স্মৃতির দৃশ্যপট

কেটে গেল জীবনের আর একটি ঈদ।অনেকটা অলস ভাবের কারনে আর আগের মত নিয়মিত ব্লগে লিখা হয় না।সময়টা যেন অন্য রকম।মূহুর্তগুলো যেন অতি দ্রুত শেষ হয়ে যাচ্ছে।আস্তে আস্তে মনে হচ্ছে বড় হয়ে যাচ্ছি।সেই ছোট ছেলেটি আর আমি নেই।বড় হচ্ছি এটা বুঝার জন্য তেমন কোন গবেষনা করতে হয় না।যখন ঈদের আনন্দকে পানেস মনে হয় হবে তখন বুঝতে হবে বড় হয়ে যাচ্ছি।ছোটবেলা ঈদের আনন্দগুলোকে সেই অনুভূতিগুলো খুব বেশি মিস করেছি এবার ঈদে।সময়গুলো কেন এত দ্রুত ফুরিয়ে যায়?:(
চারপাশের সময়টা যেন দ্রুত থেকে আরও দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে।সাথে সাথে আমিও।কিন্তু সময়ের সাথে যেন থমকে যাই।হিসাব যেন সহজে মিলতে চায় না।এটা সেটা করে কত কিছু করার বাকি আছে।হিসেবের খাতাটা আজ বড়ই বেমানান মনে হয়।অংকগুলো আজ কিছুতেই মিলছে  না। যে দিন অনেকদিন পর ছাদে উঠলাম।সারা বিকালটা ছাদে কাটালাম।মুগ্ধ হয়ে আকাশটাকে দেখলাম।কতদিন এমন করে আকাশ দেখা হয় না।মেঘগুলো কত সুন্দর করে ভেসে যাচ্ছে।নানা আকার আকৃতি ধারন করছে মেঘগুলো।কিছুক্ষন এক মনে আকাশের মেঘগুলোর দিকে তাকিয়ে ছিলাম।মেঘগুলোর আকৃতি ধরতে চেষ্টা করলাম।কখন হাতি,কখনো বাঘ,কখনবিমান,কখনো পাখি মত আকৃতি ধারন করে মেঘগুলো ভেসে যাচ্ছে।সাদা মেঘের রং ও কেমন অদ্ভূত তাই না !!মাঝে মাঝে মনে হয় মেঘগুলোকে কাশফুলের মত লাগছে।ছাদের এক প্রান্ত  থেকে অন্য প্রান্ত হেঁটে বেড়ালাম।কিছুক্ষন হাটাহাটির পর এক কিনারায় বসলাম।স্মৃতির দৃশ্যপট যেন শুরু হয়ে গেল।চোখের সামনে ভেসে বেড়াতে লাগল ছোটবেলার কয়েকটি স্মৃতি।এই ছাদে ক্রিকেট খেলতাম।আমি,ভাইয়া,রুমন ।

(ছবি:সংগ্রহ এক)

বেশির ভাগ সময় আমি আর ভাইয়াই খেলাতাম।বল নিচে পরে গেলে কষ্ট করে আনতে হত 🙁 আজ সবাই যার যার মত ব্যাস্ত।ভাইয়া ও আগের মত নেই।আমিও নেই।রুমন নামে সেই বন্ধুটি কই আছে কি জানি? শুনেছিলাম ঢাবি পড়ে।খোঁজ খবর হয় না অনেকদিন।আমি খুব বেশি খেলা পাগল ছিলাম।বিশেষ করে ক্রিকেট খেলা।বিকালে যখন আছর নামাযের আযান দিত সাথে সাথে ব্যাট বল নিয়ে খেলা শুরু করতাম।ছাদে কতগুলো খেলা দৃশ্য যেন চোখের সামনে ভেসে বেড়াচ্ছে।এই যে আমি বল করছি….ভাইয়া ব্যাট করছে ……বল নিচে পরে গেল…..আমি দৌড়ে যাচ্ছে বল আনতে ……..:)

আজকে আকাশটা মেঘলা হয়ে আছে।মনে হচ্ছে কিছুক্ষন পর বৃষ্টি নামবে।নামুক !!আজ বৃষ্টিতে ভিজব।অনেকদিন ভিজি না।

বৃষ্টিতে ভিজা আমার সহ্য হয় না।জ্বর চলে আসে।আজ ভিজব আসুন না জ্বর।এই বৃষ্টিতে ভিজে ছাদে কত ফুটবল খেলতাম।বৃষ্টির সাথে যেন মিশে একাকার হয়ে যেতাম।সেই সব দিনগুলো আর আসবে না 🙁 হারিয়ে যাবে স্মৃতির অতলে।এক সময় এই সব স্মৃতিগুলো ভুলে যাব।ভুলে যাওয়া অভ্যাসটা আমার অসুখে পরিনত হচ্ছে।সব কিছু ভুলে যাই।:( শত মনে রাখার চেষ্টা করেও পারি না।বিশেষ করে মানুষজনের নাম আমি দ্রুত ভুলি।আজ একজনের সাথে পরিচয় হলে কালই ভুলে যাই কি নাম ছিল লোকটির:(

 

আস্তে আস্তে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে।চারপাশে অন্ধকার নামছে।আকাশের পাখিগুলোকে দেখা যাচ্ছে ব্যাস্তভাবে নীড়ে ফিরে যাচ্ছে।এখন আমাকেও যেত হবে নীড়ে ফিরে।সন্ধ্যা হওয়ার দৃশ্য দেখতে আমার খুব বেশি ভাল লাগে।আস্তে আস্তে করে অন্ধকার যেন ঘিরে ফেলে ……… জীবনের ঠিক তেমনি ভাবে নেমে আসে কোন অন্ধকার।সেই অন্ধকার দূর করার জন্য অপেক্ষা করতে হয় কখন ভোর হবে।সেই অপেক্ষায়  থাকে সবাই……….আমিও তাদের ব্যাতিক্রম নয় 🙂

স্মৃতির দৃশ্যপট ছবি সহায়ক: সংগ্রহ এক

সংগ্রহ দুই

তুসিন সম্পর্কে

নিজের সম্পকে বলার মত কেমন কিছুই নেই।প্রিয় একটি গানের লাইন তুলে দিচ্ছি Say you, say me Say it for always That’s the way it should be Say you, say me Say it together Naturally I had a dream,I had an awesome dream ভালবাসি বই পড়তে।ভালবাসি প্রযুক্তিকে :) www.tusin.wordpress.com এখানে মাঝে অনুভূতিগুলো তুলে রাখি।ভাল লাগা , মন্দ ভালা........
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে ইতিবাচক, চিন্তাভাবনা, সাহিত্য, স্মৃতিচারণ-এ। স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

8 Responses to স্মৃতির দৃশ্যপট

  1. বোহেমিয়ান বলেছেনঃ

    যখন ঈদের আনন্দকে পানেস মনে হয় হবে তখন বুঝতে হবে বড় হয়ে যাচ্ছি।
    বয়স চেক করার সহজ উপায়! ঈদে কী করেন? উত্তর শুনে বুঝে নেয়া যাবে বয়স!

    তোমার স্মৃতির সাথে আমার অনেক মিল পেলাম।

    জাহিদ এর একটা পোস্ট আছে। লিঙ্ক

    • তুসিন বলেছেনঃ

      বয়স চেক করার সহজ উপায়! ঈদে কী করেন? উত্তর শুনে বুঝে নেয়া যাবে বয়স!
      ভাল বুদ্ধিটা পছন্দ হয়েছে 🙂

      মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ 🙂
      কেন যে বড় হলাম?? 🙁

  2. রুহশান আহমেদ বলেছেনঃ

    কিচ্ছু করার নাই, সুখের অনুভূতি গুলোই একসময় হাহাকার হয়ে যায়।

  3. প্রতি শুক্রবার বাবা আর আমার ছোট ভাই- আমরা তিনজন রমনা পার্কে গিয়ে ক্রিকেট খেলতাম। এখনো মনে পড়ছে ওই যে- আমি ছুট্টে গেলাম! সবুজ সবুজ ঘাসের মাঝে সবুজ টেনিস-বল আমি খুঁজে পাচ্ছি না। খুঁজেই যাই… খুঁজেই যাই…

    বৃষ্টি নিয়ে লিখতে গেলে হাত কাঁপে- কম্পিউটারে টাইপ করলে তো বোঝা যায় না- কেউ আমার লেখার খাতায় বৃষ্টিকথা পড়লে হাসতো- ভাবতো মেয়েটার হাতের লেখা কী বাজে!

    আপনার স্মৃতিকথা আমার খুব ভালো লেগেছে। নিজেকেও খুঁজে পেলাম আপনার লেখায়।

    • তুসিন বলেছেনঃ

      ভাল লাগল আপনার মন্তব্যটি পড়ে।
      আহ কত সুন্দর দিনগুলোই না ছিল।
      রবীঠাকুরের গানের লাইনটি মনে পড়ে গেল
      “দিনগুলো মোর সোনার খাঁচায় রইল না……রইল না…..সেই যে আমার নানা রং এর দিনগুলি…..”

  4. শারমিন বলেছেনঃ

    ঈদের আনন্দকে পানেস মনে হয় হবে তখন বুঝতে হবে বড় হয়ে যাচ্ছি 🙁
    সত্যি ছেলেবেলার মত ঈদে এখন আর সেই রকম মজা হয় না 🙁 আর ছেলেবেলার ঈদের সাথে আর কোন কিছুর তুলনা হয় না। :crying:
    তোর স্মৃতিকথা অনেক অনেক ভালো লেগেছে 🙂 আমি আমার স্মৃতিকথায় হারিয়ে যাচ্ছিলাম 🙂 অনেক বেশি দুষ্ট ছিলাম যদিও এখনো দুষ্টই আছি 😛 😛

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।