বদ্ধ ঘর। একটা টেবিল ঘরের মাঝখানে,দুইপাশে দুইটা চেয়ার। একপাশের চেয়ারে একটা ছেলে বসে আছে। বয়স ২০ হবে। তার মুখের সামনে একটা লাইট। তীব্র আলোয় চোখ বন্ধ হয়ে আসছে ছেলেটির। হাত-পা তীব্র বেগে কাঁপছে তার। অপর পাশের লোকের সাথে বাক্যলাপ চলছে।
-নাম কি তোমার?
-রকিব।
-কি কর তুমি?
-জ্বি, আমি ছাত্র।
-কোন দলের সাথে যুক্ত?
-জ্বি না।
-বাবা কি করেন?
-বাবা কৃষক।
অপর পাশে বসে থাকা লোকটির ঠোঁটের কোণায় ছোট্ট একটু হাসি ফুটে উঠে পরক্ষণেই মিলিয়ে যায়।
-এতো রাতের বেলা রাস্তায় কি করছিলি?
-চা খেতে বের হয়েছিলাম।
-এতো রাতে চা কি জন্য?
-দুই দিন পর আমার পরীক্ষা। পড়তে পড়তে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছি। রাত জাগতে হবে। তাই চা খেতে বের হয়েছিলাম।
-কিন্তু, তোকে তো ধরে এনেছে ছিনতাইকারী হিসেবে।
-আমি ছিনতাই করি নি। হঠাৎ দেখলাম একটা লোক দৌড়ে যাচ্ছে। তারপর আপনারা আমাকে এসে ধরলেন।
-ওইখানে তুই ছাড়া কেউ ছিল না। তুই-ই ছিনতাই করেছিস।
ছেলেটার মুখে ভয়ের ছায়া স্পষ্ট হয়। নিশ্বাস দ্রুত হয়ে আসে। বুকের ভিতর হৃদপিন্ডটা চেপে ধরার অনূভুতি হয় তার।
-মিথ্যা কথা! আমি ছিনতাই করি নি।
-কি এতো বড় কথা! আমার মুখের উপর বলে আমি মিথ্যা বলেছি! ওই নজরুল মিয়া এদিকে আস তো। ওর হাতটা ধর।
১৫ মিনিট পর……
লোকটার সারা শরীর বেয়ে ঘাম নামছে। ছেলেটার মাথা নিচু হয়ে টেবিলে পরে আছে। মুখ কয়েকটা জায়গায় ফুলে আছে। ঠোঁটের কোণা বেয়ে নামছে রক্তের ধারা।
-এবার বল তুই কানা বিল্লালের দলের লোক না?
-কানা বিল্লাল কে?
-তুই কানা বিল্লালরে চিনিস না?!
-না।
-খুব ভালো কথা। কিন্তু, তুই কানা বিল্লালের লোক।
-না, না।
-কি অস্ত্র আছে তোর কাছে?
ছেলেটা আর কথা বলতে পারছে না। মনে হচ্ছে বিশাল একটা পাথর তার বুকের উপর চাপিয়ে দিয়েছে কেউ। কথাগুলো অনেক দূর থেকে আসছে মনে হচ্ছে।
আরও ২ ঘন্টা পরে……
ছেলেটার পায়ের কেটে যাওয়া জায়গাটা একটা কাপড় দিয়ে বেঁধে দিলো একটা লোক। মেঝেতে পরে আছে ছেলেটা, প্রায় জ্ঞানহীন। কথা বলার অবস্থা নেই আর।
-বল তুই ছিনতাই করিস। বল তুই অস্ত্র বেঁচিস। বল তুই গাড়ি ভেঙেছিস রাস্তায়।
ছেলেটা কিছু একটা বলতে চায়। কিন্তু ঠোঁটটা নাড়ানোর বেশি কিছু করতে পারে না। চোখের সামনে আঁধার নেমে আসে ছেলেটার।
পরদিন সকালের পত্রিকায় ছাপা হয় একটি সংবাদ:
বিশিষ্ট সন্ত্রাসী পা কাটা রকিব ছিনতাইকালে গ্রেফতার।
[এই লেখার সাথে বাংলাদেশের কোন একটি বা অনেক ঘটনার মিল পাওয়া পাঠকের মনের কল্পনা মাত্র]
এমনই তো হয় এখানে।
একবার বার বার বহুবার!
অসাধারণ স্বপ্ন!
দুঃস্বপ্নের কঠিন বর্ণনা! 🙁
🙁
🙁 🙁
🙁 🙁
দারুণ গল্প! গল্প বললেও অনেক সময় তা দুঃখজনক বাস্তব! 🙁
বর্ণনা নিখুঁত ! সাথে ছবিটাও! :clappinghands: :clappinghands:
এই লেখার সাথে বাংলাদেশের কোন একটি বা অনেক ঘটনার মিল পাওয়া পাঠকের মনের কল্পনা মাত্র। 🙁
🙂 🙂
আমি অতিমাত্রায় কাল্পনিক 😀 😀
😛
“[এই লেখার সাথে বাংলাদেশের কোন একটি বা অনেক ঘটনার মিল পাওয়া পাঠকের মনের কল্পনা মাত্র]”>>বলে কী ছেলে! শুধু মনে হচ্ছে নামগুলো অন্যরকম, আর সবকিছু এক! 🙁
:chup: 🙁
🙁
ভাইয়া কমাগুলির পর স্পেইস হবে না? 🙂
আর “পরদিন সকালের পত্রিকায় ছাপা হয় একটি সংবাদঃ” এখানে “ঃ” এর জায়গায় “:”।
ঠিক করেছি 🙂
“ঘরবন্দী কথোপকথন” শিরোনাম দেখে ভাবলাম “বাঘবন্দী মিসির আলী” টাইপের গল্প হবে বোধহয়।
কিন্তু ঢুকে দেখি……… না ভাই আর কিছু বলব না। ভয় লাগে। :voypaisi:
শেষে দেখা যাবে আমি আবার গাল কাটা মুবিন হয়ে যাবো :voypaisi:
😐 😐
স্বপ্ন বিলাস করিল দুঃস্বপ্নের কঠিন অসাধারণ স্বপ্নবর্ণনা…. 🙁
ছবিটা বর্ণনাকে আরো প্রানবন্ত করলো….
দুঃস্বপ্নগুলো এখন এতোটা বাস্তব 🙁
একটা দীর্ঘশ্বাস বের হলো পড়ে…..
🙁
🙁 🙁
খুবই সুন্দর একটা লেখা। :dhisya: :dhisya:
😀
এই লেখাটার কথা মাথায় ঘুরছে হঠাৎ করেই কেন যেন!
আমার ভয়টা মাথায় ঘুরতে থাকে 🙁