ওই দেখা যায় চাঁদ!

কয়েকদিন আগে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বিজ্ঞান বিষয়ক প্রবন্ধ লেখা’ বিষয়ে একটি ওয়ার্কশপ হয়। ওয়ার্কশপের এক পর্যায়ে সবাইকে একটি টপিক এবং সেই সংক্রান্ত কিছু তথ্য দেয়া হয় এবং বলা হয় এগুলো দিয়ে একটি প্রবন্ধ লিখতে। আমি এই লেখাটি লিখেছিলাম। এটা দেখে ভাইয়া বললেন, এটা হয়তো সাহিত্য হয়েছে কিন্তু বিজ্ঞান প্রবন্ধ মোটেই হয়নি। যাউকগা, লেখা তো লেখাই। ব্লগে দিতে তো আর দোষ নাই। তাই…

গোলাকার চাঁদ তো সবাই দেখেছেন, কেউ কি কখনো তরল চাঁদ দেখেছেন? তরল চাঁদ দেখতে হলে চলে আসতে হবে শাবিপ্রবি বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে যখন তা দক্ষিন-পূর্ব আকাশে অবস্থান করে। কুমারগাঁও পাওয়ার স্টেশনের চুল্লীর সৃষ্ট তাপের কারনে বায়ুস্তরে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এই কারনে চাঁদ থেকে আসা আলোর স্থিরতা নষ্ট হয়। ফলে মনে হয় চাঁদ তরল হয়ে গেছে। এই যে বললাম ‘চাঁদ থেকে আসা আলো’। এটা এক অর্থে ভূল কেননা চাঁদের নিজস্ব কোন আলো নেই। সূর্যের ধার করা আলো নিয়েই তার যত জারিজুরি। তবে এই ধার করা আলো সে কোনদিন ফিরিয়ে দেবে কিনা তা আমার জানা নাই। যাই হোক, তরল চাঁদ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট থেকে দেখা গেলেও পৃথিবীর বৃহত্তম তরলের ভান্ডার মানে সমুদ্রের প্রতি চাঁদের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। চাঁদের কারনেই ঘটে জোয়ার-ভাটা। চাঁদ-সূর্য-পৃথিবীর কেন্দাতিগ বলের কারনে সমুদ্রের কোন কোন অঞ্চলের পানি ফুলে ওঠে অন্য অঞ্চলের পানি নেমে যায়। এই যে চাঁদ, মানুষ হাজার বছর ধরে দেখছে। কত কবিতা, গল্প, গবেষনা এই চাঁদকে নিয়ে। কিন্তু, এটা মানুষের সৌভাগ্য কিংবা দূর্ভাগ্য যে চাঁদের শুধু একটা মুখই আমরা দেখতে পাই। পৃথিবীর চারপাশে আবর্তন কালে এই চাঁদ নিজ অক্ষের উপরও একবার ঘুরে আসে বলে এমনটি হয়। এই এক মুখেরই কত রূপ! অমাবস্যা থেকে পূর্ণিমা পর্যন্ত চাঁদের রূপ বদলায়, কাস্তে বাঁকা আকার থেকে নিখুত  পাই আর স্কয়ারের এর বৃত্ত সবই আমরা দেখি। এই পরিবর্তনগুলো বারবার ফিরে তার কারন পৃথিবীর চারদিকে চাঁদের আবর্তনকাল মোটামুটি ধ্রুব। ২৭ দিন, ৭ ঘন্টা ৪৫ মিনিট। কোন কোন মাসে আমরা দুইবার পূর্ণিমা দেখতে পাই, একে তখন ব্লু-মুন বলে। সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরন। এই মুন মোটেও ব্লু নয়। চাঁদ শুধু চোখে দেখি, ছোঁয়া যায়না। এই ব্যাপারটা নিয়ে কবি সমাজে হাহাকারের অন্ত নাই। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, মানবজাতি যখন চাঁদ ছুঁতে পারার সামর্থ্য অর্জন করল তখন চন্দ্রজয়ে পাঠালো কিছু বৈজ্ঞানিককে। ১৯৬৯ সালের ২০ জুলাই পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদের বুকে মানুষের পদচিহ্ন একে দেন নিল আর্মস্ট্রং এবং এডুইন অলড্রিন। চাঁদ ছুঁয়ে আসার পর নানান ভাবে তারা নিজেদের অনুভূতি ব্যাক্ত করলেও কবিতায় করেছেন বলে কখনো শোনা যায়নি। কবিসমাজ, তোমরা মুড়ি খাও!

রুহশান আহমেদ সম্পর্কে

ছোটবেলা থেকেই টুকটাক লিখতাম, পত্রিকায় পাঠাতাম। ছাপা হতোনা, ভাবতাম দেশে এত লেখক কেন! তারা না থাকলে হয়তো আমার লেখা ছাপাত। যেদিন ব্লগের সাথে প্রথম পরিচয় হয়, আমি যেন আকাশের চাঁদ না, আস্ত একটা গ্যালাক্সী পেয়ে গেলাম। সেই গ্যালাক্সীতেই অবিরত বিচরন, বিট বাইটের প্রহেলিকায় একটু একটু অস্তিত্ব রেখে যাওয়া... পাথর কুঁচি, পাতা বাহার, রঙ্গনে- ভীড় জমালো শৈশবেরা-  রৌদ্রহীন এই বিষন্নতার প্রাঙ্গনে।
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে হাবিজাবি-এ। স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

6 Responses to ওই দেখা যায় চাঁদ!

  1. ফিনিক্স বলেছেনঃ

    চাঁদ নিয়ে লেখা ভালো লেগেছে। 🙂

    কয়েকটা প্যারা করে দিলে আর সাথে যদি একটা ছবি দেয়া যেতো, তবে আরো ভালো হতো। 🙂

  2. ইকু বলেছেনঃ

    ভালো লাগলো 🙂 8)

  3. মাধবীলতা বলেছেনঃ

    লেখাটা পড়া শেষ করেই এই লাইন ক’টা মাথায় আসল 😀

    আয় আয় চাঁদ মামা টিপ দিয়ে যা, চাঁদের কপালে চাঁদ টিপ দিয়ে যা…

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।