দুনিয়া কাঁপানো ছবিগুলো

একটা ছবি হাজার শব্দের চেয়ে বেশি শক্তিশালী। কিছু ছবি মানুষের ইতিহাস বদলায়, কিছু ছবি  মানুষকে স্বপ্ন দেখায় আর কিছু ছবি মানুষকে করে বাকরুদ্ধ।

এমনই কিছু ছবি:

 

Dead on the Beach 1943


ঘরে বসে কখনো বোঝা যায় না, যুদ্ধ আসলে কি? সাগর তীরে আনন্দের বদলে লাশের সারি নিয়ে আসতে পারে যুদ্ধ। ২০শে সেপ্টেম্বর, ১৯৪৩-এ তোলা ছবি। পাপুয়া নিউ গিনিতে সমুদ্রতীরে মৃত অবস্থায় পরে থাকা আমেরিকান সৈন্যরা।

Biafra 1969

পূর্ব নাইজেরিয়ার লেগবসরা ১৯৬৭ তে যখন নিজেদের স্বাধীন বলে ঘোষণা করে, তাদের গঠিত দেশ বায়াফরা-কে নাইজেরিয়া সমগ্র পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। তিন বছর চলাকালীন যুদ্ধে দশ লাখ মানুষ মারা যায়। প্রোটিনের অভাবে বাচ্চারা kwashiorkor নামক রোগে ভুগতে থাকে, যে রোগে তাদের পেশি ক্ষয় হয়ে যেতে থাকে। একটি ক্যাম্পেই এমন ৯০০ শিশু দেখতে পান ফটোগ্রাফার। এই ছবি প্রকাশের পর সমগ্র বিশ্ব এগিয়ে আসে বায়াফরা-কে সাহায্য করার জন্য।

Nagasaki 1945

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে একটি পারমানবিক বোমা দিয়ে এক মূহুর্তে জাপানের নাগাসাকি শহরের ১৫০০০০ মানুষ মেরে ফেলার সেই মূহুর্ত। ‘মাশরুম ক্লাউড’ নামে পরিচিত বোমা থেকে তৈরী ধোয়ার ছবি, যেটি বিস্ফোরিত হয়, ভূমি থেকে ৫০০ মিটার উপরে।

Breaker Boys1910


সেই বিশ লাখ শিশুশ্রমিকের অংশবিশেষের ছবি যারা ১৯১০-এ আমেরিকায় শিশুশ্রমিকের কাজ করতো। ছবিটার শিশুদের কাজ ছিলো কয়লা থেকে স্লেট আলাদা করা। তাদের নিস্পৃহ চেহারা, চোখে জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা কাঁপিয়ে দেয় মানুষকে। ১৯১০-এ আমেরিকায় শিশুশ্রম বন্ধের আইন তৈরী হয়।

Earthrise 1968


১৯৬৮ সালে চাঁদ থেকে তোলা পৃথিবীর ছবিটি হঠাৎ মনে করিয়ে দেয়, আমরাও এ মহাবিশ্বেরই একটি অংশ। খুব ক্ষুদ্র একটি অংশ!

Execution of a Viet Cong Guerrilla 1968

দক্ষিণ ভিয়েতনামের পুলিশ ক্যাপ্টেন Nguyen Ngoc Loan এক বন্দীকে গুলি করে হত্যা করার মূহুর্তের ছবি। ছবিটি ভিয়েতনামের দুই অংশের যুদ্ধ থামাতে ব্যাপক মানব সমর্থন গড়ে তোলে।

How Life Begins 1965

১৯৬৫ তে প্রকাশিত মানবদেহের ভেতরে মানব শিশুর প্রথম ছবি।

Triangle Shirtwaist Company Fire 1911


কোম্পানির মালিক শ্রমিকরা যেনো কিছু চুরি করে পালাতে না পারে, সে জন্য দরজা তালা দেয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। ১৯১১ এর ২৫শে মার্চ ফ্যাক্টরিতে আগুন লাগলে শ্রমিকদের বের হবার কোন রাস্তা থাকে না। ৩০ মিনিটে মারা যায় ১৪৬ জন। কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার দাবিতে বিপুল সমর্থন তৈরী করে এই ছবি।

Flight 1903


আকাশে উড়ে বেড়ানোর মানুষের বহুকালের স্বপ্ন পূরণের ছবি। ১৯০৩ সালে রাইট ভাইদের তৈরী প্লেন।

First Human X-ray 1896


উইলিয়াম রন্টজেনের স্ত্রী-এর হাতের এক্সরে এর ছবি। পৃথিবীর প্রথম এক্সরে।

Migrant Mother 1936

মন্দা-র সময় নিজের ৭ সন্তানকে খাবার কিনে দেবার জন্য শেষ সম্বল তাবু আর গাড়ির টায়ারগুলোও বিক্রি করে দেন এই মা। অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত এক মা।

The Falling Man 2001

নিজের জীবন যে মানুষের কত প্রিয় তা এই ছবি থেকে দেখা যায়। ওয়ার্ড ট্রেড সেন্টারে হামলার পর ওই ভবনে থাকা ব্যক্তি নামার কোন পথ না পেয়ে ঝাঁপ দেন ভবনের উপর থেকে। কোন অলৌকিক উপায়ে বেঁচে থাকার আশায় হয়তো………

 

স্বপ্ন বিলাস সম্পর্কে

বাস্তবে মানুষ হবার চেষ্টা করে যাচ্ছি। জীবনের নানা পথ ঘুরে ইদানীং মনে হচ্ছে গোলকধাঁধায় হারিয়েছি আমি। পথ খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করি আর দেখে যাই চারপাশ। ক্লান্ত হয়ে হারাই যখন স্বপ্নে, তখন আমার পৃথিবীর আমার মতো......ছন্নছাড়া, বাঁধনহারা। আর তাই, স্বপ্ন দেখি..........স্বপ্নে বাস করি.....
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে ফটোগ্রাফি-এ এবং ট্যাগ হয়েছে স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

31 Responses to দুনিয়া কাঁপানো ছবিগুলো

  1. ছবিগুলো দেখলে দম বন্ধ হয়ে আসে কেন জানি! কিন্তু আশা করেছিলাম এখানে বাংলাদেশের সেই ছবিটাও থাকবে… 🙁

  2. কিনাদি বলেছেনঃ

    দারুণ সংকলন। 🙂

    Biafra 1969 ছবিটা আসেনাই।

  3. খাপছাড়া বলেছেনঃ

    প্রিয়তে!!

  4. অনাবিল বলেছেনঃ

    পোস্টের নাম দেখে ভাবছিলাম কি ছবি হতে পারে…কারণ অনেকটা এই নামে সেইম কিছু ছবি দেখেছি অনেক পোস্টে। কিন্তু মোটেই নিরাশ হতে হয়নি! প্রত্যেকটা ছবি নিজেই কথা বলছে…..প্রায়ই ভাবি মানুষের নিষ্ঠুরতার পাশাপাশি রন্টজেন আর রাইটভাইদের মতো কিছু মানুষ সৃষ্টিতে বাঁচিয়ে রাখে এই পৃথিবীকে…..
    অনেক ভালো লেগেছে ছবিগুলো………..
    ধন্যবাদ 🙂

  5. ফিনিক্স বলেছেনঃ

    দম বন্ধ করে ছবিগুলো দেখছিলাম। কত চাপা কথা যে বলে গেল ওরা আমার সাথে। আর আমি? স্তব্ধ এক কষ্টে কেবল-ই চুরমার হয়ে যাচ্ছিলাম (earthrise, flight, how life begins, first human x-ray ছাড়া)। :crying:

    ছবির তুলনামূলক ব্যবধানে যাব না। তবে আমার কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে রহস্যময় বিষয় বলে যেটি মনে হয়, যেটি আমাকে সবসময় আন্দোলিত করে, মুহুর্মুহু আনন্দে-উত্তেজনায় উদ্বেলিত করে, সেই বিষয়ে একটি ছবি এখানে দেখতে পেয়ে অসম্ভব ভাল লাগলো। এজন্য তোকে একটা স্পেশাল ধন্যবাদ দোস্ত। :happy:

    কিন্তু একটা আক্ষেপের কথাও বলি। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের উপরে অন্তত একটা ছবি অনেক আশা করেছিলাম এখানে থাকবে বলে। একেকটা ছবি দেখতে দেখতে ভাবছিলাম, পরের ছবিটাই হয়ত সেই ছবিটা। এই পোস্টের আরো ভার্সন বের করলে সেটা অবশ্যই মাথায় রাখিস। আর মুক্তিযুদ্ধের শত শত ছবির ভেতরে যে ছবিটা আমাকে অনেক বেশি প্রেরণা দেয়, সেটাই একটু বেশি আশা করব।
    http://insurgencyresearchgroup.files.wordpress.com/2008/04/rivingtonplace-bangladeshchild.jpg

    • স্বপ্ন বিলাস বলেছেনঃ

      তোরেও ধইন্যা। :happy:

      মুক্তিযুদ্ধ এত আলাদা একটা স্পেশাল বিষয় আমার কাছে যে, সেটাকে নিয়ে আলাদা পর্ব করার ইচ্ছা আছে আমার। তোর ছবিটা তখন অবশ্যই থাকবে।
      🙂
      ছবিগুলো অনূভুতিকে এতো বেশী নাড়া দেয়!!!

  6. ফারহান দাউদ বলেছেনঃ

    চরম পোস্ট। পরের পর্ব ঝটপট আসুক।

  7. নিশম বলেছেনঃ

    আমি ২টা ছবি আশা করেছিলাম। ১টা হলো কেভিন কার্টারের সেই ছবিটি ! আরেকটা ফিনিক্স পাখি যেটা দিলো :happy:

    পিলে চমকানো বললে ছবি গুলোর উপমাটা ভালো হবে আমার পক্ষে থেকে !!! BIAFRA 1969 সহ্য করতে কষ্ট হয় ভাই 🙁

    • স্বপ্ন বিলাস বলেছেনঃ

      কিছু ছবি পরের পর্বে দেয়ার ইচ্ছে আছে। 🙂

      কেভিন কার্টারের ছবিটা মানুষের কাছে অনেক পরিচিত, তাই এই পর্বে দেইনি।
      আর ফিনিক্স পাখির ছবি তো অবশ্যই দেয়া হবে। :beerdrink:

      BIAFRA 1969 সহ্য করতে কষ্ট হয় 🙁

  8. বাবুনি সুপ্তি বলেছেনঃ

    প্রতিটা ছবি অনেক কথা বলছে। পোস্ট টা অনেক ভালো হয়েছে ভাইয়া।

  9. রাইয়্যান বলেছেনঃ

    অসাধারণ!! 🙂

  10. নিলয় বলেছেনঃ

    কেভিন কারটারের ছবি আমিও আশা করেছিলাম- কিন্তু নতুন কিছু ছবির কথা জানতে পেরে ভালই লাগলো 🙂 :clappinghands:
    অসাধারণ পোস্ট- প্রিয়তে :huzur:

  11. অচেনা রাজ্যের রাজা বলেছেনঃ

    প্রিয় স্বরে যুক্ত করলাম….

  12. মুবিন বলেছেনঃ

    অসাধারণ।
    পরের পোস্টগুলো তাড়াতাড়ি চাই।

  13. প্রথম-নাম বলেছেনঃ

    অসাধারণ কালেকশন, ধন্যবাদ আপ্নাকে।

    ১৯১০ এর শিশু শ্রমিকদের ছবি দেখে সমসাময়িক বাংলাদেশ আর ইউএসএ সামনে চলে আসলো। আমেরিকার আজকের এই অবস্থানের পেছনে আছে শতবছরের স্মৃতি, একটু একটু করে গড়ে উঠা। বাংলাদেশও হয়তো আরো পঞ্চাশ বছর পরে আজকের আমেরিকার মত অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হবে।

  14. মানুষ বলেছেনঃ

    ভালো একটা বাছাই। তবে অনেক বিখ্যাত ছবিই বাদ পড়ে গেছে। যেমন, কার্তিয়ের ব্রেসঁর সেই ডেসিসিভ মোমেন্ট- এর ছবিটা। ফটোগ্রাফারদের নাম দেয়াটাও জরুরী কিন্তু। ভাল একটা উদ্যাগের জন্য ধন্যবাদ লেখককে।

    • স্বপ্ন বিলাস বলেছেনঃ

      সব সময় ফটোগ্রাফারের নাম খুঁজে পাওয়া যায় না, তাই দেয়া হয় না। তবে কৃতজ্ঞতা থাকবে তাদের প্রতি সব সময়।

      আরও ছবি নিশ্চয়ই সামনের কোন পর্বে আসবে 🙂

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।