এরশাদ সিন্ড্রোম – ‘শুনে শুনে’ শিক্ষিত অন্ধরা কীভাবে আরও অন্ধ হয়?

“এরশাদ সিন্ড্রোম” বলে একটা বিষয় আছে!

কিছু বিশেষ কাজ/ আচরণকে আমরা বলতে পারি এরশাদ সিন্ড্রোম। মোটামুটি একটা ড্রাফট আউটলাইন

#১ কারও সম্পর্কে যাচাই বাছাই না করেই যে কোন নেতিবাচক/ইতিবাচক কথা অথবা গুজব বিশ্বাস করা। (সেই কথা বা গুজব পুরোটা মিথ্যা এমন না।)

#২ (এবং সেই বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে) আরও নেতিবাচক কথা বলা! এবং এমন সব কথা যেটা কিনা হয়ত এই লোকের সাথে প্রযোজ্য না! কিংবা সত্যি না! যেহেতু আমরা প্রথমেই ধরে নিয়েছি এই লোক ভালো না তাই যে কোন কথাই সত্যি ধরে নেই!

#৩ এবং পরবর্তীতে সেই নেতিবাচক কথাও লোকের মুখে মুখে সত্য হয়ে যাবে…!!! কারণ প্রথম স্টেপ এ কিন্তু আমরা মোটামুটি শোনা কথার উপর নির্ভর করেই বিশ্বাস করেছিলাম!

বিষয়টা একটু পরিষ্কার করা যাক। কাল্পনিক একটা উদাহরণ দেই।
ফেইসবুকে এক তরুণ আছে। দারুণ তার লেখার হাত।  সে দেখলাম একদিন এরশাদকে তুমুল পচানি দিল। এবং গালি দিচ্ছিল সাম্প্রতিক কিছুর উপর না। অতীতের কোন ইস্যুকে কেন্দ্র করে।

তারপর সরাসরি দেখা হলে আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম ভাইয়া তুমি এরশাদ সম্পর্কে তেমন কিছু জানো? (আমি নিজেও তো তেমন কিছু জানি না!)

সে বলল এরশাদ খুব খারাপ লোক ছিল। নারী নির্যাতন…!!

আমি বললাম তাহলে ভালোমত না জেনে বলাটা কি ঠিক? [এরশাদকে আমি ইতিবাচক কিছু বলছি না বলছি এরশাদ এর আসল অপকর্ম জেনেই আমরা ওকে কেন সমালোচনা করি না!]

এরপরের ঘটনা যেহেতু এই ছেলে দারুণ পপুলার। আর আমরা এখন ফেইসবুক থেকেই সত্যি মিথ্যা শিখি… তাই ওর কথাকে ওর বন্ধুরাও সত্য বলে ভেবে নেবে… এবং এই সাইকেল চলতে থাকবে!

 


 আমার মূল পয়েন্ট এরশাদকে যৌক্তিক সমালোচনায় আপত্তি নাই। কিন্তু সেটা জেনে বুঝেই দেই? আর গালিগালাজ এর চেয়ে সমালোচনা ভালো। তথ্য প্রমাণ সহ। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা গালিগালাজ/ নাম বিকৃতি/ গল্প ব্যঙ্গ রচনা বেশি দেখি – তথ্য প্রমাণ সহ সমালোচনার বদলে।

এবারে একটি ভিন্ন উদাহরণ দেখা যাক। যেখানে ইতিবাচক কথাও এরশাদ সিন্ড্রোমের মধ্যে পড়ে। হিটলার এর ছবি প্রোফাইল ছবি হিসেবে এমনকি রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি হিসেবেও হিটলার এর চিন্তাভাবনা দিতে দেখেছি আমাদের তরুণতর প্রজন্মকে!

এখন প্রশ্ন হচ্ছে এর ফলে অনেক বাজে অবস্থা তৈরি হয়। আমরা হয়ত গালি দিয়ে অভ্যস্ত এমন অনেক লোক আসলে যতটা খারাপ আমরা ভাবি ততটা খারাপ না! আবার অনেককে অনেক ভালো ভাবি সে হয়তবা ততটা ভালো না! যেমন ধরুন আশে পাশে শুনে শুনে বিশ্বাস করতে থাকলে কী হতে পারে? বাঁশের কেল্লার মতো ফেইসবুক পেইজগুলো যারা লাইক দেয় শেয়ার করে বিশ্বাস করে… ওরা কিন্তু শাহবাগ সম্পর্কে ঠিক মতো না জেনেই

১) বিশ্বাস করেছে

২) শাহবাগকে খারাপ ভেবেছে

৩) সেই খবর প্রচার করেছে!!

একই কথা আমারদেশ/জনকণ্ঠ সহ এই জাতীয় পত্রিকার পাঠকদের জন্যও প্রযোজ্য! এরা পারিবারিক ভাবে যা শোনে সেটাই বিশ্বাস করে এবং প্রচার করে! তারপর আবার সেটাই বাকিরা শোনে বিশ্বাস করে… প্রচার করে!

আমাদের শিক্ষিত প্রগতিশীল মুক্তমনা নাম ধারীরাও একই ভাবে নানান বিষয়ে শুনে আসেন। সেটাই সত্য ভাবেন এবং প্রচার করেন। যাচাই বাছাই না করেই! এবং এইভাবেই আমরা সবাই দিনকে দিন অন্ধ হচ্ছি। উগ্র হচ্ছি!

কীভাবে এই সিন্ড্রোম থেকে মুক্তি পেতে পারি?

(আগামীতে একটু ডিটেইলে লেখার ইচ্ছে আছে। আপাতত রাফ কিছু সাজেশন দিচ্ছি। এইগুলা আমি নিজে ফলো করি )

আমরা জানি যে আমাদের ব্যবসায়ী মালিকানাধীন পত্রিকাগুলো নিয়মিত মিথ্যা ছড়ায়! কয়েকদিন আগে এই রকম প্রমাণ দেখেছি। বিডিনিউজ২৪ এর মতো পত্রিকা কীভাবে হলুদ সাংবাদিকতা করে! (বাংলা এবং ইংরেজিতে আলাদা আলাদা শিরোনাম এবং কথা দিয়ে ২ অডিয়েন্সকে ২ জিনিস বুঝানো) আবার অনলাইনে ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা বিভিন্ন পত্রিকা আছে যাদের কথাও বিশ্বাসযোগ্য না!

বিখ্যাত গুলোর অবস্থা তো খুবই খারাপ। আর অখ্যাতগুলোর উপরো ভরসা নাই।  এই দেখুন প্রায় অখ্যাত একটি পত্রিকা কিছুদিন আগে আরিফ জেবতিক এর আটক হবার কথা প্রচার করেছিল। সেই গুজবে অনেকেই পা দিয়ে ফেলেছিলেন। এর ফলে আরও ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হতে যাচ্ছিল!

#১ হাবিজাবি পত্রিকা বিশ্বাস না করা। নিশ্চিত না হয়ে লিঙ্ক  শেয়ারিং এভয়েড করা। সব পত্রিকার সব কথাই বিশ্বাসযোগ্য না!

#২ অবশ্যই অবশ্যই ফেইসবুক পেইজ বিশ্বাস না করা!! ফেইসবুক পেইজে কিছু আসলে রেফারেন্স চাওয়া। গ্রহণযোগ্য রেফারেন্স! ব্যক্তি দিয়ে ফ্যাক্টস  না বরং ফ্যাক্টস দিয়ে ব্যক্তি যাচাই করুন!

#৩ বই পড়া! এবং গ্রহণযোগ্য বই! (সেই বিষয়ে আরেকটি লেখায় আলোচনা করার ইচ্ছা রাখি।)

#৪ বিপরীত মতকে খোলা মনে যাচাই করা। আগেই Biased হয়ে থাকলে ঠিকটা জানতে সমস্যা হতে পারে! (যেমন হিটলারকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন আপনি। এর বিপরীত মতটাকেও দেখুন না! যাচাই করুন! অথবা উল্টোটা!! )

#৫ স্কেপটিকাল থাকা! হ্যাঁ একটু অজ্ঞেয়বাদী হোন! কারণ আমরা যা শুনে আসছি তার অনেক কিছুই পরে ভুল প্রমাণিত হয়ে এসেছে! পৃথিবীর চারদিকে সূর্য ঘুরত এই কথা সবাই বলত! বিজ্ঞানী, ধর্মগুরু, শিক্ষক রাজনীতিক এমনকি বইতেও…! তারপর কখনও কখনও সব উলটে যায়! তাই খোলা মনে নতুন করে যাচাই করতে তো সমস্যা নাই!

সবার জীবন মঙ্গলময় হোক। ইন্টারনেট যেখানে সত্য= মিথ্যা হয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন সেই সময়ে সাবধান থাকা এবং রাখা, খুব জরুরি! 

(ইয়ে এরশাদ সিন্ড্রোম এই নাম আমি দিয়েছি। )

বোহেমিয়ান সম্পর্কে

পেশায় প্রকৌশলী, নেশায় মুভিখোর আর বইপড়ুয়া। নিজেকে খুঁজে পাবার জন্য হাঁটতে থাকি। স্বপ্নের সাথে হাঁটা, স্বপ্নের জন্য হাঁটা। https://www.facebook.com/ibappy
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে চিন্তাভাবনা, সচেতনতা-এ এবং ট্যাগ হয়েছে , , , , , স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

13 Responses to এরশাদ সিন্ড্রোম – ‘শুনে শুনে’ শিক্ষিত অন্ধরা কীভাবে আরও অন্ধ হয়?

  1. মাধবীলতা বলেছেনঃ

    হাহা “এরশাদ সিন্ড্রোম” নামটা ভাল পাইলাম। ব্যক্তি দিয়ে ফ্যাক্টস না বরং ফ্যাক্টস দিয়ে ব্যক্তি যাচাই করুন! খুব দরকারি কথাবার্তা !

  2. অক্ষর বলেছেনঃ

    লেখার কোন সমালোচনা করছি না, লেখা সময়োপযোগি এবং অবশ্যই কন্টেন্ট ভালো কিন্তু আমার কিছু নিজস্ব প্রশ্ন আছে।

    ১) “ফেসবুক পপুলারিজম” এখন আমি দেখি গালি নির্ভর হয়ে গেছে যে যত বেশি গালি দিতে পারছে সে তত বড় সেলিব্রেটি ! এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই ট্রেন্ডটা কিভাবে শুরু হল ?

    ২) আরেকটা ব্যাপার আমার মনে হয় ঐ “ফেসবুক পপুলারিজম” পাওয়ার জন্যই অনেকে না জেনে তথ্য শেয়ার করে , ইচ্ছাকৃতভাবে তথ্য বিকৃত করে। এর ফলে আমার যেটা মনে হয় তারা নিজেরা একটা সাময়িক বাহবা পাচ্ছে এবং আমরা অন্ধের মত তাদের বাহবা দিয়েই যাচ্ছি।

    ভাইয়া বেশ কয়েকটা উপায় তুলে ধরেছেন এ থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় হিসেবে কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে এই যে এই পোস্টটাই কয়জন পড়বে ? আপনি তো এরশাদকে গালি দেন নি ? গালি দিলে একটা চান্স থাকত বাহবা পাওয়ার ! আর আমার মনে হয় অনলাইনের পাশাপাশি তাই এখন ব্যক্তি পর্যায়ে অফলাইনে তথ্য ম তত্ত্ব শেয়ার নিয়ে আলোচনা করার একটা ট্রেন্ড চালু করা উচিত। সামান্যতেই “ট্যাগিং” করার নীচ মানসিকতা থেকে আমাদের বেড়িয়ে আসা উচিত।

    সবশেষে লেখাটার জন্য থ্যাঙ্কস বলব না কারণ এটা আমাদের কর্তব্য আসলে। :huzur:

  3. সুবর্ণরেখা বলেছেনঃ

    খুবি দরকারী একটা লেখা । ধন্যবাদ ভাইয়া । 🙂

  4. দারাশিকো বলেছেনঃ

    এরশাদ সিনড্রোম নামটা ভালো হয়েছে – ভয় হল যাদের উদ্দেশ্য করে এই পোস্ট লেখা তারা বোহেমিয়ানকে এরশাদপন্থী ট্যাগ না করে!

    ফেসবুক নানা রকম আচরণ পাল্টে দিচ্ছে। আমি খুব স্পেসিফিকভাবে চিহ্নিত করতে পারবো না, তবে একটা উদাহরণ দেই। সাগর রুনি হত্যার প্রতিবাদে সাংবাদিকরা একটা মানববন্ধন করেছিল, সেখানে জ ই মামুন সহ আরও কিছু সাংবাদিক হামলা চালিয়েছিল – মনে পড়ে? সেই সময় জ ই মামুনের গুষ্ঠি উদ্ধার করা হয়েছে। যারা করেছিলেন তাদেরই কেউ কেউ কিছুদিন আগে জ ই মামুনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ – দুর্দান্ত ভাষন দিয়েছে মামুন। সাগর রুনির কথা এর মধ্যেই ভুলে গেলে হবে?

    মাথায় তুলে নাচার আগে যেমন একবার ভাবা উচিত ছিল, তেমনি পায়ের নিচে ফেলার আগেও। শেয়ার দিলে লাইক পাওয়া যায় – কিন্তু একটার শেয়ারে আরেকটা শেয়ারও নিচের দিকে যায় – এই হুশটুকুও থাকা উচিত।

    এলোমেলো বললাম। মিলাইতে পারলে কিছু লিখতে পারেন।

  5. স্বপ্ন বিলাস বলেছেনঃ

    এরশাদ সিন্ড্রোম নামটা বড় ভালো লাগলো 😀

    সিরিয়াস কথায় আসি, বুঝে, শুনে, ভেবে একটা বিষয় নিয়ে কিছু বলা ইন্টারনেট যুগে কেমন যেন নেই হয়ে গেছে। নামীদামী সংবাদমাধ্যম গুলোও যেভাবে মিথ্যা কথা ও কথাকে বেন্ড করে ছাপায় তাতে বিশ্বাস করার জিনিসের বড় অভাব হয়ে গেছে।
    একই সাথে বই পড়াতে অথেনটিক বই পাওয়াটা একটা বড় ইস্যু।

    এই জাল থেকে বের হবার চেষ্টা চলুক, বের হতে পারি যেন এটাই চাই।

  6. একুয়া রেজিয়া বলেছেনঃ

    অসাধারণ লিখেছেন। সম্পুর্ন সময়োপযোগি পোস্ট। এই ব্যাপারগুলো অহরহ ঘটছে। শোনা কথায় কান দিয়ে, সত্য মিথ্যা যাচাই না করে যাকে তাঁকে যে কোন কিছু উল্লেখ করা বলার প্রচলন শুরু হয়েছে।

    সবাই কে অনুরোধ করবো যেন লেখাটি বেশী করে শেয়ার করে।

    পুনঃ দারাশিকোর সাথে সহমত- এরশাদ সিনড্রোম নামটা ভালো হয়েছে – ভয় হল যাদের উদ্দেশ্য করে এই পোস্ট লেখা তারা বোহেমিয়ানকে এরশাদপন্থী ট্যাগ না করে!

  7. শরিফ চয়ন বলেছেনঃ

    নতুন শব্দচয়ন নিয়ে নতুন করে কিছু বলবোনা। 😛

    তবে হ্যা এই সিনড্রোম ফেসবুকে লাইক উপার্জনের মতো। অনেক তথ্যমূলক, গঠনমূলক কিছু বললে মানুষ পড়েও দেখবেনা। কিন্তু ভাঁড়ামো করে জনপ্রিয়তা পেয়েছে এমন কেউ যদি বলে ‘বন থেকে হেগে আসলাম’ বা ‘শালির রান্না ডাল-ভাত খাইলাম’, তাহলে মুহুর্তেই ৫০০ লাইক, ৪৫ টা শেয়ার। এরকম লোক যদি ভুল করেও কিছু বলে তাহলে ভক্তকূল যাচাই-বাছাই না করেই সেটা গিলে নিবে, বদহজম হবে কিনা সেটা নিয়ে কেউ ভেবে দেখেনা। শেষমেষ ঘটনা এ কান-ও কান (এই স্ট্যাটাস/পোস্ট, ওই শেয়ার) হয়ে ‘কৃষ্ণবর্ণ বাচ্চা হইসে থেকে কাকের বাচ্চা হয়ে উড়তেছে’ তে রুপান্তরিত হয়।

    তথ্য দেয়াতে সতর্ক থাকা এবং ফেয়ার থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেকোন অপপ্রচার বা অগুরুত্বপূর্ণ অতিপ্রচার রোধে ভেবে-চিন্তে প্রচারণা জরুরী।

  8. মঈনুল করিম মুকুল বলেছেনঃ

    হাহ হাহ! বেশ ভাল বলেছ “এরশাদ সিন্ড্রোম” । একটা কথা আছে ” একটা মিথ্যা অনেক বার শুনতে শুনতে সেটা এক সময় সত্যি হয়ে যায়”।
    আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল আমরা কেউ যাচাই করতে আলসেমি করি। কেউ কিছু একটা লিখে দিল আর আমরা মেনে নেই যে, ছেলেটারে তো ভালই মনে হয়ে ও খালি খালি মিথ্যা বলতে যাবে কেন? দিলাম একটা শেয়ার/লাইক। আবার দেখা যাচ্ছে যে ছেলেটা লিখেছে সে ও ঠিক এরকম কারো কাছে শুনে যাচাই না করেই লিখেছে। আর এভাবেই এটা মিউচুয়াল ফ্রেন্ডদের ওয়াল এ কয়েকবার করে দেখাচ্ছে। ওরা আবার ভেবে নিচ্ছে এতগুলো মানুষ তো আর মিথ্যা বলবে না। সুতরাং এটাই সত্য।

    আমরা জাতি হিসেবে খুব অলস। আমরা পড়ালেখা করছি অনেকেই কিন্তু স্বশিক্ষিত হচ্ছি অল্প কজন।

  9. অনাবিল বলেছেনঃ

    আমাদের মাথা আছে, একটু যাচাই করে যেন দেখি সব কিছু…অন্ধতা দূর হোক……আলো আসুক……

  10. নিশম বলেছেনঃ

    পোস্টে দুর্দান্ত প্লাস। একটু গল্প করি।

    ফেসবুকে কি ধরণের ভূয়া খবর ছড়ায়?

    ১) একটু আগে বিদেশী (আরবিতে লেখা সম্পুর্ন পেইজ) ইসলামিক একটি পেইজ থেকে ছবি শেয়ার করা হলো যে পুতজি ফ্লাই নামের এক মাছি বিষাক্ত জীবানু ছড়াচ্ছে। এরা চোখের মাংশ ও মস্তিষ্ক খেয়ে ফেলে, বড় হয়ে চোখ দিয়ে মাছি হয়ে বের হয়। সাথে একটি বিভতস ছবি। আমার এক বান্ধবী সেটি শেয়ার দেয়ায় একটু ঘাটালাম। মোটামুটি ২৫ মিনিট খোজাখুজি করে জানতে পারলাম, সেটি আসলে টক্সোপ্লাসমা গনিডি নামের একটি প্রোটোজোয়ার কারণে সৃষ্ট রোগ টক্সোপ্লাজমিক কক্সিডি। ন কথা হলো, এরকম ভুল একটি তথ্য কেনো ছড়ানো হলো? প্রায় ৪০ হাজারেরও বেশী শেয়ার, অর্থাৎ ৪০ হাজারের কয়েক গুন মানুষ এই ভুল তথ্য পাবে এবং বিশ্বাস করবে। পুতজি ফ্লাই নামের যে মাছিট্র কথা বলা হয়েছে, সেটি আফ্রিকান টুম্বু ফ্লাই, আফ্রিকাতেই পাওয়া যায়। সে কথাটিও সেখানে অনুল্লেখিত ছিলো। অর্থাৎ, উদ্দেশ্যপুর্ণভাবেই আতংক ছড়াতে এই কাজ করা হচ্ছে,

    ২) বিভিন্ন গজবের কারণে বিকৃত মানুষের ছবি (আদৌ মানুষ ও না ) শেয়ার। বাজে একটি চর্চা। অথচ সামান্য কয়েকটা মিনিট খুজলেই দেখা যাবে সেটি কোন আর্টিস্টের বানানো একটি ছবি, অস্তিত্বহীন একটি প্রাণির চিত্রকর্ম। উদ্দেশ্য ? আতংক কিংবা কোন একটি জুজুর ভয় দেখিয়ে সরাসরি উদ্দেশ্য হাসিল না, বরং উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য জনমনে একটি “সায়” পাবার রাস্তা তৈরী।

    ৩) এছাড়াও বাঁশেরকেল্লার মিথ্যাচার তো আছেই।

    ৪) ইদানিং স্বাধীনতা পন্থীদের মধ্যেও উগ্র যারা, তাদের ও একই পন্থা অবলম্বন করতে দেখা যাচ্ছে। ভারতের কোন এক ছবিকে “শিবিরের নেতা ও পতিতাকে পাওয়া গেলো হোটেলে” টাইপ বলে চালিয়ে দেয়া দেখা যাচ্ছে।

    এবার আসি আমার কথা। ট্রাস্ট মি, একেকটা ছবি হাজার হাজারবার শেয়ার হয় ! হাজারখানেক লাইক পড়ে। এই যে আপনার লেখায় কমেন্ট আসছে, শেয়ার হচ্ছে, একটা ভালো লাগা কাজ করে না? ওদের মধ্যে এই অনুভূতিটাই লক্ষ গুন হয়ে কাজ করে। সর্বপ্রথম ভার্চুয়াল এই বিকৃত সুখী হবার ব্যাপারটা দূর করা দরকার। আর, আরেকটু ভালো ভাবে গুগ্লিং করা শেখা দরকার। গুগল করলেই প্রথমেই একটা রেজাল্ট আসলো, সেটাই শুনে কপচাইলাম, সেটাও ঠিক না। ইমেইজ সার্চ দাও, ওয়েব সার্চ দাও। ধৈর্য ধরে পড়, বুঝো। লাইক-ম্যানিয়াক হয়ে পরবর্তিতে কারও দ্বারা সেটি জানতে পেরে “ফেম স্লাট” ইনফোতে লিখাটা নিজের হীনমন্যতার পরিচয় দেয়া ছাড়া কিছুই না। ভুল আমার যে হয় না, তাও না। তবে আমি ভুল স্বীকার করবার মানসিকতা রাখি। এটাও অনেক দরকার, আমার বিশ্বাস।

    তুখোর হওয়া লাগবে না। ইন্টারনেট সম্পর্কে ন্যুনতম জ্ঞান আর একটা বই পড়া প্রজন্মই সব ঝামেলা সমধান করে দিতে পারে অনায়াসে।

    এরশাদ সিন্ড্রোম নামখানা সেই হইছে, সেই !!!

  11. শুকপাখি বলেছেনঃ

    এরশাদকে কিন্ত ভাই আমার সেই লাগে ! 😛 ইতিহাসের সেরা প্রেমিকপুরুষ কিনা !! 😛

    তবে ভাইয়া আবার আমারে প্রশ্ন কইরেন না , “ভাইয়া তুমি এরশাদ সম্পর্কে তেমন কিছু জানো?”

  12. লাল সবুজ বলেছেনঃ

    জনাবদের লেখা দেখে অতিমাত্রায় রঞ্জিত হয়ে আপনাদের সাথে যোগ দিলাম 8)

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।