“আবার?” মিথিলা প্রায় চেঁচিয়ে ওঠে।
“কি আবার?” অভীক নির্বিকার।
-বুঝতে পারতেছ না?
-না তো? কি হইছে?
-তুমি আবার এরকম কাকের মত আসছ কেন আমার সামনে?
-আমি কাক? তা কোন জাতের কাক? দাঁড় কাক? নাকি পাতি কাক? ময়ূর কাকও হতে পারি !
-অভীক, লাস্ট ওয়ার্নিং। এখন ওয়াশরুমে যাও, চুল ব্রাশ করবা, শার্টের কলার ঠিক করবা আর এরকম আধ গোজা শার্ট ঠিক ঠাক করে পরে আসবা, যাও, কুইক।
-আজব রে ভাই ! ধুর !
বলে উঠে ওয়াশরুমে চলে গেল অভীক। এই মেয়েটা এত জ্বালায় কেন? কোন দুঃখে এর প্রেমে পরতে গিয়েছিল এই নিয়ে দিনে একশবার নিজেকে গালি দেয় অভীক।
মিনিট তিনেক পর…
-এইবার ঠিক আছে, মিস মিথিলা?
-জ্বী, আজ্ঞে, বসেন।
-কেন ডাকলা? এই ভর দুপুরে কেউ বাহিরে বের হয়?
-না হয় না, কিন্তু আমি হই। কোন সমস্যা?
-না সমস্যা না, আচ্ছা বল কি বলবা।
-বলার জন্য ডাকিনি, এমনিতেই ডেকেছি।
-মানে কি?
-মানে মানে কর কেন? আমি কি তোমাকে ধরে রেখেছি নাকি? ইচ্ছা হলে উঠে চলে যাও।
-ধুর !
এইবার অভীক সত্যি রাগ করে উঠে চলে যায়। কথা নাই বার্তা নাই, ধুম ধাম বলল আর চলে আসতে হবে নাকি? মানে কি পেয়েছে এই মেয়ে ! নাহ আর সম্ভব না !
দুপুর একটা বাজে, এমন সময় মিথিলার ফোন,”অভীক জরুরী কথা আছে, একটু ধানমন্ডির দিকে আসবে?” অভীকের গত দুই রাতে ঘুম হয়নি, ক্লাসের প্রজেক্ট আর রিসেন্টলি একটা জবের জন্য দৌড়াদৌড়ি করতে গিয়ে সব ওলট পালট হয়ে গেছে, ঘুম-খাওয়া সব নাই হয়ে গিয়েছে। আজ যখন মিথিলার ফোন এল ভাবল বোধহয় জরুরী কিছু তাই ঘুম ফেলে কোন মতে চলে আসে সে। কিন্তু এভাবে অকারণে ডেকেছে বলে মেজাজটা চরম বিগড়ে আছে অভীকের !
“কালকে পনের তারিখ আমার প্রেজেন্টেশন দিতে হবে আর তেনার শখ জাগছে দেখা করার ! আর কাজ নাই তো আমার !” বিড়বিড় করছে অভীক। “আচ্ছা সবাই এত সেজে গুজে কেন বেড়িয়েছে?” অভীক ভাবে। “ওরে খাইছে রে ! আজকে ১৪ তারিখ নাকি ? গেছি !”
এতক্ষণে অভীকের মনে পরে যায় আজকের দিনটার কথা, সে নিজে ভ্যালেন্টাইনস ডে পছন্দ করে না কিন্তু মিথিলার সাথে তার প্রথম দেখা এদিনই, কলেজের গেটের সামনে। লাল-সাদা শাড়িতে অসাধারণ সুন্দর লাগছিল ওকে, এরপর কিভাবে কিভাবে জানি ওর সাথে কথা হয়ে যায় তারপরই তো আজকের ওরা ! নাহ এইটা কি করল ও ! “ধ্যাত! আমি একটা খ্যাত !” নিজের উপর বিরক্ত অভীক, গত সাতদিন মিথিলার সাথে কথা হয় না এই প্রজেক্টের জন্য। আজকে নিশ্চয়ই অভীকের সাথে কিছুক্ষণ সময় কাটাতে চেয়েছিল সে, কিন্তু সে উল্টা তাকে ঝেড়ে রেখে এসেছে ! এখন কি করা যায়? সাথে সাথে ফোনটা বের করল, কিন্তু নাহ কাজ হল না। মিথিলা ফোন অফ করে দিয়েছে। পেছন দিকে দৌড় দিল সাথে সাথে অভীক, যে রেস্টুরেন্টায় বসে ছিল সেখানেও গেল কিন্তু মিথিলা চলে গেছে। এখন কি করে! মাথা খারাপ হবার অবস্থা অভীকের। কি করবে সে এখন?
একটা লাল গোলাপ কিনে মিথিলাদের বাসার সামনে ওর বারন্দার সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে অভীক, রাত বাজে তখন প্রায় এগারটা। একটা বারের জন্য মিথিলা বারান্দায় আসে নি। ঠিক এগারটা এক মিনিটে বারান্দায় এলো সে, সাথে সাথে অভীক উঠে দাড়াল। কড়া চোখে অভীককে প্রায় ঝলসে দিল মিথিলা, কিন্তু অভীকের কান ধরে থাকা চেহারাটার দিকে তাকিয়ে থেকে নিজের হাসি আর ধরে রাখতে পারল না। খিল খিল করে হেসে দিল মিথিলা। “নাহ এই মেয়েটাকে বেশি ভালোবাসি, পারলাম না !”, মনে মনে বলে অভীক। হাতে থাকা গোলাপটা আস্তে করে মাটিতে নামিয়ে রাখে অভীক, জানে একটু পরই বাসার কাজের ছেলেটাকে দিয়ে ওটা উঠিয়ে নিয়ে যাবে মিথিলা। প্রথমবার যখন মিথিলাকে লাল গোলাপ দিয়েছিল ঠিক এভাবেই নিয়েছিল সে, আজও নেবে, প্রতিবারই নেবে।
সৌন্দর্যের সংজ্ঞা জানা থাকলে বলতাম … খুব সুন্দর … যাইহোক… I wish I were Avik… 🙂
সৌন্দর্যের সংজ্ঞা- http://en.wikipedia.org/wiki/Beauty
😛
অভিক সাহেবএত্তএত্ত গুলো ভুল করার পরও এত সহজে সব সামলে গেল কি করে?
ভালবাসা দিবসের স্প্যাশাল অপটিমিজমই বটে 😛
অভিক সাহেবকে মিথিলা ভালোবাসে 🙂
দারুণ গল্প
মিথিলার খবর কি অক্ষর সাহেব 😉
মিথিলা কে ? ? ? ? ? :thinking:
মিথিলার খবর কী অক্ষর সাহেব? 😛 😛
সে কে ? 😯
অভিকের আসলে মাইর খাওয়া উচিৎ ছিল :haturi:
ভালো লেগেছে 😀
অভিকের মাইর খাওয়া উচিৎ ছিল ! শারমিন আপি পিটাও ! :happy:
ও ও ও ও
মি-থি-লা ??? 😛
হায়রে মিথিলা, গল্প থেকে আমার নায়িকা হয়ে গেলি ? ? 😛
অভীক-মিথিলা জুটির পেছনের দৃশ্যে কারা? 😛
তারা দুইজন 😛
আহা, লেখকের কী বুদ্ধিদীপ্ত উত্তর! 😛