রাজধানী শহর কোহকাফের দক্ষিণে মনোরম লালগিরি আগ্নেয়গিরির কোল ঘেঁষে ছোট্ট একটা গ্রাম। এই আগ্নেয়গিরি টা খুবই বিখ্যাত। প্রতি বছর হাজার হাজার জ্বিন আসে এটা দেখতে। কি মনোরম দৃশ্য! লাভার লাল আলোয় মনটা এমনিতেই ভরে ওঠে। আর এখানকার উত্তাপে যে কারো মন নেচে উঠতে বাধ্য। যাই হোক , এত পর্যটকের ভিড় এখানে থাকলেও পাশের গ্রামটা এখনও অনেক নিরিবিলি। শিক্ষার আলো খুব একটা পৌঁছায় নি এখনও । গ্রামের নাম লেলিহান।
লেলিহান গ্রামের কিশোরী পরী বহ্নিতা। কৈশোরের লাজুক আভা তার চোখে মুখে। সারা দিন তার চঞ্চলতায় গ্রাম মুখরিত হয়। এই মুহূর্তে সে এই গাছে, পর মুহুর্তেই সে দুই মাইল দূরের গাছে। অল্প বয়সেই তার উড়ার দক্ষতা দারুণ। মোটামুটি বিস্ময়কর পর্যায়ের! গ্রামের লোকেরা বলে তাকে অলিম্পিকে পাঠাবে!
কিন্তু গত এক সপ্তাহ জুড়ে তার কি যেন হয়েছে। চুপচাপ, বিষণ্ণ হয়ে পড়েছে। তার নিজের ডাল থেকে সে ছোট বোনের ডালেও নামতে চায় না। হিজল গাছটার ওই একটা ডালে মেয়েটা যে কিভাবে সপ্তাহজুড়ে আটকে আছে- ভাবতেই মায়ের চোখটা ঝাপসা হয়ে আসে। আহারে, কত হাসিখুশিই না ছিল মেয়েটা। এই এলাকা তো গাছপালায় ভরা। শহরের ছোঁয়া তো এখনও লাগে নি। তাহলে তিনি যা আশঙ্কা করছেন, তা তো হওয়ার কথা না। আচ্ছা, এই ৮-১০ দিন আগে তিনি কিন্তু একবার নিজেই দেখেছেন মেয়েটা ভোরে চুল বেঁধে নিচে নেমেছিল। তবে কি তখনই… !! অজানা আশঙ্কায় মনটা কেঁপে উঠে তার। কতবার বলেছেন মেয়েটাকে সকালে চুল বেঁধে নিচে নামতে না! মেয়ে তার সবই হেসে উড়ায়ে দেয়। বলে এগুলাও কেউ বিশ্বাস করে! বিজ্ঞানের যুগ এখন। এই যুগে এসব কুসংস্কার বলেই মনে হয় এখনকার বাচ্চাদের!
মায়ের মন তো! যুক্তি মানতে চায় না। আজকেই তিনি জোর করে মেয়েকে ওঝার কাছে নিয়ে যাবেন । কোন দুষ্ট মানুষের আসর হয়েছে হয়ত মেয়েটার উপর। বিজ্ঞান চুলোয় যাক; মানুষ তো আছেই। মানুষ থাকলে তার আসর হওয়াও তো অস্বাভাবিক কিছু না। আজকেই একটা তাবিজ আনতে হবে মেয়েটার জন্য!
– অপ্সরী
জ্বিন পরীদের জগতে উকিঝুকি দেয়া ঠিক না, শেষে আপনাকেই ধরে তাবিজ করে ফেলবে। :nono:
ভালো লেগেছে লেখাটি।
ধন্যবাদ ভাইয়া:) ।
আমি এমনিতেই জ্বিন পরী অনেক ভয় পাই। আর তাবিজ করে ফেললে তো আর কথাই নাই:P 🙂
ছোটবেলায় আমি গলায় বড় সাইজের একটা তারিজ ছিল…. 😀 ক্লাস সেভেনে উঠার পর আমি ফেলে দেই 🙂
ভাল লাগল লিখছি।:) লেখেটি আর একটু বড় হলে বেশি ভাল লাগল।
ধন্যবাদ, ভাইয়া 😀
আমাকেও থ্রি-ফোর পর্যন্ত নানু জোর করে গলায় তাবিজ পরায়ে রাখত। 🙂 একটু বড় হওয়ার পর আমি আর পরতে রাজি হতাম না ।
হাহা। ছোট্ট গল্প কিন্তু দারুণ লিখেছেন তো! খুব ভালো লাগলো শেষটা। 🙂
অনেক অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু 😀
লাইফে কোনদিনও তাবিজ পরেছি বলে মনে পরে না 😀 8)
শেষটা বেশি ভালো লেগেছে 😀
লিখাটা একটু অন্য রকম। তবে, ভালো লেগেছে.. 🙂