বিদ্যমান রাজনৈতিক ব্যবস্থায় জনগনের দখল প্রতিষ্ঠায় যা করন দরকার

মিজানুর রহমান খান কইতেসেন যে- দুই প্রস্তাবেই গলদ। সর্বদলীয়, ৯৬ ২০০১ এর উপদেষ্টা লইয়া নির্দলীয়- কোনডাই স্থায়ী সমাধান না। এই পর্জন্ত ঠিকই ছিল। এরপরে কইলেন-সবশেষ কথা, তত্ত্বাবধায়কের সরকারপ্রধান নির্ধারণই আসল। সেখান্ডায় আমাদের সমঝোতা আসলে বাকি সব সমাধা হইয়া যাবে। হেরজন্য স্বদিচ্ছা দরকার। নাথিং এলস। বেশি বেশি আলোচনা দরকার। চা নাস্তার টেবিলে বসা দরকার।

তো শেষ পর্জন্ত রাজনীতি একটা চর দখলের লড়াই সেইটা আবারো পষ্ট হইতেসে। আলোচনার টেবিলে সবচেয়ে বড় লাঠিয়ালদের ডাকতেসেন, তাদের কোলাকুলি দেখলে খুশি হইতেসেন। মাইনে আলোচনা তার লগেই করতেসেন যার লাঠি বড়। তাইলে রাজনীতিতে লাঠির প্রয়োজন কেমনে ফুরাইবো? ধরেন তারা মিলমিশ কইরা একে অপরকে অভয় দিয়া, মাফি লইয়া ও মাফ কইরা -রক্তপাতহীন নির্বাচন কইরা পাওয়ার শিফট করলো। তাতে আমরা কিছু শান্তি পাইলাম। কিন্তু তারা কিন্তু বুইঝা লইলো যে লাঠির ক্ষমতাই আসল। আপনে সেইটারেই ডরান। এই লাঠির সাথে টক্কর দিতে আর কোন শক্তি খাড়াবে না। খাড়াইতে দেয়াই হবে না। সেইটা আপনি যত বড় কামাল হোসেন, বি চৌধুরী আর ইউনূস সাহেবরে আনেন, ডক্টর-ডাক্তার-বুদ্ধিজীবি দিয়া ভইরা ফেলেন- পাত্তা পাবেন না।

আরেকটা বিষয় হইলো সবচেয়ে বড় লাঠিয়ালরে দেশের সর্বচ্চো ক্ষমতাটা দিয়া রাখলেন। সরকারপ্রধানের ক্ষমতা হ্রাস, শক্তির বিকেন্দ্রীকরনে আপনের আগ্রহ নাই। আপনি নির্বাচন কমিশনরেও যেমন শক্তিশালী দেখতে চান না, দুদকরেও তেমন লুলা কইরা রাখতে চান। আবার দূর্নীতিমুক্ত দেশের খোয়াবের পাছায় ছিল মারেন ৫বছর পর পর। এই লুপ থিকা বাহির হওয়ার রাস্তাও অফ কইরা রাখতেসেন।

রাস্তা যেমনে খুলবেন-
১. সরকারপ্রধান না, নির্বাচন কমিশনরে বলিয়ান করতে হবে। নির্বাচন দুই দলের লড়াই আর তাদের কথায় উঠবস করার খেলা না। নির্বাচন একটা দেশের রাজনৈতিক ক্ষমতার বন্টনের প্রশ্নে করা হয়। এই পাওয়ার শেয়ারিংকে প্রভাবমুক্ত রাখতে অন্তত তিন মাস একটা নিউট্রাল অবস্থা রাখতে হবে যেখানে কেউ মাথা তুইলা কইতে পারবে তুমাগো এইবার আর পুছলাম না। নির্বাচনী আচরনবিধি, দল নিবন্ধনের যত নিয়মকানুন সেগুলার আসল উদ্দেশ্য এমন একটা বেড়া দেয়া যাতে দ্বিদলীয় রাজনৈতিক মেরুর বাইরে কেউ আসতে না পারে। অনেকটা বাস মালিক সমিতির যেমনে বিআরটিসির বাসকে লাইন থিকা হটায় সেই কায়দা।

২. অন্ধভাবে রাজনৈতিক দল সমর্থন না করা। মাজারকেন্দ্রিক রাজনীতি ছাইড়া ইস্যুভিত্তিক অবস্থান গড়তে চাপ দেয়া। রাজনৈতিক দলগুলান আসলে আপনার মতামতরে ডরায়। এইযে আজকে লীগ এতো প্যানিকড হইয়া সভা সমাবেশ বন্ধ কইরা দিসে, তারও আগে ফেইসবুক-ইউটিউব-টিভিচ্যানেল-পত্রিকা বন্ধ করসে। তারা যখন ফুল পাওয়ারে তখন থিকাই তারা ডরায়। এই ডররে আপনি ক্যামনে ব্যবহার করতেসেন? খালেদা ভাষণ দিলেও একদল বগল বাজাইতেসে, হাসিনা দিলে আরেকদল কচ্ছে আহা সেকি সমঝোতার কথা, আশার আলো, অন্ধকারের দিশা। কিন্তু তাগো মূল অবস্থানে কোন পরিবর্তন নাই যেখান থিকা আপনে-আমি কোন উপকার পাবো। তারা মারামারি না করলে আমরা কিছুটা শান্তি পাই। কিন্তু তারাতো আমাগো উপকার করতে আসতেছে না। কেউতো কচ্ছে না আমরা দুদক-রে বলিয়ান কইরা সব দূর্নীতিবাজরে ধরবো। বরং একে অপরকে মাফ কইরা দিতেসে, অভয় দিতেসে। টাকা মারলো পাবলিকের আর মাফ করলেন চোরায় চোরায়। এই সমঝোতার নিকুচি করি। নির্বাচনের বছরে যদি কই ‘সংবিধান সমুন্নত রাখতে হবে’ তাইলে আপনি ভাব্বেন হাসিনা। আবার একই কথা শুন্সিলেন ১৯৯৫এ খালেদার কাছে। এই একই বিষয়ে একই কথা একই মদ ভিন্ন বোতলে কইরা চলতেই আছে চলতেই আছে। আমার বাবা, তার বাবা, তার বাবা- হাততালি দিতেই আছেন। এইডা থামাইতে হবে। আপনার যে ইন্ডিপেন্ডেন্ট অবস্থান আছে সেইটা বুঝান। আপনি লীগের দূর্নীতির বিরোধিতা করলেই যে বিএনপির পক্ষে না, আবার রাজাকারের ফাঁসী চাইলেই যে খাস লীগ সেইটাও না। এই মাঝামাঝি অবস্থানের ব্যাপ্তি যত বাড়বে, যত মানুষ হবে- ততই দুই দলের মধ্যে পরিবর্তন আসবে। তখন তারা আপনারে খুশি করার কসরত করবে। নাইলে তারা যে সার্কাস প্রতি পাঁচ বছর পর পর দেখায় সেই একই বাদর নাচ দেখাইতেই থাকবে। অস্থায়ী না, স্থায়ী সমাধানের জন্য চাপ দেন। কাহানী ঘর ঘর কি অফ করতে কন।

 

বাঙ্গাল সম্পর্কে

আমি একজন ঘবেষক..চিন্তা করাই আমার কাজ...চিন্তিত ভাই ব্রাদারদের আমার পেজে স্বাগতম। [email protected] https://www.facebook.com/bangal
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে বিবিধ-এ। স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

6 Responses to বিদ্যমান রাজনৈতিক ব্যবস্থায় জনগনের দখল প্রতিষ্ঠায় যা করন দরকার

  1. মাধবীলতা বলেছেনঃ

    রাজনীতি বিষয়টা এত বিতিকিচ্ছিরি যে কী বলব ! আমজনতা সবখানেই বলির পাঁঠা । এই পাঁঠা হওয়ার অবস্থান থেকে নড়তে হবে। আপনার প্রস্তাব কার্যকর করা খুবই জরুরি। সবাই সচেতন হোক সেই কামনা করি।

  2. সামিরা বলেছেনঃ

    :thinking:

  3. বোহেমিয়ান বলেছেনঃ

    নির্বাচন কমিশনরে বলীয়ান করলে কি আসলেই সেই রকম নিরপেক্ষতা পাওয়া যাবে?
    আজই এক আওয়ামী বন্ধুর কাছে শুনলাম লীগ এর প্রচুর ছেলে পেলে নাকি সরকারের নানা জায়গায় [যেমন পুলিশ/প্রশাসনিক পদ ] এই সব জায়গায় দেয়া হইছে। অতি দ্রুত।
    ছোট ছোট অসংখ্য পদ মিলে একটা বড় চ্যালেঞ্জ হইতে পারে না?
    একটা অনিরপেক্ষতা হইতে পারে না?

    #২টা জোশ কথা বলছেন।
    ভাবতেছি আমাদের দেশের মানুষদের দিয়ে কতদূর কী হইতে পারে! আরও কত দিন লাগবে। একটা সময় নিশ্চিত হবে… কিন্তু বেশি না দেরি কইরা ফালাই!

    • বাঙ্গাল বলেছেনঃ

      দলীয়করণ ব্যাপক মাত্রায় হয়েছে প্রতিবারের মতই… সেকারণেই সর্বদলীয় সরকার দিয়ে লাভ হবে না.. শতশত ট্রান্সফার ওএসডি করতে হবে… কিন্তু আমাদের চাহিদা বা প্রয়োজনটি কি? প্রয়োজনটি ভুললে চলবে না…. প্রয়োজন একটি নিরপেক্ষ অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের। নিরপেক্ষ সরকারের প্রয়োজন- এমনটি তখনই আসে যখন নির্বাচন অবাধ হবার পথে সরকারের পক্ষপাত বাধার কারণ হয়ে দাড়ায়। সেকারণেই অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধানের পদ দুর্বল করে নির্বাচন কমিশনারকে সবল করতে হবে…. তার ফান্ড সাংবিধানিকভাবে আলাদা করতে হবে. সরকারের মুখাপেক্ষী করা যাবে না.
      প্রত্যেক প্রার্থীর পিছে একজন অডিটর লাগিয়ে নির্বাচনী ব্যয় ও কালো টাকার ব্যবহার কমাতে হবে….. ভারতে ১৯৯০ থেকে নির্বাচন কমিশন শক্ত করতে ব্যাপক পরিবর্তন করা হয়েছে। যেখানে ২০০-৩০০লোক মারা পড়ত এখন সেখানে গুটিকয় মারা যায় নির্বাচনী সংঘাতে। ফ্রি ইলেকশনের জন্য বিশাল আন্দোলনও দেখা যায় না.

  4. স্রোতস্বিনী বলেছেনঃ

    “সরকারপ্রধানের ক্ষমতা হ্রাস, শক্তির বিকেন্দ্রীকরনে আপনের আগ্রহ নাই। আপনি নির্বাচন কমিশনরেও যেমন শক্তিশালী দেখতে চান না, দুদকরেও তেমন লুলা কইরা রাখতে চান। ”
    “কেউতো কচ্ছে না আমরা দুদক-রে বলিয়ান কইরা সব দূর্নীতিবাজরে ধরবো। বরং একে অপরকে মাফ কইরা দিতেসে, অভয় দিতেসে।”

    এক্কেরে মনের কথাখান কইছেন, আসল ইস্যুতে কেউ আইয়ে না, ফাতরা জিনিস নিয়া বাঁদর নাচানাচি, আর এই এককথাতে আইলেই তো তাগো দুইজনেরই মাথা কাটা যাইব…

    আমাগো নিজেদের মইদ্ধ্যের হিপোক্রেসি কমাইতে হইব…

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।