অতন্দ্রিলা ও একটি তন্দ্রালু দুপুর

পকেটে হাত দিয়ে দেখি পকেট ছেঁড়া,এদিকে সিগারেটে আগুন দিয়ে দিয়েছি।
টাকা কোথা থেকে দিব এখন?
এদিক ওদিক তাকালাম নাহ টাকা গুলো আশে পাশে কোথাও পড়েনি।
সিগারেট এর দোকানে কি বলব যে আমার টাকা নেই? নাকি ঝেড়ে একটা দৌড় দিব তাই ভাবছিলাম__

তুমি আবারো সিগারেট খাচ্ছ?
তাকিয়ে দেখি অতন্দ্রিলা, একটা হাফ ছাড়া নিঃশ্বাস দিতে দিতে আঁটকে ফেললাম,
-এই তোমাকে না আজকে দারুন লাগছে, পার্লারে গিয়েছিলে বুঝি?
-তুমি আমার মুখে মেকআপ দেখেছ কোনদিন? পার্লারে না গেলে কি আমায় সুন্দর লাগেনা?
বুঝলাম ভুল কথা বলে ফেলেছি,এখন কি বলা যায় তাই ভাবছি_
-অ্যাঁ ! ইয়ে, মানে তোমাকে তো সবসময় ই দারুন লাগে।
-বাদ দাও তো এসব কথা, জীবনেও কখনো ভালো করে তাকাওনি আমার দিকে সেটা আমার জানা আছে। তুমি আবারো সিগারেট খাচ্ছ কেন? তুমি না বলেছ সিগারেট ছেড়ে দিবে?
-হ্যাঁ! ছেড়ে দিব তো, এটাই লাস্ট সিগারেট আর খাবনা, প্রমিস।
-এই পর্যন্ত তুমি কয়টা লাস্ট সিগারেট খেলে? আর এসব মিথ্যে প্রমিস গুলো না করলে হয়না?

বুঝলাম বাতাস একদম অনুকুলে যাচ্ছেনা আজকে। পরিস্থিতি আরও প্রতিকূলে যাওয়ার আগেই যা বলার বলে দিতে হবে।
-অ্যাঁ ! ইয়ে ! অতন্দ্রিলা , তোমার কাছে দশটা টাকা হবে?
-ঠিক দশ টাকা কেন?
-অ্যাঁ ! মানে_ প্যান্টের পকেট ছেঁড়া, টাকা সব পড়ে গেছে কোথাও। এখন সিগারেট এর বিল দিতে পারছিনা। দাওনা প্লিজ , তোমাকে কাল ঘুরতে নিয়ে যাব।
-তোমার তো আমাকে গত সপ্তাহে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল, তুমি না একটা ইয়ে। আর এসব ছাই পাশ এর বিল আমি দিতে পারবোনা। বলেই অতন্দ্রিলা মুখ ঘুরিয়ে উল্টো দিকে হাটা শুরু করে।

আমি হেসে ফেললাম, অতন্দ্রিলা কেমন জানি বাচ্চাদের মত থপ থপ করে হাটে। দুপুরের কড়া রোদে অতন্দ্রিলাকে সূর্য পরীর মত লাগছে,
যদিও সূর্য পরী কি আমি জানিনা। তবে আমি জানি যে অতন্দ্রিলা একটু পরেই ফিরে আসবে, দশ টাকা দিবে সিগারেটের দোকানে।
এর পর আমাকে নিয়ে কোথাও যাবে, বসব আমরা, গল্প করে করেই সূর্য টাকে অস্তমিত করে দিব। আমি অপেক্ষা নিয়ে তাকিয়ে আছি, জানি ও আসবেই।

ইকু সম্পর্কে

নিজের সম্পর্কে নিজের আসলে তেমন একটা কিছু বলার থাকেনা। মানুষ কে বিশ্বাস করতে ভালো লাগে। আদতে স্বপ্ন দেখা একজন মানুষ আমি, হাজার অযুত স্বপ্ন নিয়ে আমার পথ চলা। অনেক গুলো প্রিয় মানুষ নিয়ে আমি পথ চলি, খুব সহজে কাউকে আপন করে নিতে পারি। তারপরেও মাঝে মাঝে হেলাল হাফিজের মত বলতে ইচ্ছে হয়, "কেন আমার হাতের মাঝে হাত থাকেনা কেউ জানেনা।" আমার নিজস্ব একটা ভাবনার জগত আছে, যেই জগতে কি হচ্ছে সেটা আমি ছাড়া আর কেউ জানেনা। জীবন ও মৃত্যু সম্পর্কে প্রায় ই একা বসে বসে ভাবি। জীবন আমার কাছে অনেকটা রহস্যের মত, যে রহস্যের সমাধান আমি আজো করতে পারিনি। তবে মৃত্যু মনে হয় একটা অসুখ, যার ওষুধ আজ পর্যন্ত তৈরি হয়নি। আমি জ্যোৎস্না ভালোবাসি আর ভালোবাসি ভর দুপুরের সোনালী রোদ। ভালোবাসি রঙধনু আর ভালোবাসি তুমি-আমি নিয়ে লিখা সব কবিতা । ভালোবাসি কোন মেঠো পথের ধারে সবুজ মাঠে একা বসে থাকা, ভালোবাসি নীলাম্বরী শাড়ি পরা কোন এক কিশোরী আকাশ, ভালোবাসি নদীর পাড়ে বসে মাছরাঙ্গা দের উৎসব দেখা । ভালোবাসি সমুদ্র বালিয়াড়িতে উপলব্ধি করতে নিজের ক্ষুদ্রতা। ভালোবাসি অরণ্য, ভালোবাসি পাখি। ভালোবাসি রাত, ভালোবাসি রৌদ্র। ভালোবাসি দেশ, ভালোবাসি আমায়। https://www.facebook.com/iqusan
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে গল্প-এ এবং ট্যাগ হয়েছে স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

4 Responses to অতন্দ্রিলা ও একটি তন্দ্রালু দুপুর

  1. রুহশান আহমেদ বলেছেনঃ

    ”গল্প করেই সূর্যটা অস্তমিত করে দেব…” চমৎকার লিখেছেন।

  2. শারমিন বলেছেনঃ

    ভালো লেগেছে 🙂
    ধূপপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর 😛

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।