১
-ফাতেমা ! তুমি কিসু একটা কও !
-কি?
-হ্যাঁ/না কিসু একটা !
-আমার ডর করে
-আরে আজিব মাইয়া , এইহানে ডর ক্যান লাগবো
-যদি আমার মায়ের মতো…
-তুমি আমার দিকে তাকাও , তোমার মনে হয় আমি…
কথা শেষ হয় না , কারখানার সামনে সবার সাথে দেখা হয়ে যায় … যে যার ফ্লোরে চলে যায় । ফাতেমা ভাবতে থাকে , সবাই কি আর তার বাপের মতো… হামিদরে তো ম্যালা দিন ধরে দেখছে । তার বোন মরার সময় মানুষটা ছাড়া তার পাশে কেউ ছিল না । আরও কতো কি হইলো । আর কেউ থাকুক না থাকুক মানুষটা সবসময় থাকে । হারামজাদা ম্যানেজারটার মতো উপকার করে গায়ে হাত দিতে চায় না । নাহ ! আইজ টিফিন এর সময় … মানুষটা দেখতে যেমনি হোক হাসি
দেখলে … দুপুরে সেই খুশীর হাসি দেখার কথা মনে করে একাই হেসে দিলো মেয়েটি ।
– কিরে ছেমড়ি হাসিস ক্যান
– কিছু না খালা । হায় আল্লাহ্ ! তোমার গালে …
– এই ১০ বছরে কোনোদিন আমার গায়ে হাত দেয় নাই । পরশুদিন হরতালের আগে হ্যার গাড়িখান যখন ছাই হয়ে গেল , তার পর থেইকা কোন কথা কয় না , খায় না । কাইল খাওন নিয়ে গেলাম …
– তুমি আইজ ক্যান আইলা ?
– একজনের রুজি তো বন্ধ । আমিও যদি না আহি…
আবার কাজে মন দেয় দুইজন ।
২
মাথাটা মনে হয় ফেটে যাবে । গাড়ির দেনা , মেয়ের বিয়ে … সব গত পরশুদিন ছাই হয়ে গেলো। মাথাটা এতো গরম ছিল … শুধু শুধু মাইর খাইলো সফুরা… আহারে ! তার কি দোষ ! এই দুনিয়ায় ওই মহিলাই তো তার সব । আসুক আজ … মাফ চাইয়া , ভালোবাসা দিয়া….. কখন যে আসে । আইজ আবার ওভারটাইম না থাকে । মানুষটা সাথে থাকলে আবার সব হবে ……
৩.
-আম্মা !
-কিরে আলী !
-আব্বারে কইলাম এইবার আমার রিজাল্টের দিন যাওয়াই লাগব ।
-তার বাপের তো কাম থাকে …
-আমি জানি না ! ওই রোল ৫০-এর বাপ ও আহে । আর এইবার আমি তো ফার্স্ট হমুই ।
-বাপ , তোমার আব্বা ওই একবারে বড় রিজালটের দিন যাবোনে …
-না ! তুমি অখন ফোন দিয়ে কও কালকের প্রথম সাময়িকের রেজাল্টের দিনই হের আওন লাগবই ।
৪.
-হ্যালো
-তোমার পুলার কাইল ইশকুলে রিজাল্ট , এইবার না গেলে কইলাম …
-আইচ্ছা আমি ম্যানেজার সাবরে কইয়া দেখি…
-আর শোন…।
………কথা শেষ হয় না
-সুপারভাইজার ভাই !
-কিরে হামিদ ?
-বিল্ডিং-এ নাকি ??
-চুপ ! চুপ ! ম্যানাজাররে কইসিলাম । হ্যায় কইসে প্লাস্টারের সমস্যা । হুদাহুদি চিল্লাইয়া ক্যাচম্যাচ বাধাইস না ।
-ওহ ! তাই কও… আইচ্ছা আমি যাই , কাম করি ।
৫.
এক আর্মির স্যার ফাতেমার দুই হাত ধরে টেনে বের করে আনল … বাইরে দাড়িয়ে আশেপাশে সফুরা খালাকে খোঁজে সে । কই গেলো… একসাথেই তো তারা মেশিনে কাজ করছিলো … তারপর যে কি হইলো … পায়ের নিচের মাটি সরে গেলো … আর হামিদ ! ও আল্লাহ্ হামিদ কই …
সফুরার মানুষটা পাগলের মতো রানা প্লাজার সামনে যাকে পায় , তাকেই সফুরার কথা জিজ্ঞেস করে …
আলী রাস্তার উল্টা পাশে দাড়িয়ে, তার মার হাত ধরে মনে মনে আব্বাকে বলে, “আব্বা, আমার ইস্কুলে তোমার কোনোদিন যাওন লাগব না , তুমি খালি ফিরা আসো ”
৬.
সারজিনা , সামারা , আলিফ আর শুভ আজকে সারজিনার ফিজিক্সে শূন্য পাওয়া celebrate করতে Gloria Jean’s-এ বসে Facebook-এ check in দিচ্ছে ! উফ ! এভাবে প্রকাশ্যে সারজিনা কে পচাইতে যা Fun ! Life is too Good !
– হ্যালো পা !
-সারজিনা তুমি কই মা ?
-Paa ! I am so upset ! I got double zero in 321 !!! Can you believe that ? That Bitch lecturer !!!
-ওহ ! মাম ! No big deal ! You are a champ ! Next time you will be the best !
-I don’t know .. I am feeling so down …
-মাম ! তুমি কই ?
-My friends brought me in a café to cheer me up !
-That’s great ! Enjoy your time my princess…….
-স্যার , একটা ঝামেলা হয়ে গেলো … আমাদের সাভারের বিল্ডিংটা…
-I see ! Call the home minister ASAP ! And try to get an appointment with the president of BGMEA …
-স্যার , আপনি কি যাবেন একবার ?
-মাথা খারাপ তোমার ? They will kill me ! Now leave all this and call the managers . I also need to meet the insurance company. Thank God that we have proper coverage ! বুঝলে , এইবার আবার হজ্বে যেতে হবে ! আল্লাহ্র রহমতের কারনেই সঠিক সময়ে insurance clauseগুলো rectify করা গিয়েছে … নাহলে যে কি হতো ! যাকগে , তুমি একটু মিডিয়াকেও দেখো ! Son of bitchগুলো তো …
– Atfuges
ঘেন্নায় গা রি রি করছে…আর কিছু বলতে পারলাম না।
যেদিন ক্ষোভে আগুন জ্বলবে … সেদিন দিন বদলাবে … সেই দিনের অপেক্ষায় …
আমার কাছে সবকিছুকেই নিজেদের কর্মফল মনে হয়।
খেসারতগুলি দেয় শুধু নিরীহ মানুষ।
অযোগ্যদের হাতে ক্ষমতা তুলে দিয়ে প্রমাণ করি যে আমরা অযোগ্যতর।
Privilaged group did the crime and labors are paying the price .
মালিকটাকে আজকে আগে গার্মেন্টসে ঢোকানো উচিত ছিলো। তাহলে দেখা যেত জোর করে মানুষকে কাজে ঢোকায় কি না।
এমন ঘটনাগুলোর কখনো বিচার না হওয়াতে দিন দিন বেড়েই চলেছে এমন দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনা না বলে হয়তো খুন-ই বলা উচিত।
🙁
সামিরার মতোই বলতে ইচ্ছে হলো……
কিচ্ছু ভালো লাগে না, নিজেদের মাঝে অনেক অনেক পরিবির্তিন দরকার……
🙁 🙁 🙁
কদিন পর আমরা যে মে দিবস পালন করবো,কাদের জন্য??!!কিসের জন্য?? আর কতো প্রান ঝরলে অমন করে বাঁচতে পারবে ওরা?? সেই “মে দিবস” এর ওয়ার্ক ষ্ট্রীটে কি এর চেয়ে বেশি প্রাণ ঝরেছিল?? :crying: :crying: