দয়ার উপত্যকায় ছিলেন যিনি

চলে গেলেন দক্ষিণ আফ্রিকার কিংবদন্তী নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা, ওরফে মাদিবা। বর্ণবাদের বিরুদ্ধে জীবনভর আন্দোলন করে যাওয়া গণতন্ত্রবাদী এই নেতা অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন জীবনে, তাই তো চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন অগণিত মানুষের মনে। তিনি যে বাড়িতে থাকতেন তার নাম দিয়েছিলেন ‘Valley of Mercy’ – দয়ার উপত্যকা। এই মানুষটির চমৎকার কিছু উক্তির অনুবাদ:

“আমার সফলতার পরিধি দিয়ে নয়, বরং কতবার ব্যর্থ হয়েও আমি তা পাশ কাটিয়ে উঠে দাঁড়িয়েছি তা দেখে আমাকে বিচার ক’রো।”

“একজন মানুষ কখনোই জন্ম থেকে গায়ের রঙ, বংশ পরিচয় কিংবা ধর্মের কারণে  অন্য একজন মানুষকে ঘৃণা করতে জানে না। ঘৃণা মানুষ করতে শেখে, আর ঘৃণা যদি শিখে নেয়ার মত ব্যাপার হয় – তার অর্থ মানুষকে ভালোবাসতেও শেখানো যায়। কারণ আমাদের হৃদয়ে ভালোবাসা নিশ্চিতভাবেই ঘৃণার চাইতে সহজাত।”

“অনেক উঁচু কোন পাহাড়ের চূড়ায় উঠে মানুষের অর্জন কেবল একটাই – তখন সে জানতে পারে আরো অনেক, অনেক পাহাড় ডিঙোনো এখনো বাকি।”

“এদেশে আমাদেরকে রাষ্ট্রপতি হওয়ার আগেই জেল খাটতে হয়।”

“নিজের শত্রুকে জানতে হলে শুরুতেই তার প্রিয় খেলা কোন্‌টি তা জেনে নিন।”

“আমাদের যা করার ক্ষমতা আছে তার জন্য নয়, বরং নিজের যোগ্যতার কতখানি আমরা কাজে লাগাতে পেরেছি সেটাই আমাদেরকে অন্য সবার থেকে আলাদা করে।”

“কখনো ব্যর্থ না হওয়াতে নয়, বরং প্রতিটি ব্যর্থতার পর আবার ঘুরে দাঁড়ানোতেই জীবনের গৌরব।”

“পৃথিবীকে বদলে দেয়ার জন্য সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র হলো শিক্ষা।”

“আমরা কীভাবে কিংবা কতটা বদলে গেছি তা বুঝতে পারার সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হলো নিজের জীবনের এমন একটা পুরনো জায়গায় ফিরে যাওয়া যেটা একদমই বদলায় নি।”

“ভয়ের অভাব নয়, বরং সাহসিকতার মানে হলো ভয়কে জয় করা। যার ভয় বলে কিছু নেই সে নয়, বরং সেই মানুষই সাহসী যে নিজের ভয়কে জয় করতে পেরেছে।”

“অসম্ভব কাজগুলো শেষ করার আগে সবসময়েই এগুলোকে অসম্ভব বলে মনে হতে থাকে।”

“মুক্তস্বাধীন হওয়ার মানে কেবল নিজের শেকল ছিঁড়ে বেরুনোই নয়; বরং একই সাথে এমনভাবে বাঁচতে শেখা যা অন্য সবার স্বাধীনতাকেও শ্রদ্ধা করবে, তাদেরকে স্বাধীনতর করবে।”

“এই সুন্দর দেশে একজন মানুষ আরেকজনের হাতে নির্যাতিত হবে – এমনটা আর কোনদিন হবে না, কোনদিনও না, কখনোই না।”

“তুচ্ছ, সাধারণ জীবন যাপন করা – আমরা যেমন জীবন পাওয়ার সামর্থ্য রাখি তার চাইতে কম অর্থপূর্ণ জীবন যাপন করায় কোন গৌরব নেই।”

“একটি চমৎকার মন আর চিন্তাশীল মগজের মত চমৎকার জুটি আর হয় না।”

সামিরা সম্পর্কে

পীচ-গলা তরলে আটকে পা, দুঃস্বপ্ন অন্ধ দুই চোখে/ অসতর্ক হৃদয় পোষ মানে মিথ্যে বলার আফসোসে.../// প্রকাশিত লেখার কপিরাইট সংশ্লিষ্ট লেখক সংরক্ষণ করেন এবং লেখকের অনুমতি ছাড়া লেখা আংশিক বা পূর্ণভাবে কোন মিডিয়ায় পুন:প্রকাশ করা যাবে না।
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে অনুপ্রেরণা, অনুবাদ, ইতিবাচক-এ এবং ট্যাগ হয়েছে , , , , , , , স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

12 Responses to দয়ার উপত্যকায় ছিলেন যিনি

  1. বোহেমিয়ান বলেছেনঃ

    ভালো লাগল খুব।
    কিছু কথা কমন যদিও।

    “আমার সফলতার পরিধি দিয়ে নয়, বরং কতবার ব্যর্থ হয়েও আমি তা পাশ কাটিয়ে উঠে দাঁড়িয়েছি তা দেখে আমাকে বিচার ক’রো।”

  2. অক্ষর বলেছেনঃ

    মাদিবারা অমর। তাদের দৈহিক মৃত্যু হলেও তাদের আদর্শ বেঁচে থাকে। পৃথিবী তার আরেকটি শ্রেষ্ঠ সন্তান হারালো।

  3. ফিনিক্স বলেছেনঃ

    মাদিবা- শ্রদ্ধার জায়গা, ভালোবাসার জায়গা! :huzur:

    অনেকগুলো উক্তিই ভালো লাগলো। আপন মনে হলো।

  4. মাধবীলতা বলেছেনঃ

    অনেক ছোটকালের কথা মনে পড়ে গেল, যখন ডায়েরির পাতায় মনীষীদের উক্তি পড়তাম অনেক আগ্রহ নিয়ে। আসলেই, ভালো লাগার সাথে সাথে নিজের জীবনে কার্যকর করার মাঝেই এই সকল উক্তির, ত্যাগের সার্থকতা। 🙂

  5. রুহশান আহমেদ বলেছেনঃ

    পোস্টটি ভালো লাগলো,
    নেলসন ম্যান্ডেলাকে শ্রদ্ধা।

  6. হৃদয় বলেছেনঃ

    কোন রকম হানা-হানি, রক্তপাত, হিংসা-বিবাদ ছাড়া শান্তির একটা পৃথিবী গড়া সম্ভব, এমন একটা ধারণা পাওয়া যায় মার্টিন লুথার কিংয়ের ‘আই হ্যাভ আ ড্রিম’ স্পীচের লাইনগুলোতে চোখ বুলালে। আমার নিজস্ব অভিমত বলতে পারেন। নেলসন ম্যান্ডেলাও তাই চেয়েছিলেন এবং তিনি সফলও হয়েছিলেন।

    ভা’পুর লেখ নিয়ে সমালোচনা করবার সাধ্য কি! 😛 তবে অসাধারণ কোটেশানগুলোকে সাথে নিয়ে লেখাটা আরেকটু লম্বা করেলে বোধয় আরেকটু বেশি ভাল লাগতো। দেখতে-দেখতে শেষ হয়ে গেল 🙁

    • সামিরা বলেছেনঃ

      ভালো বলেছো।
      তাড়াহুড়োয় লেখা তো, তাই। সম্ভব হলে পরে কখনো হয়তো লিখবো আবার। 🙂
      সময় নিয়ে মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ!

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।