পিচ্চি বিড়ম্বনা-1

শুরুর কথাঃ পিচ্চিদের দিয়ে বড়দের নাকানি চুবানি খাওয়ার নানা মজার ঘটনা নিয়ে ‘পিচ্চি বিড়ম্বনা ‘নামে আমার একটি গল্পের সিরিজ আছে।
পিচ্চি বিড়ম্বনা-1
(জগতের সমস্ত পিচ্চির নিকট ক্ষমাপ্রদর্শনপূর্বক)
মোবাইল টেলিকম কোম্পানি বাংলালিংকের একটি বিজ্ঞাপন  একসময় খুবই  জনপ্রিয় হয়েছিল।ওই বিজ্ঞাপনের একটি হিট ডায়লগ ছিল,’দিন বদলাইছে না ।‘সেই দিন বদলের  ধারাবাহিকতায় অন্য সবকিছুর মত আমাদের পিচ্চিরাও বদলে গেছে।তারা এখন পূর্বসূরীদের চেয়ে অনেক বেশি  ফার্স্ট, অনেক বেশি স্মার্ট।দুই প্রজন্মের ছেলেবেলার মধ্যকার  পার্থক্য থেকে তৈরি হয় নানা বিড়ম্বনার ঘটনা।তবে এটা ঠিক,বিড়ম্বনা হলেও তা উপভোগ্য বটে।‘পিচ্চি বিড়ম্বনার’ আজকের এই আয়োজনে আপনাদের সাথে শেয়ার করব আমার এক মামার কিছু অভিজ্ঞতা।মামা ঋতু নামে একটি মেয়েকে বাসায় টিউশনি করাতেন।নার্সারিতে পড়ত সে।পড়াশোনায় ভাল হলেও মেয়েটা ছিল বেজায় দুষ্টু। অংক করতে দিলেই তার নানান সমস্যা দেখা দিত।খারাপ লাগা শুরু করে মাথা ঘোরা ,ঘুম পাওয়া,এমনকি পেট ব্যাথা ইত্যকার নানা ধরনের সমস্যা এবং সবশেষে বাথরুমে যাবার ইমো।এরপর অনুমতি নিয়েই দে ছুট বাথরুমে। ।তারপর আর সেখান থেকে ফেরার নাম নেই।ব্যাপারটি এক দুদিন হতেই পারে, কিন্ত  তাই বলে প্রত্যেকদিন। মামা ভেবে পাননা,এইটুকুন একটা মেয়ের কিভাবে এত সমস্যা থাকতে পারে?ওর মা বোধহয়  এই ঘটনাগুলোর সাথে আগে থেকেই পরিচিত ।সে কারনে উনি প্রায়ই পড়ানোর মাঝে এসে দেখে যান ,সে ঠিকমত পড়ছে কি না?দেখতে না পেলে মুচকি হেসে বাইরে যেতেন।এর কিছুক্ষন পরে কানমলা দিয়ে ওর মা ওকে পড়ার ঘরে হিড়হিড় করে টেনে নিয়ে আসত।পরে ওর মায়ের মুখে সবকিছু জানতে পেরে তো উনি  ‘’থ ‘’বনে যান।আসলে সে পড়ার ভয়ে বাথরুমে চুপ করে দাড়িয়ে থাকে এবং যতদিন থেকে পড়াশোনা নামক যন্ত্রনা শুরু হয়েছে, ততদিন থেকেই সে এই কাজটা নিষ্ঠার সাথে করে আসছে।ওদের পরিবারের সবাই মোটামুটি ওর এই রোগের সাথে পরিচিত।যেহেতু তিনি নতুন পড়ানো শুরু করেছেন । তাই তার কাছে  এটি অবাক করার মত ঘটনা বলেই মনে হয়েছে।
ছোটমানুষ হলে কি হবে,মাঝেমধ্য সে এমন সব প্রশ্ন  করতো যে ,যার উত্তর দিতে গিয়ে কপালে ঘাম ছুটত তার।গালে খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি দেখলে সে বলতো;ভাইয়া ,দাড়ি কাটেন নি কেন ?-তারপরেই ফিক করে একটা হাসি দিত সে।তিনি এতে রীতিমত বিব্রত হয়ে যেতেন। পরেরদিন ক্লিনশেভড হয়ে গেলেও নতুন বিপত্তি ।‘ভাইয়া আপনি শেভ করবেন না।শেভ করলে আপনাকে একদম বাচ্চা ছেলের মত লাগে।‘ এমন কথা শুনে টাশকি  না খেয়ে উপায় আছে বলুন?
মাদরাসা পড়ুয়া অন্য এক পিচ্চিকে পড়াতে  গিয়ে আরেক বিচিত্র অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিলেন তিনি।সেই পিচ্চিটাও ছিল অসম্ভব রকমের ভাল(!)।কোন প্রশ্ন করলে সে উত্তর দিত,রীতিমত ওয়াজের ঢঙে।বই পড়তে দিলে ওয়াজের সুর শোনা যেতো,।সালাম দিত এভাবে,আ-স- সা-লা–মু আ-লা-ইকুম ও-য়া রহমাতুল্লাহ। এমনই সব বিচিত্র ঘটনার জন্ম দেয় ওরা।এসব ঘটনার চুলচেরা বিশ্লেষণ করার কোন প্রয়োজন নেই।কেননা পিচ্চিরা একটু দুষ্ট হবেই।পিচ্চিরা দুষ্ট না হলে কি মানায় বলুন?

শুকপাখি সম্পর্কে

নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করার অভিপ্রায় বুকে লালন করি সবসময়ই।তাই হয়ত নিরানন্দ মেডিকেল লাইফের বাইরের জগত সম্পর্কে আমার জানার আগ্রহে কমতি নেই,বরং বোধহয় একটু বেশিই।জানতে, জানাতেই লেখার চেষ্টা করি।লেখা সুখপাঠ্য হয় কিনা জানি না,না হলে না হোক;নিজের আনন্দ লাভের এ উপলক্ষ ছাড়তে চাই না কখনই।
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে বিবিধ-এ। স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

7 Responses to পিচ্চি বিড়ম্বনা-1

  1. অনুজ বলেছেনঃ

    পিচ্চিরা দুষ্টু না হলে কি মানায়, বলুন?? :love: :love:

    [আচ্ছা, ‘দুষ্ট’ আর ‘দুষ্টু’ এই শব্দ দু’টার অর্থ আলাদা না?]

  2. অবন্তিকা বলেছেনঃ

    আর একটু খানি গুছিয়ে লিখতে চেষ্টা কোরো ভাইয়া! 🙂

  3. ফিনিক্স বলেছেনঃ

    পিচ্চিপাচ্চাদের জন্য ভালোবাসা। :love:

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।