ডেনিমের জ্যাকেটটা গায়ে চড়িয়ে ইমন আয়নায় তাকালো। সেট ওয়েট এর টিউবটা চাপ দিয়ে এক দলা জেল বের করে চুল গুলো আরও সুক্ষ্ম করে খাড়া করতে লাগলো, আর শিষ দিয়ে বাজাতে লাগলো সেট ওয়েটের জিঙ্গেল “ভেরী ভেরী সেক্সী!” টেনে জিন্সটা আরেকটু নিচে নামালো, আন্দাজ করে বোঝার চেষ্টা করলো, আর কতোটা নিচে নামালে বিপদ ঘটতে পারে। বিপদসীমা বুঝে বেল্ট টাইট করলো।
বাসা থেকে বের হতে হতে ইমন একটা সিগারেট ধরালো, লাইটারটা গার্লফ্রেন্ডের গিফট দেয়া। মেটাল বডি, বিকিনি পরিহিত একটা চোখ টিপি দেয়া মেয়ের আকৃতি খোদাই করা তাতে। কানে হেডফোন চাপিয়ে দিয়ে ধুমসে সিগারেট টানতে টানতে এগিয়ে যেতে লাগলো তার গাড়িটার দিকে। কানে তার তখন পিটবুল চেচাচ্ছে –
She’s Freaky! She knows how to do what I like just right!
She’s Freaky! She likes you to talk dirty all night!
She’s Freaky! She likes her ass slapped when she rides!
She’s Freaky! And a freak is what I need in my life!
গাড়ি থেকে নেমে গার্লফ্রেন্ডের দিকে এগিয়ে যেতে না যেতেই পাশের একটা চলন্ত গাড়ি থেকে তিন-চারটা ছেলের দুয়োধ্বণি, “ফাক ইউ বীচ” ! ইমনের মাথায় রক্ত চেপে গেলো ! বাচ্চা বাচ্চা ছেলেপিলের এতো সাহস ! চিৎকার করে গালি ছুড়লো তাদের উদ্দ্যেশে। কিছুটা সামনে গিয়ে গাড়িটা থামলো। ইমন এগিয়ে গেলো মুঠো পাকিয়ে।
ইমন চোখ খুলে নিজেকে কোন একটা বড় রাস্তার পাশে আবিষ্কার করলো। জ্যাকেট গায়ে নেই, শার্ট ছেড়া। উপর্যুপরি লাথি ঘুষিতে জায়গায় জায়গায় কেটে গেছে। স্কুল পড়ুয়া কয়টা ছেলের থেকে এরকম ব্যবহার আশা করেনি সে। সে নিজে যখন স্কুলে পড়তো, কতোই না সম্মান দিতো বড়ভাইদের। কানের হেডফোন ছিড়ে কোথায় উড়ে গেছে কে জানে। দাঁতে দাত চেপে সে উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে। পকেট থেকে সিগারেট বের করে ধরায় সে। সামনে দিয়ে একটা রিকশা চলে যায়, মুর্খ রিকশাওয়ালার চাইনিজ ফোনে বিকট শব্দে একটি খ্যাড়খ্যাড়া গলায় কি যেনো গান বাজছে। পিটবুলে অভ্যস্ত ইমন প্রথমে বুঝতে পারে না। কপালের কাটা দাগে হাত বুলায় সে। কান খাড়া করে সে শুনলো –
তুমি দিন থাকিতে দিনের সাধণ
কেনো করলে না।
সময় গেলে সাধণ হবে না ।।
মাথা নিচু করে ডান হাতের দিকে তাকায় সে, নিভু নিভু সিগারেটের আগুন। সময় প্রায় শেষ।
(Y)
একদম যথার্থ লিখেছেন!!
ধন্যবাদ 🙂
বর্তমান ক্রেজের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ চমৎকার একটা লেখা। কে বলে তুই লিখতে ভুলে গেছিস? 🙂
ক্রেজের সাথে ব্যাপারটা ধরতে পারার জন্য বিশাল ধন্যবাদ 🙂 লিখতে ভুলে না গেলে তো আর অনুগল্প লেখা লাগতো না 🙁
ভাল্লাগসে বেটা-
:penguindance: এইরাম খুশি একুপু !
লিখতে ভুলে গেলে *অণুগল্প* লেখে মানুষ? আমার তো মনে হয় ভাল অণুগল্প লেখাই বেশি কঠিন, ভাল বড়গল্পের চেয়ে। বনফুল পড়ছো না? 😀
লেখার মাঝে একটা পার্টিশন দিয়ে দিতে পারো। মানে মাইর খাওয়ার পরের অংশটা গল্পের ২য় ভাগে আর কি।
আমার কাছে পড়তে যথেষ্ট ভাল লাগছে, তবে মেসেজটা ১০০% বুঝতে পারি নাই। ৮০-৯০% পারছি। 🙂
ওহে! লেখাটার ‘বিভাগ’ সিলেক্ট করে দিও। 😀
প্রথমে পড়ে তো চক্ষু কপালে উঠে যাচ্ছিল !! এইসব কী লিখছে ভেবে.. 😯 .
অ-সাধারণ মেসেজ !! সময় গেলে সাধন হবে না… :nono: