গতকাল সকালে ঘুম থেকে উঠেই অদ্ভুত একটা অনুভুতি তৈরি হল মনে। একই সাথে ঈদের ছুটিতে বাড়ি ফেরার আনন্দ আবার সেমিস্টারের সবচেয়ে কঠিন(আমার কাছে) সাবজেক্টের পরীক্ষার মুখোমুখি হবার উৎকন্ঠা ঘিরে ধরল। ফ্রেশ হবার পর সিদ্ধান্ত নিলাম, আজ একটু আগে আগেই বের হব। ভয় কমানোর জন্য নিজেকে সান্তনা দিলাম, ‘আরে আজকে তো আসলে ক্যাম্পাসে ঘুরতে যাচ্ছি, অনেকদিন আসা হবেনা তাই বেশি করে ঘুরব। মাঝখানে শুধু ৩ ঘন্টার হরর ফিল্ম(বলা বাহুল্য, হরর ফিল্ম আর এক্সাম দুটোই আমার কাছে খুব অশান্তিময়)’
ক্যাম্পাসে ঢোকার পর আপন মনে হাটছি আর ভাবছি। হায়রে ক্যাম্পাস, কত ঘুরলাম এই দেড় বছরে। কিন্তু, সকাল বেলা যে অপূর্ব রূপ ধারন করে। সেটা কখনোই অবলোকন করা হয়নাই। সকালে যে কোনদিন ক্যাম্পাসে আসিনি সেটা নয়। হয়তো এসেছি এরকম পরীক্ষা থাকলে, অথবা সারা বছর ক্লাসের সময় ঘুম থেকে উঠে ৫ মিনিটের নোটিশে, কিংবা সারা রাত ঘুম হয়নাই তাই ভোর বেলা হাটতে এসেছি।
শুধু প্রকৃতির কাছাকাছি থাকার উদ্দ্যেশে কখনোই সকাল দিকে ক্যাম্পাসে আসা হলোনা। এসব ভাবতে ভাবতেই, ক্যাম্পাসের প্রতি একটা অদ্ভুত ভালোবাসা অনুভব করলাম। ৫/৬ বছর পর আর ক্যাম্পাসে থাকতে পারবোনা। ভেবেই কেমন লাগছিল। এখানকার স্মৃতিগুলো যে জড়ো হচ্ছে দিনে দিনে। সেগুলো নিয়েই থাকতে হবে। হয়তো অনেকদিন পর পর আসা হবে। কিন্ত, তখন কি এখনকার মত যেমন ‘আরে আমার বাপের ক্যাম্পাস!’ টাইপের দাবীটা আর থাকবেনা। ক্যাম্পাসের বন্ধুত্ব, পরিচিতি এগুলোও হয়তো তখন এতটা ঝলমলে থাকবেনা। তবে, আমি শুধু এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কথা বলছি। কারন আমি দেখেছি, যখন বন্ধুদের সাথে থাকি। বা, আড্ডা দেই। তখন আসলে আসেপাশের প্রকৃতির সৌন্দর্য খুব একটা নাড়া দেয়না আমাকে। কিন্তু যখন একা থাকি, যেন এর রহস্যময়তা আমাকে খুব বেশি আচ্ছন্ন করে ফেলে।
এখানকার প্রকৃতি যতটা না সুন্দর, এতদিনের মায়া পড়ে যাবার কারনে মনে হচ্ছিল আরো বেশি সুন্দর। ভোরবেলা বৃষ্টির পরপরই চমৎকার রোদ ওঠার কারনে যেদিকেই তাকাই চোখ জুড়িয়ে যাচ্ছিল। এমন একটা ক্যাম্পাস! কে না ভালোবাসে? কিন্তু বাস্তবতা বলে, ক্যাম্পাস সবাইকে সমান ভালোবাসেনা। যাদের সবচেয়ে বেশী ভালোবাসে তাদেরই হয়তো নিজের কাছে রেখে দেয়, সেই সৌভাগ্য সবার হয়না। ইস, যদি আমি এমন কেউ হতে পারতাম!
ভালো ভাবনা! আরো ভালো ভালো লেখা আশা করছি। 🙂
ধন্যবাদ কমেন্টের জন্য। 🙂
‘আমি শুধু এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কথা বলছি। কারন আমি দেখেছি, যখন বন্ধুদের সাথে থাকি। বা, আড্ডা দেই। তখন আসলে আসেপাশের প্রকৃতির সৌন্দর্য খুব একটা নাড়া দেয়না আমাকে’…আমার ক্ষেত্রেও এমনটি হয়ে থাকে, একা একা হাঁটলে প্রকৃতির নির্জনতা-সৌন্দর্য ভালভাবে অবলোকন করা যায় 🙂
আমার একা-একা হাঁটতে মন্দ লাগে না, ক্লাস শেষে সুযোগ পেলেই হাঁটতে হাঁটতে পুরো ক্যাম্পাস চক্কর দেই: প্রতিবারই নতুন মনে হয় কলাভবন, চারুকলা কিংবা মোকাররম ভবনের দালানগুলোকে…
লেখা ভালো লেগেছে, চালিয়ে যান 🙂
একজন ভাবনাসঙ্গী পেয়ে ভালো লাগলো,
শুভেচ্ছা রইল।
ভালো লেগেছে
সামনে আরও ভালো লিখবেন আশা করছি 🙂
আশাব্যাঞ্জক কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ।