ছবি তুলতে ভালো লাগে! ক্যামেরা হাতে এলেই হাত নিশপিশ করে !? হু আপনাকেই বলছি… দেশ-বিদেশের সুখ দুঃখে আঁকা জীবনের রঙ-বেরঙের হরেক ছবি তুলেছেন তো অনেক!
প্রতিবন্ধী তথা ভিন্নভাবে সক্ষম মানুষদের বঞ্চনা-অভিযোগের অভিমানী দৃষ্টি কি আপনার ক্যামেরায় বন্দী হয়েছিলো কখনো !? কিম্বা যাপিত জীবনের শত যন্ত্রণার মাঝেও হঠাৎ বৃষ্টিতে চোখের কোণে হাসির ঝিলিক! আমি হলফ করে বলতে পারি একেবারেই আনকোরা এক অভিজ্ঞতা হতে যাচ্ছে আপনার জন্যে। তাহলে ক্যামেরা হাতে নিয়ে শুরু হয়ে যান ব্যতিক্রমী এক অভিজ্ঞতা সঞ্চারে…
এই দেশে আছে নানান ধরণের প্রতিবন্ধী মানুষ। নানান রকম তাদের সমস্যা-চাহিদা!
সাদা ছড়ি নিয়ে রাস্তা পারাপার হতে গিয়ে যদি পরপারেই চলে যেতে হয় এই ভয়ে দুরুদুরু বুকে ব্রেইল ব্লকহীন রাস্তায় অনুমান নির্ভর চলাচলে কেমন ভোগান্তি তা একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মানুষকে কাছে থেকে না দেখলে কিভাবে জানবেন! বেশীরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তেমন একটা ব্রেইল পদ্ধতির ব্যবহার নেই, বিশেষ স্কুল গুলো ছাড়া। ঠিক একিভাবে ইশারা ভাষার একজন প্রশিক্ষন প্রাপ্ত শিক্ষক নেই, তাই বলে একীভূত শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিশুরা। সমাজ থেকে আলাদা হয়ে তাদের জন্যে তাও তো আছে বিশেষ স্কুল কলেজ…
হুইলচেয়ার-ক্র্যাচ যার নিত্যসঙ্গী, তাকিয়ে দেখুন- সিঁড়ির উচু উচু ধাপগুলো তার দিকে চেয়ে হাসে অট্টহাসি। অপ্রশ্বস্ত টয়লেটের দরোজায় গিয়ে যখন আটকে যায় হুইলচেয়ারখানা তাদের সে সময়ের অসহায় চাউনি কি দেখেছেন কখনো আপনি!? বাস, ট্রেন, লঞ্চ, গাড়ি কোথাও নেই তরতরিয়ে উঠে যাবার পথ। যেখানে ইচ্ছে সেখানে অঘোষিতভাবে প্রবেশ নিষিদ্ধ তাদের। চার দেয়ালের আবদ্ধ কোণে অপরাধীর মতোন অভিশপ্ত জীবনের দিন-রাত্তিরের মূহুর্তগুলো ক্যামন কাটে জানেন কি আপনি?? জানতে কি চান !?
নাহ! বিশেষ ব্যবস্থায় আলাদা হতে চাই না। এই সমাজে আপনার সাথেই বাধামুক্ত চলাচলের সমাধান হোক চাই। পৃথিবী ব্যাপী সবখানেই যদি সমাধানের উপায় থাকে তবে আমাদের দেশেও কেনো নয় !?
কিন্তু আমাদের দেশের মানুষ যে এসব বিষয় নিয়ে তেমন করে ভাবেন নি আগে কখনো। প্রতিবন্ধিতা বিষয়টা সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা নেই-ই বলতে গেলে। তাই সচেতনতা তৈরিতে মানুষের মনযোগ আকর্ষণ করতে চাইছি আমরা আপনাদের ক্যামেরা বন্দী তুলনামূলক ছবিগুলো প্রদর্শনীর মাধ্যমে। সমস্যাগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে দেশের আনাচে কানাচে আপনার শহরে-গ্রামে। খুব সামান্য কিছু কিছু সমাধানও আছে আমাদের দেশে। তার পাশাপাশি না হয় দেশের বাইরে সমাধানেরও কিছু চিত্র তুলে ধরলাম আমরা আপনাদেরই সাহায্যে। অর্থাৎ সমস্যা এবং সমাধান দু’ধরণের চিত্র আমরা তুলে ধরতে চাই। সেই সাথে একটি ফটো ডকুমেন্টারির মাধ্যমে তাদের জীবন যাপনের পদ্ধতিগুলো তুলে ধরতে চাই।
উদ্দেশ্য সচেতনতা সৃষ্টি…
বি-স্ক্যান এর এই চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সর্বজনীন প্রবেশগম্যতার উপরে সাতদিন ব্যাপী উন্মুক্ত প্রদর্শনীর জন্য প্রতিবন্ধী মানুষের জীবন-ধারন, সমস্যা এবং সমাধান – এই তিন বিষয়ের উপর ছবি চাই। চাই সকলের সহযোগিতা এই আয়োজনে সফল করে তুলতে। ৬ সেপ্টেম্বর থেকে থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৭ দিন ব্যাপি এই আয়োজনের প্রথম দিন গ্যালারীতে প্রদর্শনীর উদ্বোধনী আয়োজন শেষে পরবর্তী ৬ দিন কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত প্রদর্শনী চলবে। আপনার-আমার সবার জন্য বাধামুক্ত সমাজ বিনির্মানে আসুন নিজে সচেতন হই, অন্যকেও সচেতন করে তুলি।
ছবি পাঠানোর নিয়মাবলীঃ
* ছবির বিষয়বস্তু প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সর্বজনীন প্রবেশগম্যতা সম্পর্কিত সমস্যা ও সমাধান।
* বিশ্বের যে কোন প্রান্তের অখ্যাত-বিখ্যাত যে কেউ ছবি পাঠাতে পারেন।
* একজন সর্বোচ্চ ৫টি ছবি পাঠাতে পারবেন।
* জেপিজি ফরমেটে দৈর্ঘ্য অন্তত ২০০০ পিক্সেলের হতে হবে।
* কোন বানিজ্যিক উদ্দেশ্যে এই ছবি ব্যবহার হবে না।
* ছবির নীচে ফটোগ্রাফারের নাম সংরক্ষিত থাকতে হবে।
প্রয়োজনীয় আরো কিছু তথ্য!
* আমাদের এই আয়োজনে মূল স্লোগানঃ A Barrier Free Society, Good for You and Good for Me
* ছবি পাঠানোর শেষ তারিখ- ১০ জুলাই ২০১৩।
* ইমেল করুন – [email protected] এই ঠিকানায়।
* আলোচনা সমালোচনা অথবা যে কোন পরামর্শে বিনা দ্বিধায় ফোন দিন প্লিজ- Navid Nowroz +8801611261339
* ফেসবুক ইভেন্ট লিঙ্ক – https://www.facebook.com/events/316897168442305/
তো, শুভ কাজে আর দেরী কেনো ফটোগ্রাফার বন্ধু, ভাইয়া, আপুরা! সময় কিন্তু খুব বেশী নেই…
বাহ অনেক অসাধারণ উদ্যোগ ! বি-স্ক্যানের চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সাফল্যমণ্ডিত হোক। স্লোগানটা খুব ভালো লেগেছে আপু। 🙂
আচ্ছা আপু, বি আর টি সি এর বাসগুলোতে র্যাম্প করার উদ্যোগ কতদূর এগোল ?
কৃতজ্ঞতা 🙂
বিআরটিসি বাস নিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। কোন কারণে পোস্টটি মুছে গেছে। নানা ঝামেলায় আর দেয়া হয় নি। আজ আবার দিচ্ছি 😀
খুব ভাল উদ্যোগ।অনেক অনেক শুভ কামনা রইল আপু ।
শুধু শুভকামনা!! সবার সাহায্য লাগবে যে ভাইয়া… 🙁
ছবি তো তোলার অভ্যাস নাই। 🙁 ফটোগ্রাফার বন্ধু-বান্ধবদের জানিয়ে দেয়ার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ্।