( কচকচানি- ২ এর পর থেকে… )
আমরা সাধারণ বীজগণিত, ত্রিকোণমিতি, জ্যামিতি দিয়ে যেকোন সুষম পরিমাপ করতে পারি, হোক সে ভেক্টর বা স্কেলার। এই যেমন এই ক্ষেত্রেঃ
এইখানে এই θ কোনে আনত পথের উপর দিয়ে কালো-হলুদ ডোরাকাটা ব্লকটাকে তুলে নিয়ে যেতে কি পরিমাণ কাজ হবে তা আমরা খুব সহজেই বের করতে পারি, কাজ = বল X সরণের উপাংশ। এ আর এমন কি [ধরে নিন যে, ব্লকটাকে আমরা সুষম ত্বরণে তুলছি]!
এবারে এই কমলা রঙের ব্লকটাকে তুলে নিয়ে যেতে কি পরিমাণ কাজ করতে হবে, তা কি অত সহজে বের করতে পারবেন? আগে যেখানে পথটা ছিল সুন্দর-সুষম, একটা নির্দিষ্ট ঢাল ওয়ালা সরলরেখা, এইবার কিন্তু আর তা নেই। এখানে পথটার ঢাল বারবার পরিবর্তিত হচ্ছে। সরণের উপাংশ বের করাটা এবারে বেশ কঠিন কাজ হয়ে গেল।
আরেকটা সমস্যা হল এইখানে ত্বরণ সুষম রাখতে হলে বল আর অপরিবর্তনশীল রাখা চলছে না। কোন জায়গায় ঢালের মান বেশি, আমাদের সেইখানে বেশি বল প্রয়োগ করতে হবে। আবার যেখানে ঢালের মান কম, সেখানে বল দরকার হয় কম। একেক সময় একেক রকম বল প্রয়োগ করতে হচ্ছে। ফলে, আমরা এখানে যেমন সরণের উপাংশ বের করতে ঝামেলায় পড়ছি, তেমনি সমস্যা পোহাতে হচ্ছে বলের মান পরিবর্তনশীল বলেও।
এইরকম ক্ষেত্রেই আসলে ক্যালকুলাসের মূল কেরামতি, এমন পরিবর্তনশীল অবস্থা নিয়ে কাজ করতে ক্যালকুলাসের জুড়ি নেই। ক্যালকুলাস এই আঁকাবাঁকা পথটাকে প্রথমেই ধরে অতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে ভাগ করে ফেলে। এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভাগে ভাগ করে ফেলার এই ঘটনাটাকে ক্যালকুলাসের ভাষায় বলা হয় ডিফারেনসিয়েশান (Differentiation) বা অন্তরকলন বা ব্যবকলন। আর আমি এইটাকে নাম দিয়েছি ‘পিচ্চিকরন’ 😛 !
এখন প্রশ্ন হতে পারে, এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভাগে ভাগ করে ফেলার সিগ্নিফিকেন্স কি?
আসলে পথটা আঁকাবাঁকা (বক্ররেখা) হওয়ায় আমরা ঢাল বার বার পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছিল, এবং এর ফলে আমরা আমাদের জানা জ্যামিতির কোন সূত্রই শান্তিমত খাটাতে পারছিলাম না। এইটাই ছিল আমাদের মূল সমস্যা। এখন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সেগমেন্টে ভাগ করে ফেলায় প্রতিটা ছোট্ট অংশের মাঝের পুরো অংশটুকুই এখন হয়ে গেছে সরলরেখা দিয়ে আবদ্ধ। এখন এই ছোট্ট ছোট্ট অংশগুলোতে আমরা জ্যামিতির সূত্র খাটাতে পারব!!
বক্ররেখার ক্ষুদ্র অংশটুকু সরলরেখা কীভাবে হল, তা নিয়ে মনটা খুঁতখুঁত করছে একটু? এই জুম করা ছবিটা দেখুন, স্পষ্ট বোঝা যাবে ঘটনাটা কি হল –
এখন তো বোঝা গেল, এই ছোট্ট ছোট্ট সেগমেন্টের মাঝে এই বক্র রেখাটাও হয়ে গেছে সরলরেখা! তাহলে এও বোঝা যাচ্ছে, প্রতিটা সেগমেন্টই একেকটা ট্রাপিজিয়ামের মত চেহারা নিয়ে বসে আছে (আসলে ক্ষুদ্র এই সেগমেন্টগুলো এর চেয়েও অনেক বেশি ছোট। এখানে দেখানোর সুবিধার্থে এত্ত বড় বড় করে দেখানো হল। সেগমেন্টগুলো যত ছোট হবে, ফলাফল তত বেশি নিখুঁত হবে। সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে আমরা সাধারণত এই সেগমেন্টের প্রস্থ ধরে নেই শূন্যের খুব কাছাকাছি, অর্থাৎ, প্রস্থ→0 ধরে নেই ! এভাবে প্রতিটা সেগমেন্টের জন্যে হিসেব করে তাকে যোগ করে দিলেই আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত ফল পেয়ে যাব! যোগ করার এই কাজটাকে ক্যালকুলাসের ভাষায় বলা হয় ইন্টিগ্রেশান (Integration) বা সমাকলন না যোগজীকরণ। যোগজীকরণ নামটা থেকেই আসলে বোঝা যায় যে এইখানে কি করা হয়। হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন, এইখানে যোগ করা হয়!! ☺
তারপর ধরুন, এই বাড়িটা –
সাধারণ জ্যামিতি আর বীজগণিত ব্যবহার করে খুব সহজেই এর আয়তন বের করা যায়। কিন্তু যদি এই খড়ের গাদার আয়তন বের করতে বলা হয় –
এইবার কিন্তু ক্যালকুলাস ছাড়া আর কোন গতি নাই!
এখন আবার প্রশ্ন হতে পারে, ক্যালকুলাস কিভাবে কার্ভকে সরলরেখায় পরিণত করে?
খুবই সহজ, প্রি-ক্যালকুলাসে আমরা দেখি (সোজা কথায়, লিমিটের অঙ্কগুলোতে) শূন্যের কাছাকাছি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র পরিবর্তন বিবেচনা করে হিসেব-কেতাব করা হয়। পরিবর্তন যদি শূন্যের কাছাকাছি হয় তবে পরিবর্তনের গ্রাফ কিন্তু ক্ষুদ্র সরলরেখাই হয়। এঁকে চেষ্টা করে দেখতে পারেন।
পিচ্চিকরণের প্রেমে পড়ে গেলুম! :love:
সাবধান… ভয়ানক দেমাগী এই পিচ্চিকরণ!!
আমি প্রপোজ করেছিলাম। আমায় :slap: দিয়ে দিয়েছে… কপাল ভাল, আশেপাশে কেউ ছিল না তখন! নইলে মান সম্মান ধূলায় ধূসরিত হইয়া যাইত… 😛 😛
আমি নীরব প্রেমিক হইয়া রহিলাম তবে!
ভয় পাহিয়াছি! :voypaisi:
তোমার নীরব প্রেমকে আমি সশ্রদ্ধ অভিবাদন… 😛
ডরাইয়ো না! আমি আছি না! 😀
হে হে!
তাই তো!
ভাই সাথে থাকতে আর চিন্তা কী! :happy:
😀