চট্টগ্রামবাসীঃ আগামীকাল চট্টগ্রামের হরতাল প্রতিরোধ সমাবেশে যোগ দেবার আহ্ববান

আমার যুদ্ধটা ভিন্ন। সব সময় লেখালেখি করে এসেছি প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকারের দাবী আদায়ে। কিন্তু আজ আমি বাঙ্গালীর প্রাণের দাবীতে লিখতে বসেছি। অসম্প্রদায়িক একটি বাংলাদেশ ও সমস্ত যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবীতে এবং আমার প্রিয় চট্টগ্রামবাসীর উদ্দেশ্য একটি বিশেষ অনুরোধ নিয়ে…

আগামীকাল শনিবার আমাদের চট্টগ্রামবাসীর জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। আমার বিনীত অনুরোধ, স্বাধীনতা চেতনার বিরোধী অপশক্তি জামাত-শিবিরের হরতাল আগ্রাহ্য করে দলে দলে কালকের সমাবেশে যোগ দিন। কাল যদি কোনভাবে তাদের হরতাল সফল হয়, তাহলে সারা দেশের জনগনের কাছে এই বার্তাই যাবে যে, চট্টগ্রামের মানুষ তাদের সব টুকু দিয়ে সারা দেশের মত করে জামাতের বিরুদ্ধে, রাজাকারদের ফাঁসীর দাবিতে এক হতে পারেনি, তারা রাস্তায় নামেনি।

আমি ৭১ দেখিনি। কিন্তু চেতনায়’৭১ কে যারা হৃদয়ে ধারণ করেছেন আজ তাদের সাথে যোগ দিতে আমার আরামের মেডিক্যাল বেডের মায়া ত্যাগ করে যখন জামালখান প্রেস ক্লাব চত্বরে উপস্থিত হই লোকে লোকারণ্য চারিদিকে। স্লোগানে স্লোগানে কাঁপছে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব তথা স্বাধীনতা চত্বর। আজ আমি সবার সাথে গলা মিলিয়ে চিৎকার করে স্লোগান উচ্চারণ করতে পারিনি। শপথ গ্রহণের সময়ে মুষ্টিবদ্ধ হাত মাথার উপরে তুলে ধরতে পারিনি। একটানা বসে থাকার শক্তি ছিলো না শরীরে তাই থেকে যেতেও পারিনি। কিন্তু আমার এই কষ্টের সার্থকতা এবং তৃপ্তি নিয়ে ঘরে ফিরেছি আজ। তরুণ প্রজন্ম আজ নতুন একটা শক্তি দিলো আমাকে। আমার ধারণা পালটে দিলো তারা আজ। যুব শক্তি চাইলেই ছোট একটি আন্দোলনকে সারা দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে পারে এবং তা আদায়ে দৃঢ় অবস্থান নিতে পারে তার প্রমাণ পেলাম আজ। এই বুঝি রাস্তা ছেড়ে ঘরে ফিরে যায় ছেলেরা এই আশঙ্কায় অস্থির হয়ে ছিলাম এ কটা দিন। খুব সহজেই কিন্তু এত বড় আন্দোলনে রূপ পাওয়া বারে বারে সম্ভব না। কোনভাবেই চাইছিলাম না এই আন্দোলন থেমে পড়ুক।

খুব বেশি ভালো লেগেছে আজ, এই প্রজন্ম কোন ধরণের রাজনৈতিক বক্তব্যকে প্রশ্রয় দেয়নি দেখে। সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন মাইক্রোফোন হাতে নিতেই সব ছেলেমেয়ে উঠে দাঁড়িয়ে যেভাবে প্রতিবাদী চিৎকার শুরু করলো, “মানি না মানি” “ভুয়া ভুয়া” …নাহ! আমি এখন আর হতাশ নই। তরুণ প্রজন্ম সত্যি জেগে উঠেছে…ঐক্যবদ্ধ হতে পেরেছে তারা সমস্ত অপশক্তির বিরুদ্ধে!
আমি এই তরুণ প্রজন্মকেই বলছি, আগামীকালের হরতালের প্রতিহত করুন। হরতালের ভয়ে ঘরে বসে না থেকে দল বেঁধে ঘর থেকে বেরিয়ে আসুন। আমরা যত ভয় পাবো, এই অশুভ শক্তির স্পর্ধা তত বেড়ে যাবে। কালকেও গণজমায়েত গড়ে তুলুন সবাই মিলে। বন্ধু-বান্ধব নিয়ে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব তথা স্বাধীনতা চত্বরে দৃঢ় অবস্থান নিন। বুঝিয়ে দিন তাদের দিন শেষ… যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি আদায় করেই ঘরে ফিরবো আমরা।

আগামীকাল জামালখান প্রেস ক্লাব চত্বরে সকাল ১০ টার হরতাল বিরোধী সমাবেশ যেভাবেই হোক দলে দলে যোগ দিন…

সাবরিনা সুলতানা সম্পর্কে

“আমার কতো দাবি! কতো চাহিদা! কিছুই পাইনা। যেদিকে হাত বাড়াই সেদিকে অন্ধকার। সব জায়গায় নিয়ন্ত্রণ। সামাজিক নিয়ন্ত্রণ। রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ। প্রাকৃতিক নিয়ন্ত্রণ। সব নিয়ন্ত্রণে আমি বাঁধা আর গুমরে গুমরে কাঁদে আমার আশা আকাঙ্ক্ষা। ভালোবাসা!”
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে ইতিবাচক-এ। স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

1 Response to চট্টগ্রামবাসীঃ আগামীকাল চট্টগ্রামের হরতাল প্রতিরোধ সমাবেশে যোগ দেবার আহ্ববান

  1. সামিরা বলেছেনঃ

    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরির দৃষ্টি প্রতিবন্ধী কর্মকর্তা সারওয়ার ভাইয়ের সাথে বেশ ভালো পরিচয় আছে আমার। সেদিন দেখলাম উনিও সমাবেশে!

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।