এই ধুলোঝরা পৃথিবীতে রোজ কত মানুষ বাঁচে- কতক বুড়ো হয়, কতক বেড়ে ওঠে, আরো কতক মরে যায়! রোজ কত মানুষের ঘুম ভাঙে। তারপর তারা চুল আঁচড়ে, শরীরে ডিও মেখে হেঁটে হেঁটে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়, বাসে-রিকশায় চড়ে। যাদের কোথাও চড়ার ক্ষমতা নেই, তারা দু’পায়ে ভর দিয়ে দিন শুরু করে। যেতে যেতে তাদের ভেতর রোজ কতজন ঝগড়া করে বাসের হেলপার কিংবা রিকশাওয়ালাটার সাথে। ভাড়া নিয়ে বচসা করার সুযোগ যাদের নেই, তারা হয়তোবা রাস্তার সুইপারের সাথে নোংরা-ধুলো নিয়ে ২ মিনিটে বাগবিতণ্ডা সেরে নেয় কিংবা টং’এর দোকানে দাঁড়িয়ে ঠোঁটে চাপা সিগারেটে আগুন ধরাতে ধরাতে রাজনীতি নিয়ে খানিক তর্ক সেরে ফেলে অপরিচিতের সাথে।
সূর্য যখন আরো খানিক উপরে তখন নাক ডুবিয়ে দেয় তারা কাজে। কাজের ফাঁকে ফাঁকে চলে কিছু গল্প-চা-তর্ক-মনোমালিন্য-গান। তারপর আবার কাজ, আবার ব্যস্ততা। সন্ধ্যের মুখে আবার সেই সকালের দৃশ্য কিন্তু এবারে কেবল উলটো পথে হাঁটা। কেউ কেউ হয়তো ব্যস্ততাকেই ভালোবাসে, তারা সন্ধ্যে পেরিয়ে রাত করে ঘরে ফেরে। ঘর মানে চারটে দেয়াল আর মাথার উপর একটা ছাদ, ঘর মানে ইট-সিমেন্ট-বালু-পলেস্তারা অথবা খাবার-ঘুম-রাত।
আমি রোজ সকালে সূর্যোদয় দেখি। দেখি আকাশের আলোয় আলোয় ভরে ওঠা, দেখি আর ভাবি। ভাবি আর দেখি। প্রতিদিন কেবল একটা মানুষের সাথে কত কত মানুষের দেখা হয়- বাবা-মা-ভাই-বোন-আত্মীয়-বন্ধু-প্রেমিক-জীবনসঙ্গী-কাজের বুয়া-চাওয়ালা-বাসের হেলপার-কলমিস্ত্রী-রিকশাওয়ালা-ভিক্ষুক-মেসের রুমমেট-স্কুলের বন্ধু অথবা সম্পূর্ণ অচেনা কেউ!
আমার শুধু মনে হয়, জীবনের প্রতিটা দিন যাদের সাথে মানুষগুলোর দেখা হয়, তাদের প্রত্যেকের ঠিক সেই জায়গাতেই থাকার কথা ছিল, তাদের সাথে ঐ মানুষগুলোর দেখা হবারই কথা ছিল! তারা প্রত্যেকেই একেক রূপে, একেক চেহারায় দেখা দেয় কোন না কোন উদ্দেশ্য পূরণের জন্য। সে উদ্দেশ্য হতে পারে ঐ মানুষগুলোকে নিজেদের কাছে নিজেকে চিনতে শেখানো, জানতে শেখানো। অথবা হতে পারে মানুষটা সত্যিই কে কিংবা সে কী হতে চায় জীবনে, সেগুলো খুঁজে দেয়া।
যে মানুষটা চোখে মেলে ডিও মেখে রোজ কাজের ব্যস্ততায় হারিয়ে যায়, হয়তো সে বুঝতে পারে না তার জীবনে মানুষ হিসেবে ঐ চাওয়ালা বা সুইপারের সাথে দেখা হবার প্রয়োজনীয়তা কী। অথবা কেউ কেউ বুঝতে পারে, যাদের সাথে দেখা হয় তাদের চোখের দিকে এক মুহূর্ত তাকিয়ে হয়তোবা কেউ কেউ ঠিক ঠিক বুঝে ফেলে যে সেই মানুষটা কোন না কোনভাবে তার জীবনকে ছুঁয়ে যাবে, বদলে না দিক, অন্তত স্পর্শ করবে তাকে!
সকাল দেখতে দেখতে আমি প্রায়শই ভাবি, ঝগড়া করতে করতে হেঁটে হেঁটে যাওয়া ঐ মা-ছেলের গায়ের চারধারে যে রোদটা ঘুরে ঘুরে ঘিরে রইলো, তা আর কোনদিন আসবে না! যে রোদ আজ কাউকে ছুঁয়েছে, সেই একই রোদ কাল আবার ছোঁবে না তাকে। কালকেরটা হবে অন্য রোদ, অন্য আরেক আলো। কাজে বেরুবার জন্য তৈরি হতে হতে যে ছেলেটা তার বাবার দিকে চোখ তুলে তাকাল, সেই একই বাবাকে সে খানিক পরে আর দেখতে পাবে না। বাবার চোখের সেই চাউনিটা আর ফিরে আসবে না তার জীবনে।
রোজ সন্ধ্যের পর আমার মনে হয়, সারাদিন পরে ইট-কাঠের ঘরে একরাশ বিরক্তি নিয়ে যে মানুষটা ফিরল, তার জন্যেও টেবিলে রাখা খাবারগুলোতে কারো না কারো ভালোবাসা ঠিক ঠিক মিশে থাকে। সবচেয়ে অদ্ভুত ব্যাপার হলো, প্লেটে-চামচে-ডালের বাটিতে মিশে থাকা সেই ভালোবাসা, কেবল ঐ মানুষটার কাছ থেকে ভালোবাসা পেয়েছে বলেই তৈরি হয় নি, অথবা রক্তের টান ছিল বলেই ভালোবাসারা মানুষটার ঘরে ফেরার অপেক্ষায় থাকে নি। বরং সেই ভালোবাসা একদিন মানুষটাকে জীবনে উঠে দাঁড়াতে, চোখ মেলে দেখতে, হাত দিয়ে কাজ করতে শিখিয়েছিল বলেই অথবা বিরক্তিমাখা মানুষটার জীবনের প্রতিটি নিঃশ্বাস একদিন ছুঁতে পেরেছিল বলেই আজও তার ফেরার অপেক্ষায় থাকে; ধোয়া গেঞ্জির ভাঁজে-চায়ের মগে-ভ্রুকুটিতে-মশারির কোণে আজও নিশ্চুপে মিশে থাকে তারা।
মাঝে মাঝে ব্যস্ত ঐ মানুষগুলোকে দুটো মিনিট দাঁড় করিয়ে কিছু কথা বলতে আমার বড্ড ইচ্ছে করে। জানতে ইচ্ছে করে, তাদের ব্যস্ততার মাঝে যে রোদ তাকে ছুঁয়ে যায়, তা সে বুঝতে পারে কিনা। ইচ্ছে করে বলতে, বাড়ি ফেরার পর তাকে ঘরের দরজা খুলে দেয়া মানুষটার ভালোবাসা সে অনুভব করে কিনা। তার ব্যস্ততার কারণ আমার জানতে ইচ্ছে করে।
আমি জানি, সে কী উত্তর দেবে। সে বলবে সে কাছের মানুষগুলোকে সুখী দেখতে চায়, তাদের আর্থিক নিরাপত্তা চায় আর তাই সে ব্যস্ত, তাই সে ব্যস্ততাকে ভালোবাসে খুব বেশি। ব্যস্ততাকে ভালোবেসে সে একদিন কাছের মানুষগুলোকে ভালোবাসা দিতে চায় অবাধে, ভালোবাসা দিতে চায় এমন একদিন যখন তার অবসর মিলবে তাদেরকে ভালোবাসার! তার আগ পর্যন্ত সে ব্যস্ততাকেই ভালোবাসবে, ব্যস্ততার মাঝেই সুখ খুঁজে বেড়াবে।
আমার মাঝে মাঝে তাদেরকে বলতে ইচ্ছে করে, যখন তার অবসর মিলবে, তখন ভালোবাসা নেয়ার মানুষগুলোর অস্তিত্বই যদি আর জীবনে না থাকে! তার বাড়িতে ঢোকার দরজায়, খাবার টেবিলে, চায়ের মগে, শার্টের বোতামে, বিছানার চাদরে যে মানুষগুলোর হাত পড়েছে, সেই হাতগুলো যদি একদিন পঙ্গু হয়ে মরে যায় কেবল তার অবসরের অপেক্ষায় থেকে থেকে, কেবল তার কাছ থেকে ভালোবাসার দুটো শেষ কথা শুনবার আশায়? ব্যস্ততা কি তবে অবসরেও মুক্তি দেবে তাকে?
আমি জানি, আজ যদি আমি বলি যে কাছের মানুষগুলোর চোখে চোখ মেলে একবার তাকাও, একটাবার তাদের হাত ধরো, আজই খাবার টেবিলে অন্তত একবার তাদের বলো যে তোমার জীবনে তারা কতটা মূল্যবান, আমি জানি এই কথা তারা হেসে উড়িয়ে দেবে! তারা বলবে, আবেগে জীবন চলে না, জীবনে চলতে গেলে ব্যস্ত হতে হয়, আর সেই ব্যস্ততাকে ভালোও বাসতে হয়!
আমি জানি তারা আমাকে ছোট্ট, অপরিণত, বাস্তবতা বিবর্জিত এক শিশু ভাববে কেবল, তারা আমায় বলবে বড় হতে। কিন্তু আমি তো জানি, বড় হওয়াটা খুব সহজ, ওতে কোন কৃতিত্ব নেই! আজ আমি ২৩ বছর বয়সে সারাদিন কাজ করলে অথবা সারাদিন শুয়ে-বসে থাকলেও ঠিক এক বছর পর আমার বয়স ২৪ হবে। আমি বড় হবো ব্যস্ততায় অথবা অপরিসীম অবসরে। শুধু আমি কেন, পৃথিবীতে যে কেউ চাইলেই বড় হতে পারবে, চাইলেই ব্যস্ত হতে পারবে। তাতে আলাদা কোন যোগ্যতা বা ক্ষমতার প্রয়োজন পড়বে না। কিন্তু বড় হওয়া আর বুড়ো হওয়ার সাথে যে বেড়ে ওঠার অনেকখানি তফাৎ!
সবাই অনেক সহজে ভুলে যায়- আজ থেকে বিশ কিংবা ত্রিশ বছর পর যা কিছু পাবার আশায় তারা আজ ব্যস্ততার পেছনে ছুটছে, তা পেতে গেলে শুধু বছর বছর সময় পার না করলেও চলে!
আজকাল বারবারই আমার শৈশবের কথা মনে হয়। আমাদের প্রত্যেকের জীবনে ছোট্টবেলার সেই সময়টা কতই না ভারমুক্ত ছিল, শান্ত আর কোমল ছিল। কখনো মনে হতো না কেবল ব্যস্ততাকে ভালোবাসলেই জীবনে অবসর মিলবে ভালোবাসার। তখন ইচ্ছে হলে বাবার কাঁধে চড়া যেত, মায়ের গলা জড়িয়ে হুটোপুটি খাওয়া যেত। তখনো ব্যস্ততা ছিল পড়াশোনার, তবুও সবাই ঘুমিয়ে গেলে চোখ ফাঁকি দিয়ে ঠিক বেরিয়ে পড়া যেত জীবনের খোঁজে।
অথচ আজ সবাই বড় হতে চায়, সবাই বলে বড় হতে। সবাই বলে কিছু পেতে গেলে বছর পার করতে হয়, ভালোবাসতে গেলে ব্যস্ত হতে হয়! আজ তারা চায় না শৈশবের সময়টার মত করে জীবনের পথে বেড়ে উঠতে! তাদেরকে এখনই নির্ভার হয়ে ভালোবাসতে বললে তারা যুক্তি দেখায় এই বলে যে, পৃথিবীতে কত মানুষকেই বা তারা ভালোবাসবে? পরিবার-আত্মীয়-বন্ধু-জীবনসঙ্গী আরো শত শত কাজের মানুষ- কতজনকেই বা তাদের পক্ষে সময় দেয়া সম্ভব? ছেলেবেলায় তো এত মানুষকে সময় দেয়ার কথা ভাবতে হতো না, আজ এত মানুষের কথা ভাবলেই বা চলবে কেন? এত মানুষকে মূল্য দিয়েই বা কী লাভ? হ্যাঁ, সত্যিই তাই!
কিন্তু তখন আমার খুব খুব বলতে ইচ্ছে করে, হয়তোবা তোমার কাছে এতগুলো মানুষের মূল্য নেই, কিন্তু সেই একটা-দুটো মানুষের কাছে হয়তো তুমি পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান কেউ। তোমার ভালোবাসা অকাতরে বিলিয়ে দিলে হয়তো তোমার কাছে তা কেবল সময়ের অপচয় বলেই মনে হবে, কিন্তু যে মানুষটা রোজ তোমার ঘরে ফেরার প্রতীক্ষায় থাকে, যে মানুষটা রোজ তোমার সুন্দর জীবনের প্রার্থনায় মগ্ন থাকে, সেই মানুষটার জীবনে তুমিই সময়! সেই মানুষটার জীবনে সময় মানেই ভালোবাসা!
যখন শত শত মানুষ দুর্ভিক্ষে মৃতপ্রায়, তখন হয়তো তুমি সবাইকে একসাথে বাঁচাতে পারবে না, একজনকে বাঁচাতে বাঁচাতে আরেকজন ততক্ষণে হয়তো মরে যাবে। কিন্তু যাকে বাঁচালে তার পুরো জীবনটাই কিন্তু সে নতুন করে ফিরে পেল। সংখ্যাটাই তো শেষ কথা নয়, তার বাইরেও আরো কিছু থাকে, গোটা একটা জীবন থাকে আর সেই জীবনের ভালোবাসারাও থাকে।
জেনে রেখো, বড় হতে পারাটা বাধ্যতামূলক, কোন কিছুর বিনিময়েই তাকে এড়ানো যায় না, কিন্তু বেড়ে উঠতে পারাটা ঐচ্ছিক। আর সেই ইচ্ছেটাকে পূরণ করার ক্ষমতা-যোগ্যতা সবার থাকে না।
আজকের পৃথিবীতে মানুষের জীবন শুধুই তাদের ব্যস্ততা নিয়ে, কিন্তু মানুষ একটা গোটা জীবন তৈরি করতে পারে শুধুমাত্র অন্যকে কিছু উপহার দিয়ে- হয়তো তা কেবলই একটা বাক্য, একটুখানি স্পর্শ, এক টুকরো হাসি কিংবা সামান্য একটু সময়। হয়তো কারো কারো জীবনের এই অল্প আর সামান্য জিনিসগুলোই অন্য কারো কাছে পূর্ণতার মত, হয়তো কারো ছোট্ট একটু সময় অন্য কারো জন্য এক-একটা জীবনের সমান!
“হয়তোবা তোমার কাছে এতগুলো মানুষের মূল্য নেই, কিন্তু সেই একটা-দুটো মানুষের কাছে হয়তো তুমি পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান কেউ। তোমার ভালোবাসা অকাতরে বিলিয়ে দিলে হয়তো তোমার কাছে তা কেবল সময়ের অপচয় বলেই মনে হবে, কিন্তু যে মানুষটা রোজ তোমার ঘরে ফেরার প্রতীক্ষায় থাকে,”
মন :love: ছুয়ে গেল লাইনগুলো। আর ছবিগুলো সুন্দর হয়েছে।
:beshikhushi:
জানিস, একদিন রেল লাইনের ঐ ঠাণ্ডা কাঠগুলোতে লম্বা কদম ফেলতে ফেলতে শীতের বাতাসে ইহসানকে বলছিলাম- আমাদের কিছু এরা অব রিলেশনশীপ আছে। আমরা একেক সময়ে একেক মানুষের কাছাকাছি থাকি, তাদের কাছথেকে ভালবাসা পাই বা নেই, আবার দেইও। এক দিন টের পাই সময়ের প্রয়োজনে আমাদের আয়োজনগুলো ধিরে দূরে যেতে থাকে, ঠিক ঘাট থেকে তরল পানিতে দুলতে থাকা নৌকাটা যেমন দূরে যায়। খুব আস্তে কিন্তু ফারাকটা কেমন বুক খালি করে দেয়ার মতন।
এর পর একদিন টের পাই সেই আকাশও নাই সেই সূর্যও নাই সেই আমিও নাই সেই আমরাও নাই। মানে প্রতিনিয়ত যা আমরা ছেড়ে যাচ্ছি তা আসলে চিরদিনের জন্যই।
হুম, হয়তো। কিন্তু প্রতিনিয়ত ছেড়ে যাবার পরেও বোধহয় নৌকা কখনো কখনো ঘাটে ভেড়ে, প্রিয় মানুষের আকুলতাই তাকে ফেরায়। এই জগত-সংসারে নতুবা সকলেই সন্যাসী হয়ে বেঁচে থাকতো, তাই না? 🙂
লেখা ভালইছে।
ওয়েলকাম ব্যাক
🙂
ভালো লেগেছে 😀
অনেকদিন পর তোমার লিখা পড়লাম :love:
ওয়েলকাম ব্যাক :happy: :love:
:love: :love:
অনেক সুন্দর, বরাবরের মতই। 🙂
বইপত্রে অনেক কথাই লেখা থাকে। কিন্তু আমি নিজের বা অন্যদের জীবন দেখতে দেখতে যা শিখেছি, প্রিয়দের জন্য ব্যস্ততার ফাঁকে সময় খুঁজে বের করা কিংবা তাদের প্রতি বিশ্বস্ত, ভালোবাসায় পরিপূর্ণ থাকার সাথে যুক্তির যোগসূত্রই বেশি, আবেগের যোগসূত্র কম। আর যুক্তির হাত ধরে আবেগ আপনাতেই চলে আসে সেটা পুরোপুরি নিশ্চিত (তাই যারা যুক্তির কথামত চলে তারা কিছু হারায় না বা তাদেরকেও কেউ হারায় না), কিন্তু আবেগের হাত ধরে সবসময় যুক্তি আসে না আর তখনই আমরা ব্যস্ত কিংবা অবিশ্বস্ত হয়ে পড়ি।
ভয়ঙ্করভাবে সহমত!
আপু, আপনার লেখা বরাবরই আমার ভালো লাগে, এবারও তার ব্যতিক্রম নয় 🙂
বুঝলাম, বক্সের বস্তুটাকে শুধু দেখলে চলবে না, দেখতে হবে বক্সের ভেতরটা সাথে বাহিরেরটাও …
আর তাইতো, শুধু বড় হতে চাই না, বেড়েও উঠতে চাই 🙂
আরও লেখা পাবো, সেই আশায় …
ভালো থাকবেন …
চেষ্টা করবো ভাইয়া ভালো কিছু লিখতে।
অসংখ্য ধন্যবাদ। 🙂
আপনি শেষ কবে প্রিয়জনকে একটা চিঠি লিখেছেন?
এস এম এস, ফেসবুক বা মেইলে নয়
শুধু সাদাকালো অক্ষরে?
দিন রাতের ট্যারিফ আওয়ারে ঘণ্টার পর ঘণ্টা এক ঘেয়ে আলাপের জন্য নয়
বরং কতগুলো শব্দ জমিয়ে রেখেছেন তার জন্য?
আমরা কেউ না!
অবশ্যই আমরা কেউ!
আমরা মানুষ!
শেষ কাগজে-কলমে প্রিয় মানুষটাকে চিঠি লিখেছি গতমাসে অর্থাৎ অক্টোবরের ১৯ তারিখ। আমি একটু পুরনো ধাঁচের মানুষ ভাইয়া, তাই কাগজের ভেতরে শব্দের ভালোবাসা আমাকে টানে বেশি, অনেক বেশি।
যান্ত্রিকতার হাহাকার, জাগতিক চাওয়া-পাওয়ার প্রভাবে আচ্ছন্ন জীবনবোধ। পরিস্থিতি কি এর চেয়ে ভালো হবে?
প্রশ্নটা নিজেকে করলে উত্তর পাওয়া সহজ হবে বোধহয়। 🙂
জানো আপি, মাঝে মাঝে খুব চিঠি লিখতে ইচ্ছে করে, কাগজে-কালিতে যেই প্রেম, যেই শিহরণ, মোবাইল কিংবা কীবোর্ডের বাটনেই সবাই কেনও জানি তা খুঁজে নেয়… 🙁
“হয়তো কারো কারো জীবনের এই অল্প আর সামান্য জিনিসগুলোই অন্য কারো কাছে পূর্ণতার মত, হয়তো কারো ছোট্ট একটু সময় অন্য কারো জন্য এক-একটা জীবনের সমান!”
জানি না এই কথাটুকু কেনও যেন আর পড়তে পারি নাই, চোখ ঝাপসা হয়ে গেছে তার আগেই!! :crying:
মাঝে মাঝে লিখতে ইচ্ছে করলে লিখবি, অবশ্যই লিখবি। নিজেকে ধরে রাখিস কেন? যদি মনে হয়, যাকে চিঠি লিখছিস, তার সেই চিঠি পড়বার সময় নেই বা চিঠি পৌঁছানো সম্ভব না, তবুও লিখবি।
কোন জোছনা রাতে এক আকাশ ভালোবাসা নিয়ে শব্দগুলো সাজাবি কাগজে, তারপর আমার মত শাড়ি পরে সেজেগুজে ছাদে যাবি, তারপর চিঠিটা ছিঁড়ে কুটিকুটি করে উড়িয়ে দিবি আকাশে! আর তাকিয়ে দেখবি, জোছনায় ভিজতে ভিজতে উড়তে থাকা তোর স্বপ্নগুলোকে, তোর ভালোবাসাটাকে।
দেখিস, কেমন অপার্থিব একটা অনুভূতি হয় তখন!
ভীষণ অন্যরকম!
হারানোর পরই আপন জিনিসের মর্যাদা বুঝতে পারি মোটামুটি আমরা সবাই।
লুকানো সত্য কথাগুলো আবারও সুন্দর করে তুলে আনলা পু! :guiter:
হারানোর পরই আপন জিনিসের মর্যাদা বুঝতে পারি মোটামুটি আমরা সবাই>> পৃথিবীতে এমন কষ্টের কথা বোধহয় কমই আছে! 🙁
🙁 🙁 🙁
মন খারাপ না করে প্রিয় মানুষগুলোকে আগলে রাখিস যতদিন পারিস, অন্তত চেষ্টা করিস। আমার এই লেখাটা তাহলেই সার্থক হবে। 😐
সেটাই, পু …
অনেক অনে ভাল লিখছিস দোস্ত। সুচিন্তিত লেখা ও সুন্দর করে গুছিয়ে অনেক কিছুই সামনে নিয়ে এসেছিস। এই পোস্ট না পড়লে হয়ত অনেক কিছুই চিন্তার বাইরেই থেকে যেত।
অনেক ধন্যবাদ দোস্ত সময় নিয়ে পড়ার জন্যে। 🙂
খুব ভালো লাগলো লিখা টা … ধন্যবাদ ফিনিক্স :love:
স্বাগতম বন্ধু! :love:
আজকের পৃথিবীতে মানুষের জীবন শুধুই তাদের ব্যস্ততা নিয়ে, কিন্তু মানুষ একটা গোটা জীবন তৈরি করতে পারে শুধুমাত্র অন্যকে কিছু উপহার দিয়ে- হয়তো তা কেবলই একটা বাক্য, একটুখানি স্পর্শ, এক টুকরো হাসি কিংবা সামান্য একটু সময়। হয়তো কারো কারো জীবনের এই অল্প আর সামান্য জিনিসগুলোই অন্য কারো কাছে পূর্ণতার মত, হয়তো কারো ছোট্ট একটু সময় অন্য কারো জন্য এক-একটা জীবনের সমান!
(Y)