স্বপ্নভঙ্গ হওয়ার আগে জেনে বুঝে আসো

হে মানবতার ভবিষ্যতের সেবা সৈনিক– স্বপ্নভঙ্গ হওয়ার আগে জেনে বুঝে আসো

স্বপ্ন যাদের ডাক্তার হওয়ার বলছি তাদের…মেডিকেলের লাইফটা আর অন্য দশটা ইউনিভারসিটির লাইফের মত না, একদমই আলাদা। তুমি হয় তো আজকে ভাবছ এই সুন্দর জীবন তোমাকে দিচ্ছে হাতছানি, তবে জেনে রাখো এ এক কষ্টকর সুন্দর জীবন। তাই আসার আগে জেনে বুঝে আসো
তুমি হয় তো আজকে মেডিকেলে আসতে চাচ্ছ Social status আর ইগোর জন্য কিন্তু জেনে রাখো যে জিনিসটিকে তোমার মেডিকেলে আসার পর প্রথমেই বিসর্জন দিতে হবে তা হলো তোমার এই Society । মেডিকেলে ঢুকার পরই তোমার বাবা-মা-ভাই-বোন-চাচা- মামা-খালা বাদ দিয়ে তোমার সমাজ হয়ে পরবে তোমার হোস্টেল মেট- কলেজের বন্ধু- মেডিকেলের বই- স্যার মেডাম আর হাসপাতালের রুগী। আছ কি রাজি, তবে আসতে পারো আজই…
যখন তোমার অন্য বন্ধুরা পাবে সামার ভেকেশন, উইন্টার ভেকেশনসহ বিভিন্ন ছুটি তখন তুমি দিতে থাকবে বিভিন্ন পরীক্ষা- পরীক্ষার পর পরীক্ষা এর পর আরো পরীক্ষা, ছুটির আগে পরীক্ষা আবার পরেও পরীক্ষা, যদি থাকো প্রস্তুত- তবে হও আগোয়ান, হে জোয়ান…
থাকবে না তোমার কোন স্ট্যাটাস, ডাক্তার বলে তোমাকে সম্বোধন করা শুরু করবে অনেকেই মেডিকেলে চান্স পাওয়ার পর দিন থেকেই কিন্তু তোমার সামনেই তোমার আত্মীয়- আর সাংঘাতিক অর্ধ শিক্ষিত হলুদিয় সাংবাদিকরা বলে উঠবে কসাই, চামার সহ আরো কিছু প্রচলিত কথা। মেডিকেলে আসার আরেক নাম মানব সেবা, নিজেকে বিলিয়ে দিতে না পারলে এখানে সেবা দেয়া অসম্ভব। কারণ তুমি যে সেবা দিবে প্রথম প্রথম অনেক প্রশংসা শুনলেও তোমার অক্লান্ত পরিশ্রম আর ঘাম ঝরানো সাধারন মানুষ বুঝবে না। তাই তাদের কাছে পাবে না ক্রেডিট বরং উল্টো পাবে এমন কিছু রুঢ় আচরণ। যদি শুনতে রাজি থাক, হজম করতে রাজি থাকো আর অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে চাও তবে আসো, স্বাগতম তোমায়…
এখানে তোমাকে সাহায্য করবে না কেউ, তোমার পড়াশুনার ব্যাপারে। বিশেষ করে পোস্ট গ্রাজুয়েশনে, বরং পথে পথে আছে হাজারো বাধা। সুযোগ দিবে না সরকার, সুযোগ দিবে না এমনকি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানো। নিজেকে যোগ্য ডাক্তার হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করতে হবে চোখ কান খোলা রেখে নিজেকেই। নিজেকেই নিজের সুযোগ করে নিতে হবে- তবে বৈধভাবে। যদি নিতে পারো এই চ্যালেঞ্জ তবে লুফে নাও তা আজই…
কোন একসময় রাজনীতি ছিল সেবার অপর নাম, আর মেডিকেলেও ছিল এর সুব্যবহার কিন্তু, দিন বদলেছে। এখন আর তা নেই, মেডিকেলে আসলেই তোমাকে গ্রাস করতে চাইবে অপরাজনীতির থাবা। আর তোমার ১৮ বছরের গরম রক্তও তোমাকে দেখাবে নানান রঙ। কিন্তু জেনে রাখো রুগীর সেবা রাজনৈতিক বিষয় নয়, তোমার ক্যারিয়ার কোন রাজনৈতিক কিছু না। আর তোমার বাবা মাও তোমাকে মেডিকেলে পাঠাবে না এই লেজুরবৃত্তিক অকাজ করতে। তাই আসো বুঝে শুনে
আসো সেবার মত সেবা দেয়ার মন নিয়ে, আসো ডাক্তারের মত ডাক্তার হতে…

এখানে কিছুর বিনিময় যদি নিতে চাও তবে কষ্ট পাবে, চাও সেই প্রতিদান সৃষ্টিকর্তার কাছে, তিনিই পারবেন তা যোগ্যভাবে দিতে, অন্যকেউ নয়। কারণ জেনে রাখবে- “সৃষ্টিকর্তার পরই চিকিৎসকের অবস্থান”
শত কষ্ট জ্বালা যন্ত্রনা সহ্য করেও কি তুমি চাইবে না এমন মহিমান্বিত অবস্থানের অধিকারী হতে। এসো আছি আমরা তোমাদের পথ চেয়ে, নতুন সুন্দর স্বপ্নের করবে যারা শুরু তাদের স্বাগত জানাতে

সবার শুভ কামনায়

www.facebook.com/odvut.dr

এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে চিন্তাভাবনা-এ। স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

2 Responses to স্বপ্নভঙ্গ হওয়ার আগে জেনে বুঝে আসো

  1. বোহেমিয়ান বলেছেনঃ

    “সৃষ্টিকর্তার পরই চিকিৎসকের অবস্থান”

    খেলুমনা! 😯 :dhisya:

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।