স্মৃতির ঘর

(১)

রিশান একজন অতি মাত্রায় ইন্টেলিজেন্ট এবং সাহসী ভাইরাস । স্মল সেল লাংস ক্যান্সারের অন্যতম ভাইরাস, সেনেকা ভ্যালী ভাইরাসদের জগতে প্রায় সব বড় বড় পরীক্ষাতেই সে খুব ভাল রেজাল্ট করে উর্ত্তীর্ণ হয়েছে । এখন সে জুনিয়র ভাইরাসদের ক্লাস নিতে পারে । এই সম্মান খুব বেশী ভাইরাস পায়না । কিন্তু তবুও তাকে কেন জানি কেউ পছন্দ করে  না । এর কারণ কী তা রিশান জানে না । তবে সেটা নিয়ে মাথাব্যথা করার সময়ও তার নেই । সারাক্ষণ ভাইরাসদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবার পর আর কোনদিকে মন দেয়ার সময় কোথায় ? এত অল্পবয়সে জেনেটিক মিউটেশনে পারদর্শীতা খুব সহজ কথা নয় । রিশানের আজকাল মনে হয়, পাশের টিউমারের সবচাইতে সুন্দরী আর ডাইনামাইট মেয়েটাকে হয়ত তারপাশেই সবচাইতে ভালো মানাবে ।

তার সবচেয়ে ভাল লাগে ক্লাসের সময়টা । অসংখ্য ছোট ছোট ভাইরাসদের দেখে মনটাই ভাল হয়ে যায় । কলোনী যত বাড়বে, তত বেশী হিউম্যান সেল পাওয়া যাবে । ভাবতেই বুকটা ভরে যায় রিশানের । আর ভাইরাসগুলো কি মনযোগ দিয়েই না তার কথা শোনে ! তবে এদের প্রশ্নগুলোও হয় অদ্ভূত । এই যেমন আজকে এক পিচ্চি জিজ্ঞেস করে, কেমোথেরাপীর সময় আমরা কেন বাসা পাল্টাই । কেন আমরা সবাই মিলে ওইটার বিরুদ্ধে একবারে লড়াই করিনা ? খুবই অদ্ভূত প্রশ্ন । রিশান জীবনেও এই ধরণের কথা শোনে নাই । কোন উত্তরও এলো না তার মুখে । বাচ্চাগুলি এমন খুশী হলো বলার না । মেজাজ পুরোপুরি খিঁচড়ে গেল তার । একমাত্র ভালোলাগার জায়গাটাও অসহ্য বোধ হচ্ছে আজকাল । তবে এমন কিছু করতে পারলেও মন্দ হয়না । সারাক্ষণ সার্ভাইভালের চিন্তায় চিন্তায় ছোট্ট জীবনটা কেটেই যায় একভাবে । উপভোগ করার সময় কোথায় ?

আজকে ক্লাসের শেষে প্রফেসর উইজার্ড  রিশানকে ডেকে পাঠালেন । খুব জরুরী সভা নাকি । সভায় পৌঁছে জানা গেল আজকেই ছেলেটার ব্রেইন অবসার্ভেসনের জন্য ভাইরাস মনোনীত করার দিন । অনেকদিন হয়ে গেছে, তারা ফুসফুসে আছে । কয়েকটা বড়সড় টিউমারও তাদের দখলে । এরা হয়ত বুঝে ফেলছে ব্যাপারটা । সেই দিন ঘুমানোর সময় এক্সরে’র মারাত্মক রে’ টাও টের পাওয়া গেল তার ছোট্ট সেলে । তারপর থেকেই সবাই একটু চিন্তিত । হয়ত কেমো আসা শুরু করবে কিছুদিনের মধ্যেই । ভাইরাসদের জীবনটা এত অদ্ভূত কেন ! একটুও শান্তিতে বসবাসের যো নেই ! পাশের টিউমারের মেয়েটার সাথে দেখা হলে এতদিন ধরে ঠিক করে আসা কথাগুলোও হয়ত আর বলা হবে না তার ।

‘‘…আপনারা সবাই তো জানেন, আমার বাবার কথা । গতবারের মেয়েটার মাথায় তিনিই প্রথম অ্যাক্সেস নিয়েছিলেন । খুবই নীরবে এবং সফলতার সাথে টিকেছিলেন অনেকগুলো মাস । এবং মানুষগুলোর কাছ থেকে লুকিয়ে রেখেছিলেন আমাদের । শেষ পর্যন্ত তারা যখন বুঝতে পারলো, তখন অনেক দেরী হয়ে গিয়েছে । রেডিয়েশন থেরাপীর এক পর্যায়ে যখন আমাদের টিকে থাকাটা খুব কষ্টের হয়ে গিয়েছিল, তখন বাবা বলতেন…’’

‘‘এক্সকিউজ মি, মিঃ রিশান । আপনার সময় শেষ ।’’

অবাক হয়ে পাশে বসা মেয়েটার কথা শুনল সে । দর্শকদের দিকে তাকালো রিশান । সবাই কেমন বিরক্ত মুখ নিয়ে বসে আছে । আশ্চর্য ! এই গল্প না হয় অনেকবার করা হয়েছে তাদের কাছে । তাই বলে এইভাবে বিরক্ত হওয়ার কি আছে ? তাছাড়া আজকের দিনে এটা ছাড়া আর কীই বা বেশী গুরুত্বপূর্ণ কথা থাকতে পারে ? কুতসিত ভাইরাসগুলোর হিংসা ভরা মন !

পুরো সভায় এরপর আরো অনেকক্ষণ অনেকেই অনেক বিরক্তিকর কথা শোনালো । শেষমেশ রিশানকে সিলেক্ট করা হল । সবাই যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচল । প্রফেসর উইজার্ড ভারিক্কি গলায় কিছুক্ষণ মানুষের ব্রেইনে টিকে থাকাটা কত কঠিন এবং তাদের এই অভিযান তাদের পুরো কলোনীর জন্য কতখানি গুরুত্বপূর্ণ তার উপর ছোটখাট বক্তৃতা দিলেন । মানুষের ব্রেইনের সবচাইতে আকর্ষণীয় জায়গা, মানুষের স্মৃতিতে একমাত্র আরোহন করতে সক্ষম ভাইরাস তারা হলেও, রিশানের বাবা তাদের কলোনীকে ঠিক কতোটা ভালবেসে আজীবন স্মৃতি থেকে দূরে ছিলেন, সেই স্মৃতিচারণ করলেন খানিকক্ষণ । সবাই তাঁর কথা স্মরণ করল ভক্তি ভরে ।

রিশানের সাথে সবচাইতে কমপ্যাটিবল হিসেবে নাক বোঁচা বেলাকে ঠিক করা হল । যদিও রিশান মোটেও বুঝতে পারলো না, এই নাক বোঁচা, আহ্লাদী মেয়ে কীভাবে তার কমপ্যাটিবল হয় । জেনেটিক কোডিংই কি সব কিছু ? তার সম্পর্কে ভাল কথা যেটা শোনা যায়, রিশানের মত সেও ব্রেইনে সফলভাবে ঘুরে বেড়াতে পারা একজন সাহসী ভাইরাস  । কিন্তু তার দোষ হল, ছেলেটার মাথার স্মৃতি ঘেঁটে কবিতা পড়া । খুবই ভয়ানক ব্যাপার ! এইসব মানবিক জিনিস যেই মেয়ের ভাল লাগে তাকে যে সারাক্ষণ চোখে চোখে রাখতে রাখতে হবে, সেইটা ভেবেও রিশানের হাই উঠতে লাগল । যদিও বেলাকে এইজন্য তার জীবনের অতি মূল্যবান প্রায় দুই মাস সময় শাস্তি হিসেবে লাংস সেল পাহারা দিতে হয়েছে  দিনরাত, কিন্তু তারপরেও, মেয়ে ভাইরাসের আবার বিশ্বাস কী ? বাবার কাছে রিশান শুনে এসেছে মানুষের ব্রেইনই নাকি সবচাইতে আকর্ষণীয় আর রোমাঞ্চকর জায়গা । একটা জীবন সুন্দর করে কাটিয়ে দেয়া যায় । শুধু একটু স্মৃতি থেকে সাবধান থাকলেই হবে । মাকেও নাকি বাবার সামলাতে বেশ কষ্ট হয়েছিল ! কেন যেন মা’র স্মৃতিগুলি কিছুই তার মনে পড়েনা । আচ্ছা, মা’র কথা জিজ্ঞেস করলে কেউ তাকে ঠিকভাবে উত্তর দেয়না কেন ?

-‘‘হ্যালো, রিশান । আমি বেলা । প্রিন্সেস বেলা ।’’ বলে অত্যন্ত মুগ্ধ চোখে হাসি হাসি মুখ করে দাঁড়িয়ে আছে মেয়েটা । কি আশ্চর্য ! এর নাম প্রিন্সেস হতে যাবে কেন ? মানুষের অনুকরণে নামকরণ ব্যাপারটা এমনিতেই তার কাছে অবমাননাকর লাগে । এখন টাইটেলও !

-‘‘হ্যালো, প্রিন্সেস বেলা ! তুমি যে প্রিন্সেস, আগে জানতাম না !’’

-‘‘নাহ, আমি প্রিন্সেস না । মা আমাকে আদর করে ডাকত । এখন আর কেউ ডাকেনা এই নামে । তুমি শুধু বেলা নামে ডাকলেই চলবে ।’’

-‘‘ওহ ! স্যরি ফর ইউর লস !’’

ভাইরাসদের মানুষের মত এত্ত ইমোশন আসে কোত্থেকে ? রিশানেরও তো বাবা মা কেউ বেঁচে নেই । তাই বলে সে তো এইটা কাঁদো কাঁদো মুখে সবাইকে বলে বেড়ায় না ! ছেলেটার সার্বক্ষণিক অনুরণিত ব্রেইন সেলে থেকে কীভাবে ইমিয়ুন সিস্টেমের সাথে যুদ্ধ করবে এই মেয়ে, সেটাই এখন দেখার বিষয় ! তবে বেলা আর সবার মত  তার দিকে বিরক্তি ভরা দৃষ্টি নিয়ে তাকাচ্ছেনা, এই ব্যাপারটাও খেয়াল করার মত ! রিশান মনযোগ দিয়ে মেয়েটার খুশিতে হাত নেড়ে নেড়ে কথা বলা দেখতে লাগল ।

(২)

ব্রেইন সেলে যাওয়ার অভিজ্ঞতাটা সবসময়েই মনে রাখার মত । ছেলেটার অলস লিম্ফোসাইটগুলো এইখানেই সবচাইতে সচল যেন ! পুরো লিম্ফোসাইটদের কলোনীতে হুলস্থূল পড়ে গেল । বিরক্তিকর বুড়ো লিম্ফোসাইটগুলো যেন যুগ যুগ ধরে ক্ষুধার্ত । তাদেরকে কি আর দশটা ভাসমান প্রোটিন সেলের মত দেখাচ্ছে ? রিশান এমনকি তাদের সাথে যুদ্ধে যাওয়ার আগ্রহ ও বোধ করলো না । নির্বোধ লিম্ফগুলো জানেও না, তারা কার পিছনে ছুটছে ! তবে পুরোপুরি অচেনা যায়গায় এসে একটা অদ্ভূত অনুভূতি হতে লাগল তার । রিশান যত দ্রুত সম্ভব বেলাকে খুঁজে বের করল । মেয়েটা অবশ্য আগের দিনের মত মুগ্ধ দৃষ্টিতে তার দিকে না তাকিয়ে বরং যথেষ্ট বিরক্ত মুখ করে ডাটা নিচ্ছে ।

-‘‘আচ্ছা শোন, এইখানের চারপাশটা এত ঠাণ্ডা আর গুমোট কেন ? আমি শুনেছি ব্রেইনের টেম্পারেচার নাকি এতই বেশী থাকে, সবাই টিকতে পারেনা ।’’

-‘‘তুমি একজন মানুষের শরীরের সব ধরণের মেটাবলিজমের গড়বড় করে, তাকে প্রায় পঙ্গু করে এখানে দিনের পর দিন টিকে থাকবে, আর জিজ্ঞেস করছো ঠান্ডা কেন ? ওর শরীর বেশিরভাগ সময়েই জ্বরের কারণে গরম থাকে । এখন ওষুধ দেয়ার কারণে খানিকটা নিস্তেজ ।’’

মেয়েটার কথার ধরণে যথেষ্ট পরিমাণ অবাক হল রিশান ।

-‘‘কিন্তু তুমি কেন এইভাবে কথা বলছো ? তোমার কথা শুনে মনে হচ্ছে, আমাদেরকে সারাক্ষণ যে মেরে ফেলতে চায় তার জন্যেই বেশী মায়া হচ্ছে তোমার ! গতসপ্তাহেও যে দেড় মিলিয়ন বাচ্চা মারা গেল আমাদের সেটা নিয়ে খুব বেশী দুঃখ নেই তোমার !’’

-‘‘তুমি বোধহয় জানোনা, আমরা প্রতিদিনই এক মিলিয়ন করে বাড়ছি ।’’

-‘‘তাতে কী ?’’

-‘‘তাতে কিছুই না । আমাদের কি উচিত না, কথা না বলে কাজে মনযোগ দেয়া ?’’

পুরোই মানুষের মেয়েদের মত করে মন খারাপ করে কাজ করতে লাগল বেলা । ওর আচরণ যথেষ্ট রহস্যজনক । প্রফেসর উইজার্ডের কথামত সারাক্ষণ ওর আশেপাশে না থাকাটা বড় ভুল হয়ে গেছে মনে হচ্ছে । কিন্তু একজন যথেষ্ট পরিমাণ মিউটেটেড ভাইরাসকে এভাবে পাহারা দেয়ার ব্যাপারটা খুবই বিরক্তিকর । রিশানের কি খেয়েদেয়ে আর কাজ নেই ?

(৩)

আজ ব্রেইনের সব ডাটা নেয়া শেষ হবে । এই কয়েকদিন বেশ উত্তেজনায় গেছে রিশানের । লিম্ফোসাইটগুলোর তাদের কৌশলের সাথে প্রায় তাল মিলিয়ে নতুন কৌশল আয়ত্ত করতে দেখেও চমৎকৃত রিশান । তবে যতটা ভাল যেতে পারত সময়টা, ততটা ভাল যায়নি । মেয়েটার মন দিনে দিনেই যেন আরো বেশী খারাপ হচ্ছে । রিশানের  সন্দেহ দিনে দিনে গভীর হচ্ছে । সে হয়ত আসলেই সুযোগ বুঝে মানুষের স্মৃতির মাঝে দিন কাটাচ্ছে ।

-‘‘দেখো বেলা, আমরা চাইলেই এখানে একটা নতুন টিউমার খুলতে পারি । এরপর ব্রেইনসেলের সাথে মার্জ করে বাকি জীবন পার করে দিতে পারি । আর অন্যান্য ভাইরাসদেরকে নিয়ে আসতে পারি । ছেলেটার এত দুর্বল ইমিউন সিস্টেম দেখে তোমার কি খুশি লাগছেনা ?’’

ছোট করে একটা নিশ্বাস ফেলল বেলা । ছোট ছোট রঙ্গীন চোখ দুটো অনুজ্জ্বল ।

-‘‘তোমার মানুষের স্মৃতি দেখতে ভালো লাগে না, রিশান ?’’

-‘‘মানুষের স্মৃতি ? আমি কেন মানুষের স্মৃতি দেখতে যাব ?’’

-‘‘আসলেই ? তোমার কিছুই মনে নেই ? তোমার মা’র কথা মনে পড়েনা, রিশান ?’’

অবাক হয়ে তাকালো রিশান । হঠাৎ তাল হারিয়ে একটা নিউরন সেলের স্ফুরণে দূরে ছিটকে পড়ল সে । সব কিছু কেমন ওলট পালট লাগছে । বুকের গভীরে কোন একটা হারিয়ে যাওয়া অনুভূতি । খুব ক্ষীণ, কিন্তু স্পষ্ট । একটা গোলাপি জামা পড়া লাল টুকটুকে বাচ্চা মেয়েকে জড়িয়ে একজন মানবী কাঁদছে আকুল হয়ে । দৃশ্যটা তার মাথায় কেমন করে এল কিছুতেই মনে করতে পারছেনা সে । তবে তার ভেতরের নিউক্লিয়াসটা কেমন যেন দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে সেই স্মৃতির তোড়ে ।

-‘‘তুমি কীভাবে আমার মা’র কথা জানো বেলা ? কীভাবে ?’’ রিশানের কথাগুলো কেমন যেন দূর থেকে ভেসে আসা শব্দের মত ।

-‘‘সবাই জানে রিশান । শুধু তোমার মনে নেই । তুমি সেই স্মৃতি ধারণ করে বেঁচে থাকতে পারতেনা । তাই হয়ত তোমার থেকে সেই স্মৃতি সরিয়ে দেয়া হয়েছিল । ওরা আমার থেকেও,আমার থেকেও… ।’’

রিশানের বিদ্ধস্ত অবস্থা দেখে হঠাৎ ভয় পেয়ে গেল বেলা । আর কিছু কি বলা উচিত হবে এই মুহূর্তে ?

মা শেষের দিকে পালিয়ে থাকতেন বাবার থেকে । সে ছিল মা’র সার্বক্ষনিক সঙ্গী । মা সবসময়েই তাকে বাবার কাছে ফিরে যেতে বলত । রিশান প্রায়ই জিজ্ঞেস করতে চেয়েছে, মা’র দোষ কী ছিল । কোনদিন জিজ্ঞেস করা হয়নি । শুধু একদিনের কথা মনে পড়ে । বাবার নীল রঙের ফাইবারগুলো আরো বেশী নীল ছিল সেইদিন । যেন জ্বলছিল । খুব ভয়ানক শাস্তি অপেক্ষা করছিল মা’র জন্য । বেঈমানীর শাস্তি । সবকিছুই হঠাৎ রিশানের চোখে ভেসে উঠতে লাগল এক এক করে । ধমনীর রক্ত স্রোতের ধাক্কায় রিশানের পেঁচানো ফাইবারগুলো আর আগের মত ভাসছে না , কাঁপছে । রক্তস্রোতের এই অদ্ভূত শোঁ শোঁ শব্দটাও খুব পরিচিত লাগছে হঠাৎ । যেন সে অন্য কোথাও শুনেছে এমন । অনেকটা বিশাল নীল জলরাশি থেকে ভেসে আসা শব্দের মত । মুছে যাওয়া স্মৃতি কি সবসময়েই এমন হয় ?

-‘‘তোমার কি কখনো মনে হয়নি রিশান, আমরা দু’জন কেন কমপ্যাটিবল ?’’

-‘‘কেন ?’’

একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিল বেলা । চোখে মুখে অদ্ভূত দ্যুতি খেলা করছে ।

-‘‘আমার সবসময়েই মনে হত, কেন স্রষ্টা সেদিন আমাকে পথ ভুলিয়ে স্মৃতির দরজাটার কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন । তোমার সাথে প্রথম যেদিন আমার নাম ঘোষণা করে, সেদিনও ভীষণ অবাক হয়েছি । এত ভাইরাস থাকতে তুমি কেন ? দিনের পর দিন উত্তর খুঁজেছি । গত সপ্তাহে যখন আবার দ্বিতীয়বারের মত পরিচিত স্মৃতির দরজাটায় গেলাম, তখন সব প্রশ্নেরই উত্তর মিলল ।’’

বেলার কথাগুলো যেন আজকে ওর চাইতেও অদ্ভূত । এতদিন ধরে দেখে আসা হাসিখুশি মেয়েটা নেই আর সে ! অন্য কেউ ! রিশান ইতস্তত কন্ঠে বলল,

-‘‘কি উত্তর পেলে ?’’

-‘‘আচ্ছা, রিশান । তোমার কি কখনো মনে হয় নাই, আমরা ভাইরাস হয়েও কেন মানুষের মনকে পড়তে পারি ?’’

একটা ঢোক গিলল রিশান । খুব অসহায় বোধ হতে লাগল ওর প্রশ্নটার সামনে ।

-‘‘কারণ যাতে আমরা আগে থেকেই বুঝতে পারি, আমাদের উপর কী আঘাত আসছে । আমরা জেনেটিক মিউটেশনে অনেক বেশী এগিয়ে গিয়েছি, আমাদের এমন কিছু ক্ষমতা সৃষ্টি হয়েছে যা আগে ছিলনা ।  তাই তখন আমাদের কলোনীগুলো সাধারণ অ্যান্টিবডির সাথেই পেরে উঠতো না । আমাদের ভাইরাস সংখ্যাও বাড়ছে দিনে দিনে । আর, আর আমরা…’’

-‘‘উঁহু। আমাদের আগে থেকে জেনে যাওয়াটা প্রয়োজন ছিলনা কখনোই । আমরা নিজেরাই মানিয়ে নিচ্ছি প্রতিদিন । বরং মানুষের স্মৃতিতে প্রবেশ ভাইরাসের নীতিমালায় উচ্চমাত্রার অপরাধ, যার শাস্তিও তোমার জানা ।’’

রিশান আর কোন কথা খুঁজে পেল না বলার মত ।

-‘‘তোমার দেয়া উত্তরকে আমার সবসময়েই উত্তর ভাবতে ইচ্ছা হয়েছে । আর সেই জন্য আমি বারেবারেই স্মৃতির দরজাটায় ঢুকতাম । কিন্তু আমার অনেক আগেই আরো কেউ বুঝতে পেরেছে এর গুরুত্বটা । আর তখনই তারা এটাকে নীতিমালায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করে । যেটা বুঝতে পেরেছিলেন, তোমার মা ও । এবং, এবং তিনি নিজের জীবন দিয়ে আমাকে উত্তরটা বুঝতে সাহায্য করে যান ।’’

মা’র চিৎকার কানে ভাসছে রিশানের । পুরো রক্তনালী জুড়েই যেন খুব চেনা একটি ঝড় । হঠাৎ করে খুব একলা লাগছে যেন ।

-‘‘আমি, আমি আর শুনতে চাইনা বেলা । আমাকে ফিরে যেতে হবে ।’’

-‘‘না, রিশান । তুমি শুনতে চাও । তোমার সবুজ ফাইবারগুলোও বলছে, এটা তোমার মনের কথা নয় । ভাইরাসরা কি কখনো পারে, মানুষের মত করে মিথ্যা বলতে ?’’

হতাশ হয়ে রিশান বেলার মুখের দিকে তাকালো । নিজেকে আর আগের রিশান মনে হচ্ছে না তার । যেন সে বেলার হাতে বন্দী একজন অপরাধী । আচ্ছা, বেলার মুখটা এত মায়াবী লাগছে কেন ? তার সাথে কি মা’র চেহারার কোন মিল আছে ?

(৪)

ছেলেটার স্মৃতির ঘরটা কেমন এলোমেলো । অসংখ্য মুছে যাওয়া স্মৃতির অবশিষ্টাংশ চারপাশে । তার মাঝে হঠাৎ ভেসে এল একটা মেয়ের মুখ । গালে কান্নার শুকিয়ে যাওয়া দাগ । দেয়ালে হেলান দিয়ে বসে থাকা মেয়েটার গায়ে রোদের আলো । পুরো দৃশ্যটার মাঝে এত অপার্থিব কষ্ট লুকিয়ে থাকতে পারে, না দেখলে বিশ্বাস হতো না কোনদিন রিশানের !  মেয়েটার গায়ে হঠাৎ বৃষ্টির ফোঁটা পড়তে লাগল । সেই ফোঁটা মেয়েটাকে ধুয়ে দিতে লাগল স্মৃতি থেকে ।

রিশানের কাছে হঠাৎ সব কিছুর অর্থ স্পষ্ট হয়ে এল । তারা ভুল যায়গায় ভুল সময়ে রয়েছে । মানুষের শরীর তাদের জন্য নয় । স্রষ্টা তাদের জন্য আরো অসংখ্য উপায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রেখেছেন । বাবা কিংবা প্রফেসর উইজার্ড সবাই একটা বড় ভুলের মধ্যে আছে । মা’র মায়া ভরা হতাশ চোখের চাউনির মানেও এখন স্পষ্ট । আচ্ছা, তার নিউক্লিয়াস খুঁজলেও কি মা’র স্মৃতিগুলো সে দেখতে পাবে ?

-‘‘চলো, বেলা । আমরা ফিরে যাই । আমাদের হাতে সময় বেশী নেই ।’’ রিশানের কথাগুলো ছেলেটার ব্রেন সেলগুলোর নিরবিচ্ছিন্ন স্পার্কগুলোর সাথে কেমন যেন মিশে গেল । কথা বলে আর সময় নষ্ট করলোনা বেলা । নিজের একটা ফাইবারের সাথে রিশানের একটা ফাইবার জড়িয়ে নিল সে । বোকা ছেলেটার এখন একটু সাহস দরকার যে !

পরিশিষ্ট: রিফাত নামের ছেলেটির স্মল সেল লাংস ক্যানসার একবার কেমো দেয়াতেই সেরে গিয়েছিল । ডাক্তাররা অবাক হয়েছিলেন খুব । এমনটা নাকি বেশী দেখা যায়নি । অবশ্য নীলা নামের মেয়েটি কেন যেন বেশী অবাক হয়নি । সে নাকি জানত, স্রষ্টা রিফাতকে তার কাছ থেকে এত তাড়াতাড়ি কখনোই ছিনিয়ে নিবেন না ।

মুনীরা মারদিয়া সম্পর্কে

একজন ঘুমকুমারী ।
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে গল্প, বিবিধ, সায়েন্স ফিকশান, সাহিত্য-এ এবং ট্যাগ হয়েছে , স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

28 Responses to স্মৃতির ঘর

  1. অক্ষর বলেছেনঃ

    আমি মুগ্ধ ! শেষ করে চুপচাপ গল্পটার দিকে তাকিয়ে ছিলাম ! এটা আপনি কী লিখেছেন? কিভাবে? সায়েন্স ফিকশন মানেই আমার কাছে বেশির ভাগ সময় রোবট, অ্যালিয়েনদের মনে হয়, মাথায় ওরা ভাসে। কিন্তু এটা কি ছিল, ভাইরাস ! তার উপর কেমন যেন একটা যোগসংযোগ ! ঐটা কমেন্ট করতে পারছি না , পাঠক হিসেবে নাহয় আমার কাছেই থাকুক। আর সবচেয়ে ভালো লেগেছে বেশ অনেক কথা রুপক ভাবে উঠে এসেছে গল্পে। ভালো লেগেছে আপু। নিয়মিত লিখবেন প্লিজ। 🙂

    • মুনীরা মারদিয়া বলেছেনঃ

      খুবই খুশি লাগছে তোমার এত্ত ভাল লেগেছে দেখে ।আমি আসলে নিজেও পুরোপুরি সিওর না, এইটা সায়েন্স ফিকশন হয়েছে নাকি ! 😛
      ইনশাআল্লাহ আরেকটু বেশী বেশী লিখার চেষ্টা করবো ! 🙂

  2. শারমিন বলেছেনঃ

    দারুণ 😀 :love:
    নিয়মিত লিখা চাই আপুনি 😀

  3. মেহরাব বলেছেনঃ

    এক কথায় দারুন। Micro World এ living things এর consciousness নিয়ে এভাবে চিন্তা আমি এর আগে করি নি। আসলেই জোস :happy: । Sequel এর অপেক্ষায় রইলাম।

  4. মাধবীলতা বলেছেনঃ

    আচ্ছা এরকম মাথা নষ্ট করা অদ্ভূত রকমের ভালো সাইফাই মানুষ কেমনে লেখে ? একজন বায়োলজিস্টও এত সূক্ষ্মভাবে এবং রূপক দিয়ে লিখতে পারবে কিনা জানি না। সরবে আমার পড়া এখন পর্যন্ত সর্বশ্রেষ্ঠ সাইফাই নিঃসন্দেহে এইটা। তার চেয়েও বড় কথা হল, এইরকম করে যিনি লিখতে পারেন তিনি যে নিয়মিত লেখেন না, তার জন্য তার অনেক শাস্তি পাওয়া উচিত!!

    রেটিং ৫ দিলাম। তবে এখন থেকে প্রতি সপ্তাহে আপনার লেখা চাই আফামণি। আজ থেকে আমি আপনার লেখার বিশাল রকমের ফ্যান হয়ে গেলাম। প্লিজ লিখবেন প্লিজ ! :huzur: :beshikhushi:

    • মুনীরা মারদিয়া বলেছেনঃ

      খুব ভাল লাগছে আপনার এত্ত এত্ত ভাল লেগেছে জেনে ! :happy: আমার জন্য দোয়া করবেন আপু, যেন লিখতে পারি নিয়মিত । :love:

      • মাধবীলতা বলেছেনঃ

        অবশ্যই পারবা ! এই কাহিনীটা নিয়ে একটা এনিমশন মুভি যদি কেউ বানাইত দারুণ হত !! ওহ আচ্ছা, একটা ছোট্ট সমালোচনা করি। গল্পের নামটা খুব কাঠখোট্টা হয়ে গেছে, ভেতরে যে এর কিউট কাহিনী বোঝার উপায় নাই। 😛

        শুভকামনা থাকল অনেক :love:

        • মুনীরা মারদিয়া বলেছেনঃ

          অ্যানিমেশন মুভি ? কী বলেন আপু ?জানেন, আমার জীবনের স্বপ্নই হচ্ছে মুভি বানানো ।আপনিতো জায়গা মত পিঞ্চ করলেন পুরাই ! 😯
          নামকরণটা শেষে খুবই তাড়াহুরা করে করছি ।এবং আমি নিজেও খেয়াল করছিলাম তখন ।আপনি দেখি ধরে ফেলছেন ? 😛

  5. বোহেমিয়ান বলেছেনঃ

    সিম্পলি জোশীলা
    :dhisya:

  6. গাঙচিল বলেছেনঃ

    বাংলাদেশী সাই-ফাই এর কথা উঠলে কল্পনায় সচরাচর যে দৃশ্যটা ভেসে ওঠে (মহাকাশযান, কয়েক জন মহাকাশচারী যাদের মধ্যে এক বা একাধিক মানুষাবয়বে রোবট, গোপন প্রোজেক্ট, নতুন গ্রহের সন্ধানে যাত্রা……) সেই টেমপ্লেট থেকে বের হয়ে একদম ভিন্ন ধাঁচের একটা গল্প পড়লাম!

    ভিন্নধর্মী এবং উপভোগ্য! :love:

    [ইঞ্জিনিয়ারিং এর স্টুডেন্ট হয়েও লেখিকার ইমিউনিটি বিষয়ক নলেজ এর পরিচয় পেয়ে অত্যন্ত বিস্মিত! কারন পাঠ্যক্রমে ইনক্লুডেড থাকার পরও আমার এটা নিয়ে খুব বেশি পড়াশুনা করা হয় নি এখনও। 😳 ]

    • মুনীরা মারদিয়া বলেছেনঃ

      আমার ইম্যুনিটি বিষয়ক তেমন কোন নলেজই নাই । তুমি নিজে ফাঁকিবাজ না হয়ে পড়াশুনা করলেই ধরতে পারতা ! 😛
      আমার মনে হয় আসলে এইটা সাই ফাই এর চাইতে বরং পারসোনিফায়েড গল্পই বেশী বলা যায় । যেখানে একটা ক্যারেক্টারকে মানুষের মত চিন্তা ভাবনার ক্ষমতা আছে ধরে নেয়া হয় । তবে আমার সাইফাই বলতেই ভাল লাগবে বেশী । 😀
      (নাম বদলাইলেও চিনে ফেলছি ! :love: )

      • গাঙচিল বলেছেনঃ

        থার্ড ইয়ারের নতুন কোর্স তো! আরেকটু সময় যাইতে দেন……… পড়াশুনা করে এসে আপনার ভুল ধরবনে! 8)
        নাম বদলাই নাই, পর্থম থেইকাই এই নাম। আপনার অবচেতন মনের কোন কোণে বোধহয় লুকিয়ে ছিল তথ্যটা! :angel_not:

  7. হৃদয় বলেছেনঃ

    গল্পটা পড়ে প্রথমেই আমার যা মাথায় এসেছে তা হলো- লেখিকার চমৎকার কল্পনাশক্তি! মাশাআল্লাহ! কল্পনাশক্তি বেড়ে চলুক বয়সের ঘনমূলের সমানুপাতে 😀

    মুনিরা-অক্ষর কথাগুলো বলেই গেছে, আমিও বলি- প্রচলিত সায়েন্সফিকশন নামক বক্সে যেই গ্রিডগুলো থাকে, আপনার গল্পের কনসেপ্ট তাতে নেই! বক্সের বাইরে গিয়ে যেকোনো কিছু করাই খুব কঠিন। কল্পনাশক্তির অপূর্ব প্রয়োগে থরে-বিথরে আপনি সেটা করলেন!

    এখন গল্প নিয়ে কিছু কথা বলি। পড়ার শুরুতেই একটা খটকা লাগলো- আরে একটা ভাইরাসের নাম আবার রিশান হয় কীভাবে! :thinking: (মানে সাই-ফাই, সায়েন্সফিকশনে কেন্দ্রীয় চরিত্র হিসেবে রিশান নামটা পড়েছি কয়েকটা লেখায়।) ভাইরাসের নাম হবে দুই অক্ষরের, ইকি-পিকি-টিকি-মিকি এরকম 😛 …তবে শেষ প্যারাটার মাধ্যমে আপনি রিশানকে যে উচ্চতায় নিয়ে গেলেন…! প্রশংশা করার মত শব্দ খুঁজে পাচ্ছি না। হ্যাটস অফ আপু… (y)

    আমার কোর্স তালিকায় দুই ক্রেডিট হিসেবে ইম্যুনোলজি বিষয়টা পেয়েছি। আপনার গল্প কিছু কোর ইম্যুনোলজিক শব্দ আছে যেগুলোর গল্পে প্রয়োগ সত্যিকার অর্থেই বিস্মিত করেছে। এটা তখনই যখনই খুব ইন্টারেস্ট নিয়ে তা পড়া হয়। ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যাকগ্রাউন্ডের একজনের পক্ষে এই কাজটা হয়েছে ভেবে আরও বেশি ভালো লেগেছে। সত্যি, পড়ুয়া মানুষদের দেখতেই ভালো লাগে 😀

    আপু অনেক প্রশংসা করলাম :guiter: , আগের কমেন্টগুলোতেও প্রশংসার ফুলঝুড়ি ছিল, সামনের কমেন্টগুলোতেও থাকবে নিঃসন্দেহে। প্রশংসাগুলো হজম করে( 😛 ) আগামী দিনগুলোতেও লেখা পড়ে আমরা যাতে আরও বেশি প্রশংসা করতে পারি সেই ব্যাবস্থা করবেন এমনটা আশা করা যেতেই পারে। আমরা জানি, আপনি ইনশাল্লাহ সেটা পারবেন :love:

    যাবার আগে, আপু শুধু নিজের লেখায় কমেন্টের প্রত্যুত্তরে ধন্যবাদ জ্ঞেপক মন্তব্য করলেই চলবে না, অন্যদের লেখাও পড়তে হবে, মন্তব্য করতে হবে…(আমার লেখা পড়তে বলছি ইনডিরেক্টলি আর কি! 😛 )

    শুভকামনা… শুভকামনা 😀

    • মাধবীলতা বলেছেনঃ

      ইকি-পিকি-টিকি হইলে খুব মজা হইত !! =))

    • মুনীরা মারদিয়া বলেছেনঃ

      কল্পনাশক্তি বেড়ে চলুক বয়সের ঘনমূলের সমানুপাতে! =))
      ভাইয়া তোমার কথাগুলো খুবই সুন্দর । এত্ত সুন্দর কমেন্টের রিপ্লাই কি দিব বুঝতেছিনা ! :love:
      সবাই বলতেছে আমার ইম্যুনোলজির তথ্যগুলো ঠিক । আমি আসলে খুব বেশী পড়াশুনা করে লিখিনাই এই বিষয়ে । এত্ত এত্ত মাইক্রোবায়োলজিস্ট লেখাটা পড়বে, এইটাও লেখার সময় মাথায় আসে নাই । জেনে ভাল লাগছে যে, তেমন কোন ভুল নাই । 😀
      আরো বেশী বেশী লিখার ইচ্ছা আছে অবশ্যই । আর পড়ার এবং কমেন্ট করারও । 😛 (এতদিন ঘুমিয়ে ছিলাম বলে সবকিছুতেই গ্যাপ হয়ে গেছে বেশী 🙁 )

    • মুনীরা মারদিয়া বলেছেনঃ

      ভাইরাসের নাম কেন শুধু ? ভাইরাসদের তো মনে হয় না চোখ, কান থাকে ! 😛
      গল্পের সিক্যুয়েল থাকলে ইকি পিকি মিকি ইত্যাদি রাখার চেষ্টা করা যেতে পারে ! :beerdrink:

    • মুনীরা মারদিয়া বলেছেনঃ

      ভাইরাসের নাম কেন শুধু ? ভাইরাসদের তো মনে হয় না চোখ, কান থাকে ! 😛
      গল্পের সিক্যুয়েল থাকলে ইকি পিকি মিকি ইত্যাদি রাখার চেষ্টা করা যেতে পারে ! :beerdrink:
      তোমার লেখা ইন্ডাইরেক্টলি পড়ে ইন্ডাইরেক্টলি কমেন্ট দিলে হবে ? 😛

      • হৃদয় বলেছেনঃ

        হবে না! 😛

        আপু, ব্যাখ্যা করব কেন হবে না?
        আচ্ছা থাক, ব্যাখ্যা পরেও করা যাবে। দুইটা ‘ই’ শুধু বাদ পড়বে- ডাইরেক্টলি পড়ে ডাইরেক্টলি কমেন্ট করতে হবে 😀
        যেমনটা করেছেন ‘আই থিঙ্ক, আই লাভ হার’ আর ‘বোধ’ এর বেলাতে :love:

        ইকি-পিকিকে নিয়ে সিক্যুয়েল গল্প
        সামনে পেতে যাচ্ছি, :guiter:
        প্রাণ লাচ্ছি না খেয়েও
        ঐটা ভাবতেই আরাম পাচ্ছি! 😛

  8. তরঙ্গ বলেছেনঃ

    আপু, আমি গল্প খুবই কম পড়ি। কিন্তু আপনার লিখাতে কি যেন ছিলো, অনেক বড় লিখা হওয়া সত্ত্বেও একটানা পুরোটা পড়ে ফেললাম। গল্পের শেষটাও চমৎকার হয়েছে। আরেকটু হলেতো আমার এই ভাইরাসদের জন্যই মায়া লেগে যাচ্ছিলো। মানুষের কথা ভুলে তাদের জন্য মানবতাবোধ (!) জেগে উঠছিলো। :p

    লিখাটা অসাধারণ হয়েছে।

    অনেক অনেক ধন্যবাদ লিখাটার জন্য। আর নিয়মিত লিখে যান। 🙂

  9. সামিরা বলেছেনঃ

    ঝড় উঠায় দিলি তো সরবে! 😛 :dhisya:

  10. গল্পটা অসাধারণ…… এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেললাম! 🙂

  11. রাহনুমা বলেছেনঃ

    সব কমেন্ট করা হয়ে গেছে! … 🙁

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।