প্রতিদিন তোমাকে মুঠোফোনে কতোশত বার্তাই না লেখতাম ! তার কিছু জমা হতো ড্রাফটে, কিছু চলে যেত ট্র্যাশ বক্সে। হাতে গোনা দু-একটাই হয়তো শেষ পর্যন্ত তোমার ইনবক্স সমীপে যাত্রার সুযোগ পেতো ! কিন্তু কোনোদিনই তুমি সেগুলোর কোনো উত্তর দেয়ার প্রয়োজন বোধ করতে না ।
সম্ভবত পড়ার আগেই সেগুলো তোমার মুঠোফোনের ট্র্যাশ বক্সে ঠাঁই করে নিতো । মোবাইল অপারেটরের কাছ থেকে আসা বিরক্তিকর টেক্সটগুলো না পড়তে প্রায়ই অনেকে তার মুঠোফোনে এমন একটা সুবিধা ব্যবহার করে দেখেছি। অনুভূতিহীন তেমনই এক প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমার অনুভূতিগুলোকে কি ভীষণ অবহেলাই না তুমি করেছ !
ভার্সিটি থেকে ফেরার পথে আজ অনাকাঙ্খিত ভাবে তোমার নাম্বার থেকে আসা ক্ষুদে বার্তাটা দেখে কিছুক্ষনের জন্যে তাই হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলাম।আকুল আনন্দে চলতে থাকা তিন চাকার বাহনটা থামিয়ে নেমে গেলাম খোলা রাস্তায় …।
পৃথিবী ভরা মানুষের সামনে দু হাত বাড়িয়ে অবিরাম ধারায় নেমে আসা বৃষ্টিতে অসম্ভব ভালো লাগা নিয়ে ভিজতে লাগলাম। রাস্তার মানুষগুলো হয়তো আমাকে পাগল ঠাউরালো!কেউ কেউ মজা পেয়ে পথচলা ভুলে দাঁড়িয়ে গেলো আমার কান্ড দেখতে।
একসময় মনে হলো, পড়ে দেখি- কষ্ট করে কি লিখেছ ক্ষুদে বার্তায়। মুঠোফোনের কোয়ার্টজ কাঁচের স্ক্রীণ ভেদ করে বৃষ্টির পানি ঢুকে যাওয়ার চিন্তাকে কাল বৈশাখের ঝড়ে উড়িয়ে দিয়ে মুঠোফোনটা আবারও বের করলাম পকেট থেকে …
খুনী এবং পাগল বাদে এই ধরাধামে প্রতিটা মানুষেরই ভালোবাসার কেউ না কেউ থাকে।তোমারও তেমন কেউ আছে ! ক্ষুদে বার্তায় এই অসম্ভব রকম গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটিই খুব সাধারণ ভাবে তুমি আমাকে দিয়েছ!
প্রচন্ড অবসাদে কিছুক্ষনের জন্যে পুরো পৃথিবীটা স্থাণুর মতো স্থবির হয়ে এলো। প্রতিটা ব্যস্ততম রাস্তার পাশে, গুলশান-২,শাপলা, পলাশী ,স্টেশন রোড কিম্বা জিইসি মোড়গুলোতে আমার মতো অবসাদগ্রস্ত পথচারীদের জন্যে বেঞ্চের অভাব আরো একবার তীব্র ভাবে অনুভব করতে লাগলাম আমি।
………………
স্বৈরশাসকের আমলে আনা রাস্তার সোডিয়াম লাইটগুলো বোধহয় দিন দিন আরো ফ্যাকাশে হয়ে আসছে। ফ্যাকাশে সেই আলোয় পিচঢালা শহুরে বৃষ্টিস্নাত রাস্তা ধরে অবসাদগ্রস্থ আমি এগিয়ে চললাম । ঝিরিঝিরি বৃষ্টির ফোঁটাগুলো ঝাপসা হয়ে আসা আমার দৃষ্টি আরো ঝাপসা করে দিতে লাগলো ক্রমশ। যতো কষ্টই হোক, পুরুষমানুষের প্রকাশ্যে অশ্রুবিসর্জন বড় বেমানান। এজন্যে তাকে খুঁজতে হয় লোকচক্ষুর আড়াল কিম্বা এমন বর্ষণমুখর কোনো সন্ধ্যা, যখন বৃষ্টির জল আর চোখের জল মিলেমিশে একাকার হয়ে আলাদাভাবে দেখতে পাওয়ার কোনো সুযোগ থাকেনা …
শত ক্ষুদে বার্তার উত্তরে আজ তুমি আমাকে একটা বার্তা পাঠিয়েছ !
আজ যে আমার বড় আনন্দের দিন !
ক্ষত বিক্ষত রাস্তার খানা-খন্দ উপচে পড়া এই আনন্দ আমি কোথায় রাখবো, বলতে পারো ?
________________________________________________________________________
পটভূমি (!) : ভার্সিটি যাওয়া-আসার পথে ভয়াবহ ট্র্যাফিক জ্যামে বাসে বসে থাকতে থাকতে প্রায়ই আমার মনে হয়- জীবন বুঝি থেমে গেলো রাস্তায় ! জীবনের ঐ থেমে থাকা মুহুর্তগুলোতে মাথায় অসংখ্য লেজহীন চিন্তাভাবনা উঁকিঝুকি মারে।
এই লেখা তেমনি এক লেজ-মাথাহীন চিন্তার ফসল। কারো জীবনের কোনো ঘটনার সাথে এর মিলে যাওয়া নিতান্তই কাকতাল মাত্র !
লেজ মাথাহীন লেখা!! হাহাহা বড়ই মজা পেলুম ছ্যাঁকা খাওয়া গল্প যদিও। :happy:
অলস মস্তিষ্ক শয়তানের বাসা ,
সেথা ছ্যাঁকা খাওয়া গল্প তৈরী হয় খাসা ! 😛 😛 😛
লেজ মাথাহীন লেখা খারাপ লাগে নি। 🙂
ভালোবাসা, অপেক্ষা, থমকে যাওয়া, নোনা জল, আঁকড়ে ধরা এতটুকু আনন্দ-এই তো জীবন।
ধন্যবাদ ভাইয়া । 😀 😀 😀
চমৎকার লেখনী!
লুকিয়ে লুকিয়ে কান্নাকাটি করার জন্য বৃষ্টি আসলেই ভাল কাজে দেয়। 🙁
Crying in the rain makes them comfortable
Not because none can see the drops of their tears,
But because they feel like they have somebody else –
to cry with them.
কথাটা খুব সুন্দর তো। কোন এক স্ট্যাটাসে মেরে দেব!
লেখাটা বেশ লেগেছে। যদিও আরেকটু গোছালো হতে পারত। তাও তো লেজে গোবরে হয় নি 😛
আমি সেই স্ট্যাটাসে গিয়ে লাইক মেরে আসবো ! :beerdrink:
বেশ ভালো লেগেছে 😀
ধন্যবাদ 🙂 🙂 🙂
লেজহীন চিন্তাভাবনা আরও আসতে থাকুক।
একসময় এইসব চিন্তাভাবনা থেকেই সবুজ বীজের অঙ্কুরোদগম হবে। :beshikhushi:
আচ্ছা, নোকিয়ার ফকিরা মোবাইলে কি ঐ সিস্টেম নাই?
ঐ যে বললি, মোবাইল অপারেটর থেকে আসা মেসেজ পড়ার আগেই ট্র্যাশবক্সে নাকি ফেলে দেয় অনেকে। আমার অমন একটা কিছু খুব দরকার। :crying:
:happy: :happy: :happy:
নাই মনে হয় । স্যামসাং, মটোরোলায় থাকে বেশিরভাগ । তোমার মতো আমারও দরকার এইরাম একটা মুপাইল ! 🙁 🙁 🙁
🙁 🙁
🙁 🙁 🙁