সিঁদুর রঙা শাড়ীটার দিকে এক দৃষ্টি তে তাকিয়ে আছে পৃথিলা । আমি জানি শাড়ীটা একটু বেশি ই সুন্দর ! কিন্তু এতটা তীব্র দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকার মত কিছুনা । একবার ভাবলাম পৃথিলা কে ডাকবো , ওর অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকাটা দেখতে আমার কেমন যেন লাগছে ! অন্য এক পৃথিলা কে দেখছি আমি , যার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই !
পৃথিলার সাথে আমার পরিচয় বেশ অদ্ভুত ভাবে । একবার একুশের বইমেলায় বিকেল ৫টার কাছাকাছি সময়ে একা একা ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম , ছোট্ট একটা স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে পাঞ্জাবির পকেট হাতাচ্ছি , বেনসনের প্যাকেটের উদ্দেশ্যে , হঠাত চোখ পড়লো একটা শ্যামলা মায়া মায়া মুখের মেয়ের দিকে ! মেয়েটা এমন ভাবে বই এ নাক ডুবিয়ে আছে , যেমন করে কোন মা তার বাচ্চার চুলের ঘ্রাণ নেয় কিংবা যেমন করে একটা ছোট্ট মেয়ে তার পুতুলের ঘ্রাণ শোঁকে । উহু হচ্ছে না , আমি আসলে কোন উপমায় মেয়েটাকে সাঁজাতে পারছিলাম না , ব্যাপার টা আমার জন্য নতুন । আমি যেকোন কিছু দেখে ভাল কিছু বাক্য অনায়সে মাথায় সাজিয়ে নিতে পারি , বন্ধুমহলে কবি হিসেবে পরিচিতি আছে , টুকটাক লেখা পেপারেও যায় , দু একটা নাম ও কুড়িয়েছে ।
সেদিন বাসায় আসার পর ও মাথায় মেয়েটা ঘুরছিলো । আমার দেখা অন্যতম শুদ্ধ দৃশ্য । কি জানি কি কারণে সারারাত ঘুমোতে পারিনি । শুধু আবিষ্কার করলাম প্রতিদিন বিকাল ৫ টার কাছাকাছি সময়ে আমি ওই স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকি । আমি তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র , টুকটাক টিউশনি আর ফ্রি ল্যান্সিং এর কাজ করে পেট চালাই , বাবা মা এর কাছে এ বয়সে হাত পাততে বেশ বিবেকে লাগে এখন । আমার সব কাজ লাতে উঠলো ! সে বছর টা অধিবর্ষ ছিলো , ফেব্রুয়ারির ২৯ তারিখে যখন আমি রীতিমত হাল ছেড়ে দিয়ে বিরস বদনে হাতে একটা সিগারেট নিয়ে বই মেলায় ঘুরাঘুরি করছি তখন ই আমার সাথে মেয়েটার দেখা হয় আবার । খুব বিরক্ত একটা স্বরে শুনতে পেলাম কেউ বলছে –
সিগারেটখোর দের আমি দুই চোখে দেখতে পারিনা । এরা নিজেরা তো মরেই , আশেপাশের সব্বাইকে নিয়ে মরে , এদের মাথা ভরা গাধার পুরীষ !!
আমি খুব বিরক্ত হয়ে মেয়েটার দিকে তাকালাম , চোখের দৃষ্টিতে কাউকে ছাই করা গেলে ওই মুহূর্তে করে দিবো এরকম একটা ভাব , কিন্তু তাকাতেই হকচকিয়ে গেলাম ! আরে এতো সেই মেয়েটা , অতিবিস্ময়ে হাত থেকে কখন সিগারেট পড়ে গিয়েছে খেয়াল করিনি ! সেই বার ই শেষ , এরপর আর কখনো কেন জানি আমি সিগারেট খেতে পারিনি , সিগারেট কোম্পানী জানতে পারলে মেয়েটার নামে মামলা ঠুকে দিতো নির্ঘাত ! দিনে তিন প্যাকেট বেন্সনের ধোঁয়া না গিললে আমার যে হতোইনা ।
মেয়েটার চোখের দৃষ্টির তীব্র ঘৃণা দেখে আমি আরো হকচকিয়ে গেলাম । আমার সামনে দিয়ে গটগট করে হেটে চলে গেলো ! মেয়েটার চেহারায় বাচ্চাভাব প্রবল , বয়স টা ঠিক আন্দাজ করতে পারছিলাম না ,পনেরো হতে পারে আবার কুড়ি ও হতে পারে । কিন্তু চাহনি টা কেমন অন্যরকম ! অনেক বেশি দুনিয়া দেখে ফেলেছি টাইপ একটা ভাব , চেহারায় আভিজাত্য আছে , নাক উঁচুভাব আছে কিন্তু সব ছেপে করে সারল্য টা কেমন বের হয়ে আসে । হঠাত মাথার ভেতরে কেউ বলে উঠলো ,
গাধার বাচ্চা , চেহারা নিয়ে গবেষণা করতে করতে তো মেয়েটাকেই হারাবি , দৌড় লাগা ! এখনো মেলার ভেতরেই থাকার সম্ভাবনা ৯০% ।
তারপর বহু কাঠখড় পুড়িয়ে পরিচয়। নাক উঁচু স্বভাবের মেয়েটা আমাকে প্রথম প্রথম পাত্তাই দিতে চাইতোনা । আমাকে দেখলেই মোটা ফ্রেমের চশমা পড়ে চেহারায় আমি কি হনুরে ভাব নিয়ে গটমট করে হেটে চলে যেতো । বরফ গলেছিলো বেশ কষ্টে , ততদিনে আমি ঢাকা ভার্সিটির কলাভবনের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মজনু টাইটেল পেয়ে গেছি । প্রতিদিন দাঁড়িয়ে থাকি , মেয়েটা ফিরেও তাকায়না । একদিন খুব জ্বরে পড়লাম , থার্মোমিটারে যখন মেপেছি , ১০২ ছিলো । জ্বর গায়ে কলাভবনের সামনে দাঁড়িয়ে আছি , মেয়েটা আমাকে পাত্তা দেয় না , ঘুরেও তাকায় না কিন্তু ওকে একদিন না দেখলে আমার ভেতর যে অদ্ভুত অস্থিরতা সৃষ্টি হয় তা সহ্য করার থেকে জ্বর গায়ে দাঁড়িয়ে থাকা ঢের ভাল । আমার যতটুকু মনে আছে পৃথিলা গেট দিয়ে বের হয়ে আমার দিকে বিষ দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো , প্রতিদিন ই করে নতুন কিছুনা ! মেয়েটা নাকের পাটা ফুকিয়ে ঝগড়া করতে চলে এলো ।
আপনি প্রতিদিন এখানে দাঁড়িয়ে থাকেন কেন ?
সরকারি জায়গা , দাঁড়ালে তোমার কি ??
আপনি আমাকে তুমি করে বলছেন কেন ?
বাচ্চা কাচ্চা দের তুমি করেই ডেকে থাকি ।
আপনি খবরদার এইখানে দাঁড়িয়ে থাকবেন না , একদম ঠ্যাং ভেঙ্গে লুলা বানিয়ে দিবো !
আমি তর্ক করে কিছু বলতে যাচ্ছিলাম , ! কিন্তু সেইদিন উপর ওয়ালা মনে হয় ওর মনের চাওয়া কবুল করে নিয়েছিলেন , আমি বেশ টের পাচ্ছিলাম আমার জ্বর বাড়ছে , মনে হচ্ছিলো দুনিয়াটা বন বন করে ঘুরছে ! হঠাত ই আমি কাটা কলাগাছের মত ঠাশ করে পড়ে গেলাম !
হাসপাতালে যখন চোখ মেলি শ্যামলা নাক উঁচু মেয়েটার চোখ লাল হয়ে গিয়েছে কাঁদতে কাঁদতে ! আমার বেড এর পাশেই বসে এক নাগারে হেঁচকি তুইলে যাচ্ছে ! আমি চোখ মেলতেই দুদ্দাড় তেড়ে এলো , দু একটা কিল ঘুষির পর যা গালি শুনলাম ও টুকু বাদ ই দেই নাহয় ! আমি তখন মনে মনে ভাবছি ,
আমি পাইলাম , উহারে পাইলাম !
পৃথিলার খুব গভীর দৃষ্টির মাঝেও একটা ছোট্ট মেয়ে বাস করে আমি বুঝতে পেরেছিলাম পরিচয়ের প্রথম দিন গুলোতেই । মাঝে মাঝে ওর উচ্ছল হাসি কিংবা গভীর অভিমানে সেই বাচ্চা মেয়েটা বের হয়ে আসতো । আমি এবং পৃথিলা দুজন দুজন কে নিয়ে খুব খুশি ছিলাম , কিন্তু আমি তখন ও পৃথিলার সব হয়তো ছিলাম না । আমি বেশ বুঝতে পারতাম, আমি পৃথিলার জীবনে আসার পর ও ওর নিজের একটা জগত ছিলো যেখানে আমার প্রবেশাধিকার নেই । আমি তা নিয়ে কখনোই আফসোস করিনি কারণ ওকে যতখানি পেয়েছি ততখানি পাওয়া আমার সাত জনমের ভাগ্য !
মাঝেমাঝেই পৃথিলা হারিয়ে যেতো , আমি ওকে অনেক খুঁজেও পেতাম না । মোবাইল , ফেসবুক , ম্যাসেঞ্জার কিংবা ভার্সিটির হল , টি এস সি … কোথাও না ! প্রথম প্রথম ওকে জিজ্ঞাসা করলে বলতো আমার মাঝে মাঝে হারিয়ে যেতে ভাল লাগে ইহান ! খুব বেশি প্রশ্ন করা আমার ধাঁতে নেই , আমি পৃথিলা কে অনেক বেশি খুশি ছিলাম , আর কিছুতে মন লাগতো না ! পৃথিলা একাই আমার দুনিয়া হয়ে গিয়েছিল আসলে ।
মাঝে মাঝেই আমি আর পৃথিলা রিক্সা করে ঘুরতাম , পৃথিলা রিক্সার বাম দিক ছাড়া বসতে পারেনা , একবার রিক্সা থেকে পড়ে যেতে নিলে আমি ওর হাত ধরে ফেলি । এরপর থেকে কখনো রিক্সায় ওর হাত ছাড়িনা , ঐ কিছুটা সময় ওর চোখের কোনায় পানি টলমল করে , কখনো গড়িয়ে পড়েনা আর আমি ভাবি এই মায়াবতী মেয়েটা আমার !
এর মধ্যে আমার পড়াশোনা শেষ , বেশ ভাল একটা চাকরিও জুগিয়েছি । তিন বছরের সম্পর্কটাকে একটা আনুষ্ঠানিকরূপ দেয়ার সময় হয়ে এসেছে আমি বেশ বুঝতে পারি। পৃথিলাকে অফিসিয়ালি প্রপোজ করা যাকে বলে কখনো করা হয়নি , আমরা কেউ কাউকে বলিনি ভালবাসি । সামনে পহেলা বৈশাখ আসছে , আমার মাথায় নানা চিন্তা ঘোরে । পৃথিলা এই এক আজব মেয়ে যাকে আমি কখনো তার পছন্দের লাল রঙের পোষাক পড়তে দেখিনি । আমি জানি মেয়েটার প্রিয় রঙ সিঁদুর লাল । কিন্তু কক্ষনো লাল রঙের কোন কিছু ওকে ব্যবহার করতে দেখিনি ! শ্যামলা মেয়েদের লাল রঙে কি যে অসাধারণ লাগে তা আমার ভেতরের আটকে থাকা কবি মন জানে , কিন্তু পৃথিলাকে কখনো আসলে জিজ্ঞ্যেস ই করা হয়নি ও কেন লাল পরে না । যাই হোক , আমি পৃথিলা কে একদম আমার মত করে প্রপোজ করতে চেয়েছিলাম ।
এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে কোম্পানীর ট্যুরে আমাকে ঢাকার বাইরে যেতে হবে তাই মার্চের ৩১ তারিখে পৃথিলা কে দেখা করতে বলে দেই ! ও প্রথমে রাজি হচ্ছিলো না , কিন্তু পরে ঠিক ই রাজি হয়ে যায় । আমি সেদিন সাত সকালে উঠে আগে কাঠবেলির মালার খোঁজে শাহবাগ দৌড়াই । বেলি ফুল আর সিঁদুর রঙা জামদানি নিয়ে ওর বাসার নিচে এসে ফোন দেই । পৃথিলা নেমে আসে আরো মিনিট পনেরো পরে , ওর চোখের নিচে কালি , দৃষ্টির উদ্ভ্রান্ততা বেশ স্পষ্ট । আমি প্যাকেট টা ধরিয়ে দিয়েছিলাম , ও কোন উচ্ছ্বাস দেখালো না । প্যাকেট খুলে সিঁদুর রঙা শাড়ীটার দিকে এক দৃষ্টি তে তাকিয়ে থাকলো , আমি আবিষ্কার করলাম ওর চোখে শূন্যতা আর হাহাকার ছাড়া কিছু নেই । ওর চোখ দিয়ে হঠাত পানি পড়তে শুরু করলো , আমি নির্বাক হয়ে দেখলাম আমার পৃথিলা কাঁদছে , হাউ মাউ করে কাঁদছে !
***
জানো আমি যখন ফার্স্ট ইয়ারে, হঠাত ই লাল রঙের প্রতি আমার ভালবাসা খুব বেড়ে গেলো , আমি কিন্তু আগে লাল রঙ দুই চোখে দেখতে পারতাম না । সেই আমার সিঁদুর লাল রঙ এর প্রতি এক অদ্ভুত আগ্রহ তৈরি হল । একটা সিঁদুররঙা শাড়ীর ভুত এমন ভাবে আমার মাথায় চাপলো ! আমি সারাক্ষন আম্মু আর বাবার সাথে ঘ্যান ঘ্যান করি । বাবা প্রায়ই বলতেন এইতো মা বিল টা পেয়ে নিই , তোকে একটা লাল শাড়ীর দোকান ই কিনে দিবো ! আমার খুব মন খারাপ হতো কারণ বাবার বিল পাওয়া আর সেই টাকা ঘরে আসা অমাবস্যায় ঈদের চাঁদের মত ব্যাপার ! আমার বাবা বেশ দিল দরিয়া মানুষ , বাবা বিল পাওয়ার পর রাজ্যের মানুষের সমস্যা মেটাতে ব্যাস্ত হয়ে যান , আম্মা যে কেমন করে সংসার টিকিয়ে রাখেন তা ভাবতে গেলেই আমার মাথা নষ্ট হয়ে যায় ! এর মধ্যে আম্মার ওষুধ , আব্বার ওষুধ , গ্রামে বিধবা চাচীকে টাকা পাঠানো ইত্যাদি খরচ লেগেই আছে ! মধ্যবিত্তের নানা সমস্যায় জর্জরিত আমার বাবার আমাকে একটা লাল শাড়ি কিনে দেয়ার টাকা হয়ে উঠেনা ! মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ আসার পর থেকেই বাবার কি যেন হল , বাবা রাতে আর ঘুমোয় না ! তারপর একদিন আমি বাবার সাথে খুব ঝগড়া করলাম , বন্ধুরা সব লাল শাড়ি পড়ছে , আমাকে না কিনে দিলেইনা ! বাবা ৩০ মার্চ রাতে আমাকে তার ঘরে ডেকে নিলেন , সারারাত খুব গল্প হলো , বাবা পরদিন বিল পাবেন , প্ল্যান করলাম ৩১ তারিখ আমি আর বাবা শপিং এ যাবো । দুজন প্রায় ভোর রাতে খাবার খেলাম , বাবার হাতে না খেলে আমি কক্ষনো তৃপ্তি পেতাম না । যখন ভোর হয় হয় , বাবা আমাকে জোর করে ঘুমোতে পাঠালেন , তার আগে হঠাত ই বললেন ,
অনেক দূরে চলে যাবো রে মা ! এখানে আর ভাল লাগেনা !
আমি খুব বিরক্ত হয়েছিলাম , বাবা প্রায়ই এ ধরনের কথা বলেন , আমার কি যে রাগ হয়!
ভোর ৬ টায় বাবা মারা যান । আব্বা যখন ব্যাথায় ছটফট করছেন , আম্মা তখন দৌড়ে বাইরে গেছেন ডাক্তারের খোঁজে , পাশেই এক ডাক্তারের বাড়ি । বাবা কলেমা পড়ার আগে একবার চোখ খুলেছিলেন , আমাকে বললেন ,
স্যরি মা , আজকেও মনে হয় পারলাম না ।
তারপর ই বাবার কথা বন্ধ হয়ে গেলো ।আমি অবাক হয়ে দেখলাম বাবার জিহবা আসতে আসতে নিচে নেমে যাচ্ছে , আমি বুঝতে পারছিলাম পরিষ্কার সব , আমি বুঝতে পারছিলাম একটু পর আমি আর কাউকে বাবা ডাকতে পারবো না । আমি বাবাকে জিজ্ঞাসা করলাম ,
বাবা , পানি খাবে ??
বাবা মাথাটা উপর নিচ করলেন । আমি বাবার মুখে পানি দিলাম , আমি তাকিয়ে দেখলাম বাবা চলে গেলেন , আমি এই হাতে তার নিষ্প্রাণ চোখ দুটি বন্ধ করে দিলাম । আমি নিজ হাতে বাবার চোখ দুটো চিরদিনের জন্য বন্ধ করে দিলাম । একবার ডাকলাম
ও বাবা , বাবা !!
বাবা আর চোখ খুলে তাকাননি । নিজের চোখের সামনে আমি বাবাকে চলে যেতে দেখলাম । আমি জানতাম মৃত্যু কষ্টের কিন্তু বাবাকে চলে যেতে দেখার পোড় আমার ধারণা বদলে গেলো । আমি জানলাম মৃত্যুর চেয়ে সহজ আর বড় সত্য এই পৃথিবীতে কিচ্ছু নেই , হতে পারেনা ।
আমি এরপর থেকে আর লাল শাড়ী পড়িনা , লাল রঙ টা দেখলে আমার অনেক কষ্ট হয় ইহান , অনেক কষ্ট হয় ! বাবা চলে যাওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত আমি শব্দ করে কাঁদতে পারিনি ইহান , আমার ভেতরটা ফাঁকা হয়ে গিয়েছিলো । বড়জোর চোখের কোণে দুফোটা জল জমতো , আমি চাইলেও কাঁদতে পারিনি ইহান । সমস্ত কান্না যেন আমার গলার কাছে দলা পাকিয়ে আটকে থাকতো । তোমাকে ধন্যবাদ , আজ কত বছর পর , কত বছর পর আমি প্রাণ খুলে কাঁদলাম , তোমাকে ধন্যবাদ ইহান , অনেক ধন্যবাদ ।
***
আজ পহেলা বৈশাখ , দূর থেকে দেখলাম পৃথিলা হেটে আসছে , পড়নে লাল শাড়ী , খোপায় কাঠবেলির মালা । বুক থেকে দম ধরে আটকে থাকা নিশ্বাসটা বের হয়ে এলো । আমি নিজের অজান্তে ওর ভেতর আটকে থাকা অভিমানের একটা বিষবাষ্প সরিয়ে দিয়েছি । পৃথিলার কাছে ওর অতি প্রিয় লাল রংকে ফিরিয়ে দিয়েছি । পৃথিলা আমার কাছাকাছি চলে এসেছে , আমি অবাক হয়ে ও কে দেখছি একটু পর পর ! কি চমৎকার মায়াবতী লাগছে ওকে লাল শাড়ীতে , একটা মেয়ে কেমন করে ভেতরে এতো মায়া ধরে থাকে ?
কিছু লেখা পড়ে মনের কথা হারিয়ে যায়। নুহাপু তুমি অন্রক ভাল লেখ 🙂
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু ! 🙂
আপনার লেখনী অনেক অনেক ভালো……
কিন্তু এইরকম ভালোবাসার কথা পড়তে খুব বোরিং লাগে……
অন্যরকম কিছু লিখবেন প্লিজ?
চেষ্টা থাকবে ভাইয়া , মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ ! 🙂
আগেও পড়ছি, আবারো পড়লাম! :love: :love: :love:
:love: :love: :love: :love: :love:
আপু, আপনার লেখার হাত এতো ভালো কেন?
এটা কি আল্লাহর দেয়া তৃতীয় কোন হাত?? 😛
* লেখাটা পইড়া ইচ্ছা হইতেসে দুনিয়া কাঁপায়া প্রেমে পড়ি!! :happy:
ভালো থাকেন।হুঁ,আরেকটা কথা,লেখালেখি চলুক রেগুলার। :love:
যাবতীয়ভাবে লজ্জা পাইলাম ! মন্তব্যের জন্যে দুই বস্তা ধন্যবাদ ! :happy:
রীতিমত একখান গেইট বানায়া ‘স্বাগতম’ জানায়া গেলাম ! :happy:
:happy:
‘সিঁদুর রঙা শাড়ীটার দিকে এক দৃষ্টি তে তাকিয়ে আছে পৃথিলা’, লাইনটা পড়ালাম আর আবেগ সৃষ্টিকারী হরমোনগুলোর ক্যাসকেড রিঅ্যাকশান চালু হয়ে গেল 😛 …মন্ত্রমুগ্ধের মতো একই রেটে পৌছে গেলাম শেষ লাইনে- ‘কি চমৎকার মায়াবতী লাগছে ওকে লাল শাড়ীতে , একটা মেয়ে কেমন করে ভেতরে এতো মায়া ধরে থাকে ?’ 🙂
ভাল লেগেছে বলব না তাহলে বোধয় লেখককে ছোট করা হবে আর যিনি এমন একটা গল্প লিখেছেন তাকে ছোট করার সাহস, ইচ্ছে, ক্ষমতা কোনটাই আমার নেই… :love:
ওব্বাই এত্তো প্রশংসা কই রাখি ?? থেঙ্কু থেঙ্কু !! :happy: