আমার ছেলে একদিন হঠাৎ আমাকে প্রশ্ন করল বাবা প্রতি বছর ঘুরতে যাই নানা জায়গায় কিন্তু কখনো সুন্দরবন যাই না। বইয়ে পড়েছি সুন্দরবন কত সুন্দর।কত নামি গাছ,কত পশু পাখি আছে,হরিন এবং রয়েল বেঙ্গল টাইগারও আছে।চলো না এবার ছুটি হলে যাই।
আমি কিছু না বলে চুপচাপ ওর কথা শুনছিলাম।প্রতিবছর ওদের দেশের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমনে নিয়ে যাই।মনে মনে ঠিক করলাম এবার ওকে সুন্দরবন নিয়ে যাব।
দেখতে দেখতে ছুটির চলে আসলো।ছেলেকে নিয়ে চললাম সুন্দরবন দেখতে।
গাড়ি থেকে নামলাম সুন্দরবনের উদ্দেশ্য হাটা শুরু হল।আমি হাটছি তো হাটছি।
আশফিন বলল, “বাবা আর কতদূর সুন্দরবনে যেতে আর কতক্ষন লাগবে।অনেক টায়ার্ড হয়ে গেছি”
আমি আমার ছেলের দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে একটি দীর্ঘনিশ্বাস ফেললাম।ছেলের মাথায় হাত রেখে বললাম, “আশফিন বাবা এটাই সুন্দরবন”
আমার ছেলে আমার কথা বুঝে উঠতে পারল না।কিছুটা কৌতহল নিয়ে আশে পাশে তাকালো।এরপর আমাকে প্রশ্ন করল,”বাবা একটা দুইটা গাছ ছাড়া তো কোন গাছ নেই।“
আমি বললাম ,”হুম”
আশফিন, “ কোন পাখি ও দেখছি না,হরিন কই বাবা??আমার না খুব সু্ন্দর বনে হরিন দেখার ইচ্ছা।ইস যদি সাথে বাঘ দেখতে পারতাম।এতধুম জীবন্ত।চিড়িয়াখানার মত খাঁচার বাঘ না। ”
আমার নিজের খুব অপরাধবোধ লাগতে লাগল।কি জবাব দিব ছেলেকে।সুন্দরবন….কই??
আশফিন আমার হাত ধরে টানে বলল বলল, “ বাবা বল না সুন্দর বন কই??”
আমি আবারও বললাম , “এটাই সুন্দরবন”
আশফিন, “তাহলে বাবা বইয়ে যে কত সুন্দর সুন্দর কথা ছিল।কত গাছ পশু পাখি, ইত্যাদি আছে,টিভিতেও দেখছি”
আমি ওর দিকে তাকিয়ে রইল।নিজের মধ্যে তীব্র একটা দু:খ ভর করল।কই সেই গাছ,কই সেই পাখি কই…………বাঘ , কই হরিন।
আর ২০১৩ সালের কথা মনে পড়ে গেল।যখন পরিকল্পনা করে ধ্বংস করে দেয়া শুরু হল এই বনকে।
আমি যে সময়ের কথা বলছি সেই সময়টা হল ২০২৭ সাল তারিখে ডিসেম্বরের ২৬ তারিখ।
একটা গাছের গুড়ির উপর ছেলেকে নিয়ে বসলাম।আশফিন পুরাই অবাক।বাবা ওকে বলেছে এই ধূ ধূ মাঠ নাকি সুন্দর বন।এটা কেমন করে সম্ভব।হিসাব মিলাতে পারছে না।বইয়ে সুন্দর বন নিয়ে কত সুন্দর সুন্দর কথা লেখা।তাহলে কি বইয়ের সব লিখা ভুল??
আমার ছেলেকে বুঝিয়ে বললাম বিশেষ তথ্য আইনের মাধ্যমে বলা আছে এই খরব যেন টিভিতে না দেখায় কেউ দেখাইলেই মামলা।এছাড়া খারাপ এবং সরকারের কোন খারাপ দিক খবরে দেখানো আইনের দৃষ্টি অপরাধ।এর জন্য আমার কেউ সরকারের বিপক্ষে কথা বলে না।তাই আমার কেউ জানি না আসলে সুন্দরবনের কি অবস্থা।নিজ চোখে না দেখলে দেখার উপায় নাই।
আমার ছেলে মনে হয় কিছুই বুঝতে পারল না।যে চুপকরে বসে রইল।হরিন এবং বাঘ দেখতে না পারায় মন খারাপ।|
ঠিক এরকম একটা পরিবেশ হয়ত আমাদের দেখতে হবে একদিন।সেই দিন খুব বেশি দূরে নয়|
আজ একটা নিউজ দেখে বুকটা কেপে উঠল।কেমন করে আমরা পারি? নিজ হাতে এই সুন্দরবনকে হত্যা করার পরিকল্পনা করতে।নিচের ছবিটি দেখুন নিউজটা বুঝতে পারবেন
.
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় বহুল আলোচিত বাগেরহাটের রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তরের ফলক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
একজন ফেইসবুক সেলিব্রেটি স্ট্যাটাস দিল এরকম:
আচ্ছা এই যে সুন্দরবন বাঁচাব বলে চিকিৎকার করছি এই সুন্দরবন আমাদের কি দিয়েছে এবং কি দিচ্ছে একটু জেনে আসি।
সুন্দরবন সমুদ্র উপকূলবর্তী নোনা পরিবেশের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বনভূমি হিসেবে অখন্ড বন যা বিশ্বে সর্ববৃহৎ। অববাহিকার সমুদ্রমূখী সীমানা এই বনভূমি গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রের মোহনায় অবস্থিত এবং বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে বিস্তৃত । ১০,০০০ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে গড়ে ওঠা সুন্দরবনের ৬,০১৭ বর্গ কিলোমিটার রয়েছে বাংলাদেশে। সুন্দরবন ১৯৯৭ সালে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি পায়। এর বাংলাদেশ ও ভারতীয় অংশ একই নিরবচ্ছিন্ন ভূমিরূপের অংশ হলেও ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের সূচিতে ভিন্ন ভিন্ন নামে সূচিবদ্ধ হয়েছে যথাক্রমে সুন্দরবন ও সুন্দরবন জাতীয় পার্ক নামে। সুন্দরবনকে জালের মত জড়িয়ে রয়েছে সামুদ্রিক স্রোতধারা, কাদা চর এবং ম্যানগ্রোভ বনভূমির লবণাক্ততাসহ ছোট ছোট দ্বীপ। মোট বনভূমির ৩১.১ শতাংশ, অর্থাৎ ১,৮৭৪ বর্গকিলোমিটার জুড়ে রয়েছে নদীনালা, খাঁড়ি, বিল মিলিয়ে জলের এলাকা। বনভূমিটি, স্বনামে বিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার ছাড়াও নানান ধরণের পাখি, চিত্রা হরিণ, কুমির ও সাপসহ অসংখ্য প্রজাতির প্রাণীর আবাসস্থল হিসেবে পরিচিত। জরিপ মোতাবেক ৫০০ বাঘ ও ৩০,০০০ চিত্রা হরিণ রয়েছে এখন সুন্দরবন এলাকায়। ১৯৯২ সালের ২১শে মে সুন্দরবন রামসার স্থান হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
ভৌগোলিক গঠন
পুরো পৃথিবীর মধ্যে সর্ববৃহৎ তিনটি ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের একটি হিসেবে গঙ্গা অববাহিকায় অবস্থিত সুন্দরবনের বাস্তুসংস্থান যথেস্ট জটিল। দুই প্রতিবেশি দেশ বাংলাদেশ এবং ভারত জুড়ে বিস্তৃত সুন্দরবনের বৃহত্তর অংশটি ( ৬২% ) বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে অবস্থিত। দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর; পূর্বে বালেশ্বর নদী আর উত্তরে বেশি চাষ ঘনত্বের জমি বরাবর সীমানা। উঁচু এলাকায় নদীর প্রধান শাখাগুলো ছাড়া অন্যান্য জলধারাগুলো সর্বত্রই বেড়িবাঁধ ও নিচু জমি দ্বারা বহুলাংশে বাঁধাপ্রাপ্ত। প্রকৃতপক্ষে সুন্দরবনের আয়তন হওয়ার কথা ছিলো প্রায় ১৬,৭০০ বর্গ কি.মি. (২০০ বছর আগের হিসাবে)।
কমতে কমতে এর বর্তমান আয়তন হয়েছে পূর্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের সমান। বর্তমানে মোট ভূমির আয়তন ৪,১৪৩ বর্গ কি.মি. (বালুতট ৪২ বর্গ কি.মি. -এর আয়তনসহ) এবং নদী, খাঁড়ি ও খালসহ বাকি জলধারার আয়তন ১,৮৭৪ বর্গ কি.মি. ।
সুন্দরবনের নদীগুলো নোনা পানি ও মিঠা পানি মিলন স্থান। সুতরাং গঙ্গা থেকে আসা নদীর মিঠা পানির, বঙ্গপোসাগরের নোনা পানি হয়ে ওঠার মধ্যবর্তী স্থান হলো এ এলাকাটি। এটি সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পটুয়াখালী অঞ্চল জুড়ে রয়েছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলে সুন্দরবন অবস্থিত।
উদ্ভিদবৈচিত্র্য
সুন্দরবনের প্রধান বনজ বৈচিত্রের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে সুন্দরী (Heritiera fomes), গেওয়া (Excoecaria agallocha), গরান (Ceriops decandra) এবং কেওড়া (Sonneratia apetala) । ১৯০৩ সালে প্রকাশিত প্রেইন এর হিসেব মতে সর্বমোট ২৪৫টি শ্রেণী এবং ৩৩৪টি প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে সেখানে। প্রেইন এর প্রতিবেদনের পর সেখানে বিভিন্ন ম্যানগ্রোভ প্রজাতি ও তাদের শ্রেণীকরণের এর উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। বনজ প্রকৃতিতে খুব কমই আনুসন্ধান করা হয়েছে এসব পরিবর্তনের হিসেব রাখার জন্য । পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলের বেশির ভাগ ম্যানগ্রোভে Rhizophoraceae, Avicenneaceae বা Laganculariaceae শ্রেণীর গাছের প্রাধাণ্য থাকলেও বাংলাদেশের ম্যানগ্রোভে প্রাধাণ্য Sterculiaceae এবং Euphorbiaceae শ্রেণীর গাছের।
প্রাণীবৈচিত্র্য
সুন্দরবনের বাস্তুসংস্থান মৌলিক প্রকৃতির এবং যা বন্য প্রাণীর বিশাল আবসস্থল। বন্য প্রাণীর সংখ্যা এবং এর লালনক্ষেত্রের উপর মানুষের সম্পদ সংগ্রহ ও বন ব্যবস্থাপনার প্রভাব অনেক। কচ্ছপ (River terrapin – Betagur baska, Indian flap-shelled turtle –Lissemys punctata এবং Peacock soft-shelled turtle – Trionyx hurum), গিরগিটি Yellow monitor – Varanus flavescens ও Water monitor – Varanus salvator), অজগর (Python molurus) এবং রয়েল বেঙ্গল টাইগার (Panthera tigris tigris) সুন্দরবনের স্থানীয় প্রজাতিগুলোর মধ্যে অন্যতম।

সুন্দরবনের একটি কুমির।
এদের মধ্যে কিছু প্রজাতি সংরক্ষিত, বিশেষ করে বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন, ১৯৭৩ (P.O. 23 of 1973) দ্বারা। বিভিন্ন প্রজাতির হরিণ (Hog deer – Axis procinus ও Swamp deer – Cervus duvauceli), মহিষ (Bubalis bubalis), গন্ডার(Javan rhinoceros – Rhiniceros sondaicus ও Single horned rhinoceros – Rhinoceros unicornis) এবং কুমিরের (Mugger crocodile – Crocodylus palustris) এর মত কিছু কিছু প্রজাতি সুন্দরবনে বিরল হয়ে উঠেছে ২১ শতকের শুরু থেকে[১৪]।

সুন্দরবনের গাছে মৌচাক।
সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে বিচিত্র জীববৈচিত্র্যের আধার বাংলাদেশের সুন্দরবন বাণিজ্যিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ ১২০ প্রজাতির মাছ, ২৭০ প্রাজাতির পাখি, ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৩৫ সরীসৃপ এবং ৮ টি উভচর প্রাজাতির আবাসস্থল। এ থেকে বোঝা যায় যে বাংলাদেশের সুন্দরবনে বিভিন্ন প্রজাতির একটি বড় অংশ বিদ্যমান (যেমনঃ ৩০ শতাংশ সরীসৃপ, ৩৭ শতাংশ পাখি ও ৩৭ শতাংশ স্তন্যপায়ী) এবং এদের একটি বড় অংশ দেশের অন্যান্য অংশে বিরল Of these wildlife, Sarker has noted that two amphibians, 14 reptiles, 25 aves and five mammals are presently endangered.। সরকারের মতে এই প্রানীবৈচিত্র্যের মধ্যে ২ প্রজাতির উভচর, ১৪ প্রজাতির সরীসৃপ, ২৫ প্রজাতির পাখি এবং ৫ প্রজাতির স্তনপায়ী বর্তমানে হুমকির মুখে।
পাখি বিষয়ক পর্যবেক্ষণ, পাঠ ও গবেষণার ক্ষেত্রে পাখিবিজ্ঞানীদের জন্য সুন্দরবন এক স্বর্গ।
মৎস্য সম্পদ
সুন্দরবনের সামগ্রিক মাছের ওপর পূর্বাপর কোনো বৈজ্ঞানিক গবেষণা হয়নি। ফলে মাছের বর্তমান অবস্থা, বিলুপ্ত মাছ, বিলুপ্তপ্রায় মাছের ওপর উপাত্তনির্ভর তথ্য পাওয়া যায় না। শুধু, মানুষ যেসব মাছ খায় এবং যেসব মাছ রপ্তানি উপযোগী, সেসব মাছ চিহ্নিত করা হয়েছে। ধারণা করা হয়, সুন্দরবনে শিরদাঁড়াওয়ালা মাছ রয়েছে প্রায় ৩০০ প্রজাতির। সাইডেনস্টিকার ও হাই-এর (পরিপ্রেক্ষিত ১৯৭৮) মতে, এর মধ্যে বাণিজ্যিক মাছ ১২০ প্রজাতির; অবশ্য বার্নাকসেকের মতে, (২০০০) বাণিজ্যিক মাছ ৮৪ প্রজাতির, কাঁকড়া-চিংড়ি ১২ প্রজাতির ও ৯ প্রজাতির শামুক রয়েছে।
সুন্দরবনে মৎস্যসম্পদকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। সব মাছ মিলিয়ে হয় সাদা মাছ, বাকিরা বাগদা, গলদা, কাঁকড়া।
অর্থনীতি
সুন্দরবনের জনসংখ্যা ৪ মিলিয়নের বেশি কিন্তু এর বেশির ভাগই স্থায়ী জনসংখ্যা নয়।
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনীতিতে যেমন, ঠিক তেমনি জাতীয় অর্থনীতিতেও সুন্দরবনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এটি দেশের বনজ সম্পদের একক বৃহত্তম উৎস। এই বন কাঠের উপর নির্ভরশীল শিল্পে কাঁচামাল জোগান দেয়। এছাড়াও কাঠ, জ্বালানী ও মন্ডের মত প্রথাগত বনজ সম্পদের পাশাপাশি এ বন থেকে নিয়মিত ব্যাপকভাবে আহরণ করা হয় ঘর ছাওয়ার পাতা, মধু, মৌচাকের মোম, মাছ, কাঁকড়া এবং শামুক-ঝিনুক। বৃক্ষপূর্ণ সুন্দরবনের এই ভূমি একই সাথে প্রয়োজনীয় আবাসস্থল, পুষ্টি উৎপাদক, পানি বিশুদ্ধকারক, পলি সঞ্চয়কারী, ঝড় প্রতিরোধক, উপকূল স্থিতিকারী, শক্তি সম্পদের আধার এবং পর্যটন কেন্দ্র।
এই বন প্রচুর প্রতিরোধমূলক ও উৎপাদনমূলক ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ৫১ শতাংশ জুড়ে সুন্দরবনের, বন থেকে আসা মোট আয়ে অবদান প্রায় ৪১ শতাংশ এবং কাঠ ও জ্বালানী উৎপাদনে অবদান প্রায় ৪৫ শতাংশ (বিশ্ব খাদ্য সংস্থা, ১৯৯৫)।
অনেকগুলি শিল্প (যেমনঃ নিউজপ্রিন্ট, দেয়াশলাই, হার্ডবোর্ড, নৌকা, আসবাবপত্র) সুন্দরবন থেকে আহরিত কাঁচামালের উপর নির্ভরশীল। বিভিন্ন অ-কাঠজাত সম্পদ এবং বনায়ণ কমপক্ষে আধা মিলিয়ন উপকূলবর্তী জনসংখ্যার জন্য উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কর্মসংস্থান ও আয়ের সুযোগ সৃস্টি করেছে। উৎপাদনমূখী ভূমিকার পাশাপাশি সুন্দরবন, ঘূর্ণিঝড়প্রবণ বাংলাদেশের উপকূলবর্তী জনসংখ্যা ও তাদের সম্পদের প্রাকৃতিক নিরাপত্তাবলয় হিসেবে ভূমিকা রাখে।
মানুষের বসবাস ও অর্থনৈতিক কাজে ব্যাপক ব্যবহার হওয়া সত্ত্বেও এখনো সুন্দরবনের ৭০ শতাংশের কাছাকাছি পরিমাণ বনভূমি টিকে আছে, ১৯৮৫ সালে এমন মত জানায় যুক্তরাজ্যের ওভারসিজ ডেভেলপমেন্ট এডমিনিস্ট্রেশন (ও ডি এ)।
১৯৫৯ সাল থেকে ১৯৮৩ সালের মধ্যে বনজ সম্পদের স্থিতির পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে প্রধানত দুইটি ম্যানগ্রোভ প্রাজাতির ক্ষেত্রে – সুন্দরী (Heritiera fomes) এবং গেওয়া। এই হ্রাসের পরিমাণ যথাক্রমে ৪০ শতাংশ ও ৪৫ শতাংশ (ফরেস্টাল ১৯৬০ এবং ও ডি এ ১৯৮৫)।
তাছাড়া, মাছ ও কিছু অমেরুদন্ডী প্রাণী ব্যতীত অন্যান্য বন্যপশু শিকারের ব্যাপারে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও সেখানে জীব বৈচিত্র্য হ্রাসের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে (এ শতকে উল্লেখযোগ্য হল কমপক্ষে ৬ প্রজাতির স্তন্যপায়ী ও ১ প্রজাতির সরীসৃপ) এবং ফলশ্রুতিতে বাস্তুসংস্থানের মান হ্রাস পাচ্ছে (আই ইউ সি এন ১৯৯৪)।
জনপ্রিয় মাধ্যমে সুন্দরবনের উপস্থিত
- ২০০৪ সালে প্রকাশিত পুরস্কার বিজয়ী নৃতাত্ত্বিক অমিতাভ ঘোষের “দ্যা হাঙ্গরি টাইড” উপন্যাসের অধিকাংশ কাহিনী সুন্দরবনকেন্দ্রিক।
- সালমান রুশদির বুকার পুরস্কার বিজয়ী উপন্যাস “মিডনাইটস চিলড্রেন” এর কাহিনীর অংশ বিশেষও সুন্দরবনকেন্দ্রিক।
এখানে বিষয়গুলো অতিসংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরা হল।একটু ভেবে বলুন তো যদি এই সম্পদগুলো ধ্বংস হয় তাহলে কেমন হবে??
এই ক্ষতি হতে পারে এই রামপাল বিদুৎকেন্দ্র হলে?
ড. কেএইচএম নাজমুল হুসাইন নাজির এর লিখাটি হবুহু তুলে দিচ্ছি।
লেখক: ড. কেএইচএম নাজমুল হুসাইন নাজিরসহযোগী অধ্যাপক,
মাইক্রোবায়োলজি ও হাইজিন বিভাগবাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ। বর্তমান: গবেষক, ইয়াংনাম ইউনিভার্সিটি, দক্ষিণ কোরিয়া।
সহযোগী অধ্যাপক,
মাইক্রোবায়োলজি ও হাইজিন বিভাগবাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ। বর্তমান: গবেষক, ইয়াংনাম ইউনিভার্সিটি, দক্ষিণ কোরিয়া।
রামপাল গলার কাটা হয়ে দেখা দিবে নিশ্চিত। লোভটা আমাদের বেশি হয়ে যাচ্ছে। বিদ্যুৎ আমাদের দরকার তাই বলে নিজেরদের অমূল্য সম্পদ ধ্বংশ করে নয়। পরিবেশের উপর যে প্রভাব পড়বে এটার পুরু ভোগকারী হবে ঐ এলাকার প্রানীকুল, হবে না কোন রাজনীতিবিদ কিংবা নীতিনির্ধারক, কারন উনারা উপর তলার বাসিন্দা, সমস্যা উনাদের স্পর্শ করে না। আমি বলব সরকার শুধু ক্রেডিট নেবার জন্যে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু করতে চাচ্ছে, নিচের তথ্যভুল আর্টিকেলটি পড়ে আসুন তাহলে আশা করি আপনিও আমার সাথে এক মত হতে পারবেন।
আমার ফ্রেন্ড লিস্ট যারা আছেন তাদের বলি ,কেন ভাই অন্তত একবার দেশপ্রীতিতে আসুন না, কেন সব সময় অন্ধের মত দল প্রীতিতে থাকেন !!! বেরিয়ে আসুন এই বৃত্ত থেকে
**************************************************************
১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লাভিত্তিক মেগাপ্রজেক্ট রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের। দারুণ খবর! দেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে কেন্দ্রটি। উৎপাদন শুরু হলে রামপালে প্রতিদিন প্রয়োজন হবে ১০ হাজার টন কয়লা।
ঠিকই দেখছেন, সংখ্যাটি ১০ হাজার টন। শুধু বিদ্যুৎ নয় সাথে উপহার হিসেবে কেন্দ্রটি অন্যান্য ক্ষতিকর উপাদানের সাথে প্রতিদিন দেবে ১৪২ টন বিষাক্ত সালফার ডাই-অক্সাইড ও ৮৫ টন বিষাক্ত নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড। বছরে ৪৭ লাখ ২০ হাজার টন কয়লা পুড়িয়ে সাড়ে ৭ লাখ টন ফ্লাই-অ্যাশ পাওয়া যাবে। শুধু বাতাস নয়, মাটি-পানিও পাবে ২ লাখ টন বটম-অ্যাশ। এ বিপুল পরিমাণ অ্যাশ বাতাস,পানি বা মাটিতে নিরাপদ টানেল বানিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা হবে কিনা- সে প্রশ্ন উঠতেই পারে। অবশ্যই না।
আমাদের দেশেই থেকে যাবে।ছড়িয়ে পড়বে আশপাশের এলাকায়। পরিবেশ হবে দারুণভাবে বিপর্যস্ত।ইকো-সিস্টেম মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে। প্রাণ-বৈচিত্র হবে বিপন্ন।বলা হচ্ছে, অতি উচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে, যার ফলে মাত্র ১৫ ভাগ ফ্লাই-অ্যাশ
বাতাসে মিশবে। যদিও বটম-অ্যাশ বা বিষাক্ত সালফার ডাই- অক্সাইডের কথা পরিষ্কার নয়। একই ধরনের
কথা বলে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে ১৯৭৯ সালে একটি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছিল, যা থেকে বছরে ৩০ হাজার টন সালফার ডাই-অক্সাইড তৈরি হচ্ছে। ২০১০ সাল পর্যন্ত হিসাবে দেখা যায়, বিশেষত সালফার ডাই-অক্সাইডের ভয়াবহ প্রভাব কেন্দ্রটি থেকে ৪৮ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত পৌঁছে সেখানকার পেকান, ওক প্রভৃতি গাছের বাগান
মারা পড়েছে। উল্লেখ্য, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র সুন্দরবন থেকে মাত্র ১৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। উপরোক্ত
হিসাবে রামপাল থেকে তৈরি হবে বছরে ৫১ হাজার ৮৩০ টন সালফার ডাই-অক্সাই যা টেক্সাসের বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির
তুলনায় অনেক বেশি। টেক্সাসের অভিজ্ঞতা থেকে পরিষ্কারবোঝা যায় রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হলে সুন্দরবনকে বাঁচানো কোনোভাবেই
সম্ভব নয়। ওয়াকেবহাল মহলের মতে, ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যেই
বিলীন হবে সুন্দরবন।
## পশুর নদকে সুন্দরবনের প্রাণ বলা যেতে পারে। অনেকে এ নদকে সুন্দরবনের প্রাণ-
ভোমরা বলে থাকেন। সুন্দরবনের প্রাণ-বৈচিত্র প্রধানত এ নদের উপর নির্ভরশীল। জানা গেছে, বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির জন্য প্রয়োজনীয় ঘণ্টাপ্রতি ৯ হাজার ১৫০ ঘনমিটার পানি সংগ্রহ করা হবে পশুর নদ থেকে। ব্যবহার ও পরিশোধন শেষে ৫ হাজার ১৫০ ঘনমিটার পানি পশুর নদকে ফেরত দেয়া হবে। সুতরাং পশুর নদের পানি প্রবাহে ঘাটতি হবে দিনে ৯৬হাজার ঘনমিটার। পানি ফেরত কম দেওয়া হলেও বিভিন্ন বিষাক্ত পদার্থ বাড়তি হিসেবে যোগ হবে সে পানিতে- বলা যায়।
কারণ পরিশোধন কতদূর হবে সে ব্যপারেও যথেষ্ঠ সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। তাছাড়া বাংলাদেশে শিল্প- কারখানা থেকে নির্গত বর্জ্য পরিশোধন শেষে পরিবেশে উন্মুক্ত করার কথা থাকলেও বাস্তবে কি হয় তা আমরা কমবেশি সবাই জানি।
বুড়িগঙ্গার পানির অবস্থা স্মরণে রাখা যেতে পারে। বুড়িগঙ্গার পানিকে অনেকে বিষ বলে অভিহিত করে থাকেন। তেমনিভাবে রামপালের ফ্লাই-অ্যাশ, বটম-অ্যাশ ও অন্যান্য ক্ষতিকর বর্জ্যের মাধ্যমে বিষাক্ত সালফার ডাই-অক্সাইড ও নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইডসহ আর্সেনিক, সিসা,নিকেল, ক্রোমিয়াম, ভেনাডিয়াম,পারদ ইত্যাদি প্রতিনিয়ত মিশবে মাটি-পানি-বাতাসের সাথে।পশুর নদের মাছসহ অন্যান্য প্রাণী,সুন্দরবনের উদ্ভিদ ও প্রাণীকুলের
জীবনচক্রে পড়বে মারাত্মক প্রভাব। একে একে ধ্বংস হবে সব। সুন্দরবন বা রয়েল বেঙ্গল টাইগার না থাকলে ছাগল, বিড়াল বা কাঠবিড়ালিকে হয়তো দেশের জাতীয় পশু করা হবে কোনো একদিন।
## যতটুকু জানা গেছে, রামপালের মালিকানা বাংলাদেশে ও ভারত উভয় দেশের ৫০ ভাগ করে। মুলধনের ১৫ ভাগ বাংলাদেশের ও ১৫ ভাগ
ভারতের। বাকি ৭০ ভাগ আসবে ঋণ থেকে। ঋণ কোথা থেকে আসবে এবং তার সুদ কত তা পরিষ্কার নয়। বিদ্যুৎ
কিনবে বাংলাদেশের পিডিবি। বিদ্যুতের দাম নির্ভর করবে কয়লার দামের উপর। কয়লার দাম নির্ভর করবে প্রাপ্যতা ও পরিবহন খরচের উপর। উৎপাদন খরচ পড়বে অনেক বেশি- সহজেই অনুমেয়। বিভিন্ন অজুহাতে ধাপে ধাপে বিদ্যুতের দাম বাড়বে। বিদ্যুতের দাম যত বাড়বে ভারতের লাভ তত বেশি। টাকা আসবে বাংলাদেশের মানুষের পকেট থেকে। লাভের ৫০ ভাগ পাবে ভারত। সমীকরণ খুব সহজ। ভারত দেবে প্রযুক্তি ও ১৫ ভাগ মুলধন। জমিসহ বাকি সব যাবে বাংলাদেশ থেকে।
সুন্দরবন বিপন্ন হওয়াসহ পরিবেশ বিপর্যয়ের ঘানিও টানতে হবে আমাদের। জানা গেছে, একই কোম্পানি (ন্যাশনাল থারমাল পাওয়ার প্লান্ট কোম্পানি) ভারতের গুজরাট ও মধ্যপ্রদেশে একই ধরনের দুটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করতে চেয়েও জনসাধারণের তীব্র প্রতিবাদে ব্যর্থ হয়েছে। ‘সুপার ক্রিটিকাল’ প্রযুক্তির দোহায় দেওয়া হচ্ছে। প্রশ্ন জাগে ভারত কেন সেদেশের বনসীমার২৫ কিলোমিটারের মধ্যে এ ধরনের বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ আইন করে নিষিদ্ধ করল? নিজের জন্য ১৬ আনা অন্যের জন্য আট- এমন নীতি গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
সুন্দরবনের মত স্পর্শকাতর স্থানের পার্শ্বে কোম্পানিটি কিভাবে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি পেল ও বাংলাদেশের সাথে চুক্তি হলো তা ভেবে দেখার বিষয়। চুক্তির বিষয়বস্তু বিস্তারিতভাবে জানা সবার যৌক্তিক অধিকার নয় কি? সরকারি প্রেসনোটে দাবি করা হয়েছে, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ফলে ওই এলাকায় অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে। সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সম্পদের উপরে নির্ভরশীলতা কমবে, প্রাণ-বৈচিত্র রক্ষা পাবে- আরো কত কি। জানা গেছে, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কর্মসংস্থান হবে মাত্র ৬শ’ মানুষের। অন্যদিকে, সুন্দরবনের উপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কমপক্ষে ২ লাখ মানুষ নির্ভরশীল।
৬শ’ ও ২ লাখ-তুলনা চলে কি? তাছাড়া সুন্দরবনই যদি না থাকে তাহলে প্রাণ-বৈচিত্র বা নির্ভরশীলতার কথা অমূলক, তাই নয় কি?৪বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বনভূমি সুন্দরবনের আয়তন অষ্টাদশ শতাব্দীর শুরুতে ছিল বর্তমান আয়তনের প্রায় দ্বিগুণ। নানান কারণে আয়তন ছোট হয়ে বর্তমানে ঠেকেছে ১০ হাজার বর্গকিলোমিটারে।
যার ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার বাংলাদেশের মধ্যে অবস্থিত। উইকিপিডিয়ার তথ্যানুযায়ী, ১৯৯৭ সালে সুন্দরবন ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি পায়। সুতরাং এটি এখন শুধু বাংলাদেশের সম্পদ নয়।
বাংলাদেশ অংশের বন ধ্বংসের জন্য কেউ সুদূর-প্রসারি পরিকল্পনা নিয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে। সরকারি প্রেসনোটে বলা হয়েছে-রামপালের কোন ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে না সুন্দরবনের উপর। যা আদৌ নির্ভরযোগ্য নয় বলে অনেকের মত আমিও মনে করি। প্রেসনোট তৈরিতে কারো প্রভাব বা চাপ রয়েছে কিনা, অর্থের লোভ বা প্রাণের ভয় ছিল কিনা-ভেবে দেখা দরকার। প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর- ‘কথা না শুনলে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়ার’ হুমকির মত বিষয়ও থাকতে পারে এর পেছনে।৫পারিবারিক শান্তি থেকে শুরু করে জাতীয়
উন্নয়নে বিদ্যুতের গুরুত্ব বলে শেষ নেই। কয়লা নির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রয়োজনীয়তাও কম নয়।
বিভিন্ন দেশ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তুলেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার ৯৩ ভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় কয়লা থেকে। তেমনিভাবে চীন ও অস্ট্রেলিয়া ৭৮ ভাগ, যুক্তরাষ্ট্র ৪৯ ভাগ, ভারত ৬৮ ভাগ ও জাপান ২৭ ভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদন করে কয়লা থেকে। সেখানে বাংলাদেশে এক ভাগেরও কম।
পক্ষান্তরে, বাংলাদেশে রয়েছে চড়ামূল্যের গ্যাসচালিত ‘কুইক রেন্টাল প্লান্ট’ যা খুব কম দেশেই আছে। কুইক রেন্টাল স্থায়ী সমাধান নয়। যাই হোক, আমাদের দেশে গ্যাসের পাশাপাশি রয়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কয়লা। কুইক রেন্টালের মাধ্যমে নিঃশেষ হচ্ছে দেশের অমূল্য সম্পদ প্রাকৃতিক গ্যাস।
পরিবেশবান্ধব কয়লা নীতি প্রণয়ন করে দেশীয় কয়লা ব্যবহার করা গেলে বিদেশি কয়লা বা দেশীয় গ্যাসের প্রতি নির্ভরশীলতা কমানো যাবে। রামপালের পাশাপাশি দেশের অন্য দুটি স্থানে জাপান ও মালয়েশিয়ার সহায়তায় আরো দুটি কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সেগুলোর ব্যাপারে তেমন আপত্তির কথা শোনা যায় না। রামপালের বিপক্ষে সিংহভাগ জনগণের অবস্থান কিসের কারণে? একটাই উত্তর- সুন্দরবন। এর স্বপক্ষে দেওয়া সরকারের বেশিরভাগ যুক্তি নির্ভরযোগ্যতা হারিয়েছে। ৬অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, সরকার যেভাবেই হোক রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে চায়।
নিশ্চিত জাতীয়স্বার্থ-বিরোধী এমন কাজে কি কারণে বা কার স্বার্থ রক্ষার্থে সরকার একগুয়েমির পথ বেঁছে নিচ্ছে সে প্রশ্ন উঠছে হরহামেশাই। তারপরও বলব- শেষবারের মত ভেবে দেখুন। জাতির কপালে একবার রামপালের স্থান হয়ে গেলে তা সরানো খুব কঠিন হবে। সে টনটনে- বিষফোঁড়া বয়ে বেড়াতে হবে সবাইকে সারাজীবন।
মাশুল দিতে হবে গোটা জাতিকে। ক্রমবর্ধমান চাহিদার নিরিখে বিদ্যুৎ উৎপাদন অবশ্যই বাড়ানো দরকার। পরিবেশের উপর
কিছুটা বিরূপ প্রভাব থাকলেও অন্যান্য দেশের মত কয়লার উপর নির্ভরতা বাড়াতে হবে- এতেও আপত্তি থাকার কথা নয়।
যে কোনো দেশ এমনকি ভারত, নেপাল বা মিয়ানমারের ভালো প্রযুক্তিকে দেশের মানুষ গ্রহণ করবে সানন্দে। তবে কোনো অবস্থাতেই
তা সুন্দরবনের মত অমূল্য সম্পদের বিনিময়ে নয়। রামপাল অভিমুখী লংমার্চ ও তার
প্রতি ব্যাপক জনসমর্থন সে বার্তাই দিচ্ছে। সিডরের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিলে সুন্দরবন না থাকলে আর কেউ নিজেকে বিলীন
করে বাংলাদেশকে রক্ষা করবে না- মনে রাখা চাই।
একটি ভিন্ন দেশের কথা রাখতে গিয়ে আমাদের এত সুন্দর একটা সম্পদ ধ্বংস করব?
?জনগনের এই দাবি কি শুনবে না সরকার??সরকার তো জনগনের জন্য কিন্তু আমাদের মতামতের কি আদ্য কোন মূল্য আছে উনাদের কাছে?নিজেদের ইদানিং গিনিপিক মনে হয়।একটা বন্ধ জগতে যেন বন্ধ হয়ে আছি।
তবে কি এই বনকে ধ্বংস করা হবে? না !! না!! এই সুন্দরবন বাঁচাতে হবে।আশা
করি সরকারের সৎ বুদ্ধির উদয় হবে।না হলে ২০২৭ সালে আমার ধূ ধূ প্রান্তর এক সুন্দরবন দেখব।
আবারও বলছি প্লিজ আমাদের সুন্দরবনকে বাঁচতে দেন
থ্যাঙ্কিউ সো মাচ ভাইয়া। 😀
অসাধারণ আর্টিকল
শুরুটা একটা গল্প দিয়ে… এক পরিণত লেখক এর মতো!
প্রিয় স্বরে নিলাম!
” এক পরিণত লেখক এর মতো!” এত বড় মন্তব্য কই রাখব বুঝতেছি না।
প্রথম আপনার মন্তব্য পেয়ে ভাল লাগল। :love:
আশা করি এই বন ধ্বংস বন্ধ হবে।কিন্তু সরকার থেকে বার বার বলা হচ্ছে এতে নাকি সুন্দর বন ধ্বংস হবে না।কিন্তু এই নিয়ে তেমন কোন যুক্তি এবং তথ্য দিতে দেখলাম না । 🙁
লেখায় পরিশ্রমের ছাপ স্পস্তভাবেই বোঝা যাচ্ছে। শুরুটায় বেশ ভালো ছিল 🙂
শুরুর দিককার কিছু বানান আর স্পেসিং যদি এডিট করে নিতে…যদিও আমার নিজের বানান আর স্পেসিংয়ের ভুল হয় অনেক 😛
*স্পষ্টভাবে…এই হলাম আমি! 😛
😛
ভুল গুলো ঠিক করা হয়েছে।এরপর যদি কোন ভুল থাকে তাহলে সেগুলো উল্লেখ্য করে দিলে ভাল হয়।
ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য
এইরকম একটা আর্টিক্যালের খুব খুব দরকার ছিল !! যথাসম্ভব ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করি আমরা সবাই। আর আসলেই পরিণত একটা লেখা ! অনেক ধন্যবাদ তুসিনকে। :huzur:
মন্তব্য পেয়ে ভাল লাগল। আপনাকেও ধন্যবাদ।
দারুণ লিখেছিস রে 😀
শুরুটাও সুন্দর হয়েছে 😀
আর বিরাম চিহ্নগুলো একটু ঠিক করে নিস 😀
ওকে। 🙂 :love:
দুঃখজনকভাবে সরকারের পক্ষ থেকে জনগনের রিয়েকশানের কিংবা প্রকৃত অবস্থার কোন প্রতি উত্তরই পাওয়া যাচ্ছেনা
আসলে অনেক দু:খ জনক….ভাবতেই কষ্ট হয়। লাকী ভাই আপনার মন্তব্য পেয়ে ভাল লাগল
বেপার টা দুঃখ জনক , হাই কোর্ট এর রিট আবেদন ও নাকি নাকচ করে দেওয়া হয়েছে 🙁
🙁
“ভারতের গুজরাট ও মধ্যপ্রদেশে একই ধরনের দুটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করতে চেয়েও জনসাধারণের তীব্র প্রতিবাদে ব্যর্থ হয়েছে।” :thinking:
কথায় আছে, পাগলেও নিজের ভালো বুঝে। আমরা পাগলও মনে হয় না… 😡
🙁 কিন্তু আমাদের নেতা তা ও বুঝে না।এর ছাগলের থেকে অধম।