অণুগল্প

ফেসবুকে বা অন্য কোথাও একটা পোস্ট প্রায়ই চোখে পড়ে, ক্ষুদ্রমত হরর বা সায়েন্স ফিকশনঃ

পৃথিবীর সর্বশেষ মানুষটি একা একটি ঘরে বসে আছে, এমন সময় দরজায় কেউ নক করল…”

নেট ঘেটে জানতে পারলাম, গল্পটির নাম নক”, লিখেছেন ফ্রেডরিক ব্রাউন যা ১৯৪৮ সালে প্রকাশিত হয়। এই গল্পটিই এ ধরনের গল্পের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয়। তবে ফরেস্ট জে একারম্যান নামক এক আমেরিকান সায়েন্স ফিকশন ভক্ত ও সংগ্রাহক দাবী করেন ক্ষুদ্রতম সায়েন্স ফিকশনটি তারই লেখা, যা মাত্র একটা অক্ষর ইংরেজী অক্ষর এফ‘, এবং গল্পের শিরোনামঃ মহাজাগতিক রিপোর্ট কার্ডঃ পৃথিবী

আরো ঘাটাঘাটি করে পেলাম আর্নেস্টহেমিং ওয়ের লেখা মাত্র ৬ শব্দের একটি গল্পঃ

বিক্রয় হইবেঃ বাচ্চাদের জুতাঃ কেউ পড়েনি”

বিখ্যাত লেখকদের মধ্যে আর্থার সি. ক্লার্কের একটি অণুগল্প পাওয়া যায়ঃ

স্রষ্টা বললেন, ‘প্রোগ্রাম জেনেসিস বাতিল করএই বিশ্বের অস্তিত্ব রইলোনা”

আরো কিছু অণুগল্প এবং লেখকের নামঃ

তার অপেক্ষায় রইলাম, তাকে পেয়ে গেলাম। ধ্যাত! মার্গারেট এটউড

বিরক্তির সাথে গাউন খুলে রাখল, তাচ্ছিল্যের সাথে মাথা জস হোয়েডন

রক্তাক্ত হাতে, আমি বললাম শুভ বিদায় ফ্র্যাংক মিলার

মানুষ হয়ে বাঁচা, যথেষ্ট ব্যায়বহুল ব্রুস স্টারলিং

ওটা তোমার পেছনে! জলদি কর রকনে এস. ব্যানন

হে শিশু আমি তোমার ভবিষ্যৎ, কেঁদোনা স্টিফেন ব্যাক্সটার

মিথ্যা শনাক্তকারী চশমা তৈরি হল, সভ্যতা ভেঙ্গে পড়ল রিচার্ড পাওয়ার্স

শিশুটির রক্তের ধরন? প্রায় মানুষের মত অরসন স্কট কার্ড

মানবজাতিকে বাঁচাতে সে আবার মৃত্যুবরন করল বেন বোভা

আমরা সৌরশক্তি ব্যাবহার শুরু করলাম, সূর্যের উজ্জলতা কমে গেল কেন ম্যাকলেওড

টাইম মেশিন ভবিষ্যতে পৌছল!!! ….সেখানে কেউ নেই হ্যারি হ্যারিসন

নতুন জিনের অভিব্যাক্তি প্রয়োজন তৃতীয় চক্ষু গ্রেগ বেয়ার

বুশ সত্য কথা বলল, নরক শীতল হয়ে গেল উইলিয়াম গিবসন

বাঁচাও! আমি সময়ের মধ্যে আটকে গেছি ড্যারেন আরোনফস্কি

সেখানে মাত্র ছয়টি শব্দ বাকী থাকল গ্রেগরী ম্যাগুইর

 আমার কাছে এগুলো বেশ মজার মনে হয়েছে।  এরকম আরো অসংখ্য অণুগল্প পাওয়া যাবে খুজলে। চাইলে নিজেও কিছু লেখার চেষ্টা করে দেখতে পারেন।

রুহশান আহমেদ সম্পর্কে

ছোটবেলা থেকেই টুকটাক লিখতাম, পত্রিকায় পাঠাতাম। ছাপা হতোনা, ভাবতাম দেশে এত লেখক কেন! তারা না থাকলে হয়তো আমার লেখা ছাপাত। যেদিন ব্লগের সাথে প্রথম পরিচয় হয়, আমি যেন আকাশের চাঁদ না, আস্ত একটা গ্যালাক্সী পেয়ে গেলাম। সেই গ্যালাক্সীতেই অবিরত বিচরন, বিট বাইটের প্রহেলিকায় একটু একটু অস্তিত্ব রেখে যাওয়া... পাথর কুঁচি, পাতা বাহার, রঙ্গনে- ভীড় জমালো শৈশবেরা-  রৌদ্রহীন এই বিষন্নতার প্রাঙ্গনে।
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে গল্প, সাহিত্য-এ। স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

15 Responses to অণুগল্প

  1. বোহেমিয়ান বলেছেনঃ

    আমারও এই রকম একটা ইচ্ছে ছিলো অণুগল্পগুলো এক করব।
    কঠিন কাজ। গ্রেইট জব

  2. একুয়া রেজিয়া বলেছেনঃ

    খুবই মজা পেলাম অনুগল্প বিষয়ক লেখা পড়ে।

  3. শারমিন বলেছেনঃ

    দারুণ 😀

  4. সামিরা বলেছেনঃ

    একবার এরকম অণুগল্প/ ফ্ল্যাশ ফিকশন পড়ার (অনুবাদের স্বার্থেই মূলত) বেশ বাতিক উঠেছিল। শেষে করি নি আর, বেশ কঠিন কাজ মনে হয়েছে মূল গল্পের ভাবটা ধরে রাখা। আপনার চেষ্টা ভালো লেগেছে। 🙂

    • রুহশান আহমেদ বলেছেনঃ

      যেকোন ভালো লেখারই মূলভাব ধরে রেখে অনুবাদ করাটা বেশ কঠিন। আর এই ক্ষেত্রে তো আরো বেশি যেখানে একটা লাইনেই অনেক কিছু নিহিত।

      ধন্যবাদ কমেন্টের জন্য।

  5. হৃদয় বলেছেনঃ

    ”বিরক্তির সাথে গাউন খুলে রাখল, তাচ্ছিল্যের সাথে মাথা” – জস হোয়েডন … :thinking: 😛
    ভলো লেগেছে 🙂

  6. তুসিন বলেছেনঃ

    বেশ ভাল লাগল 🙂

  7. অসাধারণ লাগলো। অণু গল্প হওয়া সত্ত্বেও বড়ো আলোড়ন তোলে মস্তিষ্কে। 🙂

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।