ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের একান্ত অভিযোগ

বাংলাদেশ দলের সিরিজ জয়ের পর ওয়েস্টইন্ডিজ দলের সাক্ষাৎকার নিতে যাই, তখন দলের অনেকের সাথেই সিরিজ হার ও তার কারন নিয়ে দীর্ঘ আলাপ হয়, আলোচনায় তারা এক বোম ফাটানো করেন! তার বর্ণনা নিচে দেয়া হলঃ

 

 

 

 

         বাংলদেশের বিরুদ্ধে আইসিসির কাছে নালিশ করেছেন ওয়েস্টইন্ডিয়ান ব্যাটসম্যান ক্রিস গেইল

 

বাংলদেশের বিরুদ্ধে আইসিসির কাছে নালিশ করেছেন ওয়েস্টইন্ডিয়ান ব্যাটসম্যান ক্রিস গেইল। তিনি আজকের “সাহারা সিরিজের” ৫ম ম্যাচ শেষে এই প্রতিবেদকের মাধ্যমে আইসিসির কাছে নালিশ জানিয়েছেন। নালিশের বিষয়বস্তু হিসেবে জানা গেছে তিনি দাবি করেন বাংলাদেশ মাঠে অতিরিক্ত খেলোয়াড় নিয়ে নেমে ছিল!! তিনি দাবি করেন মাঠে ওয়েস্টইন্ডিজ ১১ জন খেলোয়াড় নিয়ে নামলে ও বাংলাদেশ অতিরিক্ত খেলোয়াড় নিয়ে মাঠে নামে, এই অতিরিক্ত খেলোয়াড়ের সংখ্যা আনুমানিক প্রায় “১৬ কোটি” বলে তিনি দাবি করেন। তিনি প্রতিবেদকের কাছে তার অভিযোগ জানানোর সময় বলেন,

    “ বাংলাদেশ আজকে অতিরিক্ত খেলোয়াড় নিয়ে নেমেছে ,তারা সব সময়ই এই কাজ করে , আইসিসির উচিত এ দিকে নজর দেয়া।

 

আমি বাংলাদেশের সাথে খেলার সময় এই বিষয়টা লক্ষ্য করেছি , তারা সব সময় অতিরিক্ত খেলোয়াড় নিয়ে নামে,এক দুই জন নামলে ও কথা ছিল , পুরো ১৬ কোটি!! এটা কোন কথা?! পুরো জাতি এক সাথে মাঠে নেমে যাবে?! আর আমরা খেলি মাত্র ১১ জন, এটা কি কোন ভারসাম্যপূর্ণ খেলা?

 

এই যে আমি এই সিরিজে খাবি খেলাম , সবাই ভাবচ্ছে আমার ফর্ম নেই! কিন্তু কেউই আসল বিষয়টা বুঝতে পারছে না, আসল বিষয়টা হচ্ছে আমি যখন ব্যাট করতে  মাঠে নামি  তখন আমি পুরো মাঠে ফিল্ডার , ডানে , বায়ে , উপরে, নিচে, ঈশান কোনে , সব দিকে ফিল্ডার আর ফিল্ডার, মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ ! এই মাঠে আমি খেলব কিভাবে! আমার এত দিনের ক্রিকেটীয় জ্ঞান সব গুলিয়ে যায়! আমি তো জানতাম ক্রিকেট ১১ জনের খেলা, কিন্তু একি!! এত দেখি ১৬ কোটি মানুষ! এত মানুশের মাঝে কি ব্যাট করা যায়! মাঠে এক বিন্দু খালি জায়গা নেই আমি পেটাব কোন দিক দিয়ে!!তার উপর যখন বোলার বল করতে আসে আমি দেখি ১৬ কোটি  এক সাথে বল করতে আসে! কি অদ্ভুত , চিন্তা করেন?!! ১৬ কোটি মানুষ এক সাথে বল করছে! এই তাজ্জব ব্যাপার!!এই কারনেই আমি খেলতে পারিনি, আর সবাই কি না কি ভাবছে।

 

তবে আমি দেখেছি ১৬ কোটি মানুশের মাঝে মাঝে উল্টা পাল্টা আচরন করে, তখন কিছুটা বিভ্রান্ত হই , যেমন ধরেন আমরা যখন বাংলাদেশকে হারাই তখন মাঠে মানুশের সংখ্যা কমতে থাকে , বাংলাদেশ হারতে থাকলেই আমি দেখি মাঠ কিছুটা ফাঁকা লাগে , তখন আমাদের ব্যাটসম্যানরা শট খেলার সুযোগ পায়।

 

তারপর গেইল অনুনয়ের সুরে বলেন,

 

“আমি দয়া করে আইসিসিকে বিষয়টা জানান, তাদের  এই বিশয়ে আশু ব্যবস্থা গ্রহন করা উচিত, আপনি নিজেই বলুন , ১৬ কোটি মানুষের সাথে ১১ জন কিভাবে খেলে!!

 

 

 

এদিকে ওয়েস্টইন্ডিয়ান ব্যাটসম্যান “পোলার্ড” ও গেইলকে সমর্থন করেছেন, তিনি  স্বীকার করেছেন আসলেই মাঠে প্রায় ১৬ কোটি মানুষ দেখা যায়, তিনি বলেন ,

 

“প্রথম ম্যাচের দিন আমি মাঠে নেমে পুরো অবাক, কি তাজ্জব কাণ্ড! মাঠ ভর্তি মানুষ! আমি ভাবলাম চোখের ভুল , কিছুক্ষণ চোখ কচলে ভাল করে দেখলাম , না, ঠিকই আছে, কিন্তু এত মানুষ কিভাবে এল কিছুই বুঝতে পারলাম না! এমন সময় পাশে থেকে কে যেন বলল

 

“হ্যালো ব্রাদার , খবর কি? শুধুই নামলেন , এখনই তো আবার ড্রেসিং রুমে যাইতে হবে,”

 

তাকিয়ে দেখি চাঙ্গড়া টাইপ এক ছেলে , আমি তো পুরো অবাক, ওরা কি আমাকে নিয়ে তামাশা করে!মাথায় রক্ত উঠে গেল।  আমি ওকে জিজ্ঞাসা করলাম ওর নাম কি, কই থাকে ? জবাবে কি বলল বুঝলাম না , শুধু একটা শব্দ বুঝলাম “ঢাকা” , এই কারনেই আমি ম্যাচ শেষে বলেছি “ঢাকা”য় বল পাঠাব ,কিন্তু সবাই কি না কি বুঝেছে!

 

যাই হোক, মাঠে এত লোক দেখে আমি গুনতে আরম্ভ করলাম , আমার আবার গগনার প্রতি গোপন আকর্ষণ আছে, কিন্তু ঠিক মত গুনতে পারলাম না, তার আগেই আউট !! ২য়, ৩য়, ৪র্থ , ম্যাচেও গুনলাম, কিন্তু হিসেবে কিঞ্চিত গোলমাল হয়ে যাওয়ায় সঠিক সংখ্যাটা বলতে পারছি না, এই যে ওয়েস্টইন্ডিজ দলের সবাই “১৬ কোটি” বলে বেড়াচ্ছে , এটা কিন্তু আমার থেকেই জেনেছে , বুঝলেন?

 

তো , গননার কাজ যেহেতু শেষ তাই এই ম্যাচে “ঢাকা”কে খুঁজছিলাম , মাঠে নেমে দেখি সে বাউন্ডারির বাইরে , আর আজকের ম্যাচে মাঠে লোক কিঞ্চিত কম, তাই ভাবলাম “ঢাকা”র কাছে কিছুটা বল পাঠাই , এ কারনে কিছু বল পাঠিয়ে দিলাম, যদিও ব্যাটার গায়ে লাগাতে পারিনি। দুঃখ।

 

 

 

 

এদিকে ওয়েস্টইন্ডিয়ান বোলার সুনিল নারায়ন গোটা সফরে তার ব্যর্থতার জন্য ১৬ কোটি মানুষকেই দায়ী করেছেন। তিনি সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকারে বলেন ,

“ প্রথম টেস্টে এত মানুষ দেখেই আমি দিশেহারা হয়ে যাই, দিন দিন দেখি মানুষ বাড়ে !!  , বল করতে গেলে দেখি ১৬ কোটি মানুষ,!! কাকে বল করব?! এ কারনেই আমার পারফর্মেন্স খারাপ হয়েছে , আমি একদম ফেড আপ।”

 

তিনি আরও বলেন , তিনি সাকিবের কাছ থেকে আইপিলে অনেক কিছু শিখতে পেরেছিলেন,তাই তখন এত কিছু পারতেন, কিন্তু অনেক দিন সাকিবের স্পর্শে না থেকে তিনি ভুলে গিয়েছিলেন, তাই টেস্টে কিছুই করতে পারেন নি, কিন্তু আবার সাকিবের স্পর্শে এসে তিনি কিছুটা উন্নতি করেন তাই  ওয়ানডেতে কিছুটা ভাল করেছেন , তিনি সাকিব সম্পর্কে বলেন ,

 

“একদম ফাস্টো কেলাশ”!!

 

তবে সামনে সাকিব যখন  থাকবে  না তখন তিনি কি করবেন তা নিয়ে তিনি চিন্তিত।

 

এদিকে ওয়েস্টইন্ডিজ দলের সবাই মাঠে প্রায় ১৬ কোটি মানুষ দেখে বলে জানা গেসে, কিন্তু কেউ সেটা স্বীকার করতে চাইত না, তারা একে জীন ভূতের কাজ বলে মনে  করত, তাই তারা সকলেই গোপনে “ঝিঝি  বাবার” তাবিজ গ্রহন করেছে, ওয়েস্টইন্ডিজ খেলোয়াড়দের গলায় যে সুদৃশ্য হার শোভা পায় তা প্রকৃত পক্ষে “ঝিঝি  বাবা”র তাবিজ।

 

 

 

 

 

 

 

কালপুরুষ সম্পর্কে

অতি সাধারণ মানুষ , খাঁটি বাংলায় যাকে বলা হয় "বেগুন (যার কোন গুণ নাই) স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি স্বপ্ন দেখাতে ও । আত্মকেন্দ্রিক মানুষ , নিজের গণ্ডির মাঝে বাস করি , বাহিরের জগত খুব একটা আকর্ষণ করে না। বর্তমানে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়য়ে computer science এ অধ্যয়নরত ।
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে বিবিধ-এ। স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

9 Responses to ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের একান্ত অভিযোগ

  1. বোহেমিয়ান বলেছেনঃ

    হাহা! ভালু পাইলাম। বহুত দিন পর

  2. সামিরা বলেছেনঃ

    মজা পেলাম! 🙄

  3. নিলয় বলেছেনঃ

    মজারু! 🙄

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।