আমাদের হাসপাতালের O.T.’র ঘটনা । ঘটনার দিন O.T তে আমাদের ক্লাস ছিল।আমি বরাবরের মত সেদিনও ক্লাস শুরুর প্রায় আধাঘন্টা পরে উপস্হিত।নানান সাইজ আর শেইপের অনেকগুলো দরজা পেরিয়ে যখন O.T.তে ঢুকবো এমনসময় পিলে চমকানো এক চিত্কার।পড়িমড়ি করে আশপাশে কোন স্যার আছে কিনা দেখে চোরের মত দরজার ফাঁক গলিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়লাম।
এরপর আমি সাধু! ভাবখানা এমন যে ক্লাস শুরু হবারও ঘন্টাখানেক আগে আমি এসেছি! কিন্তু না শেষরক্ষা হলো না ।‘এই ছেলে এত দেরী কেন?’ মুখ কাচুমাচু করে কিছু একটা উত্তর দিতে যাব -এমনসময় ভালমত তাকিয়ে দেখি, স্যার নয়। তাবলীগের বন্ধু হাসান মিটিমিটি হাসছে।তার মানে ওরই কারসাজি ।আমি গা ঝাড়া দিয়ে বলি,আরে ধুর! আমি ভয় পাইছি নাকি ?
মৃদুপায়ে চিত্কারের উত্পত্তিস্হলের দিকে এগিয়ে যাই। দেখি বছর চারেকের এক পিচ্চির সারকামসিশন চলছে ।সহজবাংলায় যাকে বলা হয় ‘মুসলমানি করানো’ ।স্হানিক চেতনানাশক দিয়ে জায়গাটা অবশ করা হয়েছে।কিন্তু পিচ্চির মুখ তো অবশ করা হয়নি!তাই সে তারস্বরে চেচানো শুরু করেছে।আমার বন্ধুরা হাত-পা-কোমর -সবখানে যে যেখানে পেরেছে ,ঠেসে ধরেছে।কিন্তু সেও দমবার পাত্র নয়।ঝাকাঝাকি, ছোড়াছুড়ির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল।মাঝেমাঝে একটু মাথা তুলে সে দেখার চেষ্টা করছিল সবকিছু ঠিকঠাক আছে কিনা!:P 😛
তবে ওর নড়াচড়ায় স্যারের কাজে সমস্যা হচ্ছিল । একারণে তাকে প্রথমে আশ্বাস,এরপর ঝাড়ি,তারপর মার দেওয়া শুরু হলো ।সার্জন থেকে শুরু করে ইন্টার্নি সবাই একটা-দুটা করে থাপ্পড় দিল।আপনি ভাবছেন, এটা তারা একদম ঠিক কাজ করে নি। কিন্ত সে এত নড়ছিল যে, ঠিকমত সেলাই দেওয়া যাচ্ছিল না ।তাই ভয় দেখানো আর কি !
তবে আমরাও বসে ছিলাম না।আমাদের মেয়েরা পরম মমতায় পিচ্চির মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে তাদের দায়িত্ব পালন করছিল।আর শুভ্র নামে আমার এক বন্ধু তাকে ব্যথা কমার মলম লাগানো হচ্ছে বলে বারবার আশ্বস্ত করতে লাগল।কিন্তু তাতেও চিত্কার কমে না।কমবে কিভাবে ? কারন তখন তো আর মলম লাগানো হচ্ছিল না।রীতিমত সেলাই দেওয়া হচ্ছিল।এদিকে আমাদের এক বিদেশিনী বান্ধবী (কাশ্মির থেকে আগত সুন্দরী) তার মাথায় যত্নসহকারে ফুঁ দিয়ে যাচ্ছিল।আমি ভাবলাম,এই ফুঁ অব্যর্থ ।কারন বিদেশীনি বলে কথা ! কিন্ত আমার ধারণা ভুল প্রমাণিত হল ।এতেও পিচ্চির ব্যথা কমলো না।
অপারেশন শেষ হওয়ার পর সিএ স্যার পিচ্চিকে বলল ,তার আর কোন সমস্যা নেই। তবু পিচ্চির সন্দেহ কাটে না। শেষে দেখানো হল! এতক্ষনে পিচ্চির যেন ধরে প্রান ফিরে এলো ।আমরা পিচ্চির কাণ্ড দেখে উচ্চস্বরে হাসতে থাকি । কিন্তু ততক্ষনে তার গাল ফুলে গেছে।কেন ফুলে গেছে ?-সবই আপনারা জানেন।
সবশেষে আপনি হয়ত প্রশ্ন করতে পারেন,সবাই যখন এতকিছু করছিল, তখন আমি কি করছিলাম? ভালো প্রশ্ন। ঐ সময় আমি ওর মাথার পেছনে দাড়িয়ে কুরবানির গরুর মত শক্ত করে দুহাত ধরেছিলাম।
বাপরে !! কী বর্ণনা ! এত কী ব্যথা হয় ? পুরো এনেসথেশিয়া করে না ঐ জায়গায় ? আমার ভাই তো তেমন চিল্লায়ই নাই যতদুর শুনেছি। ব্যাপারটা বেশ নিষ্ঠুর মনে হচ্ছে।
প্রথম প্যারা অন্য ফন্ট মনে হচ্ছে একটু চেক করে দিয়েন।
এনেসথেশিয়া দেয়ার পরেও ব্যাথা থাকে।আর পিচ্চি মানুষ তো ,ভয়েই অনেকটা…………
*** কিছুটা
মজা পেলাম 😀
কিছু বানান ভুল আছে ঠিক করে নিবেন।
থ্যাংঙ্কু আপু।আমাকে তুমি /তুই করে বললেই খুশি হবো ।
হাহা :clappinghands:
দারুণ লাগল। নাহ ডাক্তাররা কশাই ই হয় না। ভালোও হয় 😛
আরও চাই
থ্যাংঙ্কু ভাইয়া ।
হি হি হি !! =)) =))
মজা পাইছি !! :clappinghands:
থ্যাংঙ্কু ।
এই ধরণের কার্য
O.T. রুমে হওয়া অনিবার্য…
আমার কপালে জুটেছিল এক বেটা নির্দয় আজম 8) (গ্রামে যারা ম্যানুয়ালি এই কাজটি করে থাকে 😛 )
এক মাস লেগেছিলো সেই ব্যথা করতে হজম :crying:
পরিশেষে,
লেখা মজা পাইয়াছি বেশ
বেশ কিছুক্ষণ থাকিবে এই মজার রেশ :happy:
পড়ে টা মিস গেছে
লেখা পড়ে মজা পাইয়াছি বেশ
বেশ কিছুক্ষণ থাকিবে এই মজার রেশ =))
ভাই ,আমার কমেন্টেও হয়েছে ঝামেলা ,
ওপরের টা হয়েছে নিচে ,লে ঠ্যালা সামলা !!!
😛
ভাই,কইয়েন না।আমারো একই অবস্থা হইছিল
ভাই,কইয়েন না।আমারো একই অবস্থা হইছিল ।
আজম না, হাজম !!
😳 আজম-ই শুনছিলাম 😛
যাহোক থিঙ্কু, বাবু :love: