তখন আমাদের পেডিয়াট্রিক্স (শিশু) ওয়ার্ড চলছিল ।বরাবরের মত ক্লাস শুরুর প্রায় আধাঘন্টা পরে আমি উপস্হিত । ক্লাসরুমের দরজায় উকি দিয়ে দেখি ম্যাম ক্লাসে নেই ।চলে যাবো কিনা চিন্তা করতে করতে কি মনে করে ক্লাসে ঢুকলাম । দেখি সবাই হা করে প্রজেক্টরের মনিটরের দিকে তাকিয়ে আছে । আমিও তাকালাম ।দেখি মনিটরে কিউট কিউট সব বাবুর নানা অসুখ দেখাচ্ছে । আহ ! নিষ্পাপ মুখের এই পিচ্চি গুলোর ভেতরে বাসা বেধেছে কি ভয়ানক সব অসুখ । 🙁 যে মুখে অনাবিল হাসি থাকার কথা সেখানে তাদের কি বিষন্ন চাহনি। ;-(
ঠিক এইজন্যই এই পেডি ওয়ার্ডে যাইতে মন চায় না । মন চায় অনেক বেলা পর্যন্ত ঘুমিয়ে থাকি ।যাতে ওয়ার্ডে এসে এসব না দেখতে হয় ! 😛 😛 😀
তো কিছুক্ষন ভিডিও দেখার পরে বোরিং লাগা শুরু করলো । নাহ ! এসব দেখার কিছু হলো !
পাশ থেকে কেউ বলার আগেই অপারেটর বন্ধু অন্য ফাইল খুঁজে টেন ইয়ার্স অফ টেস্ট ক্রিকেট বের করে প্লে করলো । আমরা বড় পর্দায় চার ছয় হাকানো দেখছি ।আর অন্যপাশে ছোট পর্দায় শিশুর শ্বাসকষ্টের ভিডিও চলছে ।সবার চোখ কোনদিকে সেটা বলাই বাহুল্য । একজন তো বলেই ফেললো আরে বন্ধ করে দে ওইটা ।এখন খেলা দেখি । 😀
খানিকক্ষন খেলা দেখার পরে পেপসির এডে সাকিবের কুতকুত খেলা দেখলাম ।এইটা দেখে ছেলেরা সমস্বরে ছি ছি রব তুললেও মেয়েরা খুশি হল । হাজারহোক শৈশবের স্মৃতি বলে কথা ! 😛
এভাবে কিছুক্ষন চলার পরে হঠাৎ মনে হল গান শোনা উচিত । রিফ্রেশমেন্টের জন্য গান ভালোই হবে । B-) মনিটরে চালু করা হলো কলকাতা মুভির গান । সোহম-কোয়েলদের নাচগানে কিছুক্ষন মাতোয়ারা থেকে হঠাৎ সবার খেয়াল হলো , ম্যাম যেকোন সময় চলে আসতে পারে ।
ওরে পাগলা ! বন্ধ কর ! বন্ধ কর ! ম্যাম এক্ষুনি চলে আসবে !
ঠিকই কিছুক্ষন পরেই ম্যাম চলে আসলেন ।এসেই জিজ্ঞাসা করলেন ভিডিও এতো ছোট স্ক্রিনে চলছে কেন ? :-O
জানি না ম্যাম। 😛
শুকপাখি সম্পর্কে
নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করার অভিপ্রায় বুকে লালন করি সবসময়ই।তাই হয়ত নিরানন্দ মেডিকেল লাইফের বাইরের জগত সম্পর্কে আমার জানার আগ্রহে কমতি নেই,বরং বোধহয় একটু বেশিই।জানতে, জানাতেই লেখার চেষ্টা করি।লেখা সুখপাঠ্য হয় কিনা জানি না,না হলে না হোক;নিজের আনন্দ লাভের এ উপলক্ষ ছাড়তে চাই না কখনই।
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে
বিবিধ-এ।
স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।
বাহ বেশ মজার এক্সপিরিয়েন্স ! স্টুডেন্ট লাইফটাই এমন… 🙂
একদম ঠিক বলেছেন আপু ।
মজা পেলুম 😀