প্রমির হাতে একটা চিঠি । চিঠিটা রাফির মার লিখা । রাফি প্রমির ছোট বেলার বন্ধু । একসাথে ছোট বেলা থেকে বড় হয়েছে । এতটা ভাল বন্ধু যে রাফির প্রতিদিন প্রমির সাথে দেখা করা চাই । একবার হলেও কথা বলতে হবে । সারাদিন একসাথে ঘুরত, মজা করত, হাসাহাসি । দিনগুলো খুব সুন্দর করে কেটে যাচ্ছিল ।
রাফি তার বাবা-মার একমাত্র ছেলে । অনেক আদরের । বাবা-মা তার কোন আশাই অপূর্ণ রাখে নাই । এস,এস,সি পরীক্ষার আগে আগে হঠাৎ রাফির বাবা মারা যায় । এরপর থেকে বাবার কষ্টগুলো মা তার ভালবাসা দিয়ে ভুলিয়ে দিয়েছে । সাথে ছিল প্রমির বন্ধুত্ব । প্রমির হাসি, পাগলামি ও তার চাঞ্চল্যতা রাফিকে শুধু মুগ্ধ করত । রাফি কবে যে ভালবেসেছে রাফি তা নিজেই জানত না । সারাদিন মন্ত্র-মুগ্ধ হয়ে শুনত ওর কথা । কোনদিন সাহস করে বলেও নাই ভালবাসার কথা । যদি বন্ধুত্ব নষ্ট হয় । প্রতি মুহূর্তে নিজের সাথে যুদ্ধ করে করে নিজেকে শান্ত রাখত । এক মুহূর্ত না দেখলে পৃথিবীটা শূন্য হয়ে যেতো । মাঝে মাঝে নিজে নিজে ভাবত যে আজ প্রমি কি পড়বে? নীল ড্রেসটা ?? নাকি সাদাটা?? ইয়েলো-পিঙ্ক?? মনেমনে প্রমিকে নিয়ে যা চিন্তা করত তাই হতো ।
প্রমি রাফির মধ্যে কি যেন পার্থক্য দেখছে । প্রমি কিছুটা বুঝতেও পারছে । কিন্তু যা হতে যাচ্ছে তা সে চায় না । ভাল বন্ধুও হারাতে চায় না । কিন্তু সে বন্ধুদের ও ক্লাসের কারো সাথে রিলেশন করবে না ।
প্রমি রাফির মায়ের চিঠি পড়া শুরু করল ।
” প্রমি,
সন্তানের ওয়াদা রাখার জন্য অনেক কিছু করতে হয়েছে । তুমি যখন এইটা পড়বে আমি তখন আর পৃথিবীতে নেই । কথাগুলো এখন বলা যায় । তুমি যখন রাফিকে বলেছিলে তুমি একজনকে পছন্দ করো । কতটা খুশি হয়েছিল তুমি জানো না । কতটা তুমি ধারনা করতে পারবে না যা আমি দেখেছি । মনে হচ্ছিল পৃথিবীর সব আনন্দ যেন ওর হয়ে গিয়েছিল । কিন্তু ওর বুঝাতে ভুল ছিল । তুমি আরেকজনকে ভালবাসো । খুব কষ্ট পেয়েছিল । আমি দেখেছি একটা মানুষ কতটা কষ্ট পেতে পারে । পানি ছাড়া মাছ যেমন করে, তেমন করত প্রতিনিয়ত । কিন্তু কাউকে বুঝতে দেয় নাই । চুপ করে সব মেনে নিয়েছিল । প্রতি রাতে ওর একটা বিশেষ ঘর ছিল । ওইখানে সারারাত বসে থাকত । কোনদিন ওইখানে কাউকে যেতে দেয় নাই । যাইহোক সবাই পাস করার পর যখন তোমার বিয়ে ঠিক হল একটা মৃতপ্রায় মানুষকে দেখে আর থাকতে পারলাম না । ওকে বলেছিলাম তুই আমার সামনে থেকে চলে যা । এক মেয়েকে ভালবাসতে গিয়ে নিজের জীবন নষ্ট করেছিস । কোনদিন আমার সামনে আসবি না । আমার মরার খবর পেলেও না । আমি তো মা । কতদিন ছেলের কষ্ট এইভাবে দেখব?? ওকে অনেক বলেছি আমি প্রমির সাথে কথা বলি । ও বলেছিল “না , মা । ভালবাসা জোর করে হয় না । ও সুখে থাকুক এইটা শুনতে পাওয়াও অনেক সুখের । ” কোনদিনও আমার ব্যাপারে ওকে বলবা না যদি আমার মরন না চাও । কাল খবর পেলাম আমার প্রান ও একমাত্র অবলম্বনটা মারা গেছে । কানাডা থেকে ওর ডেডবডি পরশু আসবে । পারলে দেখতে যেয়ো । আর মা হয়ে সন্তানের লাশ দেখতে পারবো না । যে পৃথিবীতে আমার একমাত্র অবলম্বন নেই , এই অর্থহীন পৃথিবীতে আর থেকেও লাভ নেই । আমি জানি আল্লাহ আমাকে মাফ করে দিবে । আর চাবি দিয়ে গেলাম । ঐ ঘরের চাবি । আমি রেখে দিয়েছিলাম । কোনদিন ঢুকার সাহস হয় নাই । আমার ছেলের পবিত্র ভালবাসার মাটিতে আমার মত নিছক এক সাধারন মানুষের ঢুকার অধিকার নাই । তোমার প্রতি আমার কোন কষ্ট নাই । আমি জানি জোর করে ভালবাসা হয় না । হয়তো তুমি কোনদিন ওকে এভাবে দেখনি । সুখে থাক মা । “
– নামহীন
গল্প টা কেমন জানি—
একটা সাধারণ সেটিং, খুব সহজে শেষ হয়ে যাওয়া রান্নার মত।
আর আমার ধারণা আ যুগের মানুষ এসব টাইপের ভালবাসা বিশ্বাস করে না।
গল্পের মানুষ গুলো এই সময়ের নাম বহন করে। কিন্তু কর্মকাণ্ড সবই রবি বাবুদের যুগেরও আগেকার।
খুব সহজে শেষ হয়ে যাওয়া রান্না যে সুস্বাদু হবে না এমন তো না !
গল্পটা ভালো লেগেছে, খুব আহামরি কিছু না কিন্তু আবেগী। ভালোবাসার গল্প কে আহামরি হতে হবে এমনতো না তাই না? শুভ কামনা রইল, সামনে আরও গল্প চাই।
খুব সহজে শেষ হয়ে যাওয়া রান্না যে সুস্বাদু হবে না এমন তো না ! :thinking:
নিয়মিত লিখুন। 🙂
একটু কেমন জানি
‘আগেই শেষ হয়ে গেল’ টাইপ
নিয়মিত লিখবেন।
শুভ কামনা 🙂
নেগেটিভ কিছু বলতে ইচ্ছা নাই।
আরো সুন্দর হতে পারত।
নিয়মিত লিখলে এর চেয়ে আরো ভালো লিখতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
শুভকামনা রইল। 🙂