মীরের জন্ম সাল ১৭২২ কিংবা ১৭২৩ এ আগ্রায়।
দরবেশ পিতা মৃত্যুর সময় বৈমাত্রেয় বড় ভাইকে তিনশ কিতাব দিয়ে গেলেও মীরকে বলে গেলেন তার তিনশত টাকা দেনা শোধ করার জন্য, দারিদ্রের সংসারে বহু কস্টে এই টাকা শোধ করে মীরকে আশ্রয় নিতে হল দিল্লীতে মোগল দরবারের আমীরের নিকট।নাদির শাহ দিল্লী আক্রমন করায় এই সুখ ও বেশীদিন কপালে জুটলনা। দিল্লী ত্যাগ করে পরে বাড়ি গিয়েও আবার তিনি ফিরেও আসেন, মন কস্ট নিয়ে লিখেন- ‘ এক সময় আমার পায়ের ধুলা যাদের চোখের সুর্মা ছিল এখন তারাই আমার জীবন এত অসহ্য করে তুলল যে আমি আবার দিল্লী চলে যেতে বাধ্য হলাম ‘ । তবে পেছনের কারন ভিন্ন- আঠারো বছর বয়সে মীর তার এক বিবাহিতা ঘনিষ্ঠা আত্মীয়ার প্রেমে পড়েন যা পরিবার পরিজনের জন্য অস্বস্তিকর ও অসন্মানজনক হয়ে দাঁড়ায় , ফলে সকলে তাকে উতপীড়ন করে আগ্রা ছাড়তে বাধ্য করে, উতপীড়নের মাত্রায় মীর একেবার উন্মাদ হয়ে যান !!!
৬১
হৃদয় এমন নগর নয় যাকে ভেঙে আবার গড়া যায় ।
শুনছ কি, এই নগর ধ্বংস করলে শেষে একদিন অনুতাপ করবে । ।
৬২
হৃদয় আমার এক আশ্চর্য নগরী ছিল, কিন্তু তার যাবার পরে
এমন উজাড় হল যে কিছুতেই আর বসত করা গেল না । ।
৬৩
এই মাটির পুতুলের রাজ্যে কার কাছে বিশ্বরহস্যের অর্থ শুধাব ?
এখানে মানুষ নেই, মনুষ্যাকৃতি অবশ্য অনেকেই আছে ।
৬৪
মীরজী দিনে দিনে ফ্যাকশে হয়ে যাচ্ছ,
তুমিও কি শেষে প্রেমে পড়লে নাকি ?
৬৫
দুনিয়ার এই বাজারে প্রতিটি বস্তুর গ্রাহক আছে,
কিন্তু আমার ভালোবাসা নেবার জন্য কাউকে পেলাম না । ।
৬৬
একাহনে আমি তো মৃত্যুর দ্বারে পৌছে গেছি
ওখানে আমারে হৃদয়হারী এখনও নিষ্ঠুরতায় স্হির প্রতিজ্ঞ । ।
৬৭
মৃত্যুর কারন তো সবই রয়েছে
হয়তো বেঁচে থাকার ও অন্য কিছু কারন আছে । ।
৬৮
মৃত্যুকালে মীর আমাকে সাবধান করে দিয়ে গেল
আর যা কিছু হতে চাও হয়ো, কিন্তু প্রেমিক কিছুতেই নয় । ।
৬৯
আকাশতলায় বসে তুমি নিজের দুঃখ নিয়েই কাঁদছ,
কত সমাজ সংসার এখানে পুড়ে ছাই হয়ে গেল । ।
৭০
হেলাফেলা করে তুমি জগত থেকে চলে গেলে
নইলে এখানে প্রত্যেক জায়গায় নতুন এক জগত ছিল । ।
৭১
খাঁচা থেকে উড়ে যাবার একটি অভিলাষ আছে
ডানায় উড়বার মতন পালক কোথায় । ।
৭২
এমন করে কাউকে যন্ত্রনা দেয়াটা কি খুব ভাল কাজ ?
মীর এমনিতেই সর্ভারা, তাকে আর কস্ট দিওনা । ।
৭৩
আজ মীরের জামায় মদের দাগ দেখা যাচ্ছে,
আমার বড় আশা ছিল যুবকটির কাছে । ।
৭৪
মীরকে বুঝতে পারা কি এতই সহজ
তার প্রতিটি কাব্যই যে বহুতল প্রাসাদ । ।
৭৫
বাতুলের মতন যখন প্রলাপ বকতাম সবাই আদর করত
বুদ্ধীমানের মতন কথা কইতে গেলাম, কী যে বোকামি হল । ।
৭৬
সৌজন্যের ঐতিহ্য চিরকালের মতন বিদায় নিয়েছে পৃথিবী থেকে
কেমন সব লোক দুনিয়ায় দেখি, কী একটা সময় এল । ।
৭৭
এ যুগে প্রেমের কী হল, হায় ঈশ্বর
বিশ্বস্ততাকে তো সে ত্যাগই করেছে, সৌজন্যরেই বা কী রাখল । ।
৭৮
হ্যাঁ মীর ও ভিখারী, কিন্তু একত্রে ইহলোক ও পরলোক
এই একটিমাত্র ভিক্ষা তার । ।
৭৯
মাটির পুতুলই তো মানুষ, কেউ যদি তাকে ভালো বলে
মাটির সংসারে সেই কথাটিই থেকে যায় বহুবতসর পর্যন্ত । ।
৮০
আমাদের আস্টেপৃষ্ঠে বেঁধে দুর্নাম রটাও আমরা নাকি স্বাধীন ।
যা খুশি তাই করাও আমাদের দিয়ে আর দোষ চাপাও আমাদেরই ঘাড়ে । ।
কথাগুলো ভালো লাগল… 🙂
🙂
আমাদের আস্টেপৃষ্ঠে বেঁধে দুর্নাম রটাও আমরা নাকি স্বাধীন ।
যা খুশি তাই করাও আমাদের দিয়ে আর দোষ চাপাও আমাদেরই ঘাড়ে ।
কথাগুলো সুন্দর 🙂
ভালো লেগেছে। 🙂
অনেক ধন্যবাদ।
“এ যুগে প্রেমের কী হল, হায় ঈশ্বর
বিশ্বস্ততাকে তো সে ত্যাগই করেছে, সৌজন্যরেই বা কী রাখল । ।”
আমিও তাই বলি!
ভালো লেগেছে ভাইয়া। কিছু টাইপো আছে জাস্ট। 🙂
এ যুগের প্রেম………..সে এক আশ্চর্য জিনিস
এই আছে এই নাই- হাওয়াই মিঠাই !!!