডানপিটে?

জীবন কঠিন হতে শুরু করলে সব ছেড়েছুড়ে দেবে, নাকি ধৈর্য ধরে কাজ করে যাবে?

অন্যদের সৃষ্টির ভুল ধরবে, নাকি নিজেই সৃষ্টি করবে?

সবাইকে নিচু করে নিজেকে বুদ্ধিমান প্রমাণ করতে চাইবে, নাকি উদার হবে?

একটা ভবিষ্যদ্বাণী করার দুঃসাহস দেখাই আজ: ৮০ বছরের বুড়ো হয়ে তুমি যখন কোন এক একলা বিকেলে নিজেকেই নিজের জীবনের গল্প শোনাতে বসবে, দেখবে – নিজের নেয়া সিদ্ধান্তগুলোর কথাই সবচাইতে গভীর আর অর্থবহ মনে হবে সেদিন। দিনের শেষে – আমাদের জীবনের সিদ্ধান্তগুলো মিলেই আমরা। সেদিন নিজেকে চমৎকার একটা গল্প উপহার দেবে – এই কামনা করি। ধন্যবাদ।

আজকের জেফ বেইজাস

মূল বক্তৃতার লিঙ্ক ((http://www.princeton.edu/main/news/archive/S27/52/51O99/index.xml))

আরও কিছু বক্তৃতার অনুবাদ পড়তে পারবেন এখানে

সামিরা সম্পর্কে

পীচ-গলা তরলে আটকে পা, দুঃস্বপ্ন অন্ধ দুই চোখে/ অসতর্ক হৃদয় পোষ মানে মিথ্যে বলার আফসোসে.../// প্রকাশিত লেখার কপিরাইট সংশ্লিষ্ট লেখক সংরক্ষণ করেন এবং লেখকের অনুমতি ছাড়া লেখা আংশিক বা পূর্ণভাবে কোন মিডিয়ায় পুন:প্রকাশ করা যাবে না।
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে অনুপ্রেরণা, অনুবাদ, ইতিবাচক, উদ্যোগ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি-এ এবং ট্যাগ হয়েছে , , , , , , , স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

43 Responses to বুদ্ধিমান কিংবা উদার হওয়ার গল্প – জেফ বেইজাস (অনুবাদ)

  1. ফিনিক্স বলেছেনঃ

    প্রিয় লেখাটার অনুবাদ করেছিস দেখে খুব ভালো লাগছে! :happy:
    প্রথম যখন পড়েছিলাম এত দুর্দান্ত লেখেছিল!

    এই লেখাটা পড়ে একটা জিনিস ভীষণভাবে নাড়া দিল।
    ফেবুতে কতই না সাধারণের সমালোচনা করি, আমি নিজেই করেছি আগে, মনে আছে।
    অথচ উদার হলে খুব কি ক্ষতি ছিল?

    বেশ কিছুদিন ধরে চেষ্টা শুরু করেছি।
    কখনো কোন স্ট্যাটাস/ পোস্ট অন্যরকম মনে হলে আমাকে অবশ্যই রিমাইন্ডার দিবি।

    এই পোস্টের একটা বাক্যই আমাকে বারবার নাড়া দেয়, প্রথমবার পড়ার পর থেকেই-
    * বুদ্ধিমান হওয়ার চাইতে উদার হওয়া কঠিন *

    এই কঠিনকে ভালোবাসতে চাই আমি! 😐

  2. নূসরাত রহমান বলেছেনঃ

    swapner pechhone chhutbo.

  3. শারমিন বলেছেনঃ

    দারুণ :love: :love:

  4. Aiman Hamid বলেছেনঃ

    অসাধারণ লেগেছে।
    বিশেষ করে এসেন্সের কোনো হেরফের হয়নি
    মাসাআল্লাহ

  5. মাধবীলতা বলেছেনঃ

    ভয়ানক অসাধারণ! একদম মনের কথাগুলোই যেন বললেন ভদ্রলোক। প্রিয়তে নিলাম। 🙂

    দিন শেষে নিজের সিদ্ধান্তগুলোই কাজে দেয় আসলে। ধৈর্য ধরে কাজ করে যাব, উদার হব আর অবশ্যই নিজের বিবেকবুদ্ধি কাজে লাগিয়ে কাজ করব ইনশাআল্লাহ। Really we are what we choose!!

    • সামিরা বলেছেনঃ

      সত্যি কথাগুলো আমি, আমরা কখনও যেন ভুলে না যাই। অনুবাদ করতে গিয়ে ভাবছিলাম আরও আগে কেন পড়ি নি, কিন্তু পরে মনে হল – ইচ্ছা থাকলে ভবিষ্যতেও কাজে লাগানো যাবে। 🙂
      ধন্যবাদ আপু।

  6. জ্ঞানচোর বলেছেনঃ

    ব্লগার সামিরার প্রথম একটা অনুবাদে অতি একটু সমালোচনার উপর দিয়ে গিয়েছিলাম যতদূর মনে পড়ে। কিন্তু, আজকের অনুবাদ পড়ে, আমি এক কথায় বিমুগ্ধ। যদি বলি, এটা ঠিক মৌলিক লেখার মতো ঝরঝরে হয়েছে, তাহলে একটুও অত্যুক্তি করা হবে না। বাক্যের পরতে পরতে আচানক সুন্দর সুন্দর শব্দের ব্যবহার চোখে পড়ার মত। অনুবাদ চাই এমনই। একেবারে স্ট্যান্ডার্ড ধরে প্রিয়তে নেব।

    রচনার ব্যাপারে কি আর বলবো? এরকম সফল মানুষদের আলোচনা পড়লেও ভাল লাগে, মনে হয়, অধরা স্বপ্নগুলোর শাখা ধরে আবার একটা নাড়া দিই। বইয়ের মতো কাগুজে একটা বিষয়কে ইন্টারনেটে নিয়ে এসে একটা ব্যবসা সফল প্রতিষ্ঠান দাঁড় করাতে হলে খুব কঠিন স্বপ্ন দরকার। দরকার, বড় ধরনের ত্যাগ মেনে নেয়া।

    খুব কঠিন একটা ঝড় চলছে এখন। যেখানে প্রতি আট বছরে বিজ্ঞানের জ্ঞান দ্বিগুণ হবার নীতিকে অক্ষুন্ন রেখে বিশ্ব এগিয়ে চলেছে, আমরা পড়ে আছি তৃতীয় বিশ্বের এক কোণায়। আমাদের এ অবস্থার কারণ, আমরা নিজেরাই এ ভাগ্য বাছাই করে নিয়েছি। আর আমাদের আরেকটি সতর্ক বাছায়ই পারে, এ অবস্থা বদলে দিতে।

    বক্তা লেখার এক স্থানে “নতুন জীবন তৈরীর” গবেষণা নিয়ে একটা কথা বলেছেন। সেই খবরটা পুরো পৃথিবী জুড়েই সাড়া তুলেছিল। ক্রেইগ ভেনটারের গবেষণার সেই সাফল্য নিয়ে খুঁজে বের করলাম গার্ডিয়ানের খবরটা । কত বিশাল বিশাল স্বপ্নই না দেখতে পারে মনুষ্য প্রজাতি। আর এ মানুষ উদার হবে না, তো কে হবে?

    • সামিরা বলেছেনঃ

      অনেক অনেক ধন্যবাদ। সমালোচনা না পেলে অনুবাদের উন্নতি করা কঠিন, খুবই কঠিন!
      “মনে হয়, অধরা স্বপ্নগুলোর শাখা ধরে আবার একটা নাড়া দিই।” – আমারও, ঠিক তাই মনে হয়।
      গার্ডিয়ানের খবরটা পড়ছি আমি এখন। পোস্টে যুক্ত করে দেব ইনশাআল্লাহ্‌। লেখায় রেফারেন্স বাড়াতে হবে – ভাল কথা মনে করিয়ে দিলেন। ভুলে যাই শুধু।

  7. একুয়া রেজিয়া বলেছেনঃ

    সামিরা ভাগ্যিস তুমি আর তোমার এই লেখাগুলো আছে।
    আমার পাথুরে, ব্যস্ত, আর আটপৌড়ে জীবনে তোমার এই অসম্ভব সুন্দর লেখাগুলো বৃষ্টিশেষের সকালের মত শান্ত করে দেয় আমাকে।

    অনেক ভালো থেকো তুমি।

    • সামিরা বলেছেনঃ

      অনেক অনুপ্রেরণা পেলাম আপু।
      “বৃষ্টিশেষের সকালের মত শান্ত” – আমার ওপর আপনার অদ্ভুত মসৃণ গল্পগুলোর প্রভাবও অনেকটাই এরকম।
      আপনিও অনেক অনেক ভাল থাকেন আপু। 🙂

  8. shiphat বলেছেনঃ

    “Cleverness is a gift, kindness is a choice. Gifts are easy — they’re given after all. Choices can be hard”
    “বুদ্ধি হচ্ছে জন্মসূত্রে পাওয়া, আর উদারতা অর্জিত গুণ। জন্মসূত্রে পাওয়া গুণগুলো ব্যবহার করা সহজ, কিন্তু গুণ অর্জন করাটা কঠিন।” – Jeff Bezos

    সামিরা……..বাংলায় আপনার অনুবাদটির স্বাদ এবং গন্ধ বোকা বোকা হয়নি।খুবি ভালো লাগলো পড়ে।নিজে পড়েছি,শেয়ার করে অন্যদের পড়তে দিয়েছি।যেন কেউ লিখাটা মিস না করে।

    ধন্যবাদ।আরও সুন্দর এবং ভাল মানের অনুবাদের অপেক্ষায় রইলাম। 🙂

    • সামিরা বলেছেনঃ

      অশেষ কৃতজ্ঞতা। 🙂

      আমি নিজে পাঠক সেজে বোকা ভাবগুলো দূর করার চেষ্টা করি, আপনারা ভুলগুলো ধরিয়ে দিলে আরও অনেক সহজ হয়ে যাবে পথচলা।

  9. অনাবিল বলেছেনঃ

    অনেক ভালো লেগেছে পড়ে…. আমার একটা কথা প্রায়-ই মনে হয় ইদানিং, আমরা সবসময় নিজেদের সম্পর্কে খুব বেশি বড় ধারণা করি, মনে করি আমি যা আছি ভালো-ই তো আছি, যা করছি খুব ঠিক-ই তো করছি…… আর এতে করে যেটা হয়, আমাদের মাঝে যে কিছু পরিরর্তন প্রয়োজন, কিছু গুণ অর্জন করা প্রয়োজন, সেটা ঠিক উপলব্ধি করতে পারি না…………

    “অসাবধানে তুমি প্রকৃতিদত্ত গুণগুলো নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লে অর্জিত গুণগুলোর ওপর তার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে বাধ্য।”—- এই ভুলটা অনেক সময় নিজের অজান্তেই হয়ে যায়, আমাদের অসাবঅধানতার জন্য… তাই সচেতন থাকার বিকল্প নেই…………

    বিল টেইলরের লিখাটা পড়েছো মনে হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউতে–its more important to be kind than clever…..

    • সামিরা বলেছেনঃ

      লেখাটা পড়েছি আপু, অনেক ভাল লেগেছে। এটা অনুবাদ করার সময়েও মনে পড়েছিল। 🙂

      বাকি কথাগুলোর সাথে পুরোপুরি একমত। নিজেকে নিয়ে সন্তোষ কিছু মাত্রায় হয়তো বা ভাল, কিন্তু সেটা যদি এগিয়ে যাওয়ার পথ রোধ করে দাঁড়ায় তবে এর চেয়ে খারাপ তো আর কিছু নেই।

  10. ইফতি বলেছেনঃ

    আপনার অনুবাদ খুব ভাল লাগে 😀

  11. নোঙ্গর ছেঁড়া বলেছেনঃ

    মন্ত্রমুগ্ধের মতন পাঠ বোধহয় একেই বলে। পুনর্বার পড়তে এলাম, এবারেও কখন শেষে পৌছে গেলাম টের পাইনি। সত্যি বলছি, ঝরঝরে অনুবাদ, খুব সুন্দর। সরবের একটা বিশেষত্বই হলো এমন দারুণ দারুণ লেখা পাওয়া যায়।

    অনুবাদ একটা শিল্প, এই ব্যাপারটা সেবা প্রকাশনীর বইগুলো পড়তে গিয়ে টের পেতাম, কয়েকজন বাদে সবারগুলো অখাদ্য লাগত। অনেক বছর পর আজ আবার মনে হল, এরকম লেখা পড়তে পেলে পাঠক হিসেবে শান্তি লাগে। অনেক ধন্যবাদ

    একটা কথাই মাথাতে গেঁথে আছে ভালোভাবে, আমাদের সিদ্ধান্তগুলোই আমরা… আসলেই!

    • সামিরা বলেছেনঃ

      আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ। 😀

      সেবা-র হাত ধরেই তো অনুবাদ পড়ার হাতেখড়ি। আমারও একই রকম, হাতে গোনা কয়েকজনেরটা ভাল লাগতো। তখন থেকেই বুঝেছি অনুবাদ দুর্বল হলে পড়তে পারা কত কষ্টের, আর তাই অনেক সময় নিয়ে হলেও চেষ্টা করি নিজেরগুলো থেকে দুর্বলতা দূর করার। যদিও জানি এখনও অনেক দূর যাওয়ার বাকি! 🙂

  12. বোহেমিয়ান বলেছেনঃ

    দারুণ একটা স্পীচ। বাকিদের মতো না। আমি জেফ বেইজস এর দারুণ ফ্যান। এই লেখার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

    সরব সামিরা বরাবরের মতই রকিং।

  13. সুবর্ণরেখা বলেছেনঃ

    উনার এই কথাগুলোই প্রায় সময়ই ভাবতাম । অনুবাদ করে খুব ভালো করছিস । যারা শুধু কথায় না, কাজেও প্রমাণ করে দেখায়, তাদের ভালো কথা পড়তে আমার সবসময়ই ভালো লাগে । Congratz! :clappinghands:

  14. Nadim বলেছেনঃ

    কমেন্ট না করলে গুনাহ হত। এত ভালো লিখতে পারো আপু আমি তো পুরো ফ্যান হয়ে গেলাম 🙂

  15. Nadim বলেছেনঃ

    অনুবাদ তো কত মানুষই করে। এরকম হয় না। আমি কিন্তু আরও লেখা পাওয়ার আশায় কমেন্ট করলাম। হতাশ করবেন না আপু। কমেন্ট করা খুবই বিরক্তিকর একটা কাজ। লোভে পরে করলাম।

  16. জনৈক বলেছেনঃ

    উদার হওয়া আসলেই কঠিন…

  17. বৈরাগী বলেছেনঃ

    এতো সুন্দর বক্তৃতা ও সুন্দর অনুবাদে আমি কী মন্তব্য দিব???!!! 🙁
    আমার সীমারেখার বাইরে…

    স্বপ্নের পেছনে ছুটব

    বাঁধনছেড়াদের খাতায় নাম লেখাব

    সেবা আর উত্তেজনায় ভরপুর জীবন বেছে নেব

    ডানপিটে হব
    ইনশাল্লাহ্
    আর বাকি গুন গুলো ধীরে ধীরে অর্জন করতে ভুলে যেন না যাই তাই লেখাটা প্রিয়তে নিব।

    (এক নিঃশ্বাসে পর পর তিন বার টানা পড়লাম )

  18. অবন্তিকা বলেছেনঃ

    বুদ্ধিমান হওয়ার চাইতে উদার হওয়া কঠিন!
    অনেক ভালো লাগছে কথাটা। আর তোমার অনুবাদের কথা না বললাম। 🙂

  19. নিলয় বলেছেনঃ

    * বুদ্ধিমান হওয়ার চাইতে উদার হওয়া কঠিন *

    দারুণ লেখা।

  20. মেহদী বলেছেনঃ

    ভালো যদি বলি তবে
    জানি হবে ভুল
    ধন্য ধন্য লেখাখানি
    ধন্য জাতি কুল। :guiter:

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।