“আকাশ কত দূরে” : চলচ্চিত্র বিশ্লেষণ

ইমপ্রেস টেলিফিল্ম  ও ভার্সা মিডিয়া প্রযোজিত এবং সামিয়া জামান পরিচালিত চলচ্চিত্র “আকাশ কত দূরে” ১৪ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পেল বসুন্ধরা স্টার সিনেপ্লেক্স ও যমুনা ফিউচার পার্কের ব্লকবাস্টার সিনেমা হলে। এর আগে সামিয়া জামান পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র “রাণীকুঠির বাকি ইতিহাস” মূলত রোমান্টিক ও রহস্য এই দুটির মিশেল ছিল। এই চলচ্চিত্রটি দেখে মিশ্র প্রতিক্রিয়া হলেও অনেক বছরের ব্যবধানে তাঁর দ্বিতীয় চলচ্চিত্র “আকাশ কত দূরে” মুক্তি পাওয়ার কারণে এটি দেখার জন্য কিছুটা আগ্রহ তৈরি হয়েছিল। এমনিতেও আমাদের ফিল্ম   ইন্ডাস্ট্রিতে রোমান্টিক-বাণিজ্যিক ধারার বাইরে খুব বেশি (গত কয়েক বছরে এই সংখ্যা একেবারেই নগণ্য) ফিল্ম  তৈরি হয়না। তাই বন্ধুদের শত ব্যস্ততা সত্ত্বেও হুট করে সিদ্ধান্ত নিলাম নিজে গিয়েই সিনেমাটি দেখে আসি। যেই ভাবা সেই কাজ!

বসুন্ধরা স্টার সিনেপ্লেক্সের টিকেট কাউনটারে একজনের মন্তব্য শুনলাম (রসিক কণ্ঠে) ‘সিনেমার নাম কি? আকাশ কত দূরে?! হেঃ হেঃ আকাশ তো অনেক দূরে’। যাই হোক, টিকেট কেটে হলে ঢুকলাম। হল দর্শকপূর্ণ না হলেও মোটামুটি সন্তোষজনক ছিল। শুরুতেই জানলাম এটি সরকারি অনুদানে নির্মিত। প্রত্যাশা কিছুটা বেড়ে গেল। এবার তাহলে মূল গল্পের কথায় আসি।

 মূল কাহিনী:

একজন গর্ভবতী মধ্যবয়সী নারী গ্রামের পথ ধরে হেঁটে চলছেন। মুখে ক্লান্তির ছাপ, হাঁপাচ্ছেন, দৃষ্টি দূর আকাশের পানে। দেখে বুঝা যাচ্ছিল অনেক দূর পথ কষ্ট করে হেঁটে চলেছেন কোন আশ্রয়ের আশায়। হঠাৎ করে লুটিয়ে পড়লেন মাটিতে। একজন কৃষক দৌড়ে আসলেন সাহায্যের জন্য। ভ্যানে করে অচেনা সেই মহিলাকে নিয়ে গেলেন নিজের বাসায়। তার স্ত্রী রীতিমত রেগে বসল যে কেন তার স্বামী এই অচেনা প্রসব যন্ত্রণায় কাতর মহিলাকে ঘরে নিয়ে এসেছে। প্রসব যন্ত্রণার এক পর্যায়ে সন্তানের জন্ম হল এবং মারা যাওয়ার আগে উনি দিয়ে গেলেন একটি সোনার লকেট আর আংটি। কিন্তু লোভে পড়ে সেই কৃষকের স্ত্রী  লকেট আর আংটি লুকিয়ে রাখল। স্ত্রীর অসম্মতিতে উপায় না পেয়ে জন্ম-পরিচয়হীন সেই বাচ্চাকে দিয়ে আসা হল একটি এতিম খানায়। বাচ্চার নাম রাখা হল আনোয়ার রহমান। সবাই তাকে বিচ্ছু (অঙ্কন) বলে ডাকে।  সেখান থেকে তাকে পাঠান হল আরেকটি এতিম খানায় যেখানে পড়াশুনার পাশাপাশি হাতের কাজও করান হয়। কিন্তু বিচ্ছু এখানে এসে নির্মম আচরণের শিকার হয়। দুপুরের খাবারের তালিকায় মাছ/গোশত থাকলেও তাদেরকে শুধু ঝোল আর শিক্ষকদের গোশত দেয়া হয়একদিন গোশত চাওয়ার কারণে তাকে বেত দিয়ে বেধড়ক মারা হয়। তাই জিদ করে সুযোগ বুঝে একদিন দুপুরে খাবারের সময় গোশত চুরি করে খেল। তাতে ধরা পড়ে যাওয়ায় একই পরিণতি কপালে জুটল। দুরন্তপনা বিচ্ছু পিটির সময় তার বন্ধুর সাথে কথা বলার অপরাধে তাকে ও তার বন্ধুকে বেত দিয়ে মারা হয় এবং শাস্তি দেয়া হয় যে তাদেরকে পরদিন পানি তুলতে হবেএরপর আরেকদিন ক্লাসে ‘সংকল্প’ কবিতাটি না পারার কারণে ভয়াবহ শাস্তি পেতে হল। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত বিচ্ছু সিদ্ধান্ত নেয় পালিয়ে যাওয়ার। বন্ধুর সহযোগিতায় সে দেয়াল টপকে চলে যায় দেয়ালের অপর পাশের অজানা পৃথিবীতে। মুক্তির আনন্দে আপ্লুত বিচ্ছু জানেনা সেই পৃথিবীতে টিকে থাকা কত কষ্টের। সিনেমার এ পর্যায়ে গান বেজে উঠল ‘বালক জানে না আকাশ কত দূরে’।

বিচ্ছু ট্রেনে চড়ে পাতাগাঁও গ্রাম ছেড়ে চলে আসল ঢাকায়। ঢাকায় এসে পথে দেখা হল বুলেট আর জসিম নামের দুটি ছেলের সাথে। ওরা বিচ্ছুকে নিয়ে গেল ওস্তাদের (মিশা সওদাগর) কাছে। এভাবে বিচ্ছু অন্ধকার জগতে প্রবেশ করল। সে ওদের সাথে হাত মিলিয়ে শিখে গেল কিভাবে গাড়ির সাইড মিরর চুরি করতে হয়, কিভাবে অন্য বাসার বারান্দা থেকে কাপড় চুরি করতে হয়, কিভাবে ট্যাক্সি চালককে কাবু করে ট্যাক্সি ছিনিয়ে নিতে হয়। কিন্তু এসব কাজ করতে ওর খারাপও লাগত। আর তার মনের এসব কথা সে বলত পরীর (ফারিয়া) কাছে। পরী বিচ্ছুকে খুব আদর করে। পরীও অন্ধকার জগতের বাসিন্দা। বিয়ের নামে প্রতারণা করে সে বহু ছেলের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। তবে এসব কাজে লাভবান হয় তাদের ওস্তাদ। বিনিময়ে ওদেরকে দেয়া হয় আশ্রয়, ভাল খাবার-দাবার আর নাচ-গানের ব্যবস্থা। একদিন গাড়ির সাইড মিরর চুরির সময় বুলেট আর জসিম পালিয়ে গেলেও বিচ্ছু ধরা পড়ে যায়। গাড়ির মালিক (রাজ্জাক) বিচ্ছুকে পুলিশের হাতে না দিয়ে নিজের বাসায় নিয়ে আসেন। বিচ্ছুর মধ্যে তিনি তাঁর ছেলের ছায়া খুঁজে পান। ঘটনাক্রমে একদিন বিচ্ছুর হাতে টাকা দিয়ে উনি গাড়ি থেকে কিছুক্ষণের জন্য নামেন। এসে দেখেন বিচ্ছু নেই। তিনি মনে মনে ভাবেন যে বিচ্ছু নিশ্চয় তাঁর টাকা নিয়ে পালিয়েছে। আসলে বিচ্ছুর হাত থেকে বুলেট আর জসিম টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। বিচ্ছু তাদেরকে তাড়া করতে করতে আবারও আস্তানায় ফিরে আসে। এদিকে পাতাগাঁও গ্রামে বিচ্ছুর খোঁজখবর নিয়ে ভদ্রলোক জানতে পারেন বিচ্ছু তাঁরই নাতি। উনার ছেলে ইমরান জাহাজের ক্যাপ্টেন ছিল। তাঁদেরকে না জানিয়ে সে একদিন এক মেয়েকে বিয়ে করে বসে। পরে ইমরান বিদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেলে ছেলের বউয়ের সাথে আর কখনই দেখা হয়নি। কিন্তু সে মারা যাওয়ার আগে যে লকেট দিয়ে গিয়েছিল তাতে ভদ্রলোক নিজের ছেলের ছবি দেখে বিচ্ছুর পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হলেন। অন্যদিকে পরী আরিফ নামের এক সাংবাদিকের (মুস্তাফা প্রকাশ) সাথে বিয়ে নিয়ে প্রতারণার ফাঁদ পেতে নিজেই সেই ফাঁদে আটকে যায়। ফলে সেই সাংবাদিকের সহযোগিতায় পুলিশ তাদের আস্তানার খোঁজ পেলে তাদের সবাইকে ধরে নিয়ে যায়। সিনেমার শেষ অংশে বিচ্ছু তার দাদুর কাছে আপন ঠিকানায় ফিরে যায়। এভাবেই গল্পের সমাপ্তি ঘটে।

 বিশ্লেষণ:

কিশোর অপরাধের উপর নির্মিত এই চলচ্চিত্রের জন্য এর গল্প ও চিত্রনাট্যকার জুলফিকার রাসেলকে একটা বড়সড় ধন্যবাদ না দিলেই নয়। একই সাথে পরিচালক সামিয়া জামানকেও বাহবা দিব। “রাণীকুঠির বাকি ইতিহাস” দেখার পর গল্প উপস্থাপনা ও পরিবেশনা নিয়ে যে হতাশাগুলো মনে গেঁথেছিল তার অনেকটুকুই ঝেড়ে গেছে “আকাশ কত দূরে” দেখার পর। আমি হলিউড, বলিউড বা টালিউডের ছবির সাথে তুলনা করতে চাই না। আমি এই বিশ্লেষণটা করছি একেবারে আমার মত করে আমাদের ফিল্ম   ইন্ডাস্ট্রির বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে।

  • সিনেমাটির প্রতিটি চরিত্র অতি যত্নের সাথে নির্ধারণ করা হয়েছে। অভিনেতা-অভিনেত্রিরা স্ব-স্ব চরিত্রকে ফুটিয়ে তুলতে নিজেদের সেরা কাজ উপহার দেয়ার চেষ্টা করেছেন। রাজ্জাক, শর্মিলী আহমেদ, মিশা সওদাগরের অভিনয় দক্ষতার কথা নতুন করে কিছু বলার নেই। পাশাপাশি অংকন, ফারিয়া, মুস্তাফা প্রকাশ আর বুলেট, জসিম চরিত্রে দুই শিশুশিল্পী অভিনয়ে যথেষ্ট ভাল করেছেন। সংক্ষেপে বলতে গেলে, পুরো টিমই অনবদ্যতার পরিচয় দিয়েছে।
  • পরিচালক যত্নের সাথে গল্পের প্রতিটি অংশ পরিবেশন করেছেন। কাটছাঁট কিংবা সেরকম কোন এদিক-সেদিক এড়িয়ে গেছেন স্বচ্ছন্দে। অপরাধ জগতে ছোট ছোট শিশু/কিশোরদেরকের কিভাবে অপরাধে জড়িয়ে পড়তে উৎসাহ দেয়া হয় এবং কিভাবে তারা অপরাধগুলো করে তা পরিষ্কারভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। সিনেমার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি দৃশ্য ধারণে কোনরকম তাড়াহুড়া লক্ষ্য করিনি।
  • সিনেমাটিতে যে হাসি বা কমেডি ডায়ালগগুলো ছিল তাতে ভাঁড়ামোর কোন আভাস পাইনি। বরং হলের দর্শকেরা প্রাণ খুলে হাসতে পেরেছে। যেমন- শর্মিলী আহমেদের একটি ডায়ালগ ছিল “শেষমেশ চোরের মধ্যেই নিজের ছেলের ছায়া খুঁজে পেলে! পরের বার ডাকাত নিয়ে এস, তাতে তোমার ছায়া দেখতে পাবে!!” বুলেট চরিত্রটিও তার ভাবভঙ্গি ও ডায়ালগ থ্রয়িং দিয়ে হাসির খোরাক যুগিয়েছে।
  • তিনটি নাচের দৃশ্য থাকলেও তাতে কোন ধরণের দৃষ্টিকটু ইশারা-ইঙ্গিত ছিল না। বরং গল্পের প্রয়োজনেই নাচের দৃশ্যগুলো এসেছিল।
  • সিনেমার শেষাংশে হ্যাপি এন্ডিং থাকলেও সেটা অতিরঞ্জিত মনে হয়নি। অবশ্য এ ধরণের হ্যাপি এন্ডিং বাস্তবে সম্ভব নয় বলেই আমি মনে করি।  তবুও আমাদের দক্ষিণ এশিয় সিনেমার ধারা অনুযায়ী নাচ-গান আর হ্যাপি এন্ডিং ছাড়া দর্শকের মন ভরে না। তাই এটিকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখা যায়। আর সবচাইতে বড় কথা হল, অনেক দিন পর ভিন্ন ধারার পরিচ্ছন্ন ছবি দেখে মনটাই ভাল হয়ে গেল। মনে একটা স্বস্তি আসল, ‘যাক বাবা! বছরের শুরুতে একটা ভাল গল্পের সিনেমা দেখলাম’।
  • বছরে যে কয়েকটা সিনেমা মুক্তি পায় তার সবগুলোই হয় রোমান্টিক-বাণিজ্যিক ধারার, নয়তো রোমান্টিক-অ্যাকশন-বাণিজ্যিক ধারার। শুধু রোমান্সকে প্রাধান্য দিয়ে তৈরি এই সিনেমাগুলোর গল্পও একই ধাঁচের। সেই গণ্ডি পেরিয়ে একেবারে ভিন্ন বিষয় অথচ আমাদের সমাজেরই খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি সমস্যার উপর নির্মিত এই ফিচার ফিল্ম  টি আমার কাছে মনে হয়েছে যথেষ্ট সময়োপযোগী। এ ধরণের কাজকে আরও বেশি উৎসাহিত করা উচিৎ।

পরিশেষে একটা অনুরোধ করব পাঠকদের কাছে, আপনারা বাংলা সিনেমা অবশ্যই দেখবেন, দেখে প্রশংসা বা সমালোচনা করবেন। অনেকেই আছেন যারা বাংলা সিনেমা না দেখেই বলে বসেন এসব বস্তাপচা সিনেমা দেখে সময় আর টাকা দুটোই নষ্ট। আমি তাদেরকে বলতে চাই, আমাদের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা এককালে অনেক ভাল ছিল- এ কথা এখন রূপকথার মত শোনায়। হ্যাঁ, আমরা খারাপ সময় পার করেছি, করছিতাই বলে ভাল সময় আর ফিরে আসবে না তা কে বলেছে? আমরা দর্শকরা যদি সহযোগিতা না করি তাহলে কিভাবে টিকবে পুরো ঢালিউড? ভাল কাজের প্রশংসা না করলে তো খারাপ কাজে সয়লাব হয়ে এক সময় এই শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে। আমরা অন্য দেশের সিনেমা দেখব, তাতে সমস্যা নেই। কিন্তু তাদের সাথে আমাদের তুলনা করতে গিয়ে নাক সিটকানোর মনোভাব আমি কখনই সমর্থন করি না। আর যাই হোক সবকিছুর পরে আমরা বাঙালি, এই ঢালিউড আমাদের চলচ্চিত্রের কেন্দ্রবিন্দু- এটা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। আমাদের বুঝতে হবে আমাদের প্রতিবন্ধকতা আছে, সীমাবদ্ধতা আছে। বাংলা সিনেমাকে নাক সিটকানোর অর্থ দাঁড়ায় নিজেদের ছোট করে দেখা, নিজেদের হীনমন্যতা করা। আর আমরা যদি নিজেদের সম্মান করতে না জানি তাহলে বাইরের দেশ থেকে সম্মান পাবার আশা কিভাবে করি? আসুন, আমরা বাংলা সিনেমা দেখি, ভাল কাজগুলোকে প্রশংসা করি আর খারাপ কাজগুলোকে সমালোচনা করি। এভাবে আলোচনার মাধ্যমে আমরা চলচ্চিত্রে সুস্থ ধারা ফিরিয়ে আনতে পারব- এই বিশ্বাস আমাদের মনে, আমাদের চেতনায় ধারণ করতে হবে।

পাহাড়ি কন্যা সম্পর্কে

বাঙালি আবেগপ্রবণ জাতি, আমিও তার ব্যতিক্রম নই। বাস্তব ও কল্পনা আমার দৈনন্দিন জীবনের সহযাত্রী। জীবনকে ভালবাসি। অনেক স্বপ্ন দেখি, যদিও তা বাস্তব থেকে মাঝে মাঝে দূরে সরিয়ে নিয়ে যায়। তবুও স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি। আমি বরাবরই রাশভারী প্রকৃতির মানুষ, স্বল্পভাষী কিন্তু হাসতে খুব ভালবাসি।
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে চলচ্চিত্র-এ এবং ট্যাগ হয়েছে , , স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

10 Responses to “আকাশ কত দূরে” : চলচ্চিত্র বিশ্লেষণ

  1. বোহেমিয়ান বলেছেনঃ

    খুবই ভালো লেগেছে লেখাটি।
    প্রিয় লিস্টে নিয়েছি।

  2. অক্ষর বলেছেনঃ

    আসলেই বাজে অবস্থা হয়তো মুভি ইন্ডাস্ট্রির। এই যে আমিও যথারীতি পোস্টটা উপেক্ষা করে গিয়েছিলাম মুভির পোস্ট বলে, এমনকি খবরও রাখি নি কোন। এখন নিজেরই বিব্রত লাগছে কেন পোস্টটা আগে পড়লাম না বা এই খবরগুলো জানি না। যাই হোক, খুব ভালো হয়েছে রিভিউটা। বিশেষ করে বিশ্লেষণটা অসাধারণ। তবে ছোট্ট করে একটু বলব যে মুভি রিভিউ দেওয়ার সময় গল্পটা আরেকটু ছোট করলে ভালো হত মনে হয় তাহলে সাসপেন্স থাকত আর দর্শক আগরহ বাড়ত( একটু স্পয়লার পেয়ে গেলাম্ম তাই বলা 😛 )।

    আর আশা রাখি যদি মুভিটা রানিং থাকে তাহলে এই এক্সামের শেষে একবার দেখার চেষ্টা অবশ্যই করব। :happy:

    • পাহাড়ি কন্যা বলেছেনঃ

      এটা আমার লেখা প্রথম মুভি রিভিউ। আমি খুবই দুঃখিত যে গল্পটা বেশ বড় করে ফেলেছি 😳 তবে সময় করে একবার অবশ্যই ছবিটি দেখে আসবেন। ছবিটির পরিচালনা আমার কাছে দারুণ লেগেছে। আশা করি আপনারও ভাল লাগবে 🙂

  3. সামিরা বলেছেনঃ

    দারুণ রিভিউ, শেষের মেসেজটাও দারুণ। আমি সাধারণত একটু ভিন্ন ধারার বাংলা ছবি বের হলেই ঝটপট দেখে ফেলি।

    কিন্তু এটার রিভিউ পড়ে প্রচণ্ড হতাশ, দেখতে যাওয়ার আর বিন্দুমাত্র ইচ্ছা নেই। চার্লস ডিকেন্সের ‘অলিভার টুইস্ট’ উপন্যাসের আগাগোড়া নকল মনে হলো কাহিনীটা। প্রতিটা ঘটনা এতটাই একরকম যে চেষ্টা করেও নিজেকে বোঝাতে পারলাম না যে এটা অরিজিনাল গল্প। খুব বেশি হতাশ!

    • পাহাড়ি কন্যা বলেছেনঃ

      হুমম…এটা ভাল বলেছেন যে ‘অলিভার টুইস্ট’ এর গল্পের সাথে এই ছবিটির গল্প মিলে যায়। তারপরও ছবিটি তৈরি করা হয়েছে বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থাকে কেন্দ্র করে। আর তার চেয়েও বড় কথা হল গল্পের উপস্থাপনা ও পরিচালনা ভাল লেগেছে। বছরে আর কয়টা ছবিই বা এরকম ভিন্নধর্মী গল্পের হয় বলুন? আমি ব্যক্তিগতভাবে আগেও ভিন্নধর্মী গল্প পেলেই হলে গিয়ে বাংলা মুভি দেখে আসতাম। সেই হিসাব ধরলে আমি হতাশ হইনি। তবে ছবি দেখার সিদ্ধান্ত আপনার। আমি এ ব্যপারে কোন চাপাচাপি করব না।

      • সামিরা বলেছেনঃ

        ভিন্নধর্মী গল্পের ছবি ইদানিং অনেক না হলেও বছরে কয়েকবার হলে গিয়ে দেখার মত সংখ্যক হয়। আর গল্প শুধু মিলে যায় বলতে, পুরো গল্পটাকে একটা দেশি ভার্শন দেয়া হয়েছে এটুকুই শুধু। আমি নিজেও ভিন্নধর্মী গল্পের সব ছবি হলে গিয়ে দেখার চেষ্টা করি, এজন্যই আরো বেশি হতাশ হয়েছি।

  4. শারমিন বলেছেনঃ

    রিভিউ ভালো লেগেছে 😀
    মুভিটা দেখা হয় নাই দেখব দেখি 😀

বোহেমিয়ান শীর্ষক প্রকাশনায় মন্তব্য করুন জবাব বাতিল

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।