গল্পকার

প্রকৃতির স্বাভাবিক কার্যকলাপে মানুষের হস্তক্ষেপের ফলাফলে খারাপ নয়তো ভালো হবার নজির খুব বেশি নেই। নদী ভরাট, দূষন, বনভূমি ধ্বংস যেমন নানান দূর্যোগ বয়ে এনেছে। তেমনি নানান অণুজীব, গাছ এমনকি প্রাণিকুলেও কাংক্ষিত বৈশিষ্ট চাপিয়ে দেয়ার প্রকৃয়ায় স্বাভাবিক জীববৈচিত্র্যের ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে। আবার যান্ত্রিক সভ্যতার রসদ নানান জ্বালানী এবং খনিজের উপর্যুপরি আহরন ও ব্যাবহার জলবায়ূর স্বাভাবিকত্বে বিশাল প্রভাব ফেলেছে। তবে, মানুষ যুগে যুগে নিজেকে ছাড়িয়ে গেছে। মনুষ্যবিহীন মহাকাশযান দূরের গ্যালাক্সিতে পাড়ি জমায় প্রাণের খোজে। কোয়ান্টাম মেকানিক্স এখন বাচ্চারা স্কুলে পড়ে। অসংখ্য ধরনের বেস পেয়ারের কম্বিনেশন মানুষের জানা সত্বেও, জিনোমের রহস্য আরো গভীরে বিস্তৃত হয়েছে। নতুন ধরনের নাইট্রোজেন বেস তৈরি করে ডিএনএ তে জোড়া দিয়ে এখন জেনেটিক ইঞ্জিনিয়াররা কাজ করেন । আরো মজার ব্যাপার হল, ভীনগ্রহের বুদ্ধিমান প্রাণীরাই মানুষের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করেছে। পয়সাওয়ালারা দূরের গ্রহে ছুটি কাটাতে যায়। এই উন্নতির মূল্য দিতে গিয়ে পৃথিবী এখন আবার আইস এজের মুখোমুখি। এই সমস্যা নিরসনে পৃথিবীর এবং ভীনগ্রহি কয়েকজন বন্ধু বৈজ্ঞানিক আলোচনা করছেন। তবে তারা অপেক্ষা করছেন আরেকজনের, তার নাম ওমেগা। যিনি যতটা বৈজ্ঞানিক,তার চেয়ে বেশি ব্যাবসায়ী। নানান ধরনের ব্যাবসার মধ্যে তার একটি ব্যাবসা এই দূর্যোগ প্রতিরোধ। বিভিন্ন বুদ্ধিমান সভ্যতার কাছে এরূপ দূর্যোগ মোকাবিলার নানান পন্থা বিক্রি করেন।

অস্বস্তিকর নীরবতার অবসান ঘটিয়ে প্রথমে মুখ খুললেন [ভিনগ্রহী]রুকঃ  আপনারা কেন এত চিন্তা করছেন। এটাই তো স্বাভাবিক প্রকৃয়া। ইতিহাস ঘেটে দেখলাম, নুহের মহাপ্লাবন, ব্ল্যাক প্লেগ এধরনের ঘটনা জনসংখ্যা কমিয়ে এক রকম রেনেসা তৈরি করেছিল। তাহলে এইবার কেন এত বিচলিত হচ্ছেন। পুরো প্রজাতি তো আর হারিয়ে যাচ্ছেনা। কাইঃ মানবতা বলে একটা ব্যাপার আছেনা। তাছাড়া চেষ্টা তো করতে দোষ নেই। লিনঃ সমগ্র মানব জাতির কল্যান নিয়ে কাজ করেই বিজ্ঞান এবং এতদূর এগিয়েছে। সাধারন মানুষেরা আমাদের, মানে বিজ্ঞানীদের সবসময় সমর্থন দিয়েছেন। এই অবস্থায় যদি তাদের জন্য আমরা না দাড়াই, এটা বিশ্বাসঘাতকতা।

রুকঃ আমি আসলে আপনাদের এই বিশ্বাস, মানবতা এই ব্যাপারগুলো ঠিক বুঝিনা। তবে অস্বীকার করতে পারেন, জনসংখ্যা যদি একটা সীমার মধ্যে থাকতো। তাহলে আপনারা আরো এগিয়ে যেতে পারতেন। আমাদের গ্রহে কোন এলাকার পপুলেশন সীমার বাহিয়ে গেলে সম্ভব হলে অন্য কোথাও পাঠিয়ে দেয়া হয়। নয়তো স্বেচ্ছামৃত্যু গ্রহন করেন তারা। এবার কাই বললেন, মৃত্যুকে আমরা ভয় পাই এটাও সত্য। আবার মহিমান্বিত কোন উপলক্ষ পেলে তাকে বরন করতেও পারি। সামগ্রিক উন্নতি এটা তেমন একটা উপলক্ষ এখনো হয়ে ওঠেনি আমাদের কাছে…

আলোচনা চলছিল। কিছুক্ষনের মধ্যে উপস্থিত হলেন ওমেগা। সবাই কথা থামিয়ে তার দিকে তাকালেন, তিনি মৃদু হেসে বললেন ‘মাফ করবেন, আমি আসলে আড়াল থেকে আপনাদের কথা শুনছিলাম। এই দার্শনিক সূলভ আলাপচারিতায় আমি একটু দ্বিধায় পড়ে গিয়েছিলাম যে ঠিক জায়গায় এলাম কিনা। তাই একটু দেরী হল। হা হা হা” তার সাথে সবাই হেসে উঠলো, যদিও হাসির রসায়নের একমাত্র ধারক ও বাহক মানুষ এখানে হাসির কিছু পাবেনা। তবে এই ধরনের বহুজাতিক সভায় এটা একটা অদ্ভুত নিয়ম।

কাই বললেন, যাই হোক। আমাদের সভায় আপনাকে স্বাগতম। কাজের কথায় চলে আসি, আপনি অবগত আছেন আমাদের পরিস্থিতির ব্যাপারে। এর সমাধানে আপনি কিভাবে সাহায্য করতে পারেন। ওমেগাঃ দেখুন, সময়ের হিসাবে আপনাদের-মানে মানুষজাতির সাথে এই কসমিক কমিউনিটির যোগাযোগ খুব বেশি দিন নয়। আমরা বহুদিন ধরে এই ধরনের কাজের সাথে জড়িত, সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েই আমরা সহায়তা করব। লিনঃ সহায়তা বলছেন কেন? আপনি তো এর জন্য নিশ্চয়ই কোন মূল্য দাবি করবেন। তাই নয় কি? রুক বললেন, আপনাদের কাজের ইতিহাসে দেখা যায় আয়ন ঝড়, অগ্নুতপাত, ভূমিকম্প, গ্রহানুর সাথে সংঘর্ষ এ ধরনের কাজ প্রায়ই করে থাকেন। কিন্তু, তাই বলে আস্ত বরফ যুগের বিরুদ্ধে কাজ করার নজির পাইনি।

ওমেগাঃ আসলে, পৃথিবীর জন্য-পৃথিবীর প্রাণের জন্য পানি অত্যধিক গুরুত্বপূর্ন। কিন্তু পৃথিবীর বাহিরে প্রাণের জন্য নয়। সৌরজগতের বাহিরে পানির অস্তিত্ব তেমন না পাওয়া এলে বরফ যুগের তো প্রশ্নই আসেনা। বিলঃ আপনার কথায় যুক্তি আছে। কিন্তু তাহলে কি এই ব্যাপারটাকে আপনারা এক্সপ্রেরিমেন্ট হিসেবে দেখছেন? ওমেগাঃ মোটেই না। আমাদের কাছে এমন কিছু সিমুলেটর প্রযুক্তি আছে, যার দ্বারা আমাদের মেথড গুলো বার বার পরীক্ষা করে দেখার পরই কাজে লাগানো হয়। আমরা প্রাণের অস্তিত্ব নেই এমন কিছু গ্রহ উপগ্রহেই ফিল্ড ট্রায়াল চালিয়ে থাকি।

[ভিনগ্রহী]লু বললেন, বন্ধুরা এ ধরনের আলোচনা আসলে ফলপ্রসু নয়। আমাদের সাথে, অর্থাৎ কসমিক কমিউনিটির সাথে যদি আপনাদের যোগাযোগ না হত, তাহলে নিজেদের বুদ্ধিতেই সমস্যার সমাধান করা লাগতো। আমরা আছি, তাই চেষ্টা করছি সবচেয়ে ফলপ্রসূ উপায়ে সমাধান করার। আর এই ক্ষেত্রে যেহেতু ওমেগার জীবিকা লব্ধ অভিজ্ঞতা আছে। তার প্রযুক্তিগত ব্যাপার আপনারা তাকেই দেখতে দিন। কাইঃ কিন্তু, আমাদের নিরাপত্তা এবং তাকে সহযোগীতার ব্যাপারেও তো পরিষ্কার হতে হবে। ওমেগাঃ নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবার কোন চিন্তাই করতে হবেনা। কাজের ক্ষেত্রে সহযোগীতাও তেমন জরুরী নয়। তবে, আমরা যেটা চাই তা হচ্ছে। আপনারা আমার কোম্পানিকে পৃথিবীতে ব্যাবসা করতে দিন, কোন ধরনের শর্তারোপ ছাড়াই। লিনঃ অসম্ভব! আমরা চাহিদা মত কসমিক কারেন্সি দিতে প্রস্তুত। যেহেতু কাজটির গভীরতা অর্থমূল্যে নির্ধারন সম্ভব নয়, তাই আমরা আমাদের প্রযুক্তি, জ্ঞান কিংবা জীববৈচিত্র্যের নমুনা দিয়ে খুশি করতে পারি। কিন্তু তাই বলে শর্তহীন ব্যাবসা! রুকঃ পৃথিবী মেনে নিলেও অন্যান্য গ্রহের ব্যাবসায়ীরা মানবেনা। শর্তহীন ব্যাবসা মানে সম্পুর্ন ক্ষেত্রে একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তার। এইভাবে কোন সুস্থ প্রতিযোগীতা চলা সম্ভব না।

ওমেগাঃ ব্যাপারটা ঠিক তা নয়। পৃথিবীর প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, আপনাদের সভ্যতার তুলনায় আমাদের সভ্যতার সময়কাল অনেক বেশি। শুধু তাই নয়, আরো কিছু ব্যাপার আছে যার কারনে আপনাদের কাছে জবাবদিহি কিংবা হস্তক্ষেপ সহ্য করে কাজ করা সম্ভব নয়। এই কারনেই এতদিন পৃথিবীতে কাজ করার ব্যাপারে আগাইনি। কাইঃ মাফ করবেন, আমার মনে হচ্ছে- আপনি আমাদের দূর্বলতার সুযোগ নিচ্ছেন? ওমেগাঃ ঠিক তাই, তবে সুযোগটা দূর্বলতার নয়। এটাই নিয়তি, আমাদের গ্রহের সাথে পৃথিবীর সহযোগীতার সম্পর্ক স্থাপন হোক, প্রকৃতি এটাই চায়। খুব দৃঢ় ভাবেই চায়। তাই তো এরকম পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। যেখান থেকে ফিরে যাওয়া মানেই খুব বড় ধরনের ক্ষতি, আপনাদের ক্ষতিটা চাক্ষুস বিধায় নিজের শংকা থেকে এমন কথা আপনি বলছেন।

রুকঃ আমার মনে হচ্ছে ব্যাপারটা শুধু বৈজ্ঞানিকদের আলোচনার মধ্যে নেই। কাইঃ আমারও মনে হয়না এখান থেকে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে। ওমেগাঃ আপনারা সময় নিন। লুঃ আপনারা পৃথিবীতে এটা নিয়ে একটা জনমত জরিপ চালাতে পারেন, সব ধরনের মানুষদের নিয়ে। লিনঃ আমার মনে হচ্ছে এটা একটা ভালো প্রস্তাব! ওমেগাঃ সেক্ষেত্রে আমার দিকটার প্রচারনার দ্বায়িত্ব আমিই নিতে চাই। কাইঃ সেক্ষেত্রে এই কাজে আপনাকে আমাদের কাছে জবাবদিহি কিংবা হস্তক্ষেপ সহ্য করে যেতে হবে। ওমেগাঃ তার জন্য আমি প্রস্তুত, এই অভিজ্ঞতা হয়তো আমাকে আরো ভালো একটা সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে।

এর পরে পৃথিবীতে ওমেগা নিজ উদ্যোগে ব্যাপারটা নিয়ে প্রচারনা চালালেন। কেউ তার পক্ষে গেল, কেউ বিপক্ষে। কেউ কিছুই বললনা, কেউ আবার উপহাস করল ‘জান বাঁচানো নিয়েও ব্যাবসা, তাও আবার এলিয়েনদের সাথে হুহ!’। তবে পরিষ্কার কোন পরিসংখ্যান পাওয়া যাচ্ছিলনা। এর মধ্যে কিছু ভুইফোড় সংগঠন ওমেগার বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টিতে উঠেপড়ে লাগলো। ওমেগা নিজেও দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়লেন। তখনই বোমা ফাটালেন বিজ্ঞানি কাই। তিনি গোপন নথিপত্র ঘেটে বের করলেন কয়েকশ বছর আগে এমডিএস৩৪ গ্রহে ঠিক এরকম এক দূর্যোগ মোকাবিলার ঠিকাদারী নেয় ওমেগার প্রতিষ্ঠান, গ্রহটি পৃথিবীর প্রায় কার্বন কপি। এই গ্রহে তখনকার মত বরফযুগ ফেরানো গিয়েছিল সেটা ঠিক, কিন্তু এর পর পরই গ্রহের কিছু অংশে মারাত্নক তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ে এবং সেইসব অঞ্চলে জীবনের ছিটেফোটাও এখন আর নেই।
এই ঘটনায় মানুষ স্বভাবসুলভ ভাবেই প্রভাবিত হল, তাদের মধ্যে ধারনা জন্মালো যে ওমেগা তার ক্ষমতাবলে এই ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে রেখাছিলেন এতদিনে। তার পক্ষে কথা বলার আর কেউ রইলোনা। তিনি নিজেও আর কিছু বললেননা।

এর পরে কিছুদিন এই ঘটনা নিয়ে তোলপাড় হল। তারপর ধীরে ধীরে একসময় শান্ত হতে শুরু করল। বিজ্ঞানীরা অন্য পথে চিন্তা ভাবনা শুরু করলেন। বিজ্ঞানী কাই-এর জনপ্রিয়তা যথেষ্ট উচ্চতার ছোয়া পেল। সেই সময়, ওমেগা নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করার জন্য পৃথিবীতে আসতে চাইলেন। কিন্তু পারলেন না। তার পর একটি ভিডিও বার্তা প্রচার করলেন। বেশির ভাগ মানুষই পাত্তা দিলোনা। কিন্তু কিছুক্ষনের মাঝেই সেই ভিডিও বার্তাই ভাইরাসের মত ছড়িয়ে পড়ল। সেই বার্তায় ওমেগা বলেনঃ “নিজেদের ভালোটা বুঝতে ভূল করবেন না। এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে আপনাদের বেশ কষ্টই হবে বলে মনে হয়। আমরা, এই কষ্ট দূর করার উপায় জানি। এর প্রতিদানে আমরা শর্তহীন ভাবে ব্যাবসা করার অনুমতি চেয়েছি এই কারনে নয় যাতে আমরা একটি অসম প্রতিযোগীতা সৃষ্টি করি। আমরা চাই যেন আমাদের কাজে মানুষেরা সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে না পারে। আমরা জাতি হিসেবে আপনাদের চেয়ে অনেক সৎ। আর আপনারা এতটাই অসৎ যে স্বার্থের জন্য আপনাদেরি এক প্রতিনিধি পুরো মানবজাতিকে বিপদের মুখে ঠেলে দিতে পারে। বিজ্ঞানী কাই আপনাদের সম্পুর্ন ভূল তথ্য দিয়েছে। আপনাদের বিজ্ঞানীরা তার যুক্তি কেন বিশ্বাস করেছে সেটা একটা বিস্ময়। আমাদের অপারেশনে তেজস্ক্রিয়তার সাথে কোনই সম্পর্ক নেই। এই অপারেশনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে সাময়িক তাপমাত্রা বৃদ্ধি, অভিকর্ষের তারতম্য এবং কার্বনডাইওক্সাইডের বৃদ্ধি। তাহলে এমডিএস৩৪ এ তেজস্কৃয়তা কোত্থেকে আসল? সেটা এসেছে ওই এলাকায় তেজস্কৃয় পদার্থ বহন কারী একটি উল্কার আঘাতে। এর প্রমাণ কসমিক ডাটাবেজে রয়েছে। তবে পৃথিবী থেকে আপনারা দেখতে পারেননি কারন ডাটাবেজের সাথে আপনাদের যোগযোগের পথটি বিজ্ঞানী কাই নিজের কব্জায় নিয়ে ইচ্ছেমত পরিবর্তন করে দিয়েছেন। আমি এর প্রমাণ মুক্ত করে দিয়েছি। অচিরেই আপনাদের হাতে চলে আসবে। দেখুন, আমরা পরজীবি নই। সহজীবি হিসেবে আপনাদের সাথে সম্পর্ক গড়তে চেয়েছিলাম, আর শুরুতেই এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হল। বাকীটা আপনাদের ইচ্ছা। ধন্যবাদ”

ঘটনার আকস্মিকতায় মানুষ স্তব্ধ হয়ে রইল। শেষ পর্যন্ত ওমেগার পক্ষেই জনমত গেল।বিজ্ঞানী কাইকে এর পর আর কেউ দেখেনি। পৃথিবীতে ওমেগা তার অস্থায়ী দপ্তর স্থাপন করলেন। প্রায়ই সেখানে কাজ করেন। কোন একদিন অবসরে তিনি ঘটনাগুলো রোমন্থন করছেন আর ভাবছেন: কোন কাজে সফল হবার সূত্র হল সবগুলো পরিণতি হিসেব করে চলা। পৃথিবীতে কাজটি করার সময় সম্ভাব্য দুই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারত, হয় সমর্থন পাবো নয়তো পাবোনা। তাই আমি দুটোই নিজে নিয়ন্ত্রন করেছি। কিভাবে?

পৃথিবীতে কাজ শুরুর আগে যখন আমার পক্ষে তেমন সমর্থন নেই, বরং বিপক্ষ দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। তখন কাই চুম্বকের মত বিশাল অংশের সমর্থন তার দিকে টেনে নেয় আমার কাজে ত্রুটি এবং ভন্ডামীর কথা মানুষকে জানিয়ে দিয়ে। মানুষ সাহসী কাই-কে ঠিকই বিশ্বাস করেছিল। কেননা সে যেসব তথ্য এবং নির্দেশনা ব্যাবহার করেছিল তা তো ছিল দারুন নিখুত।  কোথায় পেল সে এই মারাত্নক ক্ষেপনাস্ত্র? যার কারনে আমার সাম্রাজ্যের খুটি প্রায় নড়ে গিয়েছিল! সেগুলো আমারই তৈরি করা এবং খুব সূক্ষভাবে সেগুলো তার কাছে পৌছে গিয়েছিল। জনপ্রিয়তার লোভে পড়ে কাই ভূলেই গিয়েছিল যে এই ক্ষেপনাস্ত্র তারই দিকে বুমেরাং হয়ে ফিরে আসতে পারে। তার পর, আমি কাইকে বিশ্বাস ঘাতক এবং মিথ্যাবাদি প্রমাণ করলাম। তখন আমার বাধা আর কেউ থাকলোনা, আর কাই… মানুষের ঘৃণার আগুনে নাশ হয়ে গেল।  মানুষ ভেবেছে আমি এই ঘটনার নায়ক। তারা বোঝেনি যে আমিই এখানে গল্পকার।

রুহশান আহমেদ সম্পর্কে

ছোটবেলা থেকেই টুকটাক লিখতাম, পত্রিকায় পাঠাতাম। ছাপা হতোনা, ভাবতাম দেশে এত লেখক কেন! তারা না থাকলে হয়তো আমার লেখা ছাপাত। যেদিন ব্লগের সাথে প্রথম পরিচয় হয়, আমি যেন আকাশের চাঁদ না, আস্ত একটা গ্যালাক্সী পেয়ে গেলাম। সেই গ্যালাক্সীতেই অবিরত বিচরন, বিট বাইটের প্রহেলিকায় একটু একটু অস্তিত্ব রেখে যাওয়া... পাথর কুঁচি, পাতা বাহার, রঙ্গনে- ভীড় জমালো শৈশবেরা-  রৌদ্রহীন এই বিষন্নতার প্রাঙ্গনে।
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে সায়েন্স ফিকশান, হাবিজাবি-এ। স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

2 Responses to গল্পকার

  1. শারমিন বলেছেনঃ

    ভালো লেগেছে 🙂
    স্পেসিং ঠিক করে নিলে ভালো হত তাহলে আরও ভালো ভাবে বোঝা যেত 🙂

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।