শোনেন শোনেন দেশবাসী, শোনেন দিয়া মন
রক্তদানের প্রয়োজন আজ করিব বর্ণন।
সুস্থ দেহে রক্ত দিলে হয় না কোন ক্ষতি
রক্ত কমে গেল বলে হবে না দুর্গতি।
প্রতিদিন ৪২ মি.লি. রক্ত তৈরি হয়
চার মাসে তাই ৫০০ মি.লি. কমা ব্যাপার নয়।
তিন মাস অন্তর জন্ম নেয় ভাই নতুন লোহিত কণা
পুরনোরা যায় যে ঝরে, কমায় আনাগোনা।
শ্বেত কণার জীবন মাত্র কয়েক সপ্তাহর তরে
অণুচক্রিকা তো ধ্বসে পাঁচ কী দশদিন পরে।
রক্তকোষ মরে গেলে ভাই জমে না শরীরে
আমাদের দেহ সদা এগুলো দূর করে।
এজন্য শরীরের যেসব সিস্টেম করে কাজ
রক্ত দিলে তাদের উপর পড়ে না যে চাপ।
চার মাস পর পর একবার করে রক্ত ও ভাই দিলে
সুস্থ দেহের হয় না লোকসান- বিজ্ঞান তাই তো বলে।
রক্ত দিলে করবে অসুখ ভেবে ভয় পান যারা
জানেন না তো রক্তদানের নিয়ম –কানুন তারা।
রক্তচাপ, ওজন আর হিমোগ্লোবিনেরই মান
ঠিকঠাক থাকলে করতে পারবেন আপনি রক্তদান।
হাঁপানি, উচ্চরক্তচাপ, দুর্বল নাহি হলে
রক্ত দিতে পারেন রে ভাই সুস্থতারই বলে।
যে সিরিঞ্জ ব্যবহার করে রক্তদান করবেন
সেই সিরিঞ্জটা নতুন কিনা তা লক্ষ্য রাখবেন।
রক্ত দিয়ে থাকবেন শুয়ে খানিক সময় ধরে
প্রচুর তরল করবেন যে পান রক্ত দেয়ার পরে।
এতে দ্রুত রক্তচাপটা হবে স্বাভাবিক
সহজ হবে রক্তচলন শরীরের সব দিক।
এসব নিয়ম মানলে আপনার থাকবে না তো ভয়
রক্ত দেয়া জানবেন সহজ, তেমন কঠিন নয়।
রক্তদানে হয় না কেবল অন্য উপকৃত
জানতে পারবেন নিজদেহের অবস্থা প্রকৃত।
এইডস, জন্ডিস, ম্যালেরিয়া হল কিনা শেষে
জেনে যাবেন খুব সহজে প্রতি চারটি মাসে।
যৌন সংক্রামক রোগের পরীক্ষাও ভাই হবে
হেপাটাইটিস সি হলেও জানা হয়ে যাবে।
এই সুবিধা দেয়া রক্তদানকেন্দ্রেরও ভার
বিনামূল্যের সেবা রক্তদাতার অধিকার।
যেসব রক্তদানকেন্দ্র এসব রীতি মানে
বুঝবেন আপনার রক্ত দেয়া নিরাপদ সেখানে।
শোনেন হে ভাই, এবার বলি তাদের যত কথা
যাদের ভেবে স্বজনেরই বাজে বুকে ব্যথা।
তারা যে ভাই রক্তশূন্যতায় শুধু ভোগে
বাঁচার আশায় বিধির তরে কেবল ভিক্ষা মাগে।
তারা তো সব আপনার-আমার মা-বাবা-বোন-ভাই
থ্যলাসেমিয়া কেড়ে নেয় তাদের জীবনটাই।
লিউকেমিয়া ভাগ্যে নিয়ে যারা বেঁচে আছে
পৃথিবীটা স্বপ্নহীন যে তাদের সবার কাছে।
আপনার রক্তে তাদের প্রতিদিন তো কাটে, হায়
রক্ত যদি না মেলে তো ঝরে তারা যায়।
একটি দিনও এ ধরাতে বেঁচে থাকতে হলে
রক্ত ছাড়া কোনমতে দিন যে নাহি চলে।
সুস্থ থাকলে ওরে ও ভাই তাই তো রক্ত দিন
নিজে বাঁচুন, পরকে বাঁচান, দিন কাটান অমলিন।
দুর্দান্ত!
চমৎকার! ইনোভেটিভ ওয়েতে অন্যদের জানানো।
এই লেখা ছড়িয়ে দেয়া দরকার!
লেখাটা সবার জন্যই।
একটা মানুষ যদি এই সত্যিটা জানে ও বুঝতে পারে, তাহলে চার মাস পর পর অনায়াসেই সে আরো চারটা মানুষের জীবন বাঁচাতে পারবে মাত্র এক ব্যাগ রক্তের বিনিময়ে!
জীবন বাঁচানো কী দারুণ একটা ব্যাপার, তাইনা?
কীভাবে পারো? :huzur:
এত্ত এত্ত দারুণ হইছে, জিনিয়াস একটা পুরাই! :beshikhushi:
প্রতিবার রক্ত দেয়ার পর খুব অদ্ভুত, অনন্যসাধারণ একটা অনুভূতি আমাকে গ্রাস করে। যখন ভাবি, আমার এই রক্ত একজন নারীর জীবন বাঁচাবে আজ; যার জন্য ঘরে অপেক্ষা করে আছে তার প্রিয় মানুষগুলি- মা, বাবা, স্বামী আর বড় বড় এক জোড়া স্বপ্নমাখা চোখ, মায়ের খোঁজে যে বিভোর।
অথবা, হয়ত বাসে বসা আমার ঠিক পাশের বৃদ্ধ মানুষটি, কারো বাবা।
অথবা, হেঁটে যাওয়া ঐ ছোট্ট শিশু, যে একদিন পৃথিবীর বুকে তার স্বপ্নগুলি মেলে ধরবে দখিনের বাতাসে।
হয়ত এভাবেই পারি।
হয়ত রক্ত না দিলে কখনোই এটা লেখা হত না, লিখতে পারতাম না।
দুর্দান্ত!
শেয়ার করলুম 🙂
নিশ্চয়ই। 🙂
রক্ত দেয়ার অনূভুতি যে কি অসাধারণ তোদের কারণেই আজ জানি। আর সবাইকে সেটা বোঝানোর চেষ্টা করি।
লেখা অসাধারণ হয়েছে। অসাধারণ!!! :clappinghands:
আমাদের কারণে জানলেও তোর নিজের ইচ্ছা একেবারেই না থাকলে তো আর তোকে জোর করে ধরে নিয়ে যেতে পারতাম না।
ধইন্যা ভর্তা দোস্ত।
আমাদের নাচে নাচুনি হবার জন্য। 😛
দারুণ। 🙂
ধন্যবাদ।
সম্ভব হলে রক্ত দেবেন নিয়মিত। 🙂
:huzur: :huzur:
:beshikhushi:
রক্ত দিয়ে থাকলে ভাল।
আর না দিলে এখন থেকে নিয়মিত দেবেন আশা করছি। 🙂
তাহলে ভালোর দলেই আছি :happy:
:happy:
প্রথমবার শুনেই বলেছিলাম অসাধারণ! আবারো বলি, দুর্দান্ত! :huzur: :huzur:
ভাল কাজে সাহায্য করে, পথ দেখায় এমন বন্ধু জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ!
তোর মত বন্ধু না পেলে কোনদিনই রক্ত দেয়ার এমন স্বর্গীয় অনুভূতির সাথে পরিচিত হতে পারতাম না। :beshikhushi:
প্রতিটি মানুষের ভাগ্যে যেন তোর মত এমন একজন ভাল বন্ধু জোটে- প্রার্থনা করি। :beshikhushi:
খুব সুন্দর হয়েছে পুঁথিকাব্য আপু। তুমিতো দারুন লিখ 🙂
অনেকেই রক্ত দিতে ভয় পায় এখনো। খুব প্রয়োজনীয় সময় রক্ত না পাওয়া গেলে মানুষ যে কতটা অসহায় হয়ে পরে তা বলার মত না। আবার অনেকে আছে খুব আগ্রহী।
মানুষকে সচেতন করা আর রক্ত দেয়া সম্পর্কে ভীতি দূর করাই আমার চেষ্টা।
রক্ত দিতে যারা অনাগ্রহী, তারা কখনো ভাবেন না যে সাধারণ একটা দুর্ঘটনায় কাল তার নিজের বা পরিবারের কারো রক্তের প্রয়োজন হতে পারে।
আমি কয়েকজনকে জানি যারা নিজেরা কখনো সুস্থ থাকা সত্বেও রক্ত দেন না, কারণ তারা ভয় পান। অথচ তারাই মানুষের জন্য রক্তের প্রয়োজন হলে সবার কাছে সাহায্য চান। আমি চাই, তাদের ভুল ভাবনাটা দূর হোক।
রক্ত দেয়া কোন ভীতিকর বা কঠিন কাজ নয়, বরং এটা সহজ আর আনন্দদায়ক।
:huzur: দারুণ পুঁথি, hats off :clappinghands:
পুঁথিটা কখনো নিজের জীবনে বা প্রিয়জনের জীবনে কাজে লাগালে আরো বেশি খুশি হব।
ধন্যবাদ। 🙂
অবশ্যি 🙂
শুনে খুব ভাল লাগল। :happy:
অসাধারন একটি লিখা , দারুণ । 🙂 :huzur:
ভাল লেগেছে শুনে ভাল লাগল। কিন্তু আমি আরো অনেক অ-নে-ক বেশি খুশি হব যদি তুই তোর স্বাস্থ্য উদ্ধার করে কোনদিন রক্ত দিতে পারিস। তোরে নিয়া আমার আম্মাজানের চিন্তার শেষ নাই! :crying:
ঠিক বলছিস! বেচারারে কালবৈশাখীর দিনে কোমরে দড়ি দিয়া বাইন্ধা রাখতে হইবেক! কখন জানি উড়ে যায়! 😛
🙄