কিনাদি’স স্পেশাল আগডুম বাগডুম পোস্ট-২

ছোটবেলায় কত কি আজগুবি জিনিস চিন্তা করতাম আর কত আজগুবি কাজ করতাম মনে পড়লে মাঝে মাঝে একা একাই হাসি।সেগুলোর কয়েকটা শেয়ার করার লোভ হলো খুব। 😀

কারেন্ট চলে গেলে দাদুবাড়ির দোতলায় জানালার কাছে বসে থাকতাম আর রাস্তার দিকে তাকিয়ে থাকতাম। অনেকের হাতে জ্বলন্ত কয়েল দেখা যেতো। অন্ধকারে মশা বেশী তো তাই লোকজন কয়েল নিয়ে চলাচল করছে। 😯 আসলে অন্ধকারে শুধু আগুনটুকুই দেখা যেতো। আর এটা যে কয়েল না সিগারেট, এটা বুঝতে আমার অনেক দিন সময় লেগেছিল। 😳
দাদুবাড়িতে সিড়ির নিচের ঘরে অনেকগুলো পাটখড়ি রাখা ছিলো। এগুলো কি কারণে ছিলো মনে নেই। আমরা মনের আনন্দে পাটখড়ি নিয়ে খেলতাম, এবং তা অবশ্যই বড়দের আড়ালে। কারণ বড়রা সুজোগ পেলেই মনের আনন্দে ঝাড়ি দিতে পছন্দ করে। আমরা কাজিনরা সবাই একদিন কি কি জানি খেলছিলাম, এরমধ্যে একজন একটা কাঠি নিয়ে সিগারেট খাওয়ার ভঙ্গি করলো। এটা আমার মাথায় ঢুকে রইলো। রাতে আমি একটা পাটখড়ি ভেঙ্গে নিয়ে এক দিকে আগুন জ্বালালাম সিগারেটের মতো করে। তারপরে এক কোণায় গিয়ে একটা সুখটান। 😛 ওরে বাপ্‌রে! সঙ্গে সঙ্গে কি কাশি! কাশতে কাশতে দমবন্ধ হবার যোগাড়। সেই থেকে দুই চোখে সিগারেট দেখতে পারিনা। :nono:
ছোটবেলায় পরেরদিন বলতে ভাবতাম ২৪ ঘন্টা পর। 😯 মানে আজকে বিকেলে যদি বলি যে কালকে এই কাজটা করবো,পরেরদিন বলতে রাত ১২টার পর না, আমার কালকে হতো পরেরদিন বিকেলের পরে।আর ভাবতাম ১টা বাজে মানে সবচেয়ে কম বাজে। একদিন ভাইয়া বিকেলে বাইরে যাচ্ছে, আম্মা বললেন তাড়াতাড়ি চলে এসো। আমি বললাম একটার মধ্যে চলে আসবা। ভাইয়া দন্ত বিকশিত করে একটা হাসি দিয়ে বললো আচ্ছা, রাত একটার মধ্যেই আসবো। =))

ছোটবেলায় একটা বই ছিল যেখানে একটা বনভোজনের ছবি ছিল। একটা বড় হাড়িতে একটা মেয়ে রান্না করছে, চারপাশে আরও অনেক ছেলেমেয়ে সবাই কোন না কোন কাজ করছে। আর এক কোণায় লেখা, “দশে মিলে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ”। আমি ভাবলাম, কোন কাজে পুরষ্কার হিসেবে ‘হাড়ি’ হচ্ছে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা, কিন্তু সবাই মিলে কাজ করে ‘হাড়ি’ জিতলেও লজ্জার কিছু নাই। :nono:
ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত বাংলা বই এ একজন করে বীরশ্রেষ্ঠ এর সম্পর্কে লেখা থাকতো। শেষে লেখা থাকতো “ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে তাদের নাম লেখা আছে”। আমি অনেকদিন পর্যন্ত ভেবেছি ইতিহাস হলো অনেক বড় আর মোটা একটা বই। যেখানে ভালো ভালো মানুষের নাম স্বর্ণ দিয়ে লেখা থাকে।  :rollinglaugh:

 

কিনাদি সম্পর্কে

মাথা নষ্ট পাবলিক
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে বিবিধ-এ। স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

19 Responses to কিনাদি’স স্পেশাল আগডুম বাগডুম পোস্ট-২

  1. ফিনিক্স বলেছেনঃ

    কোপাকুপি! :rollinglaugh:

  2. স্বপ্ন বিলাস বলেছেনঃ

    “সবাই মিলে কাজ করে ‘হাড়ি’ জিতলেও লজ্জার কিছু নাই।”

    “ইতিহাস হলো অনেক বড় আর মোটা একটা বই। যেখানে ভালো ভালো মানুষের নাম স্বর্ণ দিয়ে লেখা থাকে।”

    সেইরকম হইসে। হাসতে হাসতে শ্যাষ 😀 :rollinglaugh:

  3. বোহেমিয়ান বলেছেনঃ

    হাহা! =))

    ইতিহাস বই এর ব্যাপার আপনি একা না…আরও অনেকেই এমন ভাবত। আমি ভাবতাম কিনা সেটা বলব না 😛

    “হাড়ি জিতলে লজ্জার কিছু নাই”

  4. ভাবের পাগল বলেছেনঃ

    😀 হাড়ি জিতি নাহি লাজ…… এটা চরম হইসে। 😀

  5. শিশিরকণা বলেছেনঃ

    সেইরকম স্পেশাল কোপাকুপি হইসে।
    “ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে তাদের নাম লেখা আছে…. ” হা হা হা হা, চরম হইসে। 😡 😀

  6. কিনাদি বলেছেনঃ

    স্পেশাল থ্যাংকু 🙂

  7. কৃষ্ণচূড়া বলেছেনঃ

    ছোটবেলায় খুবই আজব আজব চিন্তা আর কাজ করতাম!
    নিজের ছোটবেলায় চলে গেলাম মনের অজান্তে।

    লেখাটা খুব ভালো লেগেছে কিনাদি 😀

  8. সামিরা বলেছেনঃ

    হাহা!
    ছোটবেলায় সবাই এরকম অদ্ভূত চিন্তাভাবনা করতাম মনে হয়।
    এক ফ্রেন্ডের সাথে গল্প করতে করতে একবার বলাবলি করছিলাম দুজন মিলে,
    ছোটবেলায় ইনোসেন্স থাকে, কিন্তু সেন্স থাকে না। 😛
    আর বড়বেলায় সেন্স থাকে, কিন্তু ইনোসেন্স থাকে না। 🙁

  9. মুবিন বলেছেনঃ

    আপনার ছোটবেলায় দেখি ব্যাপক আগডুম বাগডুম কাহিনী আছে 🙂
    আমার কিছু নাই ক্যান???
    আমি তো কিছুই মনে করতে পারছি না।

    পোস্ট বরাবরের মতই ভালো লেগেছে।
    আগডুম বাগডুম-১ এর থেকেও ভালো। :clappinghands:

  10. গাঙচিল বলেছেনঃ

    “দশে মিলে করি কাজ, ‘হাড়ি’ জিতি নাহি লাজ”- ইহা আমি কী দেখলুম!!!! =))
    কোপাকুপি হইছে! আসলেই হাড়ি জিতলে লজ্জার কিছু নেই। :nono:
    :balancin: 🙄

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।