গত ২২ নভেম্বর (শুক্রবার) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তার ৫ দিন পর ২৭ নভেম্বর (বুধবার) তার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে।
ফল প্রকাশের পরপর ফেইসবুকের হোমপেইজে অনেকের অনেকরকম স্ট্যাটাসই চোখে পড়েছে। কিছু স্ট্যাটাস ছিল চান্সপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানানোর, কিছু ছিল যারা চান্স পায় নি তাদের প্রতি সান্ত্বনা ও পরামর্শ জানানোর। আরও একরকম স্ট্যাটাস ছিল, এই পরীক্ষা ও রেজাল্টের সমালোচনায়। যেমনঃ প্রশ্ন ফাঁস হওয়া, অন্য বছরের তুলনার অনেক বেশি নম্বর আসা, ইত্যাদি ইত্যাদি।
“প্রশ্ন ফাঁস” – এই চূড়ান্ত নোংরা ইস্যুটা নিয়ে অলরেডি অনেক কথা হয়ে গিয়েছে চারদিকে। বিসিএস, ভর্তি পরীক্ষা থেকে শুরু করে বাচ্চাদের পিএসসি-জেএসসিরও প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার মাধ্যমে এটা সুস্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে আমাদের “অসুস্থ নৈতিকতা” আমাদেরকে কোন পর্যায়ে, কতটা নীচে নামিয়েছে! ঐ লেবু আর এখানে নতুন করে কচলাতে চাচ্ছি না।
অন্য বছরের তুলনায় বেশি নম্বর আসা নিয়েও আমার কোন মন্তব্য আপাতত নেই। কারণ, প্রশ্ন যদি ‘সহজ’ হয়, তবে ‘ফাঁস’ না হলেও বেশি নম্বর আসাটা খুব একটা অস্বাভাবিক কিছু না। অবশ্য ভর্তি পরীক্ষার মত প্রতিযোগিতামূলক একটা পরীক্ষায় প্রশ্ন বেশি ‘সহজ’ হওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত, তা নিয়ে কথা উঠতেই পারে।
কিন্তু, এসব ছাড়াও আরেকটি ঘটনা অনেকটা নীরবে ঘটে গিয়েছে, যেটা নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোন আলোচনা চোখে না পড়ায় শেষ পর্যন্ত লিখতে বাধ্য হলাম।
কয়েকজন ছোট ভাই, কাজিন ও স্টুডেন্টের সাথে কথা বলে এই ‘ভয়ানক’ বিষয়টা টের পেলাম। যেখানে সাধারণত ২-৩ দিনের মধ্যে রেজাল্ট দিয়ে দেয়, সেখানে এবার ৫ দিন সময় নিয়ে তারপর যে রেজাল্টটা দিলো, সেটাতে অসংখ্য “ভুল”!! সবাই জানে, ভর্তি পরীক্ষা এমন একটা পরীক্ষা যেটাতে পরীক্ষা দিয়ে আসার পর একজন পরীক্ষার্থী নিজের “প্লেইস” প্রেডিক্ট করতে না পারলেও নিজের “স্কোর”টা প্রেডিক্ট করতে পারে। এবং এটা সম্ভব। কিন্তু এবার যে ক’জনের সাথে কথা হল, প্রত্যেকেরই রেজাল্টে গড়মিল! উদাহরণস্বরুপঃ আমার স্টুডেন্ট হিসাব করে দেখেছিল সে ৯৫+ পাবেই, অথচ তা তো পায়ই নি, প্লেইস এসেছে ১০,০০০ এরও বাইরে!! কীভাবে এটা হল? খুঁটে খুঁটে জিজ্ঞেস করার পর যা জানলাম, সে ফিজিক্সে উত্তর দিয়েছে ২৭টি প্রশ্নের, অথচ রেজাল্টে দেখছে সে নাকি ১৬টা দাগিয়েছে!! কেমিস্ট্রিতে আবার উল্টো! সে দাগিয়েছেই নাকি ২৪টা, অথচ রেজাল্টে শো করছে ২৬ পেয়েছে!! বাকি সাবজেক্টগুলোর রেজাল্টেও একই অবস্থা! এবং শুধু ওর একার না, ওর বেশ কয়েকজন ফ্রেন্ডেরও! এক ছোট ভাইয়ের কাছেও একই কাহিনী শুনলাম।
এখানে বলা প্রয়োজন, এবারের রেজাল্টে এটা উল্লেখ করা হয়েছে যে কে কোন সাবজেক্টে কয়টা প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে, কয়টা ভুল হয়েছে, আর স্কোর কত। যেটা আগে এভাবে উল্লেখ করা থাকত না (আগে সাবজেক্ট-ওয়াইজ শুধু স্কোরটা দেয়া থাকত)! তাহলে, এত কিছুর পরও এই “ভুল” হওয়ার মানে কী?
ভর্তি পরীক্ষার আগে সবাই অনেক কষ্ট করে, অমানুষিক পরিশ্রম করে। তারপর কেউ সফল হয়, কেউ ব্যর্থ হয়। সেটা স্বাভাবিক নিয়ম। কিন্তু, ভাল পরীক্ষা দিয়েও শুধু রেজাল্টে “ভুল” আসার কারণে এতজন ছাত্রের সমস্ত স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে যাবে, এটা কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না!
হ্যাঁ, ব্যক্তিগতভাবে ফলাফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করার একটা সিস্টেম আছে। পরিচিত যারা সাফার করছে আমি ব্যক্তিগতভাবে সবাইকে সেই পরামর্শই দিচ্ছি। কিন্তু, এটা কখনোই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না যে এতজনের রেজাল্ট ভুল হবে, এবং তাদের পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করতে হবে! ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্ট কোন ছেলেখেলা নয়। এই রেজাল্টের পর যারা চান্স পায় নি, তাদের জন্য এটা এমন একটা মুহূর্ত, যে সবাই মানসিকভাবে অত্যন্ত বিপর্যস্ত! অনেকেই আর কোন পদক্ষেপ নিতে চাচ্ছে না! খুব স্বাভাবিকভাবেই একজন পরীক্ষার্থী যখন তার এক্সপেক্টেশনের আশেপাশেও রেজাল্ট পায় না, তখন সে নিজেকে একেবারে গুটিয়ে নেয়। কারো সাথেই তার কথাগুলো শেয়ার করতে চায় না। নিজেরাই কষ্ট পেতে থাকে। আমি বলতে গেলে অনেকটা জোর করেই তাদের কাছ থেকে তথ্যগুলো বের করেছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি নিজেই পড়ছি। নিজের প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে এরকম বাজে ধারণা পেতে এবং খারাপ কথা বলতে কারোই ভাল লাগে না। কিন্তু, আসলেই খুব কষ্ট হচ্ছে বলতে, ভর্তি পরীক্ষার মত “স্পর্শকাতর” ও গুরুত্বপূর্ণ একটা পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার পর আবার রেজাল্টেও এ ধরণের ‘জঘন্য নোংরামি’ (& I mean it! এটাকে ‘ভুল’ আমি আর বলতে পারছি না!) হতে পারে, এটা দেখার পর নিজেকেই অপরাধী বলে মনে হচ্ছে! চতুর্দিকে সর্বস্তরে অব্যবস্থাপনার নজির দেখতে দেখতে “ধিক্কার” জানানোর ভাষাও হারিয়ে ফেলছি!
প্রশ্ন এখন একটাই, এখন যারা পুনঃনিরীক্ষণ পদ্ধতির ব্যবহার করবে, তারা তো করবেই। কিন্তু অনেকেরই যে এমন হবে যারা এই পদ্ধতির কথা জানেও না, অথবা জানলেও উদ্যোগটা গ্রহণ করবে না; তাদেরকে এভাবে বঞ্চিত করার অধিকার কি আমাদের আছে? নেই। তাহলে?
আমার ছোট ভাইয়াটাই এই রেজাল্ট ভুলের নির্মম স্বীকার!! ও যখন আমায় বললো, ‘বুবু, আমি চান্স না পাই, কোন অসুবিধা নাই, কিন্তু এটা তো আমার রেজাল্ট না, বুবু!!’
আমি কিছুই বলতে পারি নি তখন!! ওর বুকের ভেতর বয়ে যাওয়া হতাশার ঝড়টা শেলের মত বিঁধেছে আমায়!! একজন ঢাবি শিক্ষার্থী হয়ে আমি মুখ বুজে কেবল শুনে গেছি!!
পুনঃনিরীক্ষণ পদ্ধতির ব্যবহারের উপায়টা কী? আমি নিজেই তো জানতাম না!!
আপু, আমার নিজেরই এখন ফাইনাল পরীক্ষা চলছে। এই লেখাটা লিখবার মত ‘সময়’ই আসলে হাতে ছিল না। কিন্তু সত্যি বলছি, গত ২ দিন যাবত এমন একটা অবর্ণনীয় যন্ত্রণায় ভুগছিলাম যে আর সহ্য করতে না পেরে লিখেই ফেললাম। নিজের প্রতিষ্ঠানকে যে এত বড় “প্রতারক” হিসেবে কোনদিন দেখতে হতে পারে, তা কখনও কল্পনাও করি নি!! তবে সবচেয়ে অবাক হয়েছি, এত বড় একটা প্রতারণা নিয়ে কাউকেই তেমন মুখ খুলতে না দেখে!
সম্ভবত অনুমান করতে পারছি আপনি কার কথা বলছেন। ওর সাথেও আমার কথা হয়েছে গতকাল। ওর/ওদের সাথে কীভাবে কথা বলব, কী বলব, সেটাই বুঝতে পারছিলাম না। কিছু বলার মত ‘মুখ’ কী আর আছে?
ওদের কান্নায় প্রভাবিত হয়ে নিজেরই কান্না চলে আসছিলো!
পুনঃনিরীক্ষণ পদ্ধতি সম্পর্কে ভর্তি নির্দেশিকার ১৫ নং ধারায় লেখা আছে, “মেধা তালিকা প্রকাশের তারিখ থেকে পাঁচ কার্য দিবসের মধ্যে কার্জন হল এলাকার অগ্রণী ব্যাংকের শাখায় ৫০০ টাকা নিরীক্ষা ফিস জমা দিয়ে ‘ক’ ইউনিট প্রধান (ডীন, বিজ্ঞান অনুষদ) বরাবর আবেদন করে প্রার্থীর উত্তরপত্র নিরীক্ষা করানো যাবে। নিরীক্ষার ফলে প্রার্থীর অর্জিত নম্বরের পরিবর্তন হলে নিরীক্ষা ফি ফেরৎ দেওয়া হবে এবং মেধা তালিকায় প্রয়োজনীয় সংশোধন করে নেওয়া হবে।”
কিন্তু এতে লাভ কী হবে বলতে পারেন? এত সংখ্যক “ভুল”(?) রেজাল্টের এটা কি কোন যৌক্তিক সমাধান? আমার তো মনে হয়, প্রায় সবারই রেজাল্ট উল্টাপাল্টা করে দেয়া হয়েছে!! এই রেজাল্টে যারা চান্স পেয়েছে, তারা যেহেতু পেয়েই গেল, তাই স্বাভাবিকভাবেই আর মুখ খুলছে না! আর যারা বঞ্চিত হল, তাদের অধিকাংশই অধিক শোকে পাথর হয়ে আছে!! ফলে খবরও পাওয়া যাচ্ছে না যে এই সংখ্যাটা কত ভয়াবহ হতে পারে!
তবে সবচেয়ে ভয়াবহ আশংকা যেটা হচ্ছে, এই পুনঃনিরীক্ষণ পদ্ধতি ব্যবহার করার পরও যে প্রতারণার শিকার হতে হবে না, তার কি কোন নিশ্চয়তা আছে? OMR শীট তো আর ছাত্রের সামনে রি-চেক করা হবে না। একমাত্র আল্লাহই জানেন। আমি আর কাউকে বিশ্বাস করতে পারছি না! কাউকেই না!!
ভুল হয়েছে কি হয় নাই এটা আমি সঠিক ভাবে বলতে পারবো না কারণ আমি আসলে প্রশ্ন ভালোভাবে দেখিও নাই বা কোন স্টুডেন্টও ছিল না যে শিওর হবো, তাই এই ব্যাপারে মন্তব্য করতে পারছি না একদমই তবে অনুজের রেসাল্ট শুনে আমি মোটামুটি একটা ভালো রকমের ধাক্কা খেয়েছি, আর যাই হোক ও যা বলেছে সেটা হওয়ার কথা না তাই যে অভিযোগ ঐটা সত্যি হওয়াটা অস্বাভাবিক না। আর “প্রশ্ন ফাঁস” এর ব্যাপারে বলব আমার জানামতে প্রশ্ন ফাঁস হয় নাই বাট আগের বেশ কয়েকবারের মত এবারও জালিয়াতির অভিযোগ আছে, মেডিক্যালে যেমন আগের রাতে প্রশ্ন পেয়ে সলভ করে নেয় তেমন না ব্যাপারটা, ঐ যে পরীক্ষা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মাঝে সব সেট সলভ করে উত্তর সাপ্লাই দেয়, এই ঘটনা নিয়ে ঢাবিতে আগেও তোলপাড় হয়েছে শুনেছি শুধু গত দুই বছরই এ নিয়ে জাস্ট কথা শোনা যায় নাই। সেটা যাই হোক না কেন যদি “গণহারে” উত্তর ভুল হয়ে থাকে আমার মতে পারসোনাল পুনঃনিরিক্ষণ করানো তো অবশ্যই উচিৎ এবং প্রয়োজনে যদি এই সংখ্যা আসলেই অনেক বেশি হয়ে থাকে তারা একত্রিত হয়ে ভিসি বরাবর এবং প্রয়োজনে প্রেসনোট দিতে পারে তবে সেক্ষেত্রে শতভাগ শিওর হয়ে নেওয়া উচিৎ হবে যে ভুল কিছু হয়েছেই।
আর যদি প্রশ্ন ফাঁসের কথাই আসে, তাহলে বলব জেএসসি আর সমাপনী পরীক্ষার প্রশ্নও ফাঁস হয়েছে আর এটা যেন আমাদের কালচার হয়ে দাড়িয়েছে। মেডিক্যাল নিয়ে এত কথা বলার পরও কিচ্ছু হয় নাই সো আশা করতে পারি না আর। আর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দোষ কিভাবে দেই? এটা তো পুরা বিশাল চক্র, সার্কেল, তবে আমি কিছু বললাম আর না বললাম তাতে তো কিছু আসে যাবে না, যারা ভুক্তভোগী তাদের আওয়াজ তুলতে হবে তা নাহলে ক্ষতি তাদেরই। @লজ্জিত@
অক্ষর, আমি বেশ কয়েকজনের কাছে কথাগুলো শুনে প্রচণ্ড ধাক্কা খেয়ে তবেই লিখতে বসেছি। হ্যাঁ, হতে পারে “প্রশ্ন ফাঁস”-এর ব্যাপারে গুজবই রটে বেশি। এবং তাতে প্রশাসন হয়ত প্রত্যক্ষভাবে দায়ী থাকে না। কিন্তু রেজাল্টে ভুলের দায় তো প্রত্যক্ষভাবে এবং “এককভাবে”ই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উপর বর্তায়!
এই সংখ্যাটা যে খুব কম নয়, সে ব্যাপারে আমি মোটামুটি নিশ্চিত। তুমি যে সমাধানের কথা বললে, সেটা আমারও মাথায় এসেছে। কিন্তু এতেও আমি আশংকামুক্ত হতে পারছি না! কারণ দেখা যাবে এতে চান্সপ্রাপ্ত অনেকেই বাদ পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে, এবং পরে তারা এর বিপক্ষে উল্টো দাবী শুরু করবে!! অতীত অভিজ্ঞতা তো তেমনটাই জানান দিচ্ছে। সেই ‘গ’ ইউনিটের কথা মনে আছে তো?
আমিও ভীষণ লজ্জিত!
ভাই আপনি কি শিওর যে ৬০০ জন এর অধিক ১০০+ নম্বর পেয়েছে?
অন্তত একজনের ব্যাপারে শিওর যে সে ১০০+ নম্বর পেয়ে ৬০০+ রেজাল্ট করেছে। তবে স্বীকার করছি, তার এসএসসি+এইচএসসি-র স্কোরে কমতি আছে কি না তা শিওর না। আর তাই লেখার ঐ জায়গাটা এডিট করে ফেললাম।
অবশ্য যদি সেটা হয়েও থাকে তাতে কিন্তু আমার কোনই আপত্তি নেই। আমার *মূল* আপত্তিটা হল, “ভুল রেজাল্টে”!
পাগল বনে গেলাম ভাই আপনের লেখা পইড়া … নিজের প্রতিষ্ঠান নিয়ে এমন কথাগুলা বলতে বাধলো না ?? পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে অজ্ঞ এক বড় ভাইয়ের লেখা পড়ে নিজে কষ্ট পেলাম … আমি আপনার সাথে পার্সোনালি কথা বলতে চাই আর আপনাকে এই লেখা সরিয়ে নেবার অনুরোধ করছি…
জ্বী ভাই, নিজের প্রতিষ্ঠান নিয়ে এমন কথাগুলো বলতে আমার আসলেই প্রচণ্ড বাধছিল! কিন্তু কী করবো বলুন, নিজের প্রতিষ্ঠান বলেই তো আর “সাত খুন মাফ” হতে পারে না! আর… নিচের মন্তব্যটাও যদি আপনারই হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে আমার ধারণা, আমি “বড় ভাই” নই। ছোট হবার সম্ভাবনাই বেশি। তবে যাই হোক, লেখাটা সরিয়ে নেবার কোন প্রশ্নই আসে না!!
#১. ৬০০ জন আসলে ১০০+ পায় ই নি… এরকম কথা প্রতিবার ই শোনা যায় রেজাল্ট দেবার আগেই শোনা যায়. #২ ‘”কিন্তু, এসব ছাড়াও আরেকটি ঘটনা অনেকটা নীরবে ঘটে গিয়েছে, যেটা নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোন আলোচনা চোখে না পড়ায় শেষ পর্যন্ত লিখতে বাধ্য হলাম।
কয়েকজন ছোট ভাই, কাজিন ও স্টুডেন্টের সাথে কথা বলে এই ‘ভয়ানক’ বিষয়টা টের পেলাম। যেখানে সাধারণত ২-৩ দিনের মধ্যে রেজাল্ট দিয়ে দেয়, সেখানে এবার ৫ দিন সময় নিয়ে তারপর যে রেজাল্টটা দিলো, সেটাতে অসংখ্য “ভুল”!! “” এই প্যারটাতে নীরবে যা ঘটে গেছে তা কি আল্লাহ ই জানেন… আমাদের বার রেজাল্ট দিছিল ছয়দিনের মাথায়…আর পরীক্ষার রেজাল্ট দেওয়া নির্ভর করে কোন অনুষদের অধীনে পরীক্ষা হবে তাদের কাজের গতির উপর… সিএসই এর অধীনে যেবার পরীক্ষা হয়েছিল সেবার দুইদিনের মাথায় রেজাল্ট দিয়েছিল..গতবার থেকে পরীক্ষা হচ্ছে বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে… #৩. প্লেইস আর আন্সার প্রেডিকশনের ব্যাপারে যা লিখেছে তার ব্যাপারে কিছু বলাই ভুল হবে কেননা যে এডমিশন টেস্ট পার করে এসেছে সে ভালোভাবেই জানে এইখানে কার প্রেডিকশন কতটা মিলে… #৫. মুল হাসির জায়গা এই প্যারাটা ” এখানে বলা প্রয়োজন, এবারের রেজাল্টে এটা উল্লেখ করা হয়েছে যে কে কোন সাবজেক্টে কয়টা প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে, কয়টা ভুল হয়েছে, আর স্কোর কত। যেটা আগে এভাবে উল্লেখ করা থাকত না ” গত কয়েক বছর থেকেই ঠিক এভাবেই রেজাল্ট দেওয়া হচ্ছে…প্রতি শিক্ষার্থী কতটা দাগিয়েছে কতটা ভুল আর কতটা ঠিক তার জন্যে কত নাম্বার সবকিছুই রেজাল্টে সে দেখতে পায়…
#১. একজনের কথা জেনেছিলাম যে ১০০+ নম্বর পেয়ে ৬০০+ তম হয়েছে। তবে তার এসএসসি-এইচএসসির স্কোরে কম আছে কি না সেটা জানতে পারি নি। আর তাই ঐ জায়গাটুকু এডিট করে ফেললাম।
#২. রেজাল্ট ৫ দিন পর দিয়েছে – তাতে কোন আপত্তি নেই। কিন্তু তাতে “ভুল” থাকবে কেন?
#৩. ওকে। মানলাম যে প্রেডিকশন মেলে না। ধরুন, আপনি ৯৫ প্রেডিক্ট করে পরে দেখলেন যে ৯০ পেয়েছেন। আপনারই হয়ত কোথাও হিসাবে ভুল হয়েছিলো। সেটা ভিন্ন কথা। কিন্তু অ্যাট লিস্ট, আপনি এটা তো নিশ্চিত জানেন যে *কয়টা প্রশ্নের উত্তর আপনি দিয়েছেন!* নাকি? সেটাতে যদি ১০-১৫টি (বা এমনকি তারচেয়েও বেশি) প্রশ্নের ব্যবধান দেখতে পান, তবুও কি আপনার মনে হবে যে আপনিই ভুল করছেন?
#৪. আপনি বলেছেন, “গত কয়েক বছর থেকেই ঠিক এভাবেই রেজাল্ট দেওয়া হচ্ছে…প্রতি শিক্ষার্থী কতটা দাগিয়েছে কতটা ভুল আর কতটা ঠিক তার জন্যে কত নাম্বার সবকিছুই রেজাল্টে সে দেখতে পায়…” – দুঃখিত। আপনার এই তথ্যের সাথে দ্বিমত পোষণ করছি। ঠিক গত বছর (মানে ২০১২-১৩ সেশনে) কী হয়েছিলো, সে ব্যাপারে শিওর না হলেও, ২০১১-১২ সেশনের পরীক্ষার রেজাল্টেও যে এত ডিটেইল বর্ণনা করা হয় নি, সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত।
*** তবে সর্বোপরি, শেষে একটা কথা বলতেই হচ্ছে, “তথ্যবহুল” এই মন্তব্যে আপনি লেখার বিভিন্ন লাইনের প্রতিউত্তর দিয়েছেন, যুক্তিখণ্ডন করেছেন, সেজন্য ধন্যবাদ। কিন্তু খুব দুঃখ পেলাম যে পুরো লেখার যে *মূল ফোকাস*টা ছিল *রেজাল্টে ভুল হওয়া*, সে ব্যাপারে কিছুই বললেন না! আমার লেখায় কিছু ভুল বের করেই যদি আপনি বলতে চান যে *ভুল রেজাল্টের অভিযোগ* ভিত্তিহীন, তবে আপনাকে কিছু বুঝাবার ক্ষমতা আমার নেই! ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন।
(((#২. রেজাল্ট ৫ দিন পর দিয়েছে – তাতে কোন আপত্তি নেই। কিন্তু তাতে “ভুল” থাকবে কেন?
#৩. ওকে। মানলাম যে প্রেডিকশন মেলে না। ধরুন, আপনি ৯৫ প্রেডিক্ট করে পরে দেখলেন যে ৯০ পেয়েছেন। আপনারই হয়ত কোথাও হিসাবে ভুল হয়েছিলো। সেটা ভিন্ন কথা। কিন্তু অ্যাট লিস্ট, আপনি এটা তো নিশ্চিত জানেন যে *কয়টা প্রশ্নের উত্তর আপনি দিয়েছেন!* নাকি? সেটাতে যদি ১০-১৫টি (বা এমনকি তারচেয়েও বেশি) প্রশ্নের ব্যবধান দেখতে পান, তবুও কি আপনার মনে হবে যে আপনিই ভুল করছেন? ))))
আপনার এই দুই প্যারাতেই কি উত্তর পেয়ে যান না আপনি ?? আপনি যার কথা বলছেন সে নিজেই বলেছে তার উত্তরপত্রে একটা বেশি দাগানো পাচ্ছে আরেক বিষয়ে কম। ওই অতিব মানসিক চাপ এর এক ঘন্টার মধ্যে যে সে একটি বিষয়ের উত্তর গুলো পাশের অন্য বিষয়ের মদ্ধে দাগিয়ে ফেলেনি তার নিশ্চয়তা কি ?? আপনি কি পুরো এমসিকিউ চেক করার প্রসেস সম্পর্কে অবগত ?? সেখানে এমন ভুল হবার সম্ভাবনা যে নেই বললেই চলে তা কি জানেন ?? চান্স না পাওয়াদের কাছে শুনে বিভ্রান্ত ই হবেন যারা চান্স পেয়েছে তাদের কাছে শুনে দেখবেন তো যে সে যা দাগিয়েছে তার থেকে বেশি এসেছে কিনা। আমার দুইটা স্টুডেন্ট পরীক্ষা দিয়েছিল তাদের পরীক্ষার পর আমি বের হবার সাথে সাথেই তাদের প্রশ্নে দাগ দিতে বলি আর পরবর্তীতে নিজে উত্তর মেলাই তাদের কারো বেলায় ই কিন্তু এমন টা হয়নি।
৪. আপনি বলেছেন, “গত কয়েক বছর থেকেই ঠিক এভাবেই রেজাল্ট দেওয়া হচ্ছে…প্রতি শিক্ষার্থী কতটা দাগিয়েছে কতটা ভুল আর কতটা ঠিক তার জন্যে কত নাম্বার সবকিছুই রেজাল্টে সে দেখতে পায়…” – দুঃখিত। আপনার এই তথ্যের সাথে দ্বিমত পোষণ করছি। ঠিক গত বছর (মানে ২০১২-১৩ সেশনে) কী হয়েছিলো, সে ব্যাপারে শিওর না হলেও, ২০১১-১২ সেশনের পরীক্ষার রেজাল্টেও যে এত ডিটেইল বর্ণনা করা হয় নি, সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত।
তাহলে গত বছরেও এভাবে রেজাল্ট দেওয়া হলে ( হয়েছে তার নিশ্চয়তা আমি দিচ্ছি ) আপনার মুল পোস্টে (##
এখানে বলা প্রয়োজন, এবারের রেজাল্টে এটা উল্লেখ করা হয়েছে যে কে কোন সাবজেক্টে কয়টা প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে, কয়টা ভুল হয়েছে, আর স্কোর কত। যেটা আগে এভাবে উল্লেখ করা থাকত না (আগে সাবজেক্ট-ওয়াইজ শুধু স্কোরটা দেয়া থাকত)! তাহলে, এত কিছুর পরও এই “ভুল” হওয়ার মানে কী? )
এই জায়গাটাতে **যেটা আগে এভাবে উল্লেখ করা থাকত না ** এই অংশের সদুত্তর পেতে পারি ??
আমি আপনাকে এই লিঙ্কে গিয়ে রেজাল্ট মিলিয়ে দেখার অনুরোধ করব http://www.edpdbd.org/uap/question_bank/du-A-unit-2013-2014-full-question-and-solution এদের টাও যে সব ঠিক তা না তবে আমার স্টুডেন্ট এর উত্তর পত্র এটার সাথেই মিলিয়েছিলাম।
আরেকটা কথা এবার যে ডাবল এন্সার ছিল এইটা কি জানা আপনার ??
** যাই হউক… এডিট করে বদলে যাই করেন না কেন অনেক দেরি হয়ে গেল হয়তবা। পোস্টের হিট দেখেন। অনেকেই আপনার লেখাকেই রেফারেন্স ধরে সামনে যখন বলবে ঢাবির এক বড়ভাই এর লেখাতেই দেখেছে এমন কথাগুলো কষ্ট আমি আমরাই পাব। শুধু একটা অনুরোধ ভাই। এই ঢাবিকে অনেক ভালোবাসি তবে সেই ভালোবাসা অন্ধ নয়। আমি যা যা বলেছি আপনি চাইলে সামনাসামনি এপের চিপায় চা খেতে খেতে আমি আপনাকে তথ্য প্রমান সহ বোঝাতে রাজি। অনুরোধ একটাই শিউর না হয়ে বিভ্রান্তি ছড়াবেন না এই বিভ্রান্তদের যুগে।
এগজ্যাক্টলি!! এমসিকিউ চেক করার প্রসেসে এমন ভুল হবার সম্ভাবনা আসলেই থাকে না! আর তাইতো প্রশ্নটা উঠছে, যে আসলে এবার হয়েছেটা কী? এসব কি শুধুই “ভুল”? আবার “অন্যকিছু” নয়ত?
আপনি সম্ভবত ধরেই নিয়েছেন যে আমি মাত্র একজন, বা দু’চারজনের কথায় ‘বিভ্রান্ত’ হয়েই চট করে এই পোস্টটা লিখে ফেলেছি! দুঃখিত ভাই, আমারই ব্যর্থতা, আপনাকে আমি বুঝাতে পারি নি। লেখাটায় শুধু *উদাহরণ হিসেবে* একজনের উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু, ফর ইওর কাইন্ড ইনফো, যতজন ভুক্তভোগী হবার খবর এখন পর্যন্ত পেয়েছি, তাতে সংখ্যাটা মোটেও “হাতেগোনা নয়”! বিশাল!! যদি বলি সংখ্যাটা মিনিমাম “শতাধিক”, তবে কি আপনি বিশ্বাস করবেন? না করলে অবশ্য আমার কিছুই করার নেই!
আর আপনি উত্তর মেলানোর লিঙ্ক দিচ্ছেন? সেটা তো অনেক পরের ব্যাপার! ১০০+ বৃত্ত ভরাট করে আসার পর যে ছাত্র রেজাল্টে দেখছে যে সে ২৬টা বৃত্ত ভরাট করেছে (*বৃত্ত ভরাটের সংখ্যা*র কথা বলছি কিন্তু, *স্কোর*এর কথা নয়), সে আর কী উত্তর মিলাবে?
“মানসিক চাপ” সংক্রান্ত যে ব্যাখ্যা আপনি দিলেন, সেটা যদি দু’চারজন… না না, আরও বেশি… ধরুন ৮-১০ জনের ক্ষেত্রেও হত, তাও ভাবতাম যে তাদেরই হিসাবে কোথাও ভুল হচ্ছে, রেজাল্টে না। আর সেক্ষেত্রে, এইরকম ভুল হবার ব্যাপারটা প্রতি বছরই ঘটা স্বাভাবিক, কোন একটা ‘নির্দিষ্ট বছরে’ ঘটার কোন কারণ নাই। সুতরাং এত বিশাল সংখ্যক মানুষ নিজেদের হিসাবের সাথে রেজাল্টের আকাশ-পাতাল পার্থক্য দেখবে, আর তাও মনে করতে হবে যে এটা তাদেরই সবার ভুল, রেজাল্টে কোনই এদিক-সেদিক হয় নি, এটা বোধহয় গোঁড়ামির পর্যায়ে চলে যায়।
অহেতুক তর্ক আর না বাড়িয়ে একটা কথা বলে শেষ করতে চাই। ঢাবির ছাত্র হিসেবে আমরা ঢাবিকে ভালবাসব, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেই ভালবাসা বাসতে গিয়ে যদি বিশ্বাস করতে হয়, যে এতজন, সবাই মিথ্যে কথা বলছে, বা সবাই ভুল করছে, তবে এই ভালবাসা ভবিষ্যতের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।
এখন কথা হচ্ছে এই যে ১০০-২০০ জনের কথা আপনি বলছেন আসলেই নাকি চাপা পিটাচ্ছেন… এই চার-পাচ বছরের ব্লগিং জীবনে এরকম চাপা পিটানো হিটখোড় আমি কম দেখিনাই… তবে বাটে যখন নিজের প্রতিষ্ঠান কে তুলে দেন খারাপ লাগে… আপনাকে অনুরোধ করেছিলাম পোস্ট টা রিমুভ করতে কেননা আপনার এখানে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বোগাস ছাড়া কিছুই লেখা নেই। উল্লেখ করলাম আমি একটা কোচিং সেন্টার এর সাথে জড়িত আমার কোন শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রেই এমনটা হয়নি যেমন টা আপনি বলছেন… অযৌক্তিক আর অসত্য কথা দিয়ে বাটে তুললেন ঢাবিকে হিট খেতে ?? খান খেতে থাকুন… দুঃখিত আপনার মুল্যবান সময় নষ্ট করার জন্যে। আপনি এখনো আপনার একটি যুক্তিও অকাট্য করে তুলতে পারেন নি।এজাম্পশান এর উপর ভিত্তি করে এই লেখা কতটা যৌক্তিক আমি জানিনা। অবশ্য ঢাবিবিদ্বেষী অন্য প্রতিষ্ঠানের কারো লেখা যে এটা না তার ই বা গ্যারান্টি কি। ভালো থাকবেন। আমার অনুরোধ নিজেকে নিজের স্বত্বা কে বটে তুলে দিয়েন না। এটা ভালো কিছু না।
ভাই কয়টা খাতা আর ঢাবি ঠিক করব? আমাদের খাতা ঠিক করলো আবার অনেকের খাতাতো ভুলের কারনে বেশি মার্কস এ এনেছে তাই ২০১১ সালের গ ইউনিটের মত আবার পরীক্ষা নেওয়ার কোনও বিকল্প নেই
আবার পরীক্ষা নেয়াও কিন্তু উপযুক্ত সমাধান হতে পারে না। কারণ একবার যারা ভাল করবে, তারা যে পরেরবারও ভাল করবেই এমন নিশ্চয়তা কিন্তু নেই। সো প্রথমবার ভাল পরীক্ষা দিয়েছে এমন কারো ঘাড়ে কর্তৃপক্ষের ভুলের বোঝাটা চাপিয়ে দেয়ার অধিকারও কিন্তু আমাদের নেই। বরং পুরো রেজাল্ট পুনর্মূল্যায়ন করার দাবী করা যেতে পারে।
ভয়ানক !! কোথায় যাচ্ছে দেশটা ? কোথাও নিস্তার নেই। 🙁
🙁