জীবন্মৃত

ইদানীং আর জীবিত ভাবিনা নিজেকে,
একের পর এক ধ্বংসস্তূপের মাঝে-
কবেই যেন দাফন নিয়েছি
নিজেরই অজান্তে।

প্রথম মৃত্যুটা এসেছিলো সেদিন-
নবজাতকের পচে যাওয়া বস্তাবন্দী দেহটা
যেদিন বাস স্ট্যান্ডে কুড়িয়ে পেলো জনতা !
হাসি পায় - জানো ?
এমন "প্রথম মৃত্যু" কতবারই যে এলো ...

কোনো একদিন ভেসে গেলাম স্যুয়ারেজ ড্রেনে-সেনানীর লাশ হয়ে,
তাজরিনের আগুনে নিজে পুড়ে যোগালাম ইন্ধন !
কখনওবা খুন হলাম ফেলানির সাথে কাঁটাতারে ঝুলে,
আমার রক্ত-মাংসে স্থাপিত হল দুই বাংলায় সম্প্রীতির সেতুবন্ধন।

ঈদ-পূজা-পার্বণে জোটে সলিল সমাধি-
তীরে তীরে চলে শোকের নিনাদ ।
হাত-পা বাঁধা শবদেহে সমুদ্র থেকে ফিরি
জেলে পল্লিতে বহে মূর্ত আর্তনাদ ।

চট্টলার সেই ফ্লাই ওভারের নিচেও
জ্যান্ত গোর হয়েছিল একবার-
দোষারোপের ধোঁয়াশাতে হারিয়ে গেছে
শাঁখারি-পট্টির হাহাকার।

তুমি আমাকে খোঁজ উৎসুক জনতার চোখে ?
আমি বহুতলের ভাঁজে ভাঁজে স্ম্যাশড অদৃশ্য কারো জলখাবার!
একবার-দু'বার- আবারো মরবো বলে,
এই আমি মরে মরে বেঁচে উঠি হাজারো বার।

-- জীবন্মৃত,
২৪ এপ্রিল, ২০১৩।

সুহৃদ সম্পর্কে

সবার কথা শুনি আমি , আমার শ্রোতা নাই ... ।।
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে কবিতা-এ। স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

2 Responses to জীবন্মৃত

  1. ঝরা পালক বলেছেনঃ

    “একবার-দু’বার- আবারো মরবো বলে,
    এই আমি মরে মরে বেঁচে উঠি হাজারো বার।”
    নিজেদের এই অসহায়তায় খুব কষ্ট লাগে ভাইয়া..আমাদের চেতনা আসলে মৃতদের সাথে ঘুরে.. 🙁
    সুন্দর হয়েছে..

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।