তুমি নাস্তিক চিনলা বড়, মানুষ চিনলা না

প্রতিদিন সকালে প্রেয়সীর বানানো চায়ে
চুমুক দিয়ে যে তার দিন শুরু করত-
তুমি তাকে চিনলা না।
তুমি নাস্তিক চিনলা বড়, মানুষ চিনলা না।

অফিসের টেবিলে, ল্যাপটপে নিবদ্ধ চোখ
নতুন কোনো ডিজাইন, মাথা তোলপার
হাঁফ ছেড়েও যেন ছাড়ছে না সে-
তুমি তাকে চিনলা না
তুমি নাস্তিক চিনলা বড় মানুষ চিনলা না।

লাঞ্চ আওয়ারে কলিগের সাথে খু্নসুটি,
শনিবারে কোথাও ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান-
হুট করেই যে ভেবে বসত “লাইফ ইজ বিউটিফুল”
তুমি তাকে চিনলা না।
তুমি নাস্তিক চিনলা বড়, মানুষ চিনলা না।

সন্ধ্যায় ফিরতি পথে প্রচণ্ড জ্যাম ,
সারাদিনের রোদে পোড়া শহর দেখে
যে ভাবত , “ইস! আজ যদি বৃষ্টি হত!
তুমি তাকে চিনলা না
তুমি নাস্তিক চিনলা বড়, মানুষ চিনলা না।

প্রতিদিন নিয়ম করে মায়ের খবর;
বাবার সাথে রাজনীতির আলোচনা-
ভাইটিকে যে খবর দিত বাজারে আসা নতুন বইয়ের
তুমি তাকে চিনলা না
তুমি নাস্তিক চিনলা বড়, মানুষ চিনলা না।

তুমি আস্তিক হইয়া থাকলা বড়, মানুষ হইলা না।

জুলফিকার ইসলাম সম্পর্কে

পড়াশোনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগ থেকে। এমবিএ শেষ দিকে। উদ্যোক্তা হওয়ার ইচ্ছা। বিজনেস নিয়ে সিরিয়াসলি লেখালেখি করি। শখের বশে কবিতা লিখি। তীব্র ভালোবাসা পেলে কবিতা লিখতে ইচ্ছে করে, কেউ প্রচণ্ড আঘাত করলে কবিতা লিখতে ইচ্ছে করে। এই অনুভূতিগুলো খুব আটপৌড়ে নয়, ঘনঘন আসে না। সেজন্য কবিতাও আসে না। রাজনীতি, অর্থনীতি, দর্শন,ইতিহাস, সাহিত্য- এগুলো নিয়ে সময় কাটাতে ভালো লাগে।
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে কবিতা, সাহিত্য-এ এবং ট্যাগ হয়েছে , , , স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

16 Responses to তুমি নাস্তিক চিনলা বড়, মানুষ চিনলা না

  1. শারমিন বলেছেনঃ

    :welcome:
    বিভাগে এর সময় খেয়াল করুন বিবিধ না দিয়ে কবিতা বা অন্য কিছু দিয়ে ট্যাগ করুন
    কবিতা কম বুঝি
    আশা করি নিয়মিত লিখবেন 😀

  2. সামিরা বলেছেনঃ

    ভালো লাগলো কবিতাটা। আমাদের বোধোদয় হোক!

  3. জ্ঞানচোর বলেছেনঃ

    :balancin:
    যখনই এখানে ছিল ধৈর্য্যের বচন
    বাঁধিয়া রেখেছ তারে দিয়ে প্ররোচন
    যখনই বেঁধেছে বাসা দেশের অক্ষরে।
    কে ধর্মী-অধর্মী শুধেছিল কারে?

    তমদ্দুন মজলিশ যথা করেছে সূচনা,
    হিন্দু মুসলিম কি করেছে বঞ্চনা?
    তেমনি যুদ্ধ মাঝে করে অপমান,
    ক্ষমা কি পেয়েছে কভু ঘৃণ্য পাকিস্তান?

    মানবতা রাখা যেথা, মানুষ পুজিছে,
    মানুষের মাঝে সদা মানুষ খুঁজিছে।
    ধর্ম হলো সদা প্রাজ্ঞ, ধর্ম অন্তরে,
    হেন চিন্তায় ‘বিষ-বাক্য’ নাহি বসত করে।

    ধার্মিক প্রমাণে যদি না হতো আলোড়ন,
    মানুষই থাকিত সেথা, নাস্তিক ন-কারণ।

    [দেশের ডাকে জীবন দেয়াই মুখ্য। বাকি সব চিন্তা, আপাতত, অগ্রাহ্য হোক]

  4. আরণ্যক বলেছেনঃ

    কবিতাটা ভালো লেগেছে। :guiter:
    জ্ঞানচোর ভাইয়ার কবিতাটাও অসাধারণ! :happy:

    স্বাগত জানাই সরবে! নিয়মিত লিখবেন। :welcome:

  5. বোহেমিয়ান বলেছেনঃ

    কবিতা ভালো লাগছে। সরব এ স্বাগতম।

    আচ্ছা আমার একটা প্রশ্ন আছে।

    কোন জঙ্গি লোক যদি খুন হয়। এই রকম কবিতা কি লেখা হইত?
    জঙ্গি লোকও তো বউ এর সাথে খুনসুটি করে/ খায় ঘুমায়…

    আমি জাস্টিফাই না, জাস্ট জিগাইতাছি।

    • জুলফিকার ইসলাম বলেছেনঃ

      @বোহেমিয়ান ভাই, এই কথার উত্তর তারেক মাসুদ তার রানওয়ে মুভিতে দিয়ে দিছেন। জঙ্গি কার্যক্রমে যোগ দেয়ার পর থেকে ছেলেটার পরিবর্তনগুলো চোখে পড়ার মতো। আর একজন জঙ্গিরে নিয়েও কবিতা লেখা যায়। জঙ্গি তো অনেক রকম।

  6. ফিনিক্স বলেছেনঃ

    :welcome:

    কবিতার জিস্ট দুর্দান্ত লাগছে!

    নিয়মিত হবেন আশা করি। 😀

  7. হাসান বলেছেনঃ

    কবিতার গঠন প্রকৃতি ভালো লাগলো…
    কিন্তু
    একটা বিষয় কিছুতেই বুঝলাম না- আপনার কবিতার নায়ক যা যা করে বলে আপনি প্রশংসা করেছেন তার সাথে মানুষ হবার বিশেষ কি কোন যোগ আছে??? :thinking: ওসব তো আস্তিক নাস্তিক সবাই করে !!! 😐

    পুরো কবিতায় একটা লাইন-ই কাজের মনে হয়েছে:
    “তুমি আস্তিক হইয়া থাকলা বড়, মানুষ হইলা না।”

    ঠিক, আগে মানুষ হতে হবে, তারপর যদি যোগ্যতা থাকে ঐ বিশষত্ব অর্জন করতে হবে।।

    • জুলফিকার ইসলাম বলেছেনঃ

      @হাসান, ভাইয়া আমি তো কারও প্রশংসা করি নাই। আমি একজন সাধারণ বাঙালি তরুণের জীবন, প্রাত্যহিক জীবন, তার অনুভূতিগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। যাকে নাস্তিক বলে আমরা হত্যা করছি, হত্যার সমর্থন করছি তার ভেতরে ঠিক আমাদের মত একজন মানুষ বাস করে, আমাদের মত অনুভূতি তারও কাজ করে এই বিষয়গুলোই আমি কবিতায় বলেছি।

      আর আমি কাজ অকাজ বিচার করে কবিতা লিখি না।

      “আগে মানুষ হতে হবে, তারপর যদি যোগ্যতা থাকে ঐ বিশষত্ব অর্জন করতে হবে।” একমত।

  8. নূহা চৌধুরী বলেছেনঃ

    কবিতা ভাল লেগেছে !
    :welcome:

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।