বই পড়তে ভালোবাসেন এমন কাউকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়, একটি উৎসবের নাম বলুন, যেটা গোটা বাঙ্গালী জাতিকে এক সুতোয় গাঁথে? এক শব্দের যে উত্তরটি শোনা যাবে নিঃসন্দেহে সেটা অনুমান করা খুব কঠিন কিছু নয়। বাঙ্গালীর প্রাণের মেলা, নিজের ভেতরকার ‘আমি’ কে খুঁজে পাওয়ার মেলা, বাঙ্গালিয়ানার মেলা- অমর একুশে বইমেলা।
বইমেলার চিন্তাটি প্রথম যার মাথায় আসে তিনি হলেন প্রয়াত কথাসাহিত্যিক ও জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের সাবেক পরিচালক সরদার জয়েনউদদীন। ষাটের দশকে তিনি যখন বাংলা একাডেমিতে পরিচালক পদে ছিলেন, তখন বাংলা একাডেমি প্রচুর বিদেশি বই সংগ্রহ করত। তিনি ‘Wonderful World of Books’ পড়তে গিয়ে ‘Book’ এবং ‘Fair’ শব্দ দুটি দেখে বেশ পুলকিত বোধ করেন। বইয়েরও যে মেলা হতে পারে, সেই চিন্তার শুরু সেখান থেকেই। ১৯৬৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীর নিচতলায় শিশু গ্রন্থমেলার আয়োজন করেন। ধারণা করা হয়ে থাকে, এটিই ছিল বাংলাদেশের প্রথম বই মেলা। তারপর ১৯৭২ সালের ডিসেম্বর মাসে আন্তর্জাতিক গ্রন্থবর্ষ উপলক্ষে সরদার জয়েনউদদীন বাংলা একডেমি প্রাঙ্গণে একটি আন্তর্জাতিক বইমেলা আয়োজন করেন। তারপর থেকেই বাংলা একাডেমী প্রাঙ্গনে বই মেলার যাত্রা শুরু। (তথ্যসূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ৩১শে জানুয়ারি, ২০১৪)
বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গনে প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে চলা এ উৎসবে লেখক- পাঠক- সমালোচক সবাই মিলে-মিশে একাকার হয়ে যান। পৃথিবীতে আর কোনো বইমেলাই এত দিন ধরে চলে না। সেই দিক থেকে দেখতে গেলে এটি পৃথিবীর দীর্ঘদিনব্যাপী আয়োজিত একটি বইমেলা। তবে এবারই প্রথম বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গন ছাড়াও সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে হচ্ছে বই মেলা। প্রতিবছর বইমেলায় লেখক পরিচিতিতে পুরাতন লেখকদের পাশাপাশি দেখা যায় অনেক নতুন ও তরুণ মুখকে। লেখালেখি জীবনে ব্লগ থেকে বইতে পা রেখেছেন যারা, তাদের ভাবনার জগত পাঠকদের সামনে উপস্থাপনের প্রয়াসে গত বছরের মত এবছরও সরব ব্লগে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হতে যাচ্ছে, ‘বইয়ের ভুবন ও লেখককুঞ্জ’।
অপেক্ষায় থাকুন নতুন বইয়ের, অপেক্ষায় থাকুন নতুন সাহিত্যিকের…
বইমেলা হোক সরব, প্রাণের উৎসবে!
১) নিজের সম্পর্কে কিছু বলবেন?
আমার নাম মো. আমিনুর রহমান। আমি একজন ফ্রিল্যান্স ওয়েব প্রোগ্রামার। লেখাপড়া করেছি সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগে। বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কাজ করি। যখন কাজের পরিমাণ বেড়ে যায় তখন অন্যদের দিয়ে কাজ করাই। ওডেস্ক ও ইলেন্সে আমার দুটি কোম্পানি আছে।
২) লেখালেখির সাথে সম্পর্কের শুরু হলো কী করে?
আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষে পড়ার সময় থেকেই প্রথম আলোর কম্পিউটার প্রতিদিন বিভাগে লেখালেখি শুরু করি। চলছে এখনো। অনেকটা শখের বসেই লেখালেখি শুরু করেছিলাম।
৩) কেন লিখেন? লেখালেখি নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
শখের বসে লেখি। ভালো লাগে তাই লেখি। লেখালেখি নিয়ে ভবিষ্যৎ কোন পরিকল্পনা নেই। যত দিন ভালো লাগবে ততদিন লিখবো। ভালো না লাগলে আর লিখবো না।
৪) লেখালেখির ক্ষেত্রে কোন অনুপ্রেরণা আছে কি? কাউকে কি অনুসরণ করেন?
না। আমি আমার মতো করে লিখি।
৫) অনেকের ধারণা এখন অধিকাংশ লেখকের লেখা একই প্যাটার্নের হয়ে থাকে, নতুনত্ব খুব কম পাওয়া যায় – আপনি কি এর সাথে একমত?
না। তবে আমার মনে হয় কেউ যদি নিজের মত করে লেখে তাহলে অন্যদের সাথে মিলার কথা না। কপি করে লিখলে অন্যদের সাথে মিলে যেতে পারে। আমি অনেক সহজ ভাষায় লিখি এবং লেখার মাধ্যমে পাঠকদেরকে উৎসাহ দেয়ার চেষ্টা করি।
৬) নতুন লেখকদের বিষয়ে পাঠকদের মনোভাব কেমন হওয়া উচিত বলে মনে করেন?
নতুন লেখকদের বিষয়ে পাঠকদের উৎসাহমূলক মনোভাব হওয়া উচিত। কিন্তু আমাদের দেশে এটির বড়ই অভাব। অনেকেই নতুন লেখকদের লেখাকে বিখ্যাত লেখকদের সাথে তুলনা করে সমালোচনা করে। আমার কাছে মনে হয় এটা ঠিক না।
৭) লেখার মাধ্যমে নিজের চিন্তাগুলোকে আপনি পাঠকদের মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। এই ব্যাপারটাকে আপনি ঠিক কীভাবে দেখেন?
এই ব্যাপারটাকে আমি অনেক ইতিবাচক ভাবে দেখি। পাঠকরা বিভিন্ন লেখকের বই পড়ে বিভিন্ন লেখকের চিন্তা ভাবনা সম্পকে জানতে পারে। এতে পাঠকদের অনেক অভিজ্ঞতা হয়।
৮) আপনার লেখা ২য় বই এটি। প্রথম বই প্রকাশের পর পাঠকদের কেমন সাড়া পেয়েছিলেন?
আমার প্রথম বই গত বইমেলাতে বের হয়েছে। নাম- আউটসোর্সিং : শুরুটা যেভাবে এবং শুরু করার পর। বইটি বিক্রির দিক দিয়ে রকমারি.কমে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে। বইটি পড়ে অনেক পাঠক অনুরোধ করেছে কীভাবে কাজ শিখতে হবে তার উপর আরেকটি বই লেখার জন্য। তাই এই বইটি লেখা।
৯) আপনার নতুন প্রকাশিত বই সম্পর্কে পাঠকদের উদ্দেশ্যে কিছু বলবেন?
আমার নতুন বইটির নাম আউটসোর্সিং ২ : কাজ শিখবেন যেভাবে। এই বইটিতে আছে-
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখবেন কীভাবে? গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখবেন কীভাবে? সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন শিখবেন কীভাবে? সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং শিখবেন কীভাবে? অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং শিখবেন কীভাবে? ইমেইল মার্কেটিং শিখবেন কীভাবে? আর্টিকেল রাইটিং শুরু করবেন কীভাবে? ডেটা এন্ট্রি শিখবেন কীভাবে? গুগল এ্যাডসেন্স শিখবেন কীভাবে? গুগল এ্যাডসেন্স থেকে মাসে হাজার ডলার আয় করা যায় কীভাবে? সফল ফ্রিল্যন্সার হওয়া যায় কীভাবে? ছাত্রছাত্রীদের জন্য আউটসোর্সিংয়ের প্রয়োজনীয়তা কতটুকু? এছাড়াও বইটিতে রয়েছে একজন সফল উদ্যেক্তার সাক্ষাৎকার এবং কয়েকজন ফ্রিল্যান্সারের সফলতার গল্প।
বই: আউটসোর্সিং(২): কাজ শিখবেন যেভাবে
লেখক: মোঃ আমিনুর রহমান।
ধরন: ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং
প্রকাশনী: তাম্রলিপি,
স্টল: ১৭৯-১৮১
মূল্য: ২০০ টাকা, কমিশনের পর ১৫০ টাকা।
রকমারি- http://www.rokomari.com/book/76309
অভিনন্দন ভাইয়া
বইয়ের জন্য শুভকামনা রইল 🙂