সারভাইভ্যাল অফ দ্য ফিটেস্ট: ওজন বেশি কী করি?

–      সারভাইভ্যাল অফ দ্য ফিটেস্ট! আরে আসলেই তো তাই দেখি।

–      মানে?

–      এই যে বললাম!

–      ধ্যাত্তেরি! কথা নেই বার্তা নেই কোথা থেকে কী বলে বসবি, আর ধরে নিবি সবাই বুঝে-টুঝে বসে আছে সব, তাই না?

–      তুমি শুধুই বকো ভাইয়া।

–      এখন আবার গাল ফুলিয়ে বসে থাকিস নে। বল্‌ না কী ভাবলি?

ছোট ভাই তার গোমড়া মুখ হাসি হাসি করে তারপর ব্যাখ্যা করতে শুরু করলো, “দেখো ভাইয়া, আমরা না বলি – যে বড়-ছোট, ধনী-গরীব সবারই বাঁচার সমান অধিকার আছে? সুন্দরভাবে বাঁচার? কিন্তু আসলে কি আমরা এ কথা মনে মনে বিশ্বাস করি, বলো তো? আমি ভেবে দেখলাম, আমাদের আচার-আচরণ কিন্তু সে কথা বলে না! ধরো ভিনগ্রহ থেকে কোন এক প্রাণী আসলো, সে আমাদের দেখে ভেবে বসবে যে আমরা কেবল সবচাইতে নিখুঁত, ‘ফিটেস্ট’কেই বাঁচতে, সারভাইভ করতে দিতে চাই।”

“কী যে বাজে বকিস না তুই! কবে আবার আমরা এমনটা চাইলাম! তোর মত বোকারা চাইলেও চাইতে পারে।”

“ভাইয়া আবার! যাও বলবোই না আমি আর কখনও তোমাকে কিছু।”

“এই যে আবার রেগে যাচ্ছিস। একটা কথাও সহ্য করতে পারিস না নাকি? আমি তো এমনি বললাম!”

“এই তো এই তো! তোমার এই কথা থেকে ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দিচ্ছি শোনো। তুমি বলছো আমি নাকি একটা কথাও সহ্য করতে পারি না। ভাল কথা, সত্যি কথাও হয়তো! কিন্তু কথা যে সইতে হবে এমন কথা কোথায় লেখা আছে? নাকি বেশিরভাগ মানুষ এই কথাটা সহ্য করতো বলে তুমি চাইছো যেন আমিও তাদের মত হই? তার মানে তুমি চাইছো আমি ‘ফিট’ হই, ‘আনফিট’ না থাকি, তোমার ভাই যেন অল্পতেই কেঁদে-ফেলা সেনসিটিভ পুতুল না হয়, তাই তো?”

“হুম…তো?”

“এখানেই তো কথা। তুমি এখানেও চাইছো ‘সারভাইভ্যাল অফ দ্য ফিটেস্ট’, আনফিট কাউকে তুমি দেখতে চাও না। হয় চাও যে আনফিট আমাকে ফিট করে তুলতে, নয় তো…”

“নয় তো তোকে মেরে ফেলতে, এই তো বলবি? নাকি?”

“হাহাহা। এবার তো তুমি রেগে যাচ্ছো ভাইয়া। যাই হোক, এই অনুধাবনের ব্যাপারটা কেন ঘটলো জিজ্ঞেস করলে না যে?”

“বল্‌ চাইলে! তোকে তো কিছু জিজ্ঞেস করতে গেলেও বিপদ। তত্ত্ব কপচানো শুরু করবি আবার কখন কে জানে!”

“আরে নাহ্‌, শোনোই না। একটা ছোট্ট আর খটমটে আর্টিক্‌ল পড়লাম, কিন্তু এত সুন্দর! এক আমেরিকান মহিলার লেখা, খুব ভাল লেগেছে। তুমি পড়বে ভাইয়া?”

“ইংরেজি, না? উঁহু সাধ নেই পড়ার। তুই বরং বল্‌ কী লিখেছে, আমি শুনি, ওতেই হবে।”

“ইংরেজি হলে কী! তুমি যে কী না! আচ্ছা বলছি। এই মহিলা অনেক মোটা। সে তার মাত্রাতিরিক্ত ওজন নিয়ে লিখেছে।”

“ওওওহ্‌ তাই বল্‌! ওজন কমানোর টিপ্‌স জাতীয় কিছু বুঝি? ওসবে দরকার নেই আমার, ওজন বাড়ানো যায় কেমন করে তা নিয়ে কিছু পেলে বলিস।”

“না না!

বলছি শোনো…

সহনশীলতার অভাব নিয়ে আমাদের অনেক মাথাব্যথা সত্ত্বেও এর সবচেয়ে বড় যে ক্ষেত্রের দিকে তেমন নজরই দেয়া হয় নি কখনো, তা হল মোটা মানুষদের প্রতি আমাদের আচরণ। কোন ধরনের অনুশোচনা কিংবা ক্ষমাপ্রার্থনা ছাড়াই টেলিভিশন, খবরের কাগজের কলাম থেকে শুরু করে কার্টুন – সবখানেই নিয়মিতভাবে তাদের নিয়ে হাসিতামাশা করা হয়। সবার ভাবটা এমন যেন মোটা হওয়াটা নৈতিকতার অধঃপতন নির্দেশ করে! আর যেহেতু এই অধঃপতিত জনগোষ্ঠী নিজেরাই নিজেদের অবস্থার জন্য দায়ী, তাই তাদের প্রতি কোন রকম সহিষ্ণুতারও দরকার নেই। কেবল দরকার আছে দর্শন দেখেই তাদেরকে বাতিল ঘোষণা করার।

অতিরিক্ত ওজন নিয়ে এ ধরনের তিরস্কার-উপহাস নিত্যদিনের ঘটনা। আর অদ্ভুত ব্যাপার যেটা, এসব প্রগতিশীল মানুষদেরকে অন্য কোন ক্ষেত্রে বৈষম্যমূলক আচরণ করতে বললে, সেটা বর্ণবাদী গালি হোক কি অন্য কিছু – তারা শোকে মারাই যাবে। একই মানুষ আমার মত মোটা কাউকে রাস্তায় হেঁটে যেতে দেখলে “হোঁতকা শরীরটাকে সরাও তো সামনে থেকে!” বলতে দ্বিধা বোধ করে না।

জীবনে প্রথমবারের মত যেদিন পাড়ার অন্য বাচ্চাদের সাথে খেলতে বেরিয়েছিলাম, সেদিন থেকেই আমাকে বার বার, বার বার করে বলা হচ্ছে যে আমি অলস আর বিরক্তিকর। অচেনা লোক, বয়স্ক মানুষ, সহপাঠী থেকে শুরু করে সবাই মিলে এত জোর দিয়ে আর এত বেশি করে অযাচিত সব মন্তব্য করতে লাগলো, যে এক সময় আমি তাদের কথাগুলো বিশ্বাস করতে শুরু করলাম। তার অনেক বছর পর আরম্ভ করলাম তাদের কথাকে ভুল প্রমাণের চেষ্টা। দিনরাত সাঁতার, সাইক্লিং আর জগিং করতে লাগলাম নেশাগ্রস্তের মত। কটেজ পনির, বাদামি চাল আর নকল মাখন খেয়ে থাকতাম শুধু, আর খাওয়ার আগে ভাপে দিয়ে নিতাম সব। তখন সত্যি সত্যিই ভাবতাম, ‘অ-মোটা’ মানুষদের কাতারে নিজেকে সেঁধিয়ে আমি আসলেই সবাইকে নিজের সত্যিকারের মূল্য বোঝাতে পারবো।

প্রমাণ করতে চাইতাম যে আমি কুঁড়ে নই, হাতি নই, হোঁতকা নই। ভাবতাম তাহলে হয়তো অচেনা-অজানা মানুষদের অযাচিত কথাগুলো আর শুনতে হবে না: অযাচিত ‘ভদ্র’ মন্তব্য যেমন “ওজন কমালে সত্যিই তোমাকে সুন্দর লাগবে দেখতে” থেকে শুরু করে আক্রমণাত্মকগুলো (“ওজন কমাও, আলসের ধাড়ি!”)…আরো ‘সূক্ষ্ণ’ মতামতও দেয়া হত অবশ্য কখনো কখনো: শুয়োরের মত ঘোঁত ঘোঁত বা গরুর মত হাম্বা হাম্বা আওয়াজ করা, হা করে তাকিয়ে থাকা, হাসাহাসি করা আর আঙুল উঁচিয়ে দেখানো। জাহাজের ভেঁপু বাজানোর ভঙ্গি করাও বেশ জনপ্রিয় ছিল।

দিনরাত এক করে আমার শরীরচর্চা করার বেশ কিছু ইতিবাচক দিকও ছিল। সে সময় নিজের খেলাধুলাপ্রিয় বন্ধুদের সাথে বেশি মেশা হত আমার। নাড়ির গতি হয়ে গিয়েছিল যে কোন সুস্থ মানুষের মতই কম, কোলেস্টেরলের মাত্রা ছিল নগণ্য, শ্বাস-প্রশ্বাসের আওয়াজ শোনাই যেত না প্রায়। আগেকার সাথে আমার শারীরিক অবস্থার কোন মিলই ছিল না তখন। বাদ ছিল শুধু ওজন। অতিরিক্ত ওজনের হাত থেকে বাঁচার জন্য যতই দৌড়াই, সাঁতার কাটি বা সাইক্লিং করি না কেন, সে আমাকে ধরে ফেলতোই। এমন না যে ওজন কমে নি (কিন্তু কমার হার যথেষ্ট হয় নি কোনদিন), তবে সেই সাথে আগের যে কোন সময়ের তুলনায় বেশি শক্তভাবে তা আমার পিছে লেগে ছিল। আর তাই, দিনের শেষে আমি সুস্থ হলেও ছিলাম মোটা। ‘ফিট’ হয়েও ছিলাম ‘ফ্যাট’।

জানতে পারলাম যে কোন মানুষের পক্ষে একই সাথে মোটা আর সুস্থ হওয়া সম্ভব নয় – সেটা সামাজিক, নৈতিক, ধারাবাহিক নাটুকে, রাজনৈতিক – যে দৃষ্টিকোণ থেকেই হোক না কেন। এই জ্ঞানার্জনের পথটা সুগম ছিল না অবশ্যই – জনসম্মুখে সাইকেল চালানোর দুঃসাহস দেখানোর জন্য তাই চলন্ত গাড়ি থেকে আমার গায়ে এটা-সেটা ছুঁড়ে মারা হত কিংবা জগিং-এর সময় রাস্তার পাশের ক্যাফেগুলো থেকে মানুষ খাওয়া থামিয়ে আমাকে ব্যঙ্গ করার জন্য হাতির ডাক দিত। আপনার বিশ্বাস হবে কিনা জানি না, তবে প্রায়ই তাদের কেউ না কেউ বলে উঠতো: “ওজনটা একটু কমাও, হাতি!”

প্রথম কিছুদিন খুব অবাক হয়ে যেতাম এসব শুনে। জেগে থাকার প্রতিটা মূহুর্ত ব্যায়াম করার পরও কীভাবে আমার পক্ষে কুঁড়ে, দুর্বল, হাতি কিংবা হোঁতকা হওয়া সম্ভব? এই প্রশ্নের উত্তর এলো যে উপলব্ধির মধ্য দিয়ে: যত যা-ই করি না কেন, এই শরীরের ভেতর যতদিন আছি ততদিন আমাকে অন্যদের উপহাস আর ঘৃণার পাত্রই থাকতে হবে। বুঝতে পারার সাথে সাথেই আমি ‘বডি ট্রান্সপ্ল্যান্ট’এর জন্য আবেদন করলাম। এখনো কোন দাতা পাই নি।

ততদিনে কিছুটা থিতু হয়েছিলাম, যেহেতু চিকন মানুষেরা অনন্তকাল ধরে যে কথা জেনে আসছে, তা অনেক খেসারত দেয়ার পর আমিও শিখে ফেলেছি। জানতে পারলাম, কিছু কাজ মোটা মানুষদের কখনোই করা উচিত নয়। যেমন ধরুন সাইকেল চালানো (“ইয়ে আপা, বাইকের সীটটা গেলো কই?”), জনসম্মুখে খাওয়া-দাওয়া করা (“থাক ডেসার্ট লাগবে না আমার, ‘ও’র মত শরীর চাই না আমি”)…কিংবা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করা অর্থাৎ কারো সামনে বাথিং স্যুট পরা (“তিমিটা তীরে উঠে এসেছে!”)।

কারো ব্যক্তিগত অভ্যাস, স্বাস্থ্য, ব্যক্তিত্ব, কোলেস্টেরলের মাত্রা যা-ই হোক না কেন কিংবা দিনে কেউ যত ঘণ্টাই সোফায় এলিয়ে বসে থাকুক না কেন, মোটা না হলে সে আমার চাইতে ওপরের শ্রেণীর মানুষ – এই সত্য জানার পর আমি আর কিছুতেই অবাক হই না। আর যেহেতু মানুষ হিসেবে তারা আমার চেয়ে উন্নত, তাই আমার নিচুতা নিয়ে মন্তব্য করাটা রীতিমত তাদের ভাগ্যের লিখন – এটাও জানলাম। আমি কাদের সাথে আছি, মন্তব্যকারী আমাকে চেনে কিনা কিংবা তার কথায় আমি কষ্ট পেতে পারি কিনা সেসব বিচার এখানে গৌণ। আমি জানলাম, আত্মবিশ্বাস বস্তুটার ওপর মোটা মানুষদের কোন অধিকার নেই আর তাই তাদের কাছ থেকে এটা ছিনিয়ে নেয়ার এক স্বর্গীয় অনুমতিপত্র দেয়া হয়েছে বাকি সবাইকে।

মোটা মানুষদেরকে রসিক ভাবার কিছু নেই। আপনাদের হাত থেকে ছাড়া পাবার জন্য কখনো কখনো অমন করি আমরা, আর তার খেসারতও দেই। কিন্তু অন্ততপক্ষে স্কুলে যেতে যেতে আর বড় হতে গিয়ে যতখানি আত্মমর্যাদা জোটাতে পেরেছি এখন পর্যন্ত, তা রক্ষা করা যায় ওভাবে।

মানুষ জন্ম থেকেই মোটাদেরকে ঘৃণা করে এমন নয়; এই স্বভাবের নিত্য লালন আর উন্নয়ন প্রয়োজন। আর ভাগ্যক্রমে আমাদের অনেককে হাঁটতে আর কথা বলতে শেখার সময় থেকেই এটাও শেখানো হয়; শনিবার সকালের কার্টুন, টিভি আর চলচ্চিত্রে শেখানো হয়। আপনি কখনো চলচ্চিত্রে এমন কোন মোটা মানুষকে দেখেছেন যে খারাপ, বিরক্তিকর, করুণার কিংবা হাসি-তামাশার পাত্র নয়? সান্তা ক্লসের কথা বাদ।

বাচ্চাদেরকে ছোটবেলা থেকেই কালো, প্রতিবন্ধী আর বয়স্কদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে শেখানো হয়। সেই সাথে তাদেরকে এ-ও জানানো হয় যে, ওসব কিছু মোটা মানুষদের বেলায় খাটে না; বরং আমরা যে কোন সময়েই তাদের আনন্দ-ফুর্তির উপকরণ হতে উন্মুক্ত।

মিডিয়া, বিচার ব্যবস্থা, শিক্ষক-অভিভাবক থেকে শুরু করে বন্ধুরা বেশিরভাগ অসহিষ্ণু আচরণেরই বিরোধিতা করে তীব্রভাবে। বাচ্চারা জানতে পারে, বৈষম্যমূলক আচরণের জন্য চাকুরেদেরকে আদালতে জবাবদিহিতা করতে হয়; বর্ণবাদ, লিঙ্গ বৈষম্য কিংবা এমন প্রায় যে কোন ‘-বাদ’এর জন্য কারো রাজনৈতিক জীবন ধ্বংস হয়ে যেতে পারে আর বেইজ্‌বল মালিকরা এজন্য নিজেদের টীমকে হারাতেও পারে।

কেবল মোটা বাচ্চাটাকে জানানো হয় যে উপহাসই তার প্রাপ্য। জানানো হয়, সে স্বাভাবিক নয়। শেখানো হয়, ওজন কমাতে পারলেই কেবল সে স্বাভাবিক হবে। অন্য বাচ্চারা এসব দেখে শিক্ষা নেয়। ছোট্ট দিশেহারা (সাধারণত মেয়ে) বাচ্চাটা মাথায় ঢুকিয়ে নেয় যে সে কোনদিনই যথেষ্ট শুকাতে পারবে না।

আমি একজন সাদা চামড়ার মধ্যবিত্ত, চাকরিজীবী নারী হয়েও সংস্কার সম্পর্কে অনেক কিছুই জানি। মেয়ে হয়ে সবচেয়ে ভয়ানক যে বৈষম্যের শিকার হতে হয়েছে আমাকে, সেটাও নিজের ওজনের কারণে প্রতিদিনকার অর্জিত অভিজ্ঞতার তুলনায় কিছুই নয়। অসুস্থ লাগে সব দেখেশুনে। কেউ কি বুঝতে পারে না যে বর্ণবাদী আক্রমণগুলোর চাইতে এসব কৌতুক বা আচরণ কোন অংশে কম ক্ষতিকর নয়? অনেক সময় প্রাথমিক আক্রমণের চাইতেও খারাপ লাগে যখন দেখি ক্ষমার অযোগ্য এসব অপরাধকে পরোক্ষভাবে মেনে নেয়া হয়। কিছু বাজে মন্তব্যকে নির্বোধ লোকের দোষ হিসেবে হয়তো পাশ কাটিয়ে যাওয়া যায়; কিন্তু আমেরিকার মূলধারা যখন এই আচরণকে নিঃশব্দে মেনে নেয়, তা মোটা মানুষদেরকে এই ইঙ্গিতই দেয় যে এই অসহিষ্ণুতা যৌক্তিক আর গ্রহণযোগ্য। যা অতি অবশ্যই ভুল। ((লেখকের নাম-পরিচয়হীন একটা আর্টিক্‌ল কয়েক বছর ধরেই পড়ে ছিল আমার ড্রয়ারে। আমেরিকান নারীর আত্মকথন সেটারই অনুবাদ। নাম-না-জানা মানুষটাকে ধন্যবাদ।))

সামিরা সম্পর্কে

পীচ-গলা তরলে আটকে পা, দুঃস্বপ্ন অন্ধ দুই চোখে/ অসতর্ক হৃদয় পোষ মানে মিথ্যে বলার আফসোসে.../// প্রকাশিত লেখার কপিরাইট সংশ্লিষ্ট লেখক সংরক্ষণ করেন এবং লেখকের অনুমতি ছাড়া লেখা আংশিক বা পূর্ণভাবে কোন মিডিয়ায় পুন:প্রকাশ করা যাবে না।
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে অনুবাদ, সচেতনতা-এ। স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

14 Responses to সারভাইভ্যাল অফ দ্য ফিটেস্ট: ওজন বেশি কী করি?

  1. স্রোতস্বিনী বলেছেনঃ

    🙁 সেইম সমস্যা মনে হয় যারা শারীরিকভাবে চিকন তাদের ক্ষেত্রেও।সবচেয়ে বিব্রতকর অবস্থা হয়, যখন কেমন আছি জিজ্ঞেস না করে বলে আরে তুমি তো আরো শুকায় গেছো। আমি শুকাই আর মোটা হই, ভালো,সুস্থ থাকাটাই তো দরকার,নাকি?? :wallbash:

    “কেউ কি বুঝতে পারে না যে বর্ণবাদী আক্রমণগুলোর চাইতে এসব কৌতুক বা আচরণ কোন অংশে কম ক্ষতিকর নয়?” :huzur:

    ভালো লাগলো লেখাটা।

    • সামিরা বলেছেনঃ

      এই অভিজ্ঞতা আমার চেয়ে বেশি আর কার আছে? 😛
      তারপরেও, তুলনামূলকভাবে কিছুটা কম হয়তো চিকনদের ক্ষেত্রে, নাকি? অথবা হতে পারে সমস্যার গুরুত্ব একই, মাত্রা আলাদা।
      থ্যাঙ্কু আপু।

  2. বোহেমিয়ান বলেছেনঃ

    আমি একজন সাদা চামড়ার মধ্যবিত্ত, চাকরিজীবী নারী হয়েও সংস্কার সম্পর্কে অনেক কিছুই জানি। মেয়ে হয়ে সবচেয়ে ভয়ানক যে বৈষম্যের শিকার হতে হয়েছে আমাকে, সেটাও নিজের ওজনের কারণে প্রতিদিনকার অর্জিত অভিজ্ঞতার তুলনায় কিছুই নয়। অসুস্থ লাগে সব দেখেশুনে। কেউ কি বুঝতে পারে না যে বর্ণবাদী আক্রমণগুলোর চাইতে এসব কৌতুক বা আচরণ কোন অংশে কম ক্ষতিকর নয়?

    অনেক সময় প্রাথমিক আক্রমণের চাইতেও খারাপ লাগে যখন দেখি ক্ষমার অযোগ্য এসব অপরাধকে পরোক্ষভাবে মেনে নেয়া হয়। কিছু বাজে মন্তব্যকে নির্বোধ লোকের দোষ হিসেবে হয়তো পাশ কাটিয়ে যাওয়া যায়; কিন্তু আমেরিকার মূলধারা যখন এই আচরণকে নিঃশব্দে মেনে নেয়, তা মোটা মানুষদেরকে এই ইঙ্গিতই দেয় যে এই অসহিষ্ণুতা যৌক্তিক আর গ্রহণযোগ্য। যা অতি অবশ্যই ভুল।

    দারুণ জরুরি সব কথা।
    অনেক ধন্যবাদ

  3. মাধবীলতা বলেছেনঃ

    বাপরে !! এত অসাধারণ আর্টিকেল পড়ে ছিল ! 😀 মোটা-চিকন থেকে শুরু করে অনেক ক্ষেত্রেই আক্রমণাত্মক, অসহনশীল আচরণ দেখা যায় আজকাল। সময়োপযোগি পোস্ট।

  4. জ্ঞানচোর বলেছেনঃ

    সামান্য ওজন নিয়ে এই লেখাটায় কত যে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া লাইন আছে।
    প্রতিনিয়ত নানান বিষয়ে অপরকে হেয় করে, নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করার এক প্রক্রিয়া এটি।

    কিছুদিন আগে বারিধারার লুঙ্গি বিষয়ক গুজবটাও এরকম। মেনে নিতে হবে, যা সাধারণ্যে গ্রহণযোগ্য নয়, তাকে কোন না কোন ভাবে, ছোট করে দেখাই রেওয়াজ।
    আমাদের প্রচার মাধ্যমগুলো থেকে শুরু করে, আমাদের শিক্ষা দিক্ষায় স্যুটেড বুটেড, সুঠাম দেহী, ফর্সা চামড়ার পুরুষই কেবল দৃশ্যমান হয় নায়কের ভুমিকায়।
    মোটা জাম্বু বা খাটো দিলদাররা কখনোই নায়ক হয় না। ওটা বিনোদনের ক্ষেত্র বলে হয়তো তোমন প্রভাব রাখে না, কিন্তু, বাস্তবে জীবনের নানান ক্ষেত্রে নানান পার্থক্যকে,
    সীমাবদ্ধতা হিসেবে গণ্য করার প্রবণতা একটা মানুষকে বহুপথ পিছিয়ে দিতে পারে।

    সেদিন রেলক্রসিংএ জ্যাম এ আটকে আছি, দেখলাম, রেল লাইনের বস্তির দুই ছেলে, রিক্সার ফেলে দেয়া টায়ার নিয়ে কাঠি দিয়ে চালানোর প্রতিযোগিতা করছে, রেলের সরু বিটের উপর, কত জোরে চালিয়ে যেতে পারে ।
    এই অশিক্ষিত বর্বরতায় বেড়ে উঠা বাচ্চাগুলো কত সম্ভাবনাময় হতে পারতো, যদি আমরা তাদের ভাল দিকটা বাড়িয়ে তোলার সুযোগ দিতে পারতাম।(যেমনটা আমরা পেয়েছি, তাই ব্লগ দিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারছি)

    প্রত্যেকেরই একটা মন আছে। প্রত্যেকেরই অনেক অনেকগুলো ভাল ভাল গুণ আছে। লুকনো প্রতিভা আছে। সেটাকে উৎসাহিত করতে শিখা চাই।

  5. হাসান বলেছেনঃ

    Thank so much to bring the important fact into our notice so nicely…

    But feeling sorry to think that it is really very tough to change the attitude of maximum

    Yet if we can try to do that from our respective places with full effort it is possible to make the whole thing a little better than now.

  6. অনুবাদ ভালো হয়েছে। শুরুতে গল্প দেয়ার আইডিয়াটা একটু চাইল্ডিস লাগছে। অনুবাদ শুরু হয়েছে “সহনশীলতার অভাব নিয়ে আমাদের অনেক মাথাব্যথা সত্ত্বেও এর সবচেয়ে বড় যে ক্ষেত্রের দিকে তেমন নজরই দেয়া হয় নি কখনো, তা হল মোটা মানুষদের প্রতি আমাদের আচরণ। ” এই লাইন দিয়ে। এই লাইনটাই বোধ হয় অনুদিত আর্টিকেল এর সবচেয়ে দুর্বল লাইন। বাকিটা ভালোভাবে পড়া গেছে। আর্টিকেলটাও অসাধারণ।

  7. শুকপাখি বলেছেনঃ

    লিখাটা অনেক ভাল লেগেছে আপু।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।