একজন মুসলমান হিসেবে আল্লামা শফিকে যতটুকু সম্মান করা দরকার,আমিও ঠিক ততটুকুই করি।শ্রদ্ধেয় বড় হুজুর, ঢাকার উদ্দেশ্যে লংমার্চ শুরুর আগে আপনার কাছে আমার কিছু প্রশ্ন ছিল।প্রশ্নগুলো সামনাসামনি করতে পারলেই সবচাইতে ভালো হত।কিন্তু আপনি যেখানে মন্ত্রীকেই পাত্তা দিচ্ছেন না,সেখানে আমি কোন ছার!যাক,ভণিতা না করে প্রশ্ন করা শুরু করি।
১.বড় হুজুর,আপনার সংগঠন থেকে জানানো হয়েছে,আন্দোলন থেকে মানুষের দৃষ্টি সরানোর জন্যই গতকাল তিনজন ব্লগারকে গ্রেফতার করা হয়েছে।ঠিক কতজন নাস্তিক তথা কটূক্তিকারী ব্লগারকে আইনের আওতায় আনা হলে আপনারা আন্দোলন বন্ধ করবেন?কিংবা কতদিনই বা চলবে আপনাদের এই আন্দোলন?
২.পশ্চিমা দেশগুলোতে প্রায়ই মুসলিম স্কলারদের সাথে নাস্তিক তাত্ত্বিকদের যুক্তি-তর্ক হয়।সেটা যে অনলাইনে তেমনটা না।বরং বিশাল হলরুমে জনসম্মুখে সেইসব আলোচনা হয়।এমনকি মানুষজন টিকেট কেটে সেখানে আলোচনা শুনতে যায়।আপনাদের কি বাংলাদেশী নাস্তিকদের সাথে এই ধরনের কোন যুক্তি তর্ক করার ইচ্ছা আছে?নাকি শুধু গ্রেফতারের আল্টিমেটাম দিয়েই খালাস?সেক্ষেত্রে নতুন করে তরুণরা যে নাস্তিকতার
প্রতি আকৃষ্ট হবে না,তারই বা নিশ্চয়তা কি?
৩.যেসব নাস্তিকদের ব্যাপারে শোরগোল চলছে,তারা স্বেচ্ছায় এবং ঘোষণা দিয়েই নিজ থেকে ধর্মত্যাগ করেছে।এদের কেউ যদি অবমাননাকর কিছু বলে-লিখে,অবশ্যই তাদের সাধারণ মানুষের ধর্মানুভুতিতে আঘাতের অভিযোগে আইনের আওতায় আনা যায়।কিন্তু কেউ যদি ইসলাম ধর্ম ধারণ করেই এবং ধর্মের ভিতর থেকেই ক্বাবা শরীফের মত তীর্থস্থানকে জড়িয়ে মিথ্যাচার করে,তবে তাদের কি শাস্তি হওয়া উচিৎ?
৪.ইসলাম ধর্মের নাম ভাঙ্গিয়ে যারা ব্যবসা করছে,বিদআতের বিস্তার ঘটাচ্ছে,মিথ্যা ফতোয়া দিচ্ছে,তাদের ব্যাপারে আপনাদের অবস্থান কি?
৫.নারী জাতি মায়ের জাতি।নবীজি সাঃ তাঁদের মর্যাদা বিধান করে দিয়ে গেছেন।দেশে প্রায় প্রতিদিনই অসংখ্য নারী নির্যাতিত হচ্ছে। যাদের মধ্যে মাদ্রাসা ছাত্রী যেমন আছে,তেমনি নাবালিকাও আছে।সবচাইতে বেশি সংখ্যক নারী নির্যাতিত হয় যৌতুকের কারণে যা কিনা ইসলামী শরীয়তে সম্পূর্ণরূপে হারাম।এই গোটা ব্যাপারে আপনাদের অবস্থান কি?বা এইসবের প্রতিকার বিধানে আপনারা কি পদক্ষেপ নিয়েছেন?
৬.নাস্তিকদেরকে আমরা চিনলাম শাহবাগ আন্দোলন শুরু হওয়ার পরে।এরও অনেক আগে থেকেই তারা তাদের লেখালেখি চালিয়ে যাচ্ছিল।তাদের ব্যাপারে সম্যক ধারণা থাকার পরেও যারা এতদিনে আপনার কাছে নাস্তিকদের পরিচয় তুলে ধরেছে,তাদেরকে কি সত্য গোপনের দায়ে অভিযুক্ত করা যায়?এছাড়া,আপনারা বারে বারে বলছেন,যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যাপারে আপনাদের কোন আপত্তি নাই।কিন্তু নাস্তিকদেরে সম্পূর্ণরূপে
‘নির্মূল’ করার পরে আপনারা কি প্রকাশ্যে বিচারের প্রতি সম্মতি জ্ঞাপন করবেন এবং সেখানে যদি কোন ভুল হয়,সেইসব ধরিয়ে দিবেন?
৭.ইসলামের খোলাফায়ে রাশেদিনদের জামানায় সংখ্যালঘুরা কখনোই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেনি। বরং তারা ছিল সবচাইতে নিরাপদ।কিছুদিন আগে সারাদেশ জুড়ে সংখ্যালঘুদের উপর যে হামলা হয়েছে,সেখানে একজন মুমিন মুসলমান হিসেবে কি সাহায্য নিয়ে এগিয়ে গেছেন?আর তাদের ধর্মানুভুতিতে আঘাতেরই বা কি হবে?
৮.সর্বশেষ প্রশ্ন,সারা দুনিয়া জুড়ে চলা ‘ওয়ার অন টেরর’ শুধু মুসলমানদের বিরুদ্ধে চলমান সামরিক যুদ্ধই না,বুদ্ধিবৃত্তিক এবং জ্ঞানের যুদ্ধ ও বটে। এদের বুদ্ধিবৃত্তিক এবং জ্ঞানের মোকাবেলা করারা মত জ্ঞান কি আপনার ছাত্রদের আছে?
হুজুর,আমি জানি আমার এইসব প্রশ্ন হয়তো আপনার কাছে পৌঁছাবে না।তবে আমার বিশ্বাস যারা আপনার কাছে নাস্তিকদের লেখালেখির কথা পৌঁছে দিয়েছে,তারাই আমার এই প্রশ্নগুলো আপনার কাছে পৌঁছে দিবে।আল্লাহ আপনাকে সুস্থ রাখুক,নেক হায়াত দান করুক।যাযাকাল্লাহ খাইরান।
–আবদুল্লাহ আল ইমরান
মুসলিম হিসেবে শ্রদ্ধা রেখেই যে প্রশ্ন করা এবং জরুরি ক্রিটিকাল প্রশ্ন তেমন উদাহরণ রাখার জন্য ধন্যবাদ।
ইসলামের খোলাফায়ে রাশেদিনদের জামানায় সংখ্যালঘুরা কখনোই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেনি। বরং তারা ছিল সবচাইতে নিরাপদ।কিছুদিন আগে সারাদেশ জুড়ে সংখ্যালঘুদের উপর যে হামলা হয়েছে,সেখানে একজন মুমিন মুসলমান হিসেবে কি সাহায্য নিয়ে এগিয়ে গেছেন?আর তাদের ধর্মানুভুতিতে আঘাতেরই বা কি হবে?
বিশেষ করে খলিফা উমর এর আমলে তিনি বলেছিলেন একটা কুকুর ও যদি না খেয়ে থাকে (মানে সমস্যায় পড়ে) তাহলে তার দায়ভারও খলিফার উপর। অথচ আমাদের রাষ্ট্রের মধ্যে এমন ঘটনা এই নিয়ে প্রায় সবাই নিশ্চুপ ছিলেন
দুঃখিত ভাইয়া।উত্তরটা দিতে দেরি হয়ে গেল।প্রশ্নগুলোর উত্তর এখন অব্দি পেলাম না।
http://www.facebook.com/photo.php?fbid=591982517478771&set=a.372313896112302.99866.100000010833470&type=1&ref=nf
ব্যক্তি নিজে দাবি না করা পর্যন্ত কাউকে কাফের/মুরতাদ বলা যায় না। আব্বু অনেক আগেই বলেছিলেন।