আস্তিকতার মূলনীতি হচ্ছে একজন সৃষ্টিকর্তা এবং পরকালের উপর বিশ্বাস। আমার মনে হয় সৃষ্টিকর্তার উপর বিশ্বাস করাটা খুব কঠিন কাজ নয়। পরকালের উপর বিশ্বাসের ব্যাপারটার জন্যেই আস্তিকতা নাস্তিকতা নিয়ে টানাটানি পড়ে যায়।পরকালে বিশ্বাসের কারণে মানুষকে নিজে এই দুনিয়ায় কি করছে সেটা নিয়ে সচেতন হতে হয়। তার জন্য নিজের ইচ্ছে মত অনেক কিছুই সে করতে পারে না। অনেকটা সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে তার জীবন। এই সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে ওঠা এবং পরকালের শাস্তির ভয় থেকে মুক্তির জন্যই মানুষ পরকাল অস্বীকার করে, সৃষ্টিকর্তাকে অস্বীকার করে, এই দুনিয়ার জীবনকে নিজেদের মত করে সাজিয়ে নেয়। এই ধরনের মানুষেরা নাস্তিক হিসেবে পরিচিত, অর্থাৎ যারা ঈশ্বরকে বিশ্বস করে না তারাই নাস্তিক।আমি এখন অর্থনৈতিক তত্ত্বের ভিত্তিতে নাস্তিকতা বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করব এবং দেখাবো যে নাস্তিকতা অর্থনীতির জগতে আমরা যাকে বেস্ট চয়েস বলে থাকি তা নয়।
পরকালের ভাগ্যলিখন দুই ধরণের হতে পারে তা আমরা সবাই জানি। এক হছে স্বর্গ আরেকটা নরক। স্বর্গের প্রাপ্তি চিরকালীন শান্তি আর নরকের প্রাপ্তি চিরকালীন শাস্তি। নাস্তিকরা এই শান্তির দিকটার প্রতি খুব একটা আকৃষ্ট নয়। সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বের ব্যাপারটি ঠিক হাতে কলমে গাণিতিকভাবে প্রমান করে দেয়ার মত বিষয় নয়। এখানে তাই প্রমাণ নয়, বিশ্বাসের ব্যাপার আসে।সুতরাং এখানে গাণিতিক প্রমাণের অভাবের দরুন ‘অনিশ্চয়তা’ আছে। আইন্সটাইনের বিখ্যাত সূত্রের গাণিতিক প্রমাণ আছে বলেই তা নিয়ে কেউ কোন সন্দেহ প্রকাশ করে না।অনিশ্চয়তার অর্থনীতি বলে মানুষের কাছে যা আছে বা যা হারাবে তার মুল্য যা পাবে তার মুল্যের চেয়ে বেশী। একারনে এই পৃথীবিতে মানুষের নিকট তার যা কিছু আছে তার মূল্য পরকালে যা কিছু পাবে তার মুল্যের চেয়ে বেশি। যেহেতু সৃষ্টিকর্তার এবং পরকালের অস্তিত্ব একটি ‘অনিশ্চিত’ ব্যাপার সে কারণেই নাস্তিকরা অবিশ্বাসী!অর্থনীতি মানুষকে শেখায় সামনে যা আছে সেটা নিয়ে চিন্তা করতে, আগে কি হয়েছিল বা পরে কি হবে সেটা নিয়ে নয়। মানুষের সামনে আছে এই দুনিয়ার জীবন। পরকাল তো অনেক পরের বিষয়, কাজেই সেটা নিয়ে আপাতত চিন্তা না করলেও হয়!! কিন্তু এটা পুরো ছবি নয়। অর্থনীতিতে একটা সিদ্ধান্তকে আরেকটা সিদ্ধান্তের সাথে তুলনা করে দেখতে হয়।আমি এখন যে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি সেটার মূল্য কততুকু, সেটা আমার কতটুকু কাজে আসবে, অন্য সিদ্ধান্ত নিলে কি পেতাম আমি তার সাথে তুলনা করে যদি দেখি আমি যে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি সেটাই সবচেয়ে ভালো তাহলেই ঐ সিদ্ধান্তটা সঠিক, অন্যথা নয়! তাই এখন আমরা দেখব নাস্তিকদের এই সৃষ্টিকর্তাকে অবিশ্বাস করার সিদ্ধান্ত সৃষ্টিকর্তাকে বিশ্বাস করার সিদ্ধান্তের তুলনায় কততুকু যুক্তিযুক্ত। দুটো সিদ্ধান্তের বেনিফিট বিবেচনা করে আমরা এ তুলনা করব। এজন্য আমি অর্থনীতির উপর বিস্ময়কর প্রভাব বিস্তারকারী ক্রীড়া তত্ত্বের (গেম থিওরি) সাহায্য নেব।
ক্রীড়া তত্ত্ব স্ট্র্যাটেজিক ইন্টারঅ্যাকশন নিয়ে আলোচনা করে। একাধিক স্ট্র্যাটেজির মধ্যে কোনটি খেল্লে সবচেয়ে বেশি লাভ পাওয়ার সম্ভাবনা আছে সেটা দেখানো এর উদ্দ্যেশ্য। ধরা যাক দুইজন লোক একটি স্ট্র্যাটেজিক খেলা খেলছে। প্রত্যেকে দুইটি স্ট্র্যাটেজি চয়েস করতে পারবে এবং একজন যখন তার নিজের স্ট্র্যাটেজি চয়েস করবে তখন অন্যজন কি স্ট্র্যাটেজি চয়েস করতে পারে তা বিবেচনায় রাখবে, দাবা খেলার সময় যেমন নিজের চাল দেয়ার সময় অন্যের চাল আমরা বিবেচনা করি সে রকম। প্রত্যেক স্ট্র্যাটেজি খেলে একটি নির্দিষ্ট পে অফ (লাভ) পাবে। যেমন একটা স্ট্র্যাটেজি খেলে একজন ১০ টাকা পেতে পারে এরকম। যুক্তিযুক্তভাবেই একজন সেই স্ট্র্যাটেজিটা খেলতে চাইবে যাতে সে সবচেয়ে বেশি পে অফ পায়।
উপরের নিয়মগুলো মাথায় রেখে এখন আমি একটা গেমের উদাহরন দিয়ে নাস্তিকতার যৌক্তিকতার বিষয়টা খোলাসা করব। ধরা যাক সৃষ্টিকর্তা এবং একজন মানুষ একটি গেম এর দুজন খেলোয়াড়। প্রত্যেকেই দুটি স্ট্র্যাটেজি খেলতে পারে। মানুষ সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব স্বীকার করতে পারে অথবা নাকচ করতে পারে। সৃষ্টিকর্তা নিজের অস্তিত্ব স্বীকার করতে পারেন অথবা নাকচ করতে পারেন (সৃষ্টিকর্তার স্ট্র্যাটেজি দ্বারা আমি এখানে তাঁর অস্তিত্ব থাকা না থাকারে সম্ভাবনা তুলে ধরছি)। এখন তাদের এই দুইটি করে স্ট্র্যাটেজির যে কোনো কম্বিনেশনের জন্য প্রত্যেকে যে পে অফ পাচ্ছে তা নিচের বক্সে (পে অফ ম্যাট্রিক্স) তুলে ধরলাম।
সৃষ্টিকর্তা মানুষ | স্বীকার | নাকচ |
স্বীকার | +∞,০ | ০,০ |
নাকচ | -∞,০ | ০,০ |
এই গেমটাকে আমি বিখ্যাত গেম দ্য প্রিজনার্স ডিলেমার আদলে বানিয়েছি। এ ধরণের গেমকে বলা হয় নন কো অপারেটিভ গেম। কোনো পক্ষই জানে না অন্য পক্ষ কি স্ট্র্যাটেজি খেলবে। এখানে আমি সৃষ্টিকর্তার পে অফ সব ক্ষেত্রেই শুন্য ধরেছি। কারণ মানুষ তাঁর অস্তিত্ব স্বীকার করল কি না করল তাতে তাঁর কিছুই যায় আসে না। সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব যদি সত্য হয় তবে মানুষ সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব স্বীকার করলে তার লাভ পরকালে জান্নাতের সীমাহীন শান্তি (+∞) আর না করলে তার জন্য রয়েছে পরকালে জাহান্নামের সীমাহীন অশান্তি (-∞)। আর সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব না থাকলে তাঁর অস্তিত্বে বিশ্বাস করে মানুষের কোন লাভ ক্ষতি হচ্ছে না তাই তার পে অফ ধরেছি শূব্য। দেখতে পাচ্ছি যে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব থাকুক কি না থাকুক একজন মানুষের তাঁর অস্তিত্বে বিশ্বাস করে কাজ করা উচিত। কারণ তাতে হয় তার কোন লাভ ক্ষতি হবে না (সৃষ্টিকর্ত্যর অস্তিত্ব না থাকলে) কিংবা জান্নাতের চিরকালীন শান্তি পুরস্কার পাবে (সৃষ্টিকর্ত্যর অস্তিত্ব থাকলে)।অন্যদিকে মানুষ যদি অস্বীকার করে তবে হয় সে কোন লাভ ক্ষতি পাবে মা (সৃষ্টিকর্ত্যর অস্তিত্ব না থাকলে) কিংবা জাহান্নামের চিরকালীন শাস্তি পাবে (সৃষ্টিকর্ত্যর অস্তিত্ব থাকলে)। দেখা যাচ্ছে প্রথম ক্ষেত্রে তার পে অফ দ্বিতীয় ক্ষেত্রের সমান নয়ত বেশি। তাই সৃষ্টিকর্তা যেই স্ট্র্যাটেজিই খেলুক না কেন মানুষের প্রথম স্ট্র্যাটেজি খেলা উচিত। কারণ তাহলে সে শাস্তির ক্ষতিটা এড়াতে পারবে এবং তার একটা বিশাল পে অফ পাওয়ার সুযোগও থেকে যাচ্ছে। কিন্তু নাস্তিকেরা সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব অস্বীকার করছে সুতরাং তারা বেস্ট স্ট্র্যাটেজি খেলছে না। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে নাস্তিক জীবনযাপন অর্থনীতির জগতে যুক্তিযুক্ত সিদ্ধান্ত নয়।
এতক্ষণ আমার এই আলোচনার মূল উদ্দ্যেশ্য ধর্মীয় আলোচনা নয়, গেম থিওরি এবং অর্থনীতর তত্ত্ব গুলোকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইন্টারেস্টিং উপায়ে কিভাবে কাজে লাগানো যায় সেতা এবং অর্থনীতি যে শুধু টাকা পয়সার বিষয় নিয়ে আলোচনা করে না তারই একটা উদাহরণ তুলে ধরা। তাই এই লেখার উপরে কোন ধরণের ধর্মীয় বিতর্কের জন্য আমি দায়ী থাকব না। তবে আমি নাস্তিক নই।
আপনার পোস্ট পছন্দ হইছে। টাইটেলও দিছেন সিরাম!
জানি না লেখক প্যাস্কেল এর ওয়েজার এর সাথে ফ্যামিলিয়ার কিনা।
প্যাস্কেলও মোটামুটি একই কথা বলেই গেছেন।
যদি ঈশ্বর থেকেই থাকেন তাইলে তো ধরা খাইতে হবে।
তবে মানুষ “তার জন্য নিজের ইচ্ছে মত অনেক কিছুই সে করতে পারে না। অনেকটা সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে তার জীবন। এই সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে ওঠা ” এই কারণে নাস্তিক এইটা একটা ভুল কথা।
অনেকেই অনেক কারণে হয়। যেমন লাদেন এর বোমা হামলার পর নিউ এথিজম দুনিয়াতে
জনপ্রিয় হইছে। অনেক মানুষ পুরো ধর্ম আইডিয়াটাকেই নেতিবাচক ভাবে দেখছে। ধর্ম ধ্বংস আনে… এই সব বলছে আর কি।
অনেক উগ্র নাস্তিক যেমন ধর্ম + ধার্মিক বুঝে না তবুও মন্তব্য করে আমরা আস্তিকরাও তেমন কাজ প্রায়ই করি।
অর্থনীতি বিষয়ে সামান্য কিছু পড়েছি। মাঝে মধ্যে হিসাব বিজ্ঞান আর অর্থনীতি মিলিয়ে ফেলি।
ক্রিড়া তত্ত্ব (Game Theory) এর উদাহরণটা ভাল লেগেছে। কিন্তু, এক্ষেত্রে মানুষ খেলোয়াড়ের চাল দেবার যে বুদ্ধি, সেটাকে একেবারেই নগণ্য ধরা হয়েছে। মনে রাখতে হবে, সুপার কম্পিউটার বিশ্ব দাবায় যেমন মানুষকে হারিয়েছে, মানুষও তাকে হারিয়েছে বহুবার। 🙂
নাস্তিকতার কারণ হিসাবে যা উল্লেখ করেছেন আর কি, সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠার জন্য যে এত বড় রিস্ক নেয়, তার কি কিছু বাহবা পাওয়ার কথা না? খেলা মানেই তো একটা রিস্ক। 😀
আসলে আস্তিক বলি আর নাস্তিক বলি, দু পক্ষই এই পৃথিবীতেই তাদের ক্রিড়াবিস্তার করে থাকে। তাই, তাই পৃথিবীর মানুষের প্রতি তাদের অবদান, সে ধার্মিক দৃষ্টিভংগী থেকেই হোক, আর অধার্মিক দৃষ্টিভংগি থেকেই হোক, কোনটাই ফেলনা নয়। অর্থনীতির ভাষায়, কোনটাই শাট ডাউন পয়েন্ট পার হবে না (ভুল টার্ম ব্যবহার করলাম বোধ হয়)।
দূর করতে হবে অন্ধতা, ধর্মান্ধতা হোক, নি-ধর্মান্ধতা হোক, দু’টোই পরিত্যাজ্য।
ওহ আচ্ছা, ভুলেই গিয়েছিলাম। স্বাগতম। :welcome:
গেমটা মোটামুটি ঠিকভাবে সাজিয়েছি বলেই মনে হয়, নাস্তিকতার বহুত কারনের মধ্যে আমি যা উল্লেখ করেছি তা কিছুটা ঠিক। আর আমার এখনো বহুত শেখার বাকি আছে 🙂 বোহেমিয়ান ভাই এর সমালোচনা মেনে নিলাম, অনেক কিছুই লিখিনি, আর প্যাস্কেল এর ওয়েজার আমার পড়া হয় নি। আসলে হঠাৎ করেই মাথায় ব্যাপারটা আসে, গেম থিওরি কে এধরণের বিষয়গুলোতে কাজে লাগানো যায় কিনা সেটা নিয়ে ভাবতে ভাবতে। জাস্ট ফর দ্য ফান অফ ইট। বেশি প্র্যাক্টিকালি চিন্তা করে দেখি নি. আর হ্যাঁ শাটডাউন পয়েণ্ট নয়, ইনএফিশিয়েণ্ট হবে না বলতে পারেন মেইবি। 😛
নাস্তিক
নির্মলেন্দু গুণ
নেই স্বর্গলোভ কিংবা কল্প-নরকের ভয়,
অলীক সাফল্যমুক্ত কর্মময় পৃথিবী আমার৷
চর্মচোখে যা যা দেখি, শারীরিক ইন্দ্রিয় যা ধরে,
তাকেই গ্রহন করি৷ জানি, নিরাকার অপ্রত্যক্ষ
শুধুই ছলনা, বিশ্বাস করি না ভাগ্যে, দেবতার বরে৷
আমার জগৎ মুগ্ধ বাস্তবের বস্তুপুঞ্জে ঠাসা,
তাই সে ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য, অতীন্দ্রিয় নয়৷
অন্ধতার বধ্যভূমি আমার হদৃয়৷
সেই শ্রেষ্ঠ মানব-সন্তান, যার মন মুক্ত ভগবান৷
আমার মস্তক নিত্য নত সেই নাস্তিকের তরে৷
লাইফটারে গানিতিকভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। তবে দুই একটা ভেরিয়েবল দিয়ে ব্যাখ্যা করে মতাদর্শিক কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্তে না আসাই বেটার।
ইকনমিক একটা ব্যাখ্যা দিয়েছি মাত্র, কোন সিদ্ধান্তে আসি নি । তত্ত্বীয় জগতের সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতে পারি নি লেখাটায় তাই আন্তরিক ভাবে ক্ষমাপ্রার্থী। তাছাড়া আমার উদ্দেশ্য লেখার উপসংহারে ক্লিয়ার করে দিয়েছি বলেই তো আমার ধারণা
লেখার থিমটা ভালো লেগেছে, সবকিছুর সাথে পুরো একমত না হলেও।
এরকম একটা কথা ড: মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্রও ছিল বোধহয়? বিশ্বাস করলে ক্ষতি নেই, না করলে ক্ষতি থাকতেও পারে আবার নাও পারে – এমন।
আপাতদৃষ্টিতে যা মনে হয় ব্যাপারগুলো আসলে হয়তো আরো অনেক জটিল। এজন্যই দেখা যায় অনেকে বিশ্বাস করেও জীবনভর ধর্মের এসেন্সটাও ধরতে পারে না আর তাই অনেক ভুল করে। আবার অনেকে বিশ্বাস না করেও এসেন্সটা কোনভাবে নিজের ভেতর ধারণ করতে পারে, অনেক ধার্মিকের চেয়েও বেশি ধার্মিক মনে হয় তখন তাকে।
অর্থনীতি তো অনেক ইন্টারেস্টিং ! প্যাসকেল কাজ করে গেলেও আপনি নিজে তো আর জেনে বের করেন নি, সেইদিক থেকে অনেক ব্রিলিয়ান্ট এপ্রোচ। কিছু টাইপো আছে, আগামীবার থেকে সতর্ক হবেন আরও আশা করি। 🙂
:welcome:
:thinking: