এই যে মশাই,
পরেছ স্যুট–কোর্ট-টাই
বলছি তোমায় শোন,
বৃদ্ধ কুলিরে দিয়ে দুই টাকা বেশি
দেউলিয়া হবে না জেনো।
তোমরা থাকো লাল বাড়িতে
নাস্তা করো জেলি– রুটি,
আমরা থাকি ছাপরা বস্তিতে
পেঁয়াজ– পান্তাতেই মহা খুশি।
তোমরা চড় নীল গাড়ীতে
চোখ জুড়ে থাকে রঙ্গিন চশমায়,
চশমার একটা কাঁচ ভেঙেছে ঐ কবে
ফ্রিতে সাড়িয়ে দেবে কে আমায়?
তোমরা ঘুমাও মখমলের বিছানায়
তবুও কত অনুযোগ–নালিশ,
আমরা ঘুমাই স্টেশনের ময়লা বেঞ্চিতে
শ্যাওলা জড়ানো ভাঙা ইটই মোদের বালিশ।
পাতলা ছেঁড়া শাল জড়িয়ে
শীত করি মোরা পার,
শুষ্ক দৃষ্টিতে দেখি চেয়ে
তোমাদের ওভারকোর্টের বাহার।
তোমরা দিলে দুই টাকা বেশি
মোদের ঠোঁটে ফোটে হাসি।
সন্ধাবেলায় চায়ের সাথের টোষ্ট বিস্কুটটা,
হয়তো খেতে হবে হবে না বাকি।
তোমাদের ভার সযত্নে আমরা
মাথায় বয়ে চলি,
দুটো টাকা বেশি চাইলে বল,
‘ব্যাটা চামার, কুলির বাচ্চা কুলি।’
যাও বাবুসাব, বাড়ি যাও
দুই টাকা বকশিস লাগবে না,
তার চেয়ে বরং তোমার ছোট্ট মেয়েটাকে
একটা ক্যান্ডি কিনে দিও।
আজ বিকেলে চায়ের সাথে টোস্টটা,
নাহয় নাইবা খেলাম…
অসাধারণ কবিতা !! এই ধরনের বোল্ড কবিতাগুলো বেশ লাগে…
ধন্যবাদ আপু 🙂
কথাগুলোতে জোর ছিল! :beshikhushi:
কথাগুলতে হয়তো কিছুটা জোর ছিল কিন্তু নিজের মনে লুকিয়ে থাকা কোথাগুলো, অনুভূতিগুলো খুব জোরে চিৎকার করে বলার, শক্ত করে ধরা কলম দিয়ে লিখে যে মানুষগুলো; যে মানুষগুলোকে নিজের নিত্য চলার পথের পাথেয় ভাবি তাদের কোন একজন যদি হুট করে নিজেকে দুর্বল ভাবতে শুরু করে তখন খারাপ লাগে বেশ খারাপ লাগে কিন্তু কিছু করার থাকে না কারণ তাকে বোঝানোর ধৃষ্টতা আমার নেই, আমি নিজে কতোটুকুই বা বুঝি যে তাকে বোঝাব? নিজে কিবা জানি যে তাকে জানি যে তাকে জানাব; তাকে এ পথ থেকে রুখবো…
তবে একটা শব্দ হয়ত জানি, একটা হয়তো বুঝি তা হল ‘ভালবাসি’…ভালবাসি ফিনিক্সদিকে…আমাদের ফিনিক্সপাখিকে…
দারুণ লিখেছিস রে 😀
ধন্যবাদ শারমিনাপু 😀
কথাগুলো সত্যিই খুব ধারালো! আমাকেও খুব ভাবায় ব্যাপারগুলো।
আজ বিকেলে চায়ের সাথে টোস্টটা,
নাহয় নাইবা খেলাম…
– ইশ! সবাই যদি সত্যি সত্যি এভাবে চিন্তা করত!! 🙁
ধন্যবাদ শাহরিয়ার 🙂
সত্যিকার অর্থেই আমাদের আশেপাশে থাকা মানুষগুলোর দুঃখ-দুর্দশা দেখলে নিজেকে বেশ সুখী মনে হয়…
ছেঁড়া একটা শার্ট পড়ে তোমার-আমার বয়সী একটা ছেলে তোমাকে-আমাকে রিক্সায় টেনে নিয়ে যাচ্ছে হয়তো আপাতভাবে ক্ষণিকের জন্য আমাদের ভেতরে থাকা সুপ্ত মনুষ্যত্ব জেগে উঠে, দুঃখ প্রকাশ করি ঐ ছেলেটির জন্য কিন্তু অতি অল্প সময়ের মধ্যেই মিইয়ে যায় তা রিকশা থেকে নেমেই ঢুকে পড়ি Cats eye, Eastasy বা Richman নামক ব্রান্ডের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত দোকানগুলোতে ঢুকে ভুলে যাই সমবয়সী ক্লান্ত রিকশাচালক ছেলেটির ছেঁড়া শার্টের গোনা ছিদ্রগুলোর কথা যার জন্য কিছুক্ষণ আগেই আমি ছেড়েছিলাম দীর্ঘশ্বাস…
আমরা মানুষ খুব বিচিত্র প্রাণী… মানুষদের মাঝে ডারউইনিজম-Suvival to the fittest দেখতে ভাল লাগে না একদম…
এই আমি এই আমরা…আমাদের দৌড় হয়তো একটা লম্বা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ।
দিনশেষে একটা বাক্যই অস্ফুট স্বরে বের হয়ে আসে ‘আমি বেশ ভাল আছি…সুখে আছি…আল্লাহ আমায় অনেকের চেয়েই ভাল রেখেছেন 🙂