একটা খবর দেখলাম “কম দামে ক্যান্সার ওষুধ পাবে ভারতের মানুষ”
সম্পূর্ণ খবরটি হলো>> “একচেটিয়া ভারতীয় বাজার দখল করে প্যাটেন্টের নামে বেশীদামে ক্যান্সার ওষুধ বিক্রী করছিল নোভার্টিস নামের বিদেশী সংস্থাটি। ক্যান্সারের জন্যে নোভার্টিসের করা প্যাটেন্টের মামলাটি খারিজ করে দিয়েছে ভারতীয় সুপ্রীমকোর্ট। এরফলে অনেকটাই স্বস্তি পাবে ভারতের ত্বক ও রক্ত ক্যান্সারের রোগীরা। নোভার্টিস মামলায় জিতলে আগামী ২০ বছর শুধু তারাই গ্লিমিক নামের ওষুধটি তৈরি করতে পারতো। বিক্রী করতো তাদের নির্ধারিত মূল্যে। ফলে তাদের দেশীয় কোন কোম্পানী এধরনের ওষুধ তৈরি করতে পারতো না। রোগীরা মাসে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ করে ওষুধটি কিনতে বাধ্য হতো। ফলে এই রায়কে দেশের গরীব মানুষের পক্ষে যুকান্তকারী সাফল্য হিসেবে দেখছেন সেদেশীয় নীতি নির্ধারক ও ওষুধ প্রস্তুতকারি প্রতিষ্ঠানগুলো।
নোভার্টিস বনাম সিপলা ও র্যানবেক্সির করা মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে গড়ায় ২০০৯ সালে। ‘চেন্নাইয়ের ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি এ্যপিলেট বোর্ডে ’নোভার্টিসের দাবি খারিজ হয়ে যাওয়ার পর। নোভার্টিসের বরাবরের দাবি তাদের ক্যান্সারের ওষুধটিতে ব্যবহৃত ‘ ইমার্টিনিব ম্যাসাইলেট’ সম্পূর্ণ নতুন একটি পদার্থ এবং তা তাদেরই উদ্ভাবন। কিন্তু এবার সুপ্রিমকোর্টের বেঞ্চ থেকে সরাসরি জানিয়ে দেয়া হয়েছে ইমার্টিনিব ম্যাসাইলেট নতুন কোন পদার্থ নয় এবং কেবল মাত্র এই ওষুধ ব্যবহারের কারনে অভিনবত্ব দাবী করা যাবেনা। প্যাটেন্ট আইনের ধারায় বলা হয়েছে প্রচলিত ওষুধের সামান্য হেরফের করে নতুন ওষুধ বানিয়েছি বলে প্যাটেন্ট দাবী করা যাবেনা। ক্যান্সার চিকিৎসাকারী ডাক্তারদের মতে দেশীয় কোম্পানীগুলো এই ওষুধ তৈরি করার অনুমোদন পেলে ক্যান্সারের রোগীদের জন্যে এটা হবে অনেকটাই স্বস্তি দায়ক। বরং এতেকরে রোগীরা এ ওষুধ ছাড়াও অন্যান্য চিকিৎসাগুলো সহজে নিতে পারবে।”
আমাদের দেশেও প্রায় একই অবস্থা, আমাদের দেশেরও অনেক নাম করা ওষুধ কোম্পানী আছে কিন্তু এই প্যাটেন্টের গেড়াকলে পরে তারা বিদেশী কোম্পানীর দৌরাত্বের কারণে কম দামে উৎপাদন করতে পারছে না, বা পারলেও তার পেটেন্টের জন্য মোটা অংকের টাকা দিতে হচ্ছে বিদেশী কোম্পানীকে। আর এ জন্য আমাদের দেশের মানুষকেও ভুগতে হচ্ছে- তাদের পকেট থেকে ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য দেখা যায় সপ্তাহেই চলে যায় লাখ টাকা। কিন্তু হিসাব করলে দেখা যাবে যদি এই ওষুধটি দেশীয় কোন কোম্পানী তৈরী করত তাহলে এর মূল্য নেমে আসত এক তৃতীয়াংশতে বা ৭০% দাম কমে যেত। মানুষের জীবন নিয়ে এই মনোপলি ব্যবসার অবসান বন্ধ হওয়া দরকার এখনই।
আশা করি এই রায়টিকে অনুসরণ করে আমাদের দেশেও অনুরূপ কার্যকর ব্যবস্থা নিবে আমাদের দেশের সরকার, আইনবিভাগ, ওষুধ প্রশাসন ও উৎপাদনের সাথে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো। সেই সাথে দেশীয় কোম্পানীগুলো যে ওষুধ উৎপাদন করে তার মূল্যমানো নিয়ন্ত্রন করা দরকার সরকারী ব্যবস্থাপনায়।
মনে রাখবেন! বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতে রোগীর মাত্রাতিরিক্ত ব্যয় বা খরচের জন্য ডাক্তার নন, দায়ী এই সকল মাল্টিন্যাশনাল বা কর্পোরেট ওষুধ কোম্পানী, স্বাস্থ্যসেন্টার বা হাসপাতালগুলোই… ডাক্তাররা তাদের ভিজিটের জন্য নেন মাত্র ৫০০-৭০০ টাকা, যা আজকের বাজারমূল্যে খুব সামান্যই বলা চলে। যেখানে একজন উকিলের কাছে বা অ্যাকাউন্টেন্টের কাছে গেলে আপনার কাছ থেকে তারা নিবে ২০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত! এবং এটাও সত্য যে আপনি গরীব হলে ডাক্তার তা জানলে আপনার কাছ থেকে ততটুকুই রাখবে যতটুকু আপনার সাধ্যে থাকবে, দিতে না পারলে- তিনি অবশ্যই নিবেন না, এরকম অনেক ডাক্তার আছেন। সমস্যা হলো চিকিৎসাসেবায় কর্পোরেট ও আধুনিকায়নের কারণে অনেক স্থানে অর্থ লাগে যার সাথে ডাক্তাররা জরিত নন। এটা না জেনেই আমরা এর দোষটা/ দায়টা চাপাই ডাক্তারদের উপরে।
বাংলাদেশের ডাক্তাররা ফ্রিতেই সেবা দেন সরকারী হাসপাতালগুলোতে, এবং এর মান ও কিউর রেট সেসকল বিদেশী কোম্পানীর হাসপাতাল থেকে অনেক অনেক গুণ বেশি ও মানসম্মত। মনে রাখবেন চকচক করলেই সোনা হয় না
তাই আপনার কোন চিকিৎসা করাতে বেশি টাকা লাগলে ডাক্তারকে দূষবেন না দোষ দিন স্বাস্থ্যব্যবস্থার লাগামহীন ও নিয়ন্ত্রনহীন বাজারকে
শুধু এটুকুই নয়, এইডস-ব্রেন টিউমার-ফুসফুস’এর ক্যান্সার ইত্যাদি বহু ভয়ঙ্কর রোগের জীবনদায়ী ওষুধ-কে সাধারণ মানুষের সাধ্যের মধ্যে এনেছে সিপলা ও সহযোগী ভারতীয় কোম্পানিগুলো! এশিয়া-আফ্রিকা-ল্যাটিন আমেরিকা-তে এইডস’এর উপশমে এদের ভুমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ!
http://www.thehindu.com/…/cipla…/article3381049.ece
আধুনিক ‘রবিন হুড’ ও সিপলা’র প্রতিষ্ঠাতা শ্রী ইউসুফ হামিদ-এর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা!