ইউএফও- নিয়ে যত কাহিনী

সীমাহীন আকাশের বুকে অদ্ভুত চেহারার চলমান কোন বস্তু সম্বন্ধে মান্ধাতার আমল থেকেই মানুষের কৌতূহলের অন্ত নেই। অনেক সময় ধূমকেতু বা উল্কার আবির্ভাব অথবা নৈসর্গিক কোন ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে মহাকাশে উদন্ত বস্তুর আগমনের একটা জোড়াতালি লাগানো ব্যাখা দেয়া হতো। কয়েক সপ্তাহ বা মাসের পর মাস অথবা বছর ধরে লোকেরা এই আলোচনায় মেতে থাকত। এক সময় তা ভুলে যেত। এই আলোচনা যাকে নিয়ে হতো তার নাম হচ্ছে UFO- Unidentified Flying Object.  :haturi:

মহাকাশের UFO বা Unidentified Flying Object নিয়ে আজকের পৃথিবীতে তাবং বিজ্ঞানী ও বিজ্ঞান লেখকরা ইউএফও অবলম্বনে অনেক অনেক রোমহর্ষক গল্প-উপন্যাস লিখে বেশ নাম কামাচ্ছেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো আসলেই কি ইউএফও আছে? যুগে যুগে এ নিয়ে গবেষণার শেষ নেই। ইউএফও নিয়ে যারা মাথা ঘামান তাদের বলা হয় Ufologist. 8)

 

দিনের পর দিন ধরে এই Ufologist রা অজানা গ্রহের স্পেসশীপের উপর গবেষনা করে চলেছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত এর কোন সঠিক ব্যাখ্যা কেউ দিতে পারেন নি। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন এলাকার মানুষ ইউএফও দেখেছেন। আরো মজার কথা হলো এর মধ্যে অনেকে অজানার স্পেস এর যাত্রীদের দেখেছেন। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী এরা কখনও অতিকার আবার অনেক সময় ক্ষুদ্র বামন এর মত। :fire: :fire: :babymonkey:

 

১৯৪৭ সালের ২৪ জুন কেনেথ আর্নন্ড নামে এক ব্যাবয়ায়ী উড়োজাহাজে চড়ে রেইনার পাহাড়ের উপর দিয়ে যাবার সময় দূরের আকাশে অনেক গুলো অদ্ভুত ধরনের মহাকাশযান দেখতে পান। তাদের চেহারা ছিল নাকি Flying সসারের মতো। একটার সাথে আর একটা যেন চেইন দিয়ে বাঁধা। প্রায় পাচ মেইল দীর্ঘ এই ফ্লাইং সসারগুলির উপর সূর্যরশ্মি আয়নার মতো প্রতিফলিত হচ্ছিল। পুরো তিন মিনিট ধরে তিনি এই ঘটনা পর্যবেক্ষন করেন। তারপর তারা নিমিষে উধাও হয়ে যায়। :wallbash:

 

 

আর্নল্ড ওয়াশিংটনের ইয়াকিমিতে ফিরে এসে এই ঘটনা কথা বলতেই চারদিকে দারূন হৈ চৈ পড়ে যায়। আর্নল্ডের এর ঘটনা লোকমুখে ঘুরতে থাকে। রাতারাতি তিনি এক আলোচিত ব্যাক্তিক্তে পরিনত হয়ে যায়। :love:

 

এরপর আরো অনেক লোকের মুখে ইউফো কথা শুনা যায়। এদের কেউ দীর্ঘকাল ধরে মহাকাশ পর্যবেক্ষন করছিলেন আবার কেউ রাড়ার নিয়ে কাজ করছিলেন। কেউবা আবার এয়ারর্ফোস এর পাইলট, ট্রাফিক কন্টোলার অথবা আবাহাওয়া বিজ্ঞানীর দল। :voypaisi:

 

ইউফো দেখতে কেমন তা নিয়ে ভিন্নমত থাকলেও Flying সসারের মতো হবার খবরই বেশি। এদের কোন চাকতির ব্যাস ৩০মিটারের বেশি আবার কয়েক সেন্টিমিটার ব্যাসযুক্ত চাকতিও দেখা গেছে। পৃথিবীর বাঘা বাঘা ফটোগ্রফাররা ইউফো ছবি নানান কায়দা করে তুলেছেন। যে সব জায়গায় Flying সসারের ছবি তোলা হয়েছিল তা হচ্ছে- আজেন্টিনার করডিলের পাহাড়, ডেনমার্ক, অস্ট্রিয়া ও স্পেন, দক্ষিন- পশ্চিমের মরুভূমি অঞ্চল, কানাডা,মেক্সিকো,ইউরোপ, অস্টেলিয়া, গ্রীনল্যান্ড ও অ্যান্টার্কটিকা অঞ্চল। কখনও ইউফো আকাশে স্থির হয়ে অনেকক্ষন দাঁড়িয়ে ছিল। আবার উধ্বাকাশে কল্পনাতীত বেগে পালিয়ে যায়। সেই সময় এদের গতি ছিল প্রায় ১০০০ কিলোমিটার। :huzur:

 

ইউএফও- এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বড় বড় পন্ডিত ও বৈজ্ঞানিকরা এখনো হিমসিম খাচ্ছে। অনেকে বলে ইউএফও বলে কিছু নেই। আবার অনেকে এর অস্থিত্ব স্বীকার করেন। তাই ১৯৬৬ সালে আমেরিকার এয়ারর্ফোস অথোরিটি এই Flying Object  সম্বন্ধে অনুসন্ধান চালানোর জন্য পদার্থবিদ এডওয়ার্ড কনডনের নেতৃত্বে ৩৬ জন বিজ্ঞানীদের নিয়ে একটা প্রজেক্ট তৈরী করলেন। নাম “Project Blue Book”.  অনুসন্ধান শেষে কয়েক হাজার পৃষ্টার এক প্রতিবেদনে বলা হলো, ইউএফও নিয়ে আর কোন অনুসন্ধান চালনার দরকার নাই। অবশ্য প্রতিবেদনে স্বীকার করা হয় যে প্রায় ১০০০ ঘটনার তারা উপযুক্ত ব্যাখ্যা দিতে পারেন নাই। :wallbash:

 

এই প্রতিবেদন শেষ হলেও কিন্তু বিজ্ঞানীদের মধ্যে ইউএফও-এর অস্থিত্ব নিয়ে বিরোধের শেষ হলো না। ডক্টর জেমস ম্যাকডোনাল্ড তো কনডনের মুখের উপর বলে বসলেন, প্রতিবেদনের প্রায় ৩০ টি ঘটনা অপষ্ট। কাজেই “Project Blue Book” এর উপর ভরসা করা অযৌক্তিক। তাহলে আসল ঘটনা কি? ইউএফও- কি মুখরোচক গল্প, নাকি এর অস্থিত্ব আছে? সময় বলে দিবে ইউএফও-এর সঠিক রহস্যের উওর। :cuthair:

নীড় সম্পর্কে

আমি একজন স্বপ্নবাদী।তাই সব স্বপ্ন বাদ। অন্যের স্বপ্নের কথা বলি। আমার স্বপ্ন,চারপাশের মানুষের স্বপ্ন... ....কখনো কখনো অনেকের স্বপ্ন নিজের বলে চালিয়ে দেই।
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে বিবিধ, সায়েন্স ফিকশান-এ। স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

4 Responses to ইউএফও- নিয়ে যত কাহিনী

  1. মাধবীলতা বলেছেনঃ

    ইউ এফ ও রহস্য যে কবে খুলবে !! আমার ভয়ানক ইন্টারেস্টিং লাগে এলিয়েন নিয়ে চিন্তাভাবনা…

    পোস্টটা ভালো হয়েছে, গাঁজাখুরি হয় নাই। 😀

  2. বোহেমিয়ান বলেছেনঃ

    একটা বই এর নাম বলি ননসেন্স অন স্টিলটস পড়তে। আর ইউএফও তো এখন আর রহস্য নাই। এইটা মোটামুটি বিজ্ঞান জানা লোকজন গাঁজাখুরি চাপাবাজি হিসেবেই ধরেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।