অল্প দামে বই হাতে পাওয়ার অর্থ নিজের চিন্তাজগতে এক নতুন দুয়ার খুলে যাওয়া। বই আমাদেরকে সুযোগ করে দেয় অতীত নিয়ে চমৎকার নির্ভুল সব প্রশ্ন করার; আমাদের এই মানুষ জাতির প্রজ্ঞার দ্বারে কড়া নাড়ার; আর কেবল ক্ষমতাবানদেরই নয়, সেই সাথে বাদবাকি সবারও চিন্তার স্রোত বুঝতে শেখার। সেরা সব শিক্ষকদের সাথে একই কাতারে বসে, এই সারাটা গ্রহ আর আমাদের এতকালের ইতিহাসের বড় বড় মনীষীরা কষ্ট সয়ে প্রকৃতি থেকে যত সব অন্তর্দৃষ্টি সেঁচে এনেছেন – তা নিয়ে ভাবতে পারার এ এক নতুন সুযোগ। বহুকাল আগে হারিয়ে যাওয়া সব মানুষদেরকে আমাদের মাথার ভেতরটায় কথা বলিয়ে নিয়ে যায় বই। যেখানেই যাই না কেন, তা আমাদের সাথেই থাকে। আমরা কোন কিছু সহজে বুঝতে না পারলে বই ধৈর্য নিয়ে অপেক্ষা করে, কঠিন জায়গাগুলো নিয়ে যত খুশি নাড়াচাড়া করতে দেয়। আর কোনরকম ভুল ধরে না, অভিযোগও করে না। আমাদের এই জগতটাকে বুঝতে পারার আর গণতান্ত্রিক এই সমাজে নিজের জায়গা খুঁজে নেওয়ার চাবিকাঠি হচ্ছে বই।
– কার্ল সাগান ((The Demon-Haunted World: Science as a Candle in the Dark))
আমার কেন যেন মনে হয়, শিরোনামে বই দেখলে একদল লোক লেখা পড়তে শুরুই করেন না, বই পড়তে ভালবাসেন না বলে। আরেক দল হয়তো বইয়ের গন্ধ পেলেই ছুটে আসেন, ছাইপাশ যা-ই লেখা হোক না কেন।
কমবেশি বই যারা পড়েন, তাদের মধ্যে আজকাল কিছু ধরাবাঁধা বিষয় নিয়ে আলোচনা হবেই – যেমন কাগজের বই আর কম্পিউটার স্ক্রীনে বই পড়ার মধ্যে পার্থক্য কতটুকু কিংবা কে কোন্টাতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন; আবার বই কারা হাতে পেলেই ঝটপট কিনে ফেলেন আর কারা অনলাইনে ফ্রীতে পাওয়ার আশায় বসে থাকেন; ফ্রীতে বই ডাউনলোড করার পক্ষে কে আর বিপক্ষে…।
আমি যে স্কুলে পড়তাম সেখানকার অনেক ছেলেমেয়েরই বই পড়ার হাতে খড়ি হয়েছে এক ভাইয়ার হাত ধরে। তাঁর এক স্টেশনারি দোকান ছিল স্কুলের সাথে লাগোয়া, সেখানে এত্ত এত্ত গল্পের বইও পাওয়া যেত। যারা সব বই কিনতে পারবে না তারাও যেন পড়তে পারে তাদের জন্য ভাইয়া করলেন কি, তার লাইব্রেরির সদস্য হওয়ার ব্যবস্থা করলেন। ৫০ টাকা দিয়ে সদস্য হলে বইপ্রতি মাত্র ২ টাকা করে যত খুশি পড়া যাবে – কী চমৎকার না ব্যাপারটা? পড়া শেষ হলে বইটা ফিরিয়ে দিয়ে গেলেই হল। জীবনে যত বই পড়েছি সে তুলনায় কেনা বইয়ের সংখ্যা নিতান্তই অল্প (এত বই কেনার ক্ষমতাও নেই!) – এই মূল্যবান সুযোগটার জন্য তাই ভাইয়ার কাছে কেবল আমরা ভাইবোনরাই না, আরও অনেক মানুষই ঋণী। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই ‘সরব’এ-ই একবার একজনের লেখা পড়তে গিয়ে দেখি যে সে-ও ছোটবেলায় একই জায়গা থেকে বই নিয়ে পড়তো!
আজকাল অনলাইনে পুরো বই পড়তে পারা যায়, এ নিয়ে অনেকে আপত্তি তোলেন। কারণ তাতে যেসব লেখক লেখালেখিকে পেশা হিসেবে নেন তাদের ক্ষতির আশঙ্কা থাকে, একই সাথে প্রকাশকেরাও বলেন যে কেউ নিজের বই অনলাইনে পড়তেই যদি দেবেন তাহলে আর কষ্ট করে ছাপানো কেন! চাইলে একই প্রশ্ন কিন্তু করা যায় লাইব্রেরিগুলোর কাজ নিয়ে, তারাও তো ফ্রীতে/২-৪ টাকার বিনিময়ে বই পড়ার সুযোগ করে দেয়, না হলে হয়তো বইয়ের বিক্রি কিছুটা হলেও বাড়তো। আসলেই কি বাড়তো?
এসব নিয়ে ভাবতে ভাবতেই মনে পড়ে গেল আরেকজনের কথা। আমেরিকায় যখন SOPA (Stop Online Piracy Act) ((সরব স্বপ্ন বিলাসের এই পোস্ট থেকে জানতে পারবেন এ নিয়ে)) – অনলাইনে বহুল প্রচলিত পাইরেসি বন্ধের আইন চালু হল, তখন এক লেখক বিশেষ করে বই পাইরেসি নিয়ে তাঁর কিছু চিন্তাভাবনা পাঠকদের সাথে শেয়ার করেছিলেন। তাঁকে লেখক হিসেবে পছন্দ করেন না (আমি নিজেও যে খুব করি এমন না!) এমন অনেক মানুষকেও ভাবিয়েছিল তাঁর তখনকার কথাগুলো। সেই ভাবনার খোরাক থেকেই কিছু শেয়ার করবো আজকে।
পঞ্চাশ আর ষাটের দশকে সোভিয়েত রাশিয়ার তখনকার রাজনৈতিক পরিস্থিতির সমালোচনাকারী কিছু লেখকের লেখা, এক ধরনের ডুপ্লিকেটরের সাহায্যে ছাপানো বই হিসেবে গোপনে ছড়াতে শুরু করেছিল মানুষের মধ্যে। সেই লেখকেরা এসব বই থেকে কানাকড়ি আয় তো করতেনই না, বরং তাদেরকে হয়রানি থেকে শুরু করে নির্বাসনে পর্যন্ত যেতে হয়েছিল এর কারণে। তো, জানতেনই যখন অবধারিত শাস্তির কথা, শুধু শুধু বইগুলো লেখার কী দরকার ছিল তাদের? নিশ্চয়ই প্রাপ্তিটা এত বড় ছিল যা তাদেরকে এই কাজে সাহস যুগিয়েছে? প্রাপ্তি একটাই – তারা জানতেন, দু’চারজন মানুষের ত্যাগের কারণে মূল্যবান সব ভাবনা ছড়িয়ে যায় এক ঘর থেকে আরেক ঘরে, এক দেশ থেকে আরেক দেশে, এক যুগ থেকে আরেক যুগে। পৃথিবীকে বদলেও দিতে পারে কাগজে ছাপানো চিন্তার অক্ষর!
তার মানে কি এই যে সব লেখক নিজেদের লেখা বই বিনামূল্যে বিতরণ করে না খেয়ে মারা যাবেন? অবশ্যই না! তবে তার আগে খতিয়ে দেখে নেওয়া যেতে পারে, অনলাইনে সহজলভ্য হলে বইয়ের বিক্রি কি আসলেই কমে যায়? রেডিওতে কোন চমৎকার গান শুনলে কি আপনার সেটার সিডি হাতে পেতে ইচ্ছা করে না? এমন অনেক মানুষই খুঁজে পাওয়া যাবে যারা রেডিওতে গান শুনে কোন শিল্পীর ভক্ত হয়ে পরে তাঁর গান দিয়ে ভরে ফেলেছে নিজের সংগ্রহ। সাহিত্যের ক্ষেত্রেও কি ঠিক তাই হয় না? তাছাড়া কম্পিউটার স্ক্রীনে বই পড়ার ধৈর্য অনেকেরই হয় না (চোখের ক্ষতিও তো হয় কিছুটা!), তারা হয়তো বই পড়তে শুরু করে আগ্রহ পেলে সেটা শিগ্গির কিনে ফেলেন। তবে হ্যাঁ, অনেক মানুষকেই খুঁজে পাওয়া যাবে যারা শেষমেশ আর পছন্দের বইটাও কেনেন না, এর অবধারিত কারণ হচ্ছে তাদের সেই সামর্থ্য থাকে না। বই অনলাইনে না পেলেও হয়তো তারা কিনতেন না, বরং এখন নিজে না কিনলেও প্রিয় বইয়ের কথা অন্যদেরকে জানিয়ে প্রচারণায় সাহায্য করছেন। কোন লেখকের মূল উদ্দেশ্য যদি হয় মানুষের ভাবনার জগতে ঝড় তোলা, হৃদয়ের অব্যক্ত কথাগুলো কানে কানে বলে যাওয়া – তাদের কাছে তখন ‘প্রাপ্তি’ শব্দটার অর্থ বদলে যেতে বাধ্য।
যারা বলবেন যে হয়তো সেই লেখকের আর্থিক অবস্থা ভাল বলেই তিনি পাইরেসির পক্ষে সাফাই গাইছেন তাদের উদ্দেশ্যে তাঁর বক্তব্য, “আমি কখনোই অর্থের আশায় লেখালেখির জগতে আসি নি। পরিবার, বন্ধু-বান্ধব থেকে শুরু করে সবাই জানিয়ে দিয়েছিল – এই পেশায় ভবিষ্যৎ বলতে কিছু নেই। তারপরও লিখেছি আনন্দের জন্য, নিজের বেঁচে থাকাটাকে আরেকটু অর্থবহ করার জন্য। ধনী হওয়ার আশা থাকলে বহু আগেই লেখালেখি ছেড়ে দিয়ে নিজেকে সমালোচকদের বাক্যবাণ থেকে বাঁচাতাম।“
তবে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটা বাকি রয়ে গেছে এখনও। এতক্ষণ যেসব তত্ত্বকথা বলা হল, তার পক্ষে প্রমাণ আর পরিসংখ্যান। ১৯৯৯ সালে রাশিয়াতে যখন এই লেখকের প্রথম বইয়ের ৩০০০ কপি ছাপানো হল, তখন সেই দেশে কাগজের ভীষণ আকাল চলছিল। তো, তিনি অনলাইনে নিজের বইয়ের একটা পাইরেটেড কপি পেয়ে নিজের ওয়েবসাইটেই আপলোড করে দিলেন সেটা, পাঠকদের সুবিধার্থে – এক কথায় নিজেই নিজের বইয়ের পাইরেসি করলেন। এক বছর পর রাশিয়া কাগজের সমস্যা উতরে যাওয়ার পর বইটার ১০,০০০ কপি বিক্রি হল (কোন রকম প্রচারণা ছাড়াই), ২০০২ নাগাদ সে সংখ্যা গিয়ে ঠেকলো এক মিলিয়নে। আর ২০১২তে? ১২ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়েছে সেই বইয়ের, যেটার ক্রেতাদের অনেকের কাছ থেকেই জানা গেছে যে তারা বইটা প্রথমবারের মত অনলাইনেই পড়েছিলেন।
জানুয়ারি’২০১২ পর্যন্ত এই লেখকের সব বই মিলিয়ে ১৪০ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়েছে সারা বিশ্বে। নাম তাঁর পাওলো কোয়েলহো, পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম সর্বাধিক বিক্রিত বইয়ের লেখক।
একটা কমলা কিনলে সেটার দাম সাথে সাথেই পরিশোধ করে দিতে হয়, কারণ এটা একটা পণ্য। বই যতটা না পণ্য তার চাইতে বেশি শিল্প, চিন্তার শিল্প – কাগজ-কলম তথা পণ্য যার উপকরণমাত্র। অন্যসব কেনাবেচার সাথে এর পার্থক্যটা এখানেই। ভাল চিন্তার জন্য কোন রকম পাহারার প্রয়োজন নেই, কারও ভাল লাগলে সে অবশ্যই সেটাকে নিজের ঘরে এনে রাখতে চাইবে – অন্তত কোয়েলহো এমনটাই ভাবেন!
(এই লেখায় ভাবনা-চিন্তা, বিপরীত মত সাদরে গৃহীত হবে।) 😀
কৃতজ্ঞতা: পাওলো কোয়েলহোর ব্লগ ((http://paulocoelhoblog.com/2012/01/20/welcome-to-pirate-my-books/))
কিছু লাইন কোট করি……
“কোন লেখকের মূল উদ্দেশ্য যদি হয় মানুষের ভাবনার জগতে ঝড় তোলা, হৃদয়ের অব্যক্ত কথাগুলো কানে কানে বলে যাওয়া – তাদের কাছে তখন ‘প্রাপ্তি’ শব্দটার অর্থ বদলে যেতে বাধ্য।”
“ভাল চিন্তার জন্য কোন রকম পাহারার প্রয়োজন নেই, কারও ভাল লাগলে সে অবশ্যই সেটাকে নিজের ঘরে এনে রাখতে চাইবে”
বই নিয়ে কথা বললে মনে হয় কথা ফুরাবে না কখনো…… আর কোয়েলহোর চিন্তা পড়ে মনে হলো, আসলেই তো, পাইরেসী খারাপ না! 🙂
কোয়েলহো জমছে, আলকেমিস্ট-ই এখনো শেষ করিনি……
কই বেশি কথা তো বললেন না। 😛
তাড়াতাড়ি পড়ে ফেলেন! 😀
দারুণ লাগলো! বিশেষ করে শেষ প্যারা
আচ্ছা।
অনেক ভালো লেগেছে
:love: :love:
পচা কমেন্ট! :haturi: এরকম ‘ভাল লেগেছে’ কমেন্ট দিলে এরপর থেকে আর রিপ্লাই-ই দিব না বুঝলেন? :nono:
এইটা পচা কমেন্ট :brokenheart:
আরেকটু বড় লিখলে খুশি হই। 😀
সামিরা দেখ কাণ্ড!
‘পচা কমেন্ট’ বলার পরে শারমিন মাত্র তিনটা শব্দে আবার কমেন্ট করছে!
অনেক ভালো লেগেছে, এইটা পচা কমেন্ট>> ওর বেশিরভাগ কমেন্টই দেখি তিন শব্দে বাঁধা! ওর কম্পিউটারে কপি করা না থাকলেও মনে হয় ‘তিন শব্দ বিশিষ্ট’ বাক্য লেখাটা ‘বাই ডিফল্ট’ হিসেবে সেট করা আছে। মাঝে মাঝে ভুল করে বড় কমেন্ট করার সময় ‘তিন শব্দ’এর লিমিটেশন উঠায়ে দেয় ও! 😛
এই মেয়েটা সবসময়েই এই কমেন্ট দেয়!
আমার প্রায় প্রতিটা পোস্টে এই একই কমেন্ট!
আমার মনে হয় ওর পিসিতে অটো এই কমেন্টটাই কপি করা থাকে সবসময়। শুধু সরবে এসে ও পেস্ট করে যায় কমেন্টটা। :haturi:
ভালো লাগে বলেই লিখি ভালো লেগেছে
এইবার কি তোমার পোস্টে আমি একই কমেন্ট করেছি ? 😛
যাও এরপর থেকে ভালো হলেও আর বলবো না 😛
তুমি এত বড় কথা বলতে পারলা আপুনি :crying:
শারমিন মেয়েটা এত ছিচকাঁদুনে!
কিছু বলাও যায় না ছাই! :voypaisi:
আমি মোটেও ছিচকাঁদুনে না 😛
আমি অনেক লক্ষ্মী মেয়ে বুঝলা 8)
আর আমার পিসিতে এইসব কিছুই নাই 😛
এরপর থেকে তোমাদের পোস্টে এত বড় কমেন্ট করবো যে পোস্টের থেকেও বড় হবে এখন দ্যাখো কত বড় কমেন্ট দিয়েছি 😛
আহারে শারমিন… :p :p
“আমার মনে হয় ওর পিসিতে অটো এই কমেন্টটাই কপি করা থাকে সবসময়।”
হেসেই শেষ… 😀 😀
“আমার মনে হয় ওর পিসিতে অটো এই কমেন্টটাই কপি করা থাকে সবসময়।” =)) =)) =)) কথা সত্য!
কোয়েলহোকে আরও বেশি ভালোবেসে ফেললাম তোর লেখা পড়ে! :love:
মানুষটার কথা শুনে-জেনে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা আরও দশগুন বেড়ে গেল আমার! :huzur:
পণ্য আর শিল্প যেন কখনো এক না হয়ে যায়।
কিন্তু শুরুতে ‘পাইরেটস অব দ্য ক্যারিবিয়ান’এর ছবি কেন? 😛
হাহা। পাইরেসির অপরাধে লোকজন ধাওয়া করছে, তাই। 😛
আরে খাইছে!
এইভাবে ভাবি নাই তো!
হা হা হা হা! 🙄
পাইরেসির অপরাধে লোকজন ধাওয়া করছে!! >> 🙄
সিরিয়াস হাসি পেয়ে গেল উত্তর পড়ে! 😛
আমি তো ভাবলাম সবাই বুঝবে। 😛 ছবিটা একটু মডিফাই করতে হয় তবে!
মডিফাই করার দরকার নাই।
আমার মত অবাক হয়ে কোন মানুষ এই ছবির রহস্য জিজ্ঞেস করলে তখন আগের উত্তরটাই কপি-পেস্ট করে দিস।
উত্তরটা নিঃসন্দেহে মজার! 😛
হাহাহাহা………
শিরোনামে “বই” আর শুরুতে পাইরেটস অফ দ্যা ক্যারিবিয়ানে আমার অন্যতম প্রিয় দৃশ্য দেখে ব্যাপক আনন্দে পড়ে ফেললুম! :happy:
পাওলো কোয়েলহো অসাধারণ একজন লেখক, সাদামনের মানুষ। কয়জন মানুষ/লেখক নিজের চিন্তা, নিজের শ্রম এমন নিঃস্বার্থ হয়ে মানুষের মাঝে আলো ছড়িয়ে দিতে উদ্যোগী হন? খুব কম…
বই পিসিতে পড়তে ভালো লাগে না, খুব বাধ্য না হলে। পাওলো কোয়েলহোর থিওরি আমার জন্য সত্য। পছন্দ হয়ে গেলে বই কিনে, নতুন বইয়ের ঘ্রাণ নিয়ে নিয়ে পড়তে ভালোবাসি। 😀
আপনাকে আনন্দিত করতে পেরে আনন্দিত। 😀
কোয়েলহোর শেষ বইটা পড়ে তাঁর সম্পর্কে মুগ্ধতা অনেক কমে গেলেও, ভাল কাজগুলির জন্য শ্রদ্ধা অটুট থাকবে সবসময়েই।
আমারও ভাল লাগে না পিসিতে পড়তে, হাতে গোনা কিছু বই পড়েছি এই নিয়ে।
তাই? শেষ বই খারাপ ? 🙁 কী আর করা…ভালোর সাথে আছি, খারাপের সাথে নাই… 🙂
পিসিতে বই পড়া অভ্যাস করতে পারলাম না বলে এখন আশেপাশের মানুষের সাথে নিজের তুলনা করলে বুঝি- বই পড়াতে অনেক পিছিয়ে যাচ্ছি, তবু পিসিতে পড়ার অভ্যাস করতে পারি না…… 🙁
আসল কথা- পিসিতে বসলে মনে হয়- পিসিতেই তো কত কাজ আছে, পড়তে হলে ব্লগ পোস্ট পড়ি ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি…… বই পড়ার উদ্দেশ্যে পিসিতে বসা/ পিসিতে বসে বই পড়ার চেষ্টাও আসলে খুব একটা করি নাই, বই পড়তে ইচ্ছা করলে হাতে বই নিয়ে বসে যাই 🙂
আমারও একই অবস্থা!
কাগজের ছাপা কখনও বন্ধ হবে বলে আমার মনে হয় না। আর যতই অনলাইন ফনলাইন আসুক গুটিসুটি মেরে এক খান পুরান বইয়ের মাঝখানে ডুবে থাকা এসব যন্তর টন্তর দিয়ে হয় নাকি! ভালোই লিখেছেন।
আর পাওলো কোয়েলহো-
সরবে আসার আগে দু একজন জ্ঞানী মানুষ উপদেশ দিয়েছিলেন কোয়েলহো পড়ার জন্য। একদিন নীলক্ষেত থেকে এক খান পুরানো Al Chemist। পরদিন By The River Piedra I Sat Down and Wept, The Fifth Mountain, Confessions of a Pilgrim, Brida, The Witch of Portobello, Eleven Minutes, The Winner Stands Alone, The Valkyries, The Zahir and Manual of the warrior of light টেবিলে চলে আসলো!
বন্ধ না হলেই খুশি! তবে আমি অত আত্মবিশ্বাসী না এই ব্যাপারে।
এত বড় ভক্ত! 😯
আসলেই অনেক বড় ভক্ত! তবে আপনার মত ভালো অনুবাদক নই।
কোন ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী না- বুঝলাম না। সব বই ভালো কিনা এই ব্যাপারে?
আরে না না! কাগজের বই ছাপা সবসময় টিকে থাকবে কিনা সে ব্যাপারে। 😀
হুম আমাকেও টেবিলে আনতে হবে
দারুণ লাগ্লো আপু, কথাগুলো।
কাগজের বই কখনো বন্ধ না হবারই আশা রাখি 🙂
সেটাই ভাইয়া। 🙂
খুব ‘মিষ্টি’ লাগলো লেখাটা। যেদিন পোস্ট করেছিলেন ওই দিনই পড়েছিলাম, মন্তব্য করা হয় নি। খুবই ভালো লেগেছে লেখাটা,এতোই ভালো লেগেছে যে অনেক জনকে এই লেখার কথা বলেছি (সাথে এও বলেছি, “শেয়ার দিব”) ল্যাপটপে বসা হয় না, শেয়ারও দেয়া হয় না, তাই শেষমেশ মুখে মুখেই সবাইকে বলে বেড়াইসি……
এখনও এই পোস্টে আসার কারণ এক জায়গায় শেয়ার দিব। 🙂
বইটা কি ‘অ্যালকেমিস্ট’?
হাহা। হ্যাঁ ‘অ্যালকেমিস্ট’। 😀
তুমি দেখি একটু আমার মত। 😛 আমিও কিছু ভাল লাগলে এরকম মাইকিং করতে থাকি। 😀 আমার নিজেরও খুব ভাল লেগেছিল কোয়েলহোর এই লেখাটা। 🙂 আর আমার লেখার বেশিরভাগ অংশই আসলে অনূদিত/রূপান্তরিত কোয়েলহোর লেখাটা থেকে, সব মিলিয়ে কীভাবে লিখবো বুঝতে না পেরে ‘কৃতজ্ঞতা’ লিখে দিলাম। 😀