সুপারসনিক velocity অব ‘গুজব’

 

গতকাল ফেবুর পাতায় চোখে পড়লো নিচের ছবিটি।

ভুল নেই ছবিটিতে কারণ কোন একটি খবর  যখন একজন মানুষ অন্য একজনকে বলে তখন কিছুটা হলেও পরিবর্তন হয় কেননা প্রত্যেক মানুষেরই নিজেকে প্রকাশ করার স্ব-স্ব স্টাইল থাকে। কিন্তু এভাবে যদি খবরটা একজন মানুষ থেকে আরেকজনের কাছে যেতে সামান্য পরিবর্তনও হয়ে যায় তবে ঐ খবরটিকে যদি এক লাখ মানুষের মধ্যে পৌছুতে হয়! তবে কী অবস্থা হবে চিন্তা করুন তো?

 

এটাই হল ‘গুজব’। কিছু গুজব বাতাসের আগে ধায়! কিন্তু গুজব কেন এত দ্রুত ছড়িয়ে পরে? তার পিছনে কি কোন যুক্তি আছে? অথবা গনিত দিয়ে কি তা কোনভাবে অনুভব করা যায়? :thinking:

 

ধরা যাক, বিকেল ৪ টায় পাঁচজন মানুষ একটা দোকানে বসে চা খাচ্ছে। ‘শিবপুর এবং কাজলা দুই গ্রামের মানুষের মধ্যে ব্যাপক মারামারি হচ্ছে’ :dhisya: এমন একটা খবর তারা পেল। এখন এই পাঁচজন যদি পরবর্তী ৫ মিনিটে পাঁচজন করে লোককে এই খবরটি বলেন তাহলে পাঁচ মিনিটে গুজবিত হওয়া মানুষের সংখ্যা দাঁড়ায় ৫*৫+৫ = ৩০ জনে, এই ৩০ জন মানুষও যদি একি উপায়ে গুজবটি ছড়িয়ে যান তবে বিকেল ৪:০০ থেকে  ৪:১০ এই দশ মিনিটে গুজবিত হওয়া মানুষের সংখ্যা দাঁড়াবে ৩০*৫+৩০ = ১৮০ জন।

একই হারে গুজব ছড়াতে থাকলে বিকেল ৪:৩০ এর মধ্যে গুজবিত মানুষের সংখ্যা দাঁড়াবে ২,৩৩,২৮০ জন! (যা ৩০ মিনিটে বায়ু মাধ্যমে অতিক্রান্ত শব্দ দূরত্বের ৩৯%! অনুভব করার সুবিধার্থে ১ জনকে ১ মিটারের সমতুল্য বিবেচনা করছি) যদি অন্ততপক্ষে ১০% মানুষও বিশ্বাস করে তবে বিশ্বাস করা লোকের সংখ্যা দাঁড়ায় ২,৩৩২৮ জন! গুজব বিশ্বাস করা এই ১০% মানুষের মধ্যে অন্তত ২% মানুষও যদি হুজুগের বশে বিভিন্ন কাজ করে ফেলে তবে অবস্থাটা কী দাঁড়াবে! 😳 ( যেমন ধরুন, পুলিশকে খবর দেয়া অথবা এম্বুলেন্সে ডাকা…

 

যদিও আসল খবরটা ছিল ‘বাৎসরিক ‘ষাঁড়ের লড়াই’ প্রতিযোগিতায় শিবপুর এবং কাজলা গ্রামের দুই ষাঁড় চরম লড়ে যাচ্ছে’!

শেষ কথাঃ ভেলোসিটি অব ছড়ানো ‘গুজব’ সমানুপাতিক বিশ্বাসযোগ্যতা 😛 (ছড়ানো গুজবের বিশ্বাসযোগ্যতা)  

অনিমেষ ধ্রুব সম্পর্কে

"You've gotta dance like there's nobody watching, Love like you'll never be hurt, Sing like there's nobody listening, And live like it's heaven on.'' অসম্ভব পছন্দ উইলিয়াম পার্কারের এই কথাগুলো! নিজের মত করেই নিজের পৃথিবীটা কল্পনা করে নিতে ভাল লাগে। ঔদাসিন্য,অলসতা শব্দ দুটি আমার সাথে বনে যায়। গভীর মনোযোগ কিংবা অসম্ভব সিরিয়াস মুড আমার কখনোই আসে না। একা অচেনা রাস্তায় অকারণে হাঁটতে ভালো লাগে, মানুষ দেখতে ভালো লাগে, ভাল লাগে কবিতা লিখতে...তবে স্বপ্ন দেখি, স্বপ্ন দেখি আমার চারপাশে থাকা মানুষগুলোর জন্য কিছু একটা করার, দেশকে কিছু একটা দেয়ার। পারব কি-না জানি না, তবুও স্বপ্ন বুনে চলেছি নিরন্তর... http://www.facebook.com/kamrul.h.hridoy.3
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে পাগলামি, হাবিজাবি-এ। স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

7 Responses to সুপারসনিক velocity অব ‘গুজব’

  1. ঝরা পালক বলেছেনঃ

    🙄 🙄 🙄

  2. জ্ঞানচোর বলেছেনঃ

    গুজবের এই থিওরী আগে কোথায় যেন শুনেছিলাম। এবার পড়ে ফের পুলকিত হলাম।

    তো গুজবের এই বিশ্বাসযোগ্যতা এত বেশী থাকে কেন? এ নিয়া বিশাল গবেষণার প্রয়োজন আছে বৈ কি?

    গবেষণা কম হচ্ছে না। এ নিয়ে রীতিমত পেপার পাবলিশ হচ্ছে। শব্দের গতির চেয়েও দ্রুত, আলোর গতিতে ছড়ায় এই গুজব, ইলেকট্রনিক মিডিয়ায়।

    • হৃদয় বলেছেনঃ

      ভাইয়া, খেয়াল করেছেন কখন, গুজব এর উ-কার টা কেটে দিলে কী হয়? – ‘গজব’
      কিছু গুজবের ছড়ানোর গতি এবং সেগুলোর প্রভাব এতটা ভয়াবহ হয় যে মাঝে মাঝে মনে হয় যে এগুলো আসলে গুজব না গুজব রূপে আল্লাহর দেয়া ছোটখাটো ‘গজব‘ 🙁

      মানুষের হুজুগে প্রবণতাই গুজব ছড়ানোর পেছনে টনিক হিসেবে কাজ করে। মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি হল মানুষ নিজে বিভ্রান্ত হতে চায় না কিন্তু অন্যকে বিভ্রান্ত করতে পছন্দ করে।
      মানুষের এই আদিম প্রবৃত্তিগুলোকেই গুজবের আলোর বেগে ছড়ানোর পেছনে কাজ করে।

      যদিও সব গুজব আলোর বেগে ধায় না। ছড়ানোর গুজবের ন্যূনতম বিশ্বাসযোগ্যতা থাকা চাই।

  3. মাধবীলতা বলেছেনঃ

    গুজব হইতে সাবধান !! ফেইসবুকের কল্যাণে এই গতি যে কোথায় গিয়ে ঠেকেছে তা অচিন্ত্যনীয়। তথ্য যাচাই না করে শেয়ার করা বন্ধ করতে হবে।

    • হৃদয় বলেছেনঃ

      ফেইসবুক যে এই গতিকে আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে, সে বিষয়ে দ্বিমত পোষণের কোন কারণ নেই।

      আপু, গুজবিত হওয়ার প্রবণতা কালের বিবর্তনে মানুষের জীনে ঢুকে গেছে।
      তবে তা কমিয়ে আনা যেতে পারে কিন্তু পুরোপুরি দূর করা বোধয় সম্ভব না।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।