‘ঈদ মুবারক’ অর্থ হল ‘ঈদ বরকতময় হোক’।
আপনার সবকিছু বরকতময় হোক, বৃদ্ধি পাক- বৃদ্ধি পাক জ্ঞান, শান্তি, আনন্দ, সুস্থতা, রোজগার- সবকিছু।
সত্যিই ভাগ্যের কী প্রহসন! ‘বৃদ্ধি’র গণ্ডি মুখের বুলি হয়েই বেশিরভাগ সময় আটকে থাকে। হাতে-কলমে আর প্রাণ পায় না। আজকের যুগে ঘুম থেকে উঠে নামাজ-কোলাকুলি-কোরবানির ব্যস্ততা সেরে ঝোলের ভেতর কব্জি ডুবিয়ে মাংস চিবানো, ফেসবুকে বসে দুটো স্ট্যাটাস দেয়া, তারপর হয়ত আরাম করে একটা বিশাল ঘুম দিয়ে উঠে ঘুরে বেড়ানো কিংবা টিভিতে বিজ্ঞাপন দেখার ফাঁকে ফাঁকে টুক করে নাটকের কিছু ক্লিপ দেখে ফেলা; এই তো ঈদ! বৃদ্ধি কেবল স্ট্যাটাসের লাইক আর কমেন্টেই সীমাবদ্ধ থাকে।
হ্যাঁ আরও অনেক ধরণের বৃদ্ধির চেষ্টা করা হয়।
সিটি কর্পোরেশনের কর্মী ব্যস্ত থাকে একটি দিনের আয় বন্ধ না হবার আশায়, ঈদে কোরবানি দেয়া পশুর মাংস খেয়ে যখন সবাই তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতে ব্যস্ত, তখন সেই কর্মী একটি দিনের আয় বৃদ্ধির চেষ্টায় ফেলে যাওয়া আবর্জনা ঘাঁটতে ঘাঁটতে ক্লান্ত।
হয়ত মোড়ের কসাইটা নিজের ঘরে কোরবানি হল কিনা তার মিথ্যে হিসেব না রেখে অন্যের ঘরে ঈদের বরাদ্দ খাদ্য বৃদ্ধিতেই ঘাম ঝরাতে মগ্ন।
অথবা ঐ রাস্তার ধারের মানুষগুলো, যাদের কাছে খাদ্য হিসেবে মাংসের আলাদা কোন দর নেই, শুধুই বিলাসিতা মাত্র। তাই সারাদিন ভিক্ষে করে ফেরা মাংসের ঝুলিটা আবার ঐ হর্তা-কর্তাদের কাছেই বিক্রি করে সঞ্চয়ের টাকা বৃদ্ধিতে মশগুল তারা।
কিংবা সেই ছোকড়া বাস কন্ডাক্টর, তারস্বরে চিৎকার করতে করতে ৫০জন যাত্রীর জায়গায় মাত্র ৫জনকে তুলতে গলা ফাটিয়ে ফেলে যে। তারপর জনপ্রতি দু’চার টাকা বেশি নিয়ে অসুস্থ মায়ের জন্য বা বিবাহযোগ্য বোনের জন্য খরচের খাতায় জমার পরিমাণটাকে আরেকটু বৃদ্ধি করে আনন্দের হাসি হাসে।
হয়ত কোঁচকানো চামড়ার বৃদ্ধ রিকশাওয়ালাকে দেখে রাখবার কেউ নেই, নেই সন্তান বা কোন আপনজন। হয়ত ফেলে রেখে চলে গেছে বোঝা ভেবে। পেটের ক্ষুধা মেটাবার আশায় অর্থ বৃদ্ধির নগ্ন দৌড় প্রতিযোগিতায় তাই নাম লেখায় তার মত মানুষও।
ঈদ বরকতময় হোক, বৃদ্ধি পাক।
যাদের বাবা-মা নেই, সেই শিশুদের ঈদ বৃদ্ধি পাক কারও করুণায়।
বৃদ্ধাশ্রমে শেষ দিনগুলো গুনতে থাকা মানুষের ঈদ বৃদ্ধি পাক চোখের জলে।
বিকল্পভাবে সক্ষম মানুষের ঈদ বৃদ্ধি পাক আকাশ ছোঁবার স্বপ্নে।
ছেলেটি গ্রামে ঘুরতে গেল, আনন্দ করবে বলে। পরিবারের সাথে সময় কাটাবে বলে। পরিবারকে ঈদে দিয়ে গেল সমুদ্রের মত নোনা জলধারা। আনন্দ করতে গিয়ে পুকুর ঘাটে পা পিছলে যখন পানিতে পড়ে গেল, তখন আশেপাশে কেউ নেই উদ্ধার করার। পরিবারটির ঈদ বৃদ্ধি পেল শোকের কালো রঙে।
মেয়েটি জানে না কোরবানি কী। মঙ্গার পর থেকে সেই অঞ্চলের কেউ দেখে নি ঈদের রূপ, কেউ জানে নি আনন্দের বৃদ্ধি কেমন করে হয়।
পাশের বাড়ির ভাবীর এক ছোট্ট দুর্ঘটনায় অ্যাবরশন হয়ে গেল, ঈদের দিনেই। পরিবারের সবাই উদ্বিগ্ন। ভাবীর সামনে যেতে পারি নি, কী বলতে পারতাম তাকে? যে মা দিনের পর দিন গর্ভে তার স্বপ্নকে ধারণ করে ঈদের দিন সন্তানহারা হয়, তাকে আমি কী বৃদ্ধির আশা দেখাতে পারি?
বান্ধবীর বাবার ক্যান্সার প্রায় মাসখানেক হল। ঈদের দিন বলতে পারলাম না তাকে কিছুই। পারিবারিক অবস্থার কথা চিন্তা করে ঠিক কী বৃদ্ধির শুভকামনা তাকে জানাব সেটা ভাবতে ভাবতেই দিন পেরিয়ে গেল।
এই ঈদেই সাফ স্বর্ণজয়ী শ্যুটার শিশু কন্যাসহ চলে গেলেন না ফেরার দেশে। দেশে আরও কিছু মেধাবী মুখ ঝরে যাবার সংখ্যা বৃদ্ধি পেল।
ঈদ বরকতময় হোক, বৃদ্ধি পাক।
সিনেপ্লেক্সের থ্রি-ডি মুভিতে জাঁকজমক বৃদ্ধি পাক।
হুমায়ূন আহমেদের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও সিনেমা কাটছাট করে টিভি চ্যানেলের ব্যবসা বৃদ্ধি পাক।
ফেসবুকে ‘বোরিং ঈদ’ লিখে দেয়া স্ট্যাটাসের সংখ্যা বৃদ্ধি পাক।
বাহু পর্যন্ত মেহেদির নকশায় মোড়া কাভার ফটোতে লাইকের পরিধি বৃদ্ধি পাক।
ডেটিং এর সময় পকেটে কাগজের নোটের উষ্ণতা বুঝবার অনুভূতি বৃদ্ধি পাক।
ঈদে আপনার সবকিছু বৃদ্ধি পাক, বরকতময় হোক।
সবাইকে ‘ঈদ মুবারক’।
কৃতজ্ঞতা:
মুশফিকুর রহমান আশিক
মন খারাপ হয়ে যায়। চারদিকে এমন সব কিছু দেখে অসহায় হয়ে যাই! শুধু কিছু করার থাকে না। 🙁
করার থাকে না কে বলল?
এই পোস্টে দুটো পার্ট আছে। একটাতে করার অনেক কিছু আছে; আরেকটা দুর্ঘটনা, কিছুই করার নেই সেখানে।
তুই আবার পড়, তারপর ভেবে বল, কী কী করা যায়, কোন কোন ক্ষেত্রে।
একটু চিন্তা করলেই বের করতে পারবি, দেখ।
চেষ্টা করলে অনেক কিছুই করার থাকে-এটা বুঝি! 🙂
সত্যিই তাই।
অন্তত কসাই, বাস কন্ডাক্টর, রিকশা চালক এদের কষ্ট তো আমরা কিছুটা লাঘব করতে পারি ঈদের দিন, তাই না?
সোজা বাংলায়, ঈদের আনন্দ ভাগ করে নেয়া। ওরা তো আমাদের বাসায় এসে কোরবানির মাংস দিয়ে এক প্লেট ভাত খেতে চায় না, অল্প কিছু টাকা বেশি চায় পারিশ্রমিক হিসেবে। সেটুকু করার ক্ষমতা তো আমাদের আছে, তাই না?
পরের বছর থেকে চেষ্টা চালাবো। 🙂
শুনে খুব ভালো লাগল। :beshikhushi:
এত সংক্ষেপে, এত সুন্দর করে মনের অনুভূতিগুলি লিখে ফেললি!
স্যালিউট! :huzur:
স্যালুট বলে লজ্জা দিও না আপু। 🙁
ধন্যবাদ পড়ার জন্য, আরও বেশি কমেন্টের জন্য।
খুবই বাস্তব কিন্তু মন খারাপ করে দেয়া লিখা।
আমরা আসলে অনেক ইজি গোয়িং হয়ে গেছি । বেশি দূর ভাবতে চাইনা।
কিন্তু ভাবতে শেখানোর জন্যই এই পোস্ট দেয়া।
মানুষ যদি একটু কষ্ট করে ভাবে, তাহলেই লেখাটা সার্থকতা পায়।
অসম্ভব ভালো হইছে লেখাটা। ঈদের দিন আমি কসাইদের দেখে ভাবছিলাম এদের কি ঈদ বলে কিছু নাই? যেই সব ফকির মিসকিন মাংশের জন্য দৌড়াদৌড়ি করছিলো তাঁদের?
হয়ত অনন্ত/শাকিব/ রুমি আমাদের চিন্তা দখল করে থাকে…এরাও একটু জায়গা পেতে পারে…
ধন্যবাদ পোস্ট এর জন্য
কসাই, নিম্নবিত্ত, বাস কন্ডাক্টর আর রিকশা চালকদেরকে আমাদের সবার ঈদ আনন্দের চিন্তায় একটু জায়গা করে দেয়ার জন্যই এই পোস্ট দেয়া।
তোমার মত করে অন্যরাও নিজেদের মাথায় এদের ঠাঁই দিলে সত্যিকারের ঈদ পালন করা সম্ভব হবে একদিন।
এইসব ঘটনা তো আজকাল কেউ দেখেও দেখে না, বুঝেও বুঝে না…অন্যের কথা ভেবে নিজের মন খারাপ করতে আজ আর রাজি না কেউ…সত্যিই ভাগ্যের কী প্রহসন!!!
তুমি কেন মনে করিয়ে দিতে গেলে বলোতো?
কোন কোন মানুষকে মনে করিয়ে দেয়ার দায়িত্ব নিতে হয়।
সবাই মিলে একসাথে ভুলে গেলে চলবে কীভাবে?
আজকাল তো যার যার ব্যাথা তার তার…এইটাই নিয়ম…নিজের জ্বালা নিয়ে দিন পার…অন্যের কথা ভাবার টাইম কই!!!
জানি না কতটুকু কি করতে পারবো…কিন্তু চেষ্টা তো করাই যায় এই মানুষগুলার মুখে একটু হাসি ফুটানোর।
কথাগুলো এইভাবে মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ আপু।
কিন্তু চেষ্টা তো করাই যায় এই মানুষগুলার মুখে একটু হাসি ফুটানোর।>> চেষ্টাটাই দরকার আসলে। এই চেষ্টা করার ইচ্ছা জেগেছে বলে আমি-ই উল্টো ধন্যবাদ জানাচ্ছি। 🙂
আপি, ওই ছুটোছুটি করা মিসকিনদের কষ্ট হয়ত বুঝবো না, কিন্তু স্বজন হারিয়ে ঈদ ভুলে আর দশটা দিনের মতো চোখের জলে ভাসবার মতো দুর্ভাগ্য আমাদের হয়েছে। ওই ফাঁকা জায়গাটুকু কখনোই পুরন হবার নয়। 🙁
অনেক সুন্দর হয়েছে পোস্টটা 🙂
ঐ ফাঁকা জায়গার ক্ষতটা বিধাতা প্রলেপ দিয়ে মুড়িয়ে দিক- এই প্রার্থনা করি।
এই কথাগুলি বহুবার ভেবেছি। কারও কারও কাছে ঈদের দিনের আলাদা কোন অর্থ নেই। অথবা হয়তো আছে, অন্যদিনের মত কাজগুলি এইদিনেও যখন করতে হয়, তখন হয়তো অন্যরকম কষ্ট হয় ঈদের সারাটা দিন জুড়ে।
গতরাতে একটা লেখা নিয়ে বসেছিলাম, সেখানেও মুরসালিনকে নিয়ে কয়েক লাইন লিখেছি। অনেক সময় অন্যের কষ্টের কথা লিখতে গেলেও অপরাধী লাগে কেমন, মনে হয় যে ‘কষ্ট বেচে খাই’, অন্যের কষ্ট।
ঈদ মানে সত্যিই যদি ‘আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার দিন’ হত! কখনও যদি হয়!
‘কষ্ট বেচে খাই’ শব্দগুলো পড়া মাত্র বিশাল এক ধাক্কা খেলাম।
আমি কারও কষ্ট বেঁচে খেতে চাই না। এই পোস্টের সবগুলো কষ্ট শুধুমাত্রই আমাদের অনুভূতিকে আরেকবার নাড়া দেবার জন্য, নতুন করে ভাবতে শেখাবার জন্য। তার বাইরে কিছু নয়।
তোমার কথা বলি নি। আমি নিজে লিখতে গেলে মাঝে মাঝে ওরকম মনে হয়, সেটা বলেছি। আমি আর তুমি তো এক না! 🙂
কিন্তু আমার লেখা পড়েও কি এরকম মনে হচ্ছে?
কষ্ট বেচে খাওয়ার মত কিছু? 🙁
তোর এইরকম মনে হবার কারণ নাই। তুই অনেক ভালো, ভালো মানুষের এইটা মনে করা উচিত না। লেখা না পড়েই আমি বলে দিলুম।
আগেরবারের টাইপোর জন্য দুঃখিত।
ভুলে চন্দ্রবিন্দু পড়ে গেছে। 🙁
না! আমি নিজে মানুষের কষ্ট নিয়ে কিছু লিখলে তখন মনে হয়। এইজন্য ঐ ধরনের লেখাগুলি পাবলিশ করতে ইচ্ছা করে না, তার মানে এই না যে কখনও করবো না। এইটা তো জাস্ট একটা এলোমেলো চিন্তা। মানুষ তো যে কোন কিছু নিয়েই লিখতে পারে! 🙂
পরিবারটির ঈদ বৃদ্ধি পেল শোকের কালো রঙে।
ঈদের দিন দুপুরে আপুর চাচা শ্বশুর মারা গেছেন।
ইন্নালিল্লাহ।
শোকের কালো রঙ ধূসর হতে হতে মিলিয়ে যাক- প্রার্থনা রইল।
লজ্জা লাগতেছে, ভীষন লজ্জা লাগতেছে।
লজ্জা লাগার কিছুই নাই রে।
আমি তো বলে দিলাম, এখন থেকে ভাবলেই চলবে।
আগে কেন ভাবি নাই- এটা মনে করে কষ্ট পাওয়াটা বৃথা। সময় অপচয় করা ছাড়া আর কিছুই হবে না। তারচেয়ে এখন থেকে কাজ শুরু করাটা তুলনামূলক ভালো।
🙁 🙁
মন খারাপ করলে শুধু হবে?
কাজ করতে হবে তো অনেক।
hmmmm
😳
ইসলামের অন্যসব বিষয়ের মত ঈদের প্রকৃত অর্থও আমরা ভুলে গিয়েছি…
আবার মনে করিয়ে দেয়ার জন্যই আমার এই পোস্ট দেয়া।
ঈদটা খুব বেশি নিজকেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছে আমাদের, শুধু ঈদ না, আমরা প্রত্যেকেই, আসলে নিজেরটুকু, একান্তই ব্যক্তিগত বিষয় ছাড়া আর ভালো লাগে না অন্য কিছু নিয়ে ভাবতে, খুব সত্যি কথাগুলো লিখেছেন, ঈদ সবার একরকম যায় না, এই দূর থেকে দেখা জীবন, আর জীবনের সাথে মিলিয়ে দেখা জীবনের ভীষণ পার্থক্য……
একটু ভাবনা, একটু চিন্তা, একটু নিজের গণ্ডী থেকে বেরিয়ে আসা, পালটে দিতে পারে অনেক কিছুই…
ধন্যবাদ নতুন করে আরো কিছু ভাবতে শেখানোর জন্য……
একটু ভাবনা, একটু চিন্তা, একটু নিজের গণ্ডী থেকে বেরিয়ে আসা, পালটে দিতে পারে অনেক কিছুই…>> সত্যিই তাই। আমিও এটাই বিশ্বাস করি।
মন্তব্যের জন্য…থাক, ধন্যবাদ না জানালেই না ক্ষতি কী? 😐
ধন্যবাদ না জানালেই বা* ক্ষতি কী?
টাইপোর জন্য দুঃখিত। 🙁
আমাদের আশে পাশের যেকটা বিষয় তুচ্ছ বলে চোখে পরে না, তা দেখার জন্য সুধুই একটা সাধারন ও মামুলি চোখ দরকার, যা আমাদের অনেকেরই নেই…
তাই কিছু সাধারন চোখদের আজ ধন্যবাদ জানাই। 🙂
আমার লেখা যারা পড়েন, তাদের চোখগুলোও খুব সাধারণ।
তাই আমার সাধারণ চোখে দেখা সাদা ব্যাপারগুলোকে সেইসব সাধারণ চোখেও প্রকাশ পেতে দেখলে ভালো লাগে, লেখা সার্থক মনে হয়।
আমার সাধারণ চোখের পাঠকদেরও সেজন্য কৃতজ্ঞতা জানাই। 🙂
লেখা পড়তে দেরী হয়ে গেলো… কিছু মনে করিস না…
তোর অনুভূতি আর দৃষ্টি ভঙ্গীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাই……
কী যে বলো না তুমি আপু।
তোমার লেখাটাও আজ পড়ব আমি। কত্ত দেরি করে ফেললাম।
আমাকে আবার মাইর দিও না কিন্তু! 🙁
ঈদের সময়ের লেখাটা পড়তে দেরি হয়ে গেল। তারপরেও এই লেখায় মন্তব্য করা দরকার, তাই করব।
জীবনের চলার পথে কী বিশাল পার্থক্য দুই পাশে, সেটা এই লেখা পড়তে পড়তে যেন অনুভব করছিলাম। বোধগুলো যদি কপিপেস্ট করে ফ্ল্যাশ ড্রাইভে করে অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া যেত। স্বতঃস্ফূর্তভাবে হয়ত এটা গ্রহণ করতে পারেনা বেশিরভাগ মানুষ। হয়ত পারলে পৃথিবী অন্যরকম হত।
শেষের এই লাইনগুলো স্ট্রাইকিং লাগলো চিন্তার জগতে :
ঈদ বরকতময় হোক, বৃদ্ধি পাক।
সিনেপ্লেক্সের থ্রি-ডি মুভিতে জাঁকজমক বৃদ্ধি পাক।
হুমায়ূন আহমেদের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও সিনেমা কাটছাট করে টিভি চ্যানেলের ব্যবসা বৃদ্ধি পাক।
ফেসবুকে ‘বোরিং ঈদ’ লিখে দেয়া স্ট্যাটাসের সংখ্যা বৃদ্ধি পাক।
বাহু পর্যন্ত মেহেদির নকশায় মোড়া কাভার ফটোতে লাইকের পরিধি বৃদ্ধি পাক।
ডেটিং এর সময় পকেটে কাগজের নোটের উষ্ণতা বুঝবার অনুভূতি বৃদ্ধি পাক।
ইশ, মানুষের ব্রেইনের চিন্তাগুলো সত্যি যদি কম্পিউটার স্ক্রিনে দেখানো যেত, কত্ত ভালোই না হত! 🙁
লেখিকার লেখনী কেবল যথেষ্ট উচুমানেরই নয়, এই লেখা ব্যাঙ্গাত্বক দৃষ্টিভঙ্গি ব্যাবহার করে, আমাদের চারপাশের অসংগতিকে তুলে ধরে; আমাদের প্রায় সম্পূর্ণ মরচে ধরা সহমর্মিতাকে নাড়া দেওয়ার এক অনিন্দ্য সুন্দর প্রয়াস… … লেখাটা পড়ে মনে হল সহানুভুতির বোধ এখন কেউ কেউ অসম্ভব সুন্দর ভাবে বাচিয়ে রেখেছে ।প্রগাড় দ্বায়িত্বশীলতাই যে এই সহানুভুতিক মননের ভিত্তি তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
আপনাদের মত সুন্দর মনের মানুষগুলো পাশে থাকে বলেই তো ভেতরের সহানুভূতিবোধটাকে বাঁচিয়ে রাখার সাহস আর প্রেরণা পাই। :beshikhushi: