মনটা খারাপ বিভিন্ন কারণে তাই মনে হল সরব ব্লগে একটা বিক্ষিপ্ত মনের লেখা দেই।
স্মিথসনিয়ান ইন্সটিটিউট বিশ্বজুড়ে নামকরা ইতিহাস, নৃতত্ত্ব আরও বহু বিষয়ে। কিছুদিন আগে তারা প্রকাশ করল ইতিহাসের আরেকটি মর্মান্তিক ঘটনা। ১৬০৯-১৬১০ সনের শীতকালের তীব্র খাদ্য সংকটের কালে আমেরিকার জেমসটাউনের ইংরেজ কলনিস্টের পেটে গেছে তাদেরই ১৪ বছরের এক বালিকা। নাম না জানা সেই বালিকার হাড়ে মাংস ছাড়ানোর কোপের চিহ্ন আর তার মায়াবি মুখের রিকন্সট্রাক্সন দেখলে যে কারোরই আজকের আধুনিক সভ্যতার ভিত্তিপ্রস্তরকারিদের অতীত কীর্তিকলাপে শঙ্কিত হতে হয়।
সেই বালিকার মুখঃ
৫ই মে, অস্তিত্ববাদের জনক ডেনিশ দার্শনিক সরেন কিয়েরকেগরদের জন্মদিন। তিনি হয়ত জেনে খুশী হতেন তার চিন্তাগুলোর উপর দাঁড়িয়ে আছে আজকের দুনিয়ার সবচেয়ে ধনী সমাজগুলো (নরডিক)। অবাক ব্যাপার হল এদের ইতিহাস নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে গেলে এদের সমাজের এককালের পিছিয়ে থাকা দেখলে অবাক হতে হয়। কর্মসূত্রে থাকা হয়েসে গুটিকয়েক এসব দেশে, যেখানের মানুষের মত মুক্ত বুদ্ধি চিন্তার স্বাধীনতা দুনিয়ার আর কেউ ভোগ করে কিনা সন্দেহ। নরডিক ভাইকিং রা এককালে মেয়েদের মানুষ ই মনে করত না, তাদের একমাত্র কাজ ছিল অন্যসব জিনিসের সাথে শিশু আর সুন্দরী নারী লুঠ করা। যেহেতু এইসব সমাজের পুরুষেরা সমুদ্রে ঘুরে বেড়াত, নারীরা এই সুযোগে স্বাবলম্বী ও শক্তিশালী হয়ে উঠে, আর নিজেদের অধিকার একসময় নিজেই আদায় করে নেয়। এই ক্ষেত্রে স্থানীয় মানুষের প্রগতিশীল মনোভাবের কোন শক্ত প্রভাব আছে বলে দাবি করা মুশকিল। বরঞ্চ প্রয়োজনীয়তাই অধিকার আদায়ের পক্ষে শক্তি হিসাবে কাজ করে। নারীকে আসলে নিজের শক্তিতেই নিজের অবস্থান গড়ে নিতে হয়, পুরুষ তাকে অধিকার দেবার কে?
সত্যিকার বলতে কি সেক্সুয়াল অবজেক্টিফিকেশন জিনিসটা তথাকথিত উন্নত দেশে আরো বেশি। ইদানীং আমাদের দেশে নানা অগ্রগতির সাথে যেসব খারাপ জিনিস ও আমরা আকড়ে ধরছি তার একটি সুন্দরী প্রতিযোগিতা। এর মত অসার আর অসুস্থ প্রতিযোগিতা সভ্য সমাজে দ্বিতীয়টি আছে কিনা আমার জানা নেই। অথচ এইগুলা দেখা আর তালি দেয়াতে আমাদের চেষ্টার অন্ত নাই।
এই প্রসঙ্গেই মনে হল, ধর্মীয় নির্দেশনাগুলোই অনেকটা পারে রক্ষা করতে। প্রায় সব ধর্মই একি জাতীয় পোশাক পড়তে উৎসাহিত করে যাতে মানুষের মধ্যে দৈহিক সৌন্দর্য বিচারের মাপকাঠিতে প্রধান না হয়ে উঠে। প্রাসঙ্গিক, ইদানীং অনেক তথাকথিত ধার্মিককেই দেখি আঁটসাঁট পোশাকে সব ঢেকে চলতে। কিন্তু আমার জানামতে অন্তত ইসলামে এর কোন স্থান নেই, সেখানে পুরুষ ও নারীর পোশাকের মূল বৈশিষ্ট্য হল তা ঢিলেঢালা যাতে দৈহিক আকার স্পস্ট না হয়। পুরুষ সে যত দেবতাই হোক না কেন প্রাকৃতিক নিয়মে সে নারীর সৌন্দর্যে আকৃষ্ট হবেই, এটা অস্বীকার করার মত ভণ্ডামি দেখতে দেখতে ক্লান্ত। আর কোন মেয়ের পোশাকে সমলোচনা করার আগে আপনার নিজের টি শার্ট আর জিনিসটা কতটা টাইট সেই দিকে খেয়াল করুন।
পরিশেষে যারা ডকিন্স, হকিং আর আটকিন্সের ভক্ত তাদের অনেক যুক্তির অসারতা তাদের সহকর্মীরাই কিভাবে সহজে প্রমাণ করেন তার একটা ভিডিও, গণিতবিদ জন লেনক্সের হকিং এর গ্র্যান্ড ডিজাইনের উপরঃ
http://www.youtube.com/watch?feature=player_embedded&v=6eHfhbP1K_4
ইউটিউব বিহীন দেশে বুদ্ধিবৃত্তির চর্চা যে এখন খিস্তিতেই সীমাবদ্ধ হবে তাতে অবাক হওয়ার কিছু নাই।
– susomy rahman
পোস্টের শেষের খোঁচাটা না দিলেও হত। নাস্তিকদের সব যুক্তিই অসার এইটা একটা ভুল কথা।
আমি নিজে আস্তিক মানুষ। অনেক আস্তিক যেমন বাজে যুক্তি দেন তেমন অনেক নাস্তিকও দেয়।
নাসিম নিকোলাস তালেব বলেন ধর্ম হচ্ছে এন্টিফ্রেজাইল!
ধর্ম হাজার হাজার বছর ধরে যা বলে আসছে তার অনেক কিছুই এখনও অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য। সামনে হয়ত আরও কিছু জিনিস গ্রহনযগ্য হতে পারে, পাশাপাশি এইটাও মনে রাখা উচিৎ ধর্মের কিছুকিছু রীতিনীতিও কিন্তু সময়ের সাথে বদলায়।
পোস্টের পেছনে রেফারেন্স থাকলে ভালো হত। সময় পেলে কথাগুলো ঘাঁটাঘাঁটি করে দিতে হবে।
আস্তিকতা নাস্তিকতা বিশ্বাসের ব্যাপার। এর চেয়ে জরুরি আমরা কীভাবে নিজের আশপাশটাকে সুন্দর করব
শুরুটা ভয়ানক!
নিয়মিত লিখবেন আশা করি। 🙂
বেশ ভালো লেগেছে, তবে খুব তাড়াতাড়ি প্রসঙ্গগুলো বদলালো বলে মনে হল। মানে প্রথম প্যারা পড়ে আঁতকে উঠেছিলাম !! ঐ সম্পর্কেই আরও জানার ইচ্ছা হল।
সেক্সুয়াল অবজেকটিফিকেশন নিয়ে আর কী বলব !! খারাপ গালি/খিস্তি এইগুলা সবসময়েই একজন নারীকে ইঙ্গিত দিয়েই বানানো হয়, সে বাংলাদেশ হোক আর পশ্চিমা বিশ্ব হোক। পোশাকের ব্যাপারে অবশ্যই যথার্থ শালীনতার প্রয়োজন কিন্তু একইসাথে এইসব খিস্তি বলা লোকেদেরও শুধরানোর দরকার আছে। নারী-পুরুষ দুইয়েরই সংশোধন দরকার। এইজন্য অনেক বেশি জ্ঞানচর্চা ও সমাজসেবার পরিবেশ সৃষ্টি করা দরকার। তা নাহলে এক শ্রেণির মানুষ শুধু চিল্লায় যাবে নারীর অবিজেকটিফিকেশন নিয়ে, আরেক শ্রেণি (নারী/পুরুষ) দেদারসে বিউটি কম্পিটিশন করে যাবে।